হাম হাম ঝর্ণা কোথায় অবস্থিত

in #travellast year

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক জলপ্রপাত হল হামহাম। এটি চিতা ঝর্ণা নামেও পরিচিত।
২০১০ সালের শেষের দিকে পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মাকে সাথে নিয় একদল পর্যটক হাম হামের এই অনিন্দ্যসুন্দর জলপ্রপাতটি আবিষ্কার করেন। প্রায় ১৫০ ফুট উঁচু এই ঝর্ণার সৌন্দর্য দেখার জন্যে অনেক কষ্ট স্বীকার করে সারাদেশ থেকে মানুষ ছুটে আসে। শীতকালে তুলনামূলক পানি অনেক কম থাকে তাই বর্ষা কাল হাম হামের বুনো সৌন্দর্য্য দেখার উপযুক্ত সময়।
শ্রীমঙ্গল হয়ে যারা যাবেন তারা বোনাস হিসেবে লাউয়াছড়া বন ও চা বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করে যেতে পারবেন।


যাতায়াত :
ঢাকা থেকে হাম হাম যেতে হলে শ্রীমঙ্গল হয়ে যাওয়া সবচেয়ে সুবিধাজনক।
ঢাকা - শ্রীমঙ্গল : বাস বা ট্রেন
শ্রীমঙ্গল পৌছে সকাল সকাল হামহামের জন্য রওনা দিলে ভাল হয়। প্রথমে আপনাকে কলাবন পাড়ায় যেতে হবে। শ্রীমঙ্গল থেকে কলাবন পাড়া আপ ডাউন সিএনজি ভাড়া ১২০০-১৫০০ টাকার মতো লাগবে, ৩-৫ যেতে পারবেন। এছাড়া যাওয়ার জন্যে আছে জীপ গাড়ি।
কলাবন পাড়া পৌছে ৩০০/৪০০ টাকার মধ্যে একজন ভাল গাইড ঠিক করে নিন। ভ্রমণ সঙ্গীর প্রত্যেকে বাঁশের লাঠি নিতে ভুল করবেন না। বর্ষায় জোঁক একটু বেশি থাকে, আমাদের চোখে অবশ্য তেমন পড়েনি। কলাবন পাড়া থেকে হামহাম যাবার দুটো ট্রেইল আছে আছে, একটা ঝিরিপথ আরেকটা পাহাড়ি পথ। বর্তমানে ঝিরিপথটি বন্ধ রয়েছে।
পাহাড়ি পথটি বর্ষায় বিপদজনক। ভ্রমনের দিনে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে তা অত্যন্ত বিপদজনক হয়ে ওঠে। তাই বাচ্চা বা বয়স্কদের নিয়ে ট্যুর প্লান না করাটাই বেটার।
অভ্যস্ত না হলে পাহাড়ি ট্রেইল ধরে যেতে সময় লাগবে প্রায় ২.৫ ঘন্টা। অভ্যস্ত হলে ২ ঘন্টায় যেতে পারবেন। অর্থাৎ কমপক্ষে ৫/৬ ঘন্টা দিনের আলো হাতে রেখে কলাবন পাড়া থেকে রওনা হতে হবে।

কোথায় খাবেন :
ফিরে এসে খাওয়ার জন্য কলাবন পাড়ায় খাবার অর্ডার করে যেতে পারেন। প্রতিজন ১৮০-২০০/- নিবে। এছাড়া ট্রেইলের দুই তৃতীয়াংশ গেলে চা, পানি খাবার জন্য একটা দোকান পাবেন। ঝর্নার সাথেও হালকা খাবারের জন্য একটা দোকান রয়েছে।
অথবা শ্রীমঙ্গলে ফিরে পানসি বা নূর ফুডসে ভাল মানের খাবার খেতে পারবেন।
থাকা :
শ্রীমঙ্গলে থাকার জন্য রয়েছে অনেক হোটেল ও অসংখ্য রিসোর্ট। বাজেট অনুযায়ী যেকোটাতে অগ্রিম বুকিং করে আসলে ভাল।

সতর্কতা :

ট্রেকিং এর জন্যে ভালো গ্রীপের জুতা বা পিছনে বেল্টওয়ালা স্যান্ডেল ব্যবহার করবেন, বিশেষ করে বর্ষাকালে।

ব্যাকপ্যাক যত সম্ভব হালকা রাখবেন।

সাথে পানি রাখবেন। পর্যাপ্ত রাখার প্রয়োজন নেই, মাঝপথে পাবেন, অযথাই ব্যাগ ভারী হবে। প্রয়োজনে সাথে স্যালাইন নিতে পারেন।

পাহাড়ি উঁচু নিচু পথে পা পিছলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সাবধান থাকবেন।

ছোট বাঁশ নিতে কোনভাবেই ভুল করবেন না।

ফার্স্ট এইডের জন্যে যা প্রয়োজন তা সাথে রাখতে পারেন।

সময়ের দিকে খেয়াল রাখুন যেন হামহাম থেকে ফিরে আসার পথেই সন্ধ্যা না হয়ে যায়।

সাতার না জানা থাকলে পানিতে নামবেন না।

অনেকজন না হলে যাওয়া যাবেনা এটা ভুল ধারনা। তবে সাথে মেয়েরা থাকলে ৮/১০ জনের গ্রুপ হলে ভাল। উইকএন্ডে আসলে অনেক লোক পেয়ে যাবেন। ভয়ের কোন কারন নেই।

প্রাকৃতিক সুন্দর পরিবেশ আবর্জনা ফেলে নষ্ট করা থেকে বিরত থাকুন।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59264.94
ETH 2604.33
USDT 1.00
SBD 2.38