বাংলাদেশে প্লাস্টিক শিল্পের অবস্থা ও সম্ভাবনা

in #technology6 years ago

নব্বই দশক থেকে পোশাক শিল্পের পাশাপাশি প্ল্যাস্টিক শিল্পেও নিরব বিপ্লব ঘটেছে বাংলাদেশে। এ দেশে প্ল্যাস্টিক শিল্পের শুরু হয়েছে সেই পঞ্চাশ দশকের শুরুতেই। হাটি হাটি পা পা করে এ শিল্প এতটাই এগিয়েছে যে বাংলাদেশে এখন বিশ্বের ১২তম প্ল্যাস্টিক পন্য রপ্তানি কারক দেশ। উদ্যক্তরা বলছেন পোশাক শিল্পের মত আনূকুল্য পেলে প্ল্যাস্টিক পন্য দেশে দ্বিতীয় বৃহতম রপ্তানি খাতে পরিনত হবে। বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে বিকশিত হচ্ছে রপ্তানি মূখী প্ল্যাস্টিক শিল্প। ভারত, চীন, তাইওয়ান, থাইলেন্ড, মালয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তানের সাথে প্রতিযোগিতা করে বাংলাদেশে তৈরি প্লাস্টিক পন্য সামগ্রী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যে সমাদিত হচ্ছে বাংলাদেশে উৎপাদিত প্ল্যাস্টিক পন্য সামগ্রী। পঞ্চাশ দশকের শুরুতে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ ও চট্রগ্রামে গড়ে ওঠে প্ল্যাস্টিক শিল্প। এখন মানে ও বৈচিত্রে বাংলাদেশের প্ল্যাস্টিক শিল্প এতটাই এগিয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপিও ইউনিয়ন ভুক্ত বিভিন্ন দেশে এ দেশে তৈরি পন্য রপ্তানি হচ্ছে। চীন ও ভারতেও তা সমাদ্রিত হচ্ছে। এ শিল্পের উদ্যুক্তরা ২০২১ সাল নাগাত রপ্তানি বাবদ ১০ হাজার কোটি টাকা আয়ের আশা করেন। এ মুহূর্তে দেশে ২০ হাজার কোটি টাকার প্ল্যাস্টক পন্য উৎপাদন ও বিপনন হচ্ছে। এ শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ১২ লক্ষ লোক জরিত। সরকার শিল্পোদ্যুক্তাদের দাবির মুখে ধলেশ্বরী পাড়ে প্ল্যাস্টিক শিল্প নগরি স্থাপনে উদ্যুগ নিয়েছেন। যেখানে ৩৪৮টি প্ল্যাস্টিক শিল্প গড়ে তোলা সম্ভব হবে। প্ল্যাস্টিক পন্য সামগ্রী দিয়ে এখন দেশে কাঠের বিকল্প ফার্নিচা, চেয়ার, টেবিল থেকে শুরু করে গৃহসামগ্রী তৈরি হচ্ছে। দিনদিন এর বেপক ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা বাড়ছে। প্ল্যাস্টিক পন্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপিও ইউনিয়নভুক্ত বিভিন দেশসহ সমগ্র ইউরোপে এবং এশিয়ার চীন, ভারত ও নেপালসহ অন্যান্য দেশে রপ্তানি হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে প্ল্যাস্টিকের তৈরি পন্য রপ্তানির পরিমান বছরে প্রায় ৩৭০০ কোটি টাকা। দেশে ছোট, বড় ও মাঝারি মিলিয়ে প্ল্যাস্টিক পন্য উৎপাদনকারী প্রতিস্থানের সংখ্যা ৫ হাজারেরও বেশি। এসব কারখানা বা প্রতিস্থানে প্রায় ৫ লক্ষের অধিক লোক তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। প্রায় সাড়ে চারশত প্রতিস্থান তাদের উৎপাদিত পন্য সামগ্রী রপ্তানি করে। প্রযুক্তিগত দিক থেকে যদি এই সহযোগিতার হাতটি সম্প্রসারিত করা হয় তাহলে শুধু চীন নয় আমরা অনেক উন্নত দেশকেও পিছন ফেলে এগিয়ে যেতে পারব। উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যেপ্রাচ্যে, সক্ষিন এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোট ২৩ টি দেশে প্ল্যাস্টিক পন্য রপ্তানি হচ্ছে। এছাড়াও আরো প্রায় ১৫০ কোটি টাকার উপর প্ল্যাস্টিকের ফার্নিচার কুকারিজ সামগ্রী সরাসরি রপ্তানি হচ্ছে। প্ল্যাস্টিক তৈরির কাচামাল সাধারনত বিদেশ থেকে আমদানি হয়ে থাকে। আমরা নিজেরা যদি কাচামাল উৎপাদন করতে পারি তবে একদিক থেকে আমদানি ব্যয় হ্রাস পাবে, পাশাপাশি উৎপাদন ব্যয় কমবে। পরনির্ভরতা কমার পাশাপাশি কর্ম সংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে। দেশের অর্থনীতির এই সম্ভাবনাময় খাতকে এগিয়ে নিতে সরকারি পর্যায়েও নানামুখি উদ্যুক নিতে হবে। প্ল্যাস্টিক পন্যে বৈচিত্র এনে দেশি বিদেশি ভুক্তাদের মন কিভাবে জয় করা যায় তা নিয়ে বেপক ভিত্তিক গবেষনাও প্রয়োজন। এ শিল্পের উন্নয়নে বেপক ভিত্তিক পরিকল্পনা নেওয়া হলে দেশ যেমন বিপুল পরিমান বৈদেশিক মূদ্রা আয় করতে সক্ষম হবে তেমনি কর্ম সংস্থান সৃষ্টিতেও রাকতে পারবে কার্যকর অবদান।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.18
JST 0.032
BTC 87663.71
ETH 3042.50
USDT 1.00
SBD 2.75