সত্যিকারের ভালোবাসার মায়া - আমার নিজের লেখা গল্প এবং কবিতা।। পর্ব-02

ভাইয়া, তুমি আমার চাচাতো ভাই, যার রক্তও এক, যেখানে তুমি আমাকে মন দিয়েছিলে, আমিও দিয়েছিলাম কিন্তু উপরওয়ালা আমাদের সেই
ইচ্ছা হয়তো বা পূরণ হতে দিচ্ছে না। এই মুহূর্তেও আল্লাহর কাছে দু'হাত তুলে বলবো যেন আমাদের দু'জনের মিলন হয়। যদি এই পৃথিবীতে তোমার সাহচার্য না পেলাম এরপরও আশা রাখবো পরজনমে যেন সৃষ্টিকর্তা তোমাকে আমার বুকে তুলে দেয়।

ফাইজুর চোখ দুটি পানিতে পরিপূর্ণ টপ-টপ্ করে কয়েক ফোঁটা চিঠিতে পড়লো। পড়তে পারেনি আর পত্রটা। পকেটে গুজে রওনা হয় বাড়ির উদ্দেশ্যে। প্রেমিকার বিচ্ছেদে পা আগে বাড়ছে না। মন বলছে না, এই পৃথিবীর সব কিছু ওলট-পালট হয়ে এগুচ্ছে।

যখন বাসে ওঠে তখনও বাস ছাড়ার ত্রিশ মিনিট বাকী আছে। সিটে গিয়ে ঝিমোতে থাকে। মনের সাথে রিপ্লে করে দেখে আজকের ঘটে যাওয়া প্রতিটা দৃশ্য। ভেসে উঠার সাথে সাথে দীর্ঘ নিঃশ্বাস বের হয়ে যায় নাক দিয়ে। ডুকরে কাঁদতে ইচ্ছে করে ওর। তবুও পারে না অবুঝের মতো কাঁদতে। কারণ হাজার হাজার মানুষ আনাগোনা করছে চারদিকে। এমন চিত্র চেহারায় না স্পষ্ট হওয়াই ভাল।

মনকে কঠিন থেকে কঠিন করে নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকে। ঘুমাতে চেষ্টা করেও পারে না। প্রিয়ার কান্নামাথা মুখ ক্ষণে ক্ষণে ভেসে উঠে জাগিয়ে তুলছে দৃষ্টিপটে। জাগিয়ে তুলছে এই যৌবনা মনটাকে। ক্রোধ ফুটে উঠেছে পুরো চেহারা মোবারকে। যেখানে দাঁড়ি সমেত চেহারা আল্লাহর নূর বিরাজ করছে, তা না হয়ে বিশাল ভয়ংকর রূপ নেয়। মনে মনে সংকল্প করে, বাড়ি গিয়ে এর একটা বিহিত করবোই। পিতা-মাতা জন্ম দিয়েছে বলে এই নয়, আমাকে তাদের সব কিছু মেনে নিতে হবে।

আমি তাদের এমন অবিচার মুখ বুঝে সহ্য করবো না। জয় ছিনিয়ে আনবো আরো অনেক কিছু মনের অজান্তে মনে মনে বলে ফেলে। এই মুহূর্তে ফাইজুর মনটাকে শয়তান গ্রাস করতে যাচ্ছে। কিন্তু ও নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে থাকে, শয়তানের প্ররোচনায় না পড়ে।

আল্লাহ বলেছেন, হে আমার প্রিয় বান্দা, তুমি বিপদে পড়েছ, আমাকে স্মরণ করো আমি তোমার সব মুশকিল আসান করে দিব। এ কথা স্মরণ হতেই বাসে বসা থাকা অবস্থায় আল্লাহর জিকির করতে থাকে। যার সম্পূর্ণ চাওয়া তার মনের মানুষকে।