দেখাঃ অণুগল্প
ময়নামতি পার হয়ে বাস ছুটছে মাঝ রাস্তা ধরে। হেড লাইটের আলোয় দু'পাশের গাছগুলো কেমন এক ভৌতিক অবয়ব নিয়ে উল্টোদিকে ছুটছে। এমন জার্ণিতে একটু হ্যালুসিনেটেড আমেজ নিজেকে অনুভব করাতে চাইলে, ক্ষতি কি?
'ক্ষতি যেমন নাই, লাভও নাই। যেখানে কিছুই নাই, সেদিকে না যাই।'
শিহাবের মন শিহাবকে জানায়। মনের বাইরে থেকে সে মনকে কটাক্ষ করে, 'তুমি আবার লাভ-ক্ষতির হিসাব কষা শুরু করলে কবে থেকে?'
মফিজ বাস-ড্রাইভার কুমিল্লার আগে বাজে একটা হোটেলে যাত্রাবিরতি করল। পুরুষদের টয়লেটের সামনে টিকেট কাউন্টারের মত বিশাল লাইন। উন্মুক্ত ল্যাভেটরি দু'ধরনের- দাঁড়িয়ে এবং বসে মূত্রত্যাগের জন্য। আর টয়লেটগুলি সব সেই কখন থেকে বন্ধ দেখছে, ভেতরের সৌভাগ্যবান মানুষগুলি সিরিয়াল পাবার আনন্দে বেহুঁশ হয়ে গেছে মনে হচ্ছে।
প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে মেইন রোডে এসে আরো একটু সামনে আগায় শিহাব। নির্জন প্রকৃতি। মিনিট পাঁচেক সেখানে ব্যয় হয়।
বাসে নিজের সিটে এসে কেমন যেন মনে হয় শিহাবের। অন্য বাসে উঠে পড়ল নাকি ভুলে? কিন্তু সামনের সিটের পেছনের নেটে রাখা নিজের কেনা পরিচিত পানির বোতলটি আরো তালগোল পাকিয়ে ফেলে। সামনে- পাশের- পেছনের সহযাত্রীদের দিকে তাকায়। কিন্তু এই দীর্ঘ যাত্রার অনেকগুলি মুহুর্ত কাটলেও, এই নি:সংগ জার্ণির আপাত প্রতিবেশীদেরকে ওর কাছে কেন জানি একদম অচেনা লাগে! মনে হয় জীবনে এইমুহুর্তেই এদেরকে প্রথম দেখছে।
'সমস্যা.. তবে কবেই বা তোমার আশেপাশের কাছের মানুষদেরকে চেনা মনে হয়েছে? তাদেরকে চিনতে আদৌ চেয়েছ কি কখনো? তুমি শ্রেফ তাকাও.. কিন্তু দেখনা কখনো'