মায়ের মন।

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago

ক্যানভা দিয়ে তৈরি,

হ্যালো বন্ধুরা,

সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে খুবই ভাল আছি।আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করব। আশা করবো গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে। আমাদের চারপাশে প্রায় বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। যেগুলো থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার অনেক বিষয় রয়েছে। এজন্য এই সকল বিষয়গুলো আপনাদের শেয়ার করলে আপনারাও অনেক কিছু শিখতে পারবেন। এমনকি অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে অবগত হবেন। এইজন্য আমি চেষ্টা করি বিভিন্ন বিষয়গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্য। এখন মানুষের আসলে ভরসা নেই। একেকজন একেক ধরনের, এবং একেক জন একেক ধরনের মানসিকতার।

IMG_20250918_232622.jpg

আজকে আমি আপনাদের মাঝে বাস্তব একটি ঘটনা শেয়ার করবো। কারণ মায়ের মনের সাথে কারো তুলনা করা যায় না। পৃথিবীতে একমাত্র নিঃস্বার্থ ভালোবাসা যদি পাওয়া যায় মায়ের কাছ থেকে। এবং সন্তানদের জন্য মা হচ্ছে বড় একটি ভালবাসার ভান্ডার। পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে নিঃস্বার্থ মায়ের মত কেউ ভালোবাসে না। আমাদের পাশের বাড়ির একটি মহিলা আছে। তার তিনটি মেয়ে দুটি ছেলে আছে। আর মহিলাকে অত্যন্ত গরিব। মহিলাটির পাঁচটি ছেলে মেয়ে হওয়ার পর জামাই হঠাৎ করে পাগল হয়ে গেল। এরপর অনেক চিকিৎসা করার পর তার হাজবেন্ড আর ভালো হয় নাই। পরবর্তীতে বাবা সম্পত্তির উপর সে এসে বাড়ি করে আমাদের এলাকাতে।

আর বর্তমানে তার মেয়েগুলো সে অনেক কষ্ট করে বিয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলে বিগত ১৫ বছর আগে মা কে ছেড়ে বাবার এলাকায় চলে গেলেন। এবং ওইখানে সেই বিয়ে করে ঘরবাড়ি করেছেন। এবং ছোট ছেলেকে সেই মানুষের কাছ থেকে টাকা খুঁজে এবং বাবার সম্পত্তি যেটুকু ছিল বিক্রি করে বিদেশ পাঠালেন। আর বিদেশ যাওয়ার পর হঠাৎ করে একমাস পর ছেলেটি ওইখানে মারা গেলেন। এবং মারা যাওয়ার একমাস পর তার লাশ দেশে নিয়ে আসলেন। বর্তমানে মহিলাটি তার পুরনো ঘরের মধ্যে একলাই বসবাস করে। এবং মহিলাটি অন্যের ঘরে কাজ করে যেটুকু খায় ওই খাওয়াই খেয়ে থাকে। বলতে গেলে মহিলাটি বর্তমানে আগে দেখে কেউ নেই।

তার বড় ছেলে তার মাকে পরিচয় দেয় না। বিগত কিছুদিন আগে কার বড় ছেলে আমাদের এই এলাকাতে কারেন্টের কাজ করার জন্য আসলেন। এবং সে আমাদের এলাকাতে একটি বিল্ডিং এর মধ্যে কারেন্টের কাজ কন্টাক্ট নিলেন। এখানে কাজ করার পরও সেই মায়ের কাছে যাই নাই। বিগত অনেক বছর পর্যন্ত তার মায়ের সাথে সম্পর্ক নেই এবং মায়ের সাথে কথা বলে না। তবে আমাদের এদিকে যখন ছেলেটির কাজ করতে লাগলো। আর ছেলেটির নাম হচ্ছে রিপন। এবং রিপনের মা কার কাছে শুনলেন তার ছেলে আমাদের এলাকায় এসে কারেন্টের কাজ করতে লাগলো। আর এই কথা শোনার পর মহিলাটি ছেলেকে দেখার জন্য যাচ্ছেন।

এবং যাওয়ার সময় সেই দুপুরে যেগুলো খাওয়া-দাওয়া বানিয়েছে ওই খাওয়া-দাওয়া গুলো নিয়ে যাচ্ছে ছেলের জন্য। এবং পথে আমার সাথে দেখা হল বলতে লাগলো তার ছেলে কোথায় কাজ করে। আর আমি বলতে লাগলাম কোথায় কাজ করা আমিতো জানিনা। তারপর আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম এইখানে কি। এবং বলতে লাগলো তার ছেলের জন্য দুপুরে খাওয়া-দাওয়া নিয়ে যাচ্ছে। আর ওই সময় আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম যে ছেলে আপনাকে পরিচয় দেয় না তার জন্য খাওয়া-দাওয়া নিয়ে যাচ্ছেন। মহিলাটি চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো আর বলতে লাগলো আমার ছেলের কাজ করার সময় কি খাচ্ছে তাই নিয়ে যাচ্ছি।

এবং মহিলাটি পাতিলা করে তার ছেলের জন্য খাওয়া নিয়ে যাচ্ছে। আর খোঁজাখুজি করার পর ছেলের কাছে গেলেন এবং ছেলেকে দেখে কান্নাকাটি করতে লাগলো। এবং পাষাণ ছেলেটি তার মাকে বলতে লাগলো এইখানে কেন আসলেন এখান থেকে চলে যান। এবং মহিলাটি অনেক কান্নাকাটি করে ছেলের সাথে কথা বলে এবং খাওয়া দাওয়া গুলো দুপুরের তার ছেলেকে দিয়ে আসলেন। এবং বললেন সময় করে খাওয়া দাওয়া হল যেন খেয়ে নেই। আর মহিলাদের নিজের দুপুরের খাওয়া তার ছেলের জন্য নিয়ে গেলেন । সত্যি বলতে তার মনটা দেখে অন্যরকম লাগলো। যেই ছেলে মাকে পরিচয় দেয় না সেই ছেলেকে গিয়ে তার খাওয়া-দাওয়া গুলো দিয়ে আসলো। আর এইখানে বোঝা যায় মায়ের মত আর কেউ হয় না। তারপরও পাষাণ ছেলের মন নরম হলেন না মায়ের জন্য। আশা করে আমার বাস্তব পোস্টটি পড়ে আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

আমার পরিচয়

IMG_20221006_094439.jpg

আমার নাম মোঃ জামাল উদ্দিন। আর আমার ইউজার নাম @jamal7। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। প্রথমত বাঙালি হিসেবে আমি নিজেকে অনেক গর্বিত মনে করি। কারণ বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা। তার সাথে ফটোগ্রাফি করা আমার অনেক শখ। আমি যে কোন কিছুর সুন্দরভাবে ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করি। তার সাথে ভ্রমণ করতেও ভীষণ ভালো লাগে। বিশেষ করে নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালো লাগে। তার সাথে লেখালেখি করতে ও ভীষণ ভালো লাগে। যে কোন বিষয় নিয়ে কিংবা যে কোন গল্প লিখতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আর সব সময় নতুন কিছু করার চেষ্টা। নতুন ধরনের কিছু দেখলে করার চেষ্টা করি।
35FHZ8gBpndbrF88KC8i6DmfoqNdVfSnhzJshZCJksDJs27YpCCUjp1oaP6ko3mLJbQtLE76ZKc5r3aFXKh8EK2Xg2XbxHP97436Dksrat...K3RRDcGvdyC6bx3TE39Zctd2ho1pJ1hm9nj6RC6gfhhSEVDEf6zHmiqsgBwDTEDG8onxfxrWKe5ZMmiwAvtnX6XvsCqykCT5aFqMFBq2wcdKNs74j1RgTuza3g.png

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjde9gvbjDSDFUe2t87sHycAo9yh4cXNBQ2uKuZLC2jPzA8Qx5HRSqkJDxCm2F1P...XMCuWWrUK8WEzc1spvbtGymKcxp9cSaiY7YD7nmGv2yy3TJjQK1R5Bx6mMsJqHLdPZ4gBXB1M3ZGWR3ESWZxh8hd9tvb68pfdL8xHrioiqDnHuRUqd8FYt5aog.png

ধন্যবাদ সবাইকে

IMG-20240904-WA0027.jpg

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 3 days ago 

মায়ের মন সবসময় ছেলেমেয়েদের জন্য অন্যরকম থাকে তো। তবে আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম মহিলাটি শত কষ্টের পর ছেলের জন্য খাওয়া-দাওয়া নিয়ে গেলেন। আর ছেলে মা কে পরিচয় না দিলেও মা কিন্তু মায়ে রইলো। দুপুরের খাওয়া-দাওয়া নিজে না খেয়ে ছেলের জন্য নিয়ে গেল। আর এতে করে বোঝা যায় মায়ের মত আর কেউ আপন হয় না।

 3 days ago 

Screenshot_2025-09-19-19-01-18-417_com.twitter.android.jpg

Congratulations!

Your post has been manually upvoted by the SteemPro team! 🚀

upvoted.png

This is an automated message.

💪 Let's strengthen the Steem ecosystem together!

🟩 Vote for witness faisalamin

https://steemitwallet.com/~witnesses
https://www.steempro.com/witnesses#faisalamin

 yesterday 

Screenshot_2025-09-21-19-21-32-565_com.twitter.android.jpg

Coin Marketplace

STEEM 0.12
TRX 0.34
JST 0.033
BTC 112519.15
ETH 4161.79
USDT 1.00
SBD 0.85