শেষ বিকেলের মায়া - আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পার্ট ৩৫

in #story2 days ago
আসসালামুআলাইকুম

গল্পের বাকি অংশ সুরু করা যাক ......

.
নিয়তের হাদিসটি। তাই আমাদের নিয়তের উপর শয়তান খুব কঠোর পরিশ্রম করে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দেওয়া সেই উদাহরণটাই ধরুন, লোকটা যখন সালাতে দাঁড়াল তখন তার উদ্দেশ্য অবশ্যই ছিল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। কিন্তু যেই না সে খেয়াল করল কেউ তাকে দেখছে, সেই তার মনের কোণে শয়তান সৃষ্টির প্রশংসা পাওয়ার লোভ জাগিয়ে দিল। সে তার রুকু একটু দীর্ঘ করল। কিরাআত একটু সুন্দর করে পড়ল। সিজদাতে ফুঁপিয়ে কাঁদল। অথচ সাধারণভাবে হয়তো কোনো মতে খুব দ্রুত সালাত শেষ করে উঠত সে। এই যে সে ঠিক নিয়ত করে সালাতে দাঁড়িয়েছিল, আর শয়তান এসে তার নিয়তকে কলুষিত করে দিল, এটাকেই হাদিসে ছোট শিরক বলা হয়েছে।

IMG_7523.jpg

For Photos I use:


Camera
Iphone 12 Mini
Lens
Wide 26 mm-Equivalent
Photographer
@fxsajol
Location
Mirpur 12 , Dhaka, Bangladesh
Processing photos
Outdoor

কেউ যখন এই ছোট্ট শিরকই বার বার করতে থাকে, তখন সে একজন মুনাফিক হয়ে যায়। তার পুরো জীবনটাই লোক দেখানো হয়ে ওঠে। কেন সে মসজিদে গিয়েছে? যেন সমাজের লোকেরা তাকে নামাজি বলে। কেন সে সাদাকা করল? যেন লোকে তাকে দানশীল বলে।
হাদিসে এসেছে, আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি শরিকদের অমুখাপেক্ষী। যে ব্যক্তি তার আমলে আমার সাথে অন্য কাউকে শরিক করে, আমি তাকে ও তার শরিককে ছেড়ে দিই।' অর্থাৎ, আপনি যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও জন্য কিছু করে থাকেন, তাহলে আপনার কাজে প্রতিদান সেই অন্যজন দেওয়ার জন্যই আল্লাহ ছেড়ে দিবেন; আল্লাহ দিবেন না। অতএব, প্রত্যেকটি আমলই হতে হবে একমাত্র আল্লাহর জন্য। লোক দেখানো বা সুখ্যাতির মনোভাব রাখার কোনো সুযোগ নেই।

আমাদের নিয়ত দুটি সময়ে কলুষিত হতে পারে। কাজটা করার আগেই, মানে আপনি কাজটা করছেনই অন্যের প্রশংসা পেতে। আপনি মসজিদে গিয়েছেনই নামাজি নাম কুড়াতে। আপনি সাদাকা দিয়েছেনই দানবীর উপাধি গলায় ঝুলাতে। আপনি দ্বীন নিয়ে লেখালেখি করেনই শুধু ‘ভালো লেখক, শক্তিমান লেখক' এসব শুনতে৷ ফ্যান ফলোয়ার বাড়াতে। এটা একেবারেই নিকৃষ্ট ধরনের রিয়া। মুনাফিকির লক্ষণ। কাজটা করার মানে আপনি শুরু করেছিলেন ঠিক নিয়তেই। কিন্তু মাঝে খেয়াল করলেন, আরে লোকে তো আমাকে নামাজি বলছে। বাহ, সবাই আমাকে দানবীর নামেই চেনে। লেখালেখির খ্যাতি তো বেড়েই যাচ্ছে। এটাও রিয়া। এতে মোটামুটি সবাই কমবেশি আক্রান্ত। সুতরাং বুঝা গেল আমাদের নিয়ত প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে থাকে।

সুফিয়ান সাওরি রাহ. বলেন, “আমার নিয়তকে সঠিক করা আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন। কারণ তা ক্রমাগত পরিবর্তনশীল।' কিন্তু যখনই আপনি বুঝবেন আপনার নিয়ত পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে, আর আপনি নিজের সাথেই নিজে তুমুল যুদ্ধ করে আবারও নিয়ত ঠিক করে নিচ্ছেন, তবে আপনাকে অভিনন্দন। আপনি এ যাত্রায় বিজয়ী হলেন।

কেননা, শয়তান একটুও জিরিয়ে নিচ্ছে না। সে প্রতিনিয়তই আপনার নিয়ত কলুষিত করতে ব্যস্ত আছে। আপনার কাজ হলো যখনই সে এই চেষ্টা করবে, তখনই এই ধরনের চিন্তা অন্তরের কোনো কোণাকাঞ্চিতেও জায়গা না দিয়ে ঠেলে বের করে দেওয়া।
কিন্তু ধরুন, আপনি একেবারে পাকা নিয়তে কোনো একটা কাজ করলেন। কাজের মাঝেও শয়তান আপনার নিয়তকে কলুষিত করতে পারল না, তবে কাজটা শেষ হওয়ার পর মানুষজন আপনার প্রশংসা করতে শুরু করল, যা আপনার কিছুটা ভালোই লাগছে, তাহলে এটাও কি রিয়া? এই প্রশ্নও একজন সাহাবি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে করেছিলেন। উত্তরে নবিজি বলেছিলেন, 'এগুলো মুমিনের জন্য প্রাথমিক সুসংবাদ৷' মানে, এই প্রশংসাগুলো আল্লাহর দেওয়া প্রাথমিক সুসংবাদ। অবশ্যই আখিরাতে আরও অনেক উত্তম কিছু রেখেছেন তিনি। প্রত্যেকেই নিজের নিয়ত ভালো করে জানে। নিজের নিয়ত ঠিক রেখে কাজ করার পর এই প্রশংসাগুলো, সম্মানগুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে নিয়ামত।

কোনো একটা লেকচারে শুনেছিলাম, ‘আন্তরিক কাজগুলো অন্য অন্তরের আন্তরিকতার চাবি।' অন্যভাবে বললে একজনের আন্তরিক কাজ দেখে অন্যরাও আন্তরিকতার সাথে কাজ করার অনুপ্রেরণা পায়। আর একটা ব্যাপার জেনেছিলাম সেই লেকচার থেকে। যে কোনো আন্তরিক কাজে আল্লাহর দেওয়া একটা নিয়ামত হলো মানুষ সেই কাজটাকে ভালোবাসবে। একই কাজ হয়তো অন্য কেউ অনেক ভালো করে করল, কিন্তু তার নিয়ত ছিল কলুষিত। দেখা যাবে যার নিয়ত ঠিক ছিল মানুষের অন্তরেও তার কাজের প্রতিই আকর্ষণ তৈরি হচ্ছে। এটা আল্লাহর দেওয়া অনেক বড় একটা নিয়ামত।

এখানে একটা ছোট্ট কথা বলে নিই। দ্বীনের কাজের সাথে কিছু অর্থ উপার্জনের নিয়ত করা যাবে, তবে অন্য কারও প্রশংসার জন্য দ্বীনের কোনো কাজ করা যাবে না। উপার্জন ও প্রশংসা কুড়ানোর মধ্যে পার্থক্য আছে। যেমন : মসজিদের ইমাম। একজন ইমাম যদি তাঁর বেতন না নেন, তাহলে তিনি তাঁর ঘরসংসার চালাবেন কী করে? তাই অর্থ উপার্জন ও দ্বীনের কাজের নিয়ত একসাথে করাতে কোনো শিরক নেই। অন্যদিকে প্রশংসা কুড়ানো ও দ্বীনের কাজ এই দুই নিয়ত একসঙ্গে করা যাবে না। এটাকেই রিয়া
বলা হয়েছে।

IMG_7535.jpg

For Photos I use:


Camera
Iphone 12 Mini
Lens
Wide 26 mm-Equivalent
Photographer
@fxsajol
Location
Mirpur 12 , Dhaka, Bangladesh
Processing photos
Outdoor

রিয়া থেকে কীভাবে বাঁচা যায়? সারাক্ষণ নিজের নিয়ত সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। বার বার নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে—এই কাজটা আমি কেন করছি? নিজের নিয়ত নিয়ে সারাক্ষণ সন্দিহান থাকাটাই সঠিক নিয়তের উপর থাকার লক্ষণ। মানে, আপনি সারাক্ষণই ভয়ে থাকবেন, ‘এই কাজে আমার নিয়ত ঠিক আছে তো!'

This is original content by @fxsajol . Stay with me and get more post about travel, photography, life, story, technology and motivation etc. Please upvote, comment and resteem my post. Again thank you so much 😊
সময় নিয়ে গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
Sort:  

Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 9.195392954817997 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 63749.66
ETH 3419.02
USDT 1.00
SBD 2.48