শেষ বিকেলের মায়া - আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পার্ট ১৩

in #story9 days ago
আসসালামুআলাইকুম

গল্পের বাকি অংশ সুরু করা যাক ......

.

অনেক তো হলো। নিজেদের নিয়ে অনেক ব্যস্ত থেকেছি আমরা। অনেক ভাষা শিখেছি। সেগুলোর প্রয়োগও করেছি। মজার মজার খাবার রেঁধেছি। এত শত কাজের মধ্যে বাকি থেকে গিয়েছে শুধু কুরআন শেখা। এখন আর কী অজুহাত দেখানো যাবে? আমরা অনেকেই নানান অজুহাতে দূরে ঠেলে দিয়েছিলাম কুরআনকে। জগতের যাবতীয় কাজ আমরা ঠিকই করতে পারি, আমাদের সময় হয় না শুধু একটু কুরআন নিয়ে বসার। এখন তো সারা বিশ্ব লকডাইন হয়ে আছে। তাই এখন থেকে যখনই ‘কোয়ারেন্টাইন’ শব্দটা শুনবেন শব্দটাকে একটু পরিবর্তন করে ‘কুরআন টাইম' করে নিবেন।

IMG_7443.jpg

For Photos I use:


Camera
Iphone 12 Mini
Lens
Wide 26 mm-Equivalent
Photographer
@fxsajol
Location
Mirpur 12 , Dhaka, Bangladesh
Processing photos
Outdoor

‘ব্যস্ত আছি’ ‘ব্যস্ত আছি’ বলেই তো এক জীবন পার করলাম আমরা। শত কাজের ভিড়ে আমাদের কুরআন নিয়ে বসার সময় কোথায় হতো। ভাবতাম, একদিন সময় পেলে ঠিকই খুব গভীরভাবে কুরআন নিয়ে পড়াশোনা করব। তাই সেই সময়টা বুঝি আল্লাহই আমাদের জন্য করে দিলেন। লৌকিক সব কাজের চাপ থেকে মুক্ত করে, একেবারে হঠাৎ আমাদের দু'হাত ভরে সময় ঢেলে দিলেন। তো এটা কীভাবে ‘কোয়ারেন্টাইন’ হতে পারে? এটা তো ‘কুরআন টাইম'।

আপনি আপনার পরিবারের সবার সাথে নিজের ঘরে আছেন। এমন সময় সুযোগ কি এই জীবনে পেয়েছিলেন? এটা কোয়ারেন্টাইন না; এটা কুরআন টাইম। শুধু আপনার জন্য না; আপনার পুরো পরিবারের জন্য। এতদিন যে ইচ্ছেগুলো মনের কোণে পুষে রেখেছিলেন। আর সময়ে অসময়ে যে ইচ্ছেগুলো দীর্ঘশ্বাস হয়ে বেরিয়ে এলে আনমনে উচ্চারণ করতেন, ‘ইশ! যদি একটু সময় পেতাম, তাহলে বাচ্চাদের এটা ওটা শিখাতাম।' হ্যাঁ, এখনই সময়; যা যা ভেবে রেখেছিলেন তা শেখান আপনার বাচ্চাদের। সব সময়ই মনে মনে একটা আক্ষেপ থাকত আপনার? আপনি তো কুরআনের সাথে খুব গভীর আবেগময় সম্পর্ক করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যান্ত্রিক জীবনের যাঁতাকলে তা আর হলো কই। ভাবছিলেন,

তাতে খুব বিরক্তি প্রকাশ করছেন। মোটামুটি সবাই খুব বিরক্ত। কে বাসায় কোন মাস না পেরুতেই অফিস থেকে আবার ট্যুরে যেতে হচ্ছে নীরাদের। রোকসানা আপা আত্মীয়কে এনে রাখবে সেই ভাবনায় ব্যস্ত। নীরার তেমন চিন্তা নেই। সেতু আছে তো। সব যেভাবে মেয়েটা সামলে নিচ্ছে তাতে রীতিমতো মুগ্ধ নীরা। কলিগদের কাছেও সেতুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ নীরা। তবে এই সবকিছুতে পানি ঢেলে রোকসানা আপা বলে বসেছিলেন, ‘দুজন গাইরে মাহারামকে এক ছাদের নিচে একা রেখে আসো তুমি! ভয়
করে না?'

নীরা অবাক হয়ে প্রশ্ন করেছিল, ‘কীসের ভয়?'
ফাইলপত্র ঘাঁটতে ঘাঁটতে রোকসানা আপা খুব নির্লিপ্তভাবে বলেছিলেন, ‘তাদের তৃতীয়জন যে শয়তান!’
সেই কথাটা হুটহাট কানে বেজে ওঠে নীরার। মনকে অস্থির করে তোলে। পরক্ষণেই নিজের অরুচিকর ভাবনায় নিজেই লজ্জিত হয় নীরা। শাহেদের সাথে ৭ বছরের প্রেম ছিল নীরার। তারপর ৪ বছরের সংসার। আর কোথাকার কোন রোকসানা আপার কথায় কিনা শাহেদের প্রতি সন্দেহ তৈরি হয় মনে। ছিহ! কেমন হিপোক্রেট মন নীরার।

তবে নিজের মনকে দুষেও খুব একটা কাজ হয় না। ইদানীং সবকিছুতেই কেমন যেন একটা অযাচিত ঘ্রাণ পায় নীরা। শাহেদের মুখে সেতুকে নিয়ে প্রশংসাগুলো মাত্রাতিরিক্ত লাগে। সেতুর সদা হাস্যোজ্জ্বল মুখটাও কাঁটার মতো বিঁধে নীরার মনে। নিজের মন থেকে এমন ভাবনাগুলো ঝাঁটিয়ে বিদায় করে নীরা; কিন্তু এই বেহায়া ভাবনাগুলো কোনো বাঁধা না মেনেই বারে বারে ফিরে আসে।
এবারের ট্যুরটা তিন দিনের। প্রতিবারের মতো এবারও সেতুকে সব বুঝিয়ে দিতে যাবে—এমন সময় সেতু হেসে বলে উঠল, ‘আর বলতে হবে না, আপু। আমি এখন পারি সবটাই।'

শাহেদও সেতুর কথায় লায় দিয়ে বলল, “হুম! সেতু তো এক্সপার্ট হয়ে গিয়েছে।'
কথাটায় সেতু খিলখিল করে হেসে উঠল। সামান্য কথায় এত হাসার কী আছে বুঝে পেল না নীরা। যাওয়ার সময় কথা না বাড়িয়ে ঐশীর কপালে চুমু খেয়ে বেরিয়ে পড়ল নীরা।

শাহেদ অফিস থেকে ফেরার পর ঐশীকে শাহেদের কোলে দিয়ে হালকা লিকারের রং চা করাটা এখন অনেকটা রুটিন হয়ে গিয়েছে। রং চা খেতে খেতে টুকটাক গল্প। সেতুর রং চা মোটেই ভালো লাগত না; কিন্তু ইদানীং বেশ আহ্লাদ করে রং চায়ের এই মুহূর্তটার
জন্য অপেক্ষা করে সেতু।

সময় নিয়ে গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
Sort:  

Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 9.258391829045532 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @fxsajol,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 60632.95
ETH 3382.33
USDT 1.00
SBD 2.51