শেষ বিকেলের মায়া - আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পার্ট ১৭

আসসালামুআলাইকুম

গল্পের বাকি অংশ সুরু করা যাক ......

.

আজ আখি এসেছিল আমাদের বাসায়। সেদিন নাকি আমাকে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে যেতে দেখেছিল। তারপর এই দুই দিনে কিছু ফান্ড কালেক্ট করে আমাদের সবার জন্য কিছু খাবার আর ওষুধ দিয়ে গেল। ওর কাজ ছিল। আরও কিছু ফ্যামিলিতে কিছু আপু মিলে খাবার আর ওষুধ দিচ্ছে। খুব ব্যস্ত। তাই বেশিক্ষণ বসল না।

তবে আখি চলে যাওয়ার পর আমার মনে হতে লাগল এত দিন আমি অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম আজ যেন আখি আমাকে একটু বাঁচার সাধ দিল। খুব দ্রুত রান্না শেষ করে ভাইয়াকে আর আম্মুকে ওষুধ খাইয়ে দিলাম। সবকিছু কেমন যেন ভ্রম মনে হয় ইদানীং আমার কাছে; যেন খুব ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন দেখছি আমি।

For Photos I use:

---

Camera	Iphone 12 Mini
Lens	Wide 26 mm-Equivalent
Photographer	@fxsajol
Location	Mirpur 12 , Dhaka, Bangladesh
Processing photos	Outdoor

---

প্রতিদিন ঘুমোতে যাওয়ার সময় মনে হয়, সকালে উঠলেই দেখব, সব ঠিক হয়ে গেছে। রুবি, সুমি, মিনি সবাই, আবার আমাদের বাসায় এসে আম্মুর কাছে নানান রকম খাবারের জন্য আবদার করবে। আম্মু প্রথমে কিছুক্ষণ পারব না বলে ভাব নেবে। ওরা আম্মুর পিছু নিয়ে, ‘প্লিজ আন্টি। প্লিজ। আপনি না কত্ত ভালো।' এসব বলে বলে আম্মুকে তেল দিতে দিতে রাজি করাবে। এতে আমি হালকা অভিমানে ঢং করে নাক ফুলিয়ে বলব, ‘হ্যাঁ। ওরা যা বলে তা-ই তো করবা। আমি কিছু বললে তো কখনোই করো না।' এতে সবাই হেসে উঠবে।

তবে আমার এই স্বপ্ন কি আদৌ সত্যি হবে? আম্মু, ভাইয়া সুস্থ হলেও কি বান্ধবীদের সাথে আমার সম্পর্কটা আর আগের মতো হবে? ওরা তো কেউ এখন আমার ফোন- কল রিসিভ করে না। করোনা ছোঁয়াচে, বুঝলাম। কিন্তু আমার সাথে ফোনে কথা বললেও কি ওদের করোনা ধরে ফেলবে? হায়! আমার ছোট্টবেলার বান্ধুবীরা!

সেদিনের পর থেকে আখি একটু পরপরই কল দিয়ে খোঁজ নিচ্ছে। আম্মুর আর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে না। ভাইয়ার জ্বর অনেক কমেছে। এখন হাঁটাচলাও করতে পারছে আলহামদুলিল্লাহ। এখন মনে একটু সাহস পাচ্ছি। খুব করে বিশ্বাস করছি, এটা করোনা না। ওরা দ্রুতই সুস্থ হয়ে যাবে

ইনশাআল্লাহ। সব ক্ষমতা আল্লাহর হাতে। আল্লাহ চাইলেই ওরা সুস্থ হয়ে গেলে ইনশাআল্লাহ আমিও আখির সাথে অন্যদের সাহায্য করতে বের হব। হ্যাঁ, অবশ্য আখির মতো ফুল প্রটেকশন নিয়ে। এত দিনে যা বুঝলাম, মানুষ আসলে ভয় পাচ্ছে বেশি। কথায় আছে না ‘বনের বাঘে না খাইলেও মনের বাঘে যায়।” আমি নিজেও এতটা মনোবল পেতাম না, যদি আখি ক্ষণেক্ষণে আমাকে কল দিয়ে এত না বুঝাত। সাহায্য মূলত আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে। আখিই বলেছে।

আমার হন্তদন্ত হয়ে ছুটে যাওয়া যদি আল্লাহ আখিকে না দেখাতেন, তাহলে তো সে-ও জানত না, আমি কেমন সমস্যায় আছি। ওকে তো আমি কিছুই বলিনি। যাদের বলেছি তারা সবাই দেখেও না দেখার ভান করেছে।

আখির শেয়ার করা কিছু পিকের মানে আমি এখন বুঝতে পারছি। একটা পিক এমন ছিল, যেখানে লেখা ছিল ‘সেদিন সব বন্ধুরা শত্রুতে পরিণত হবে শুধু দ্বীনদাররা ছাড়া।' এটা তখন আমার কাছে বাড়াবাড়ি মনে হয়েছিল। এখন বুঝি। পৃথিবীতে সামান্য করোনা ভাইরাস আমার ছোট্টবেলার বান্ধুবীদের কেমন রূপ দেখাল, যা আমি আগে কল্পনাও করিনি। আখিকে কথায় কথায় এটা বলাতে সে বলল, ও যদি দ্বীনের পথে না আসত, তাহলে হয়তো সে নিজেও রুবি, মিনি, সুমির মতোই করত। কথাটা আমার ভেতরে তোলপাড় তুলে দিল।

For Photos I use:

---

Camera	Iphone 12 Mini
Lens	Wide 26 mm-Equivalent
Photographer	@fxsajol
Location	Mirpur 12 , Dhaka, Bangladesh
Processing photos	Outdoor

---

আখি যে দ্বীনের কথা বলছে সে দ্বীন তো আমারও। রুবিরও, সুমিরও, মিনিরও। আমরা সবাই তো মুসলিম; তাহলে আমরা কেমন মুসলিম? আল্লাহ কোনো কিছুই এমনি এমনি করেন না। অহেতুক কাজ থেকে আল্লাহ পবিত্র। আমাদের এ পরীক্ষা নেওয়ার পেছনে অবশ্যই তাঁর হিকমত রয়েছে। আমাদের কাজ ধৈর্যের সাথে নিজের দায়িত্বে ফোকাস করা। আখিও সেটাই করছে। আমিও ধৈর্য ধরে সাওয়াবের আশায় নিজের দায়িত্বে ফোকাস করব ইনশাআল্লাহ।

This is original content by @fxsajol . Stay with me and get more post about travel, photography, life, story, technology and motivation etc. Please upvote, comment and resteem my post. Again thank you so much 😊

সময় নিয়ে গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ