শেষ বিকেলের মায়া - আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পার্ট ৩৩
গল্পের বাকি অংশ সুরু করা যাক ......
.
‘আহারে, তারপর?’ ‘এর মাঝে মেয়েটা কিছুদিন থেকে খেয়াল করছে যে, বরের মন ভালো না। দুই বাচ্চা সামলে জিজ্ঞেস করতে করতে একটু দেরি হয়ে যায়।’
‘তারপর?’ ‘ছেলে তো কিছুতেই বউকে সব খুলে বলছে না। কারণ সে দেখছে যে, মেয়েটাও বাচ্চা দুটোকে নিয়ে খুব কষ্ট করছে, তবুও বরকে কোনো রকমের প্রেশার দিচ্ছে না। তারপর খুব চাপাচাপির পর সব খুলে বলল। তো, রাতে দুজনের মধ্যে এমন কথা হলে, সকালে মেয়ে এসে মার কাছে ১০০০০ টাকা চাইল। বাড়ি ওয়ালির জন্য ১০০০০ টাকা দেওয়াটা মোটেও কোনো ব্যাপার না, তবুও তিনি বকাঝকা করে মেয়েকে রুম থেকে বের করে দিলেন। ছেলেটা কিন্তু টাকাটা চাইতে বলেনি। মেয়েটা নিজেই টাকা চেয়েছিল, কিন্তু ছেলেটা তো সব কথাই শুনেছিল। তখনই রাগ হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় ছেলেটা।'
For Photos I use:
Camera |
Iphone 12 Mini |
Lens |
Wide 26 mm-Equivalent |
Photographer |
@fxsajol |
Location |
Mirpur 12 , Dhaka, Bangladesh |
Processing photos |
Outdoor |
‘তারপর?’ ‘তারপর সন্ধ্যায় ফিরে। হাতে একটা পলিথিন। আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমি জানালা দিয়ে দেখেছিলাম পলিথিনে এক প্যাকেট সুজি আর বাচ্চাদের জন্য কোনো খেলনা জাতীয় কিছু ছিল।’ ‘নিশাতকে বারান্দায় দেখে এক গাল হেসে জিজ্ঞেস করল, বাবু কেমন আছ? আমি উলটো জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কেমন আছেন? বলল, আপা মনটা ভালো নেই। দোয়া করবেন আমার জন্য।'
‘সেই সন্ধ্যায়ই ছেলেটা তাদের গ্রামের বাড়ি চলে যায়।’ ‘মানে?’ ‘মানে বাচ্চার জন্য খেলনা আর সুজির প্যাকেট ঘরে দিয়ে নিজের জিনিস নিয়ে নিজের গ্রামের বাড়ি চলে যায় ছেলেটা।’
‘তো কেউ আটকাল না?’ ‘মেয়েটা আগেই বুঝেছিল, তাই বাচ্চাদের কাপড়ের সাথে বরের সব কাপড় বালতিতে ভিজিয়ে দিয়েছিল, যেন যেতে না পারে। কিন্তু ছেলেটা ওই ভিজা কাপড় নিয়েই ঐ রাতেই চলে গেল।'
‘অনেক জেদ চেপেছিল হয়তো মনে।’ ‘হুম। স্বাভাবিকই তো। আহা রে।
তারপর?” ‘তারপরদিন ভোরের দিকে হঠাৎ দেখলাম বাড়িওয়ালিরা সবাই ছেলেটার গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে। বুঝতে পারলাম যে, কোনো ঝামেলা হয়েছে।’ ‘হুম, তা না হলে হুট করে কেন যাচ্ছে...’ ‘সেটাই, তাও আবার এত্ত সকালে...
‘ডিভোর্স হয়ে গিয়েছিল ওদের?’ ‘আমরাও সেটাই ভেবেছিলাম... কিন্তু...’ ‘কিন্তু... কী?' ‘সেই রাতে নাকি ছেলেটার বাড়ির সবার সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছিল খুব।” ‘টাকা নিয়েই?’ ‘হ্যাঁ! ছেলের বাড়ির ওরা টাকা দিতে চাচ্ছে না, আর ছেলে মেয়ের ফ্যামিলি থেকে নিতে চাচ্ছে না। এই নিয়ে...
‘তারপর?’ ‘অনেক রাত পর্যন্ত কথা বলে নাকি ঘুমাতে গিয়েছিল সবাই। ছেলে আবার ঘুমাতে যাওয়ার সময় মাকে বলেছিল, মা যদি তাহাজ্জুদের সময় ওঠে, তাহলে যেন
ছেলেকে একটু ডেকে দেয়।'
‘উনি কি নামাজি ছিলেন? এতক্ষণ তা বুঝিনি।’ ‘মাও তাহাজ্জুদের সময় ডেকে দিল। তারপর নিজের মতো নামাজ পড়তে চলে গেলেন... কিন্তু ফজরের আজানের একটু আগে...।’ ‘একটু আগে?’ ‘একটু আগে ... হঠাৎ মসজিদের মুআজ্জিন এসে ছেলেটার
বাবাকে জিজ্ঞেস করল, মিনহাজ ঘরে আছে কি না।'
মিনহাজ ঘরেই আছে, একটু আগেই তাহাজ্জুদের জন্য উঠেছে।'
‘কেন?’ ‘এতে বাবা-মা দুজনই খুব অবাক হলেন। তাও স্বাভাবিকভাবেই বললেন যে,
‘তারপর?’ ‘মুআজ্জিন বললেন, আচ্ছা তাহলে একটু ডেকে দেন তো।’
‘কেন হঠাৎ মুআজ্জিন ওনাকে খুঁজতে এলেন?’ ‘কিন্তু ডাকতে গিয়ে ছেলেটার বাবা দেখলেন ছেলেটা নিজের রুমে নেই। তাই মুআজ্জিনকে বললেন, একটু আগেই তো ছিল, এখন হয়তো নামাজে গিয়েছে।’ ‘আচ্ছা...'
‘মুআজ্জিন তখন ছেলেটার বাবাকে বললেন, আপনি একটু আমার সাথে আসেন তো। এই বলে ছেলেটার বাবাকে নিয়ে গেলেন।'
‘কোথায়?’ ‘মসজিদের কাছে একটা নদী ছিল আর সেই নদী আর মসজিদের একেবারে কাছেই ছিল একটা বট গাছ। ছেলেটার বাবাকে সেই বট গাছের কাছে নিয়ে মুআজ্জিন উপরের দিকে ইশারা করে দেখালেন।’
‘কী?’ ‘দেখার সাথে সাথেই ছেলেটার বাবা অজ্ঞান হয়ে গেলেন...'
‘কেন?’ ‘বট গাছের মাঝামাঝি একটা ডাল... তার নিচে সমান্তরাল আর একটা ডালের মাঝখানে ছেলেটা ঝুলে আছে...
‘মানে? আত্মহত্যা করেছে?' 'হ্যাঁ...’
‘আশ্চর্য! কেন? টাকার জন্য?” উত্তেজিত কণ্ঠ নিম্নির।
‘অভিমান করে!’ ‘এটা কেমন অভিমান! আশ্চর্য! পিচ্চি দুটা বাচ্চার কী হবে একবার ভাবল না। মেয়েটার কী হবে তা ভাবল না। টাকার সমস্যা আজকে আছে কাল তো থাকবে না। এর জন্য নিজের জীবন দিয়ে দিতে হবে! রাগে যেন নিম্নির গাল লাল হয়ে
যাচ্ছে।
For Photos I use:
Camera |
Iphone 12 Mini |
Lens |
Wide 26 mm-Equivalent |
Photographer |
@fxsajol |
Location |
Mirpur 12 , Dhaka, Bangladesh |
Processing photos |
Outdoor |
‘হুম দিয়ে দিল তো...' ‘খুব রাগ হচ্ছে আমার...'
‘এই বয়সটা এমনই... ধৈর্য কজন ধরতে পারে বলো...’ ‘তাই বলে কারও কথা না ভেবে আত্মহত্যা করবে? করবেই যখন বিয়েটা করেছিল কেন?' ‘এই বয়সে দায়িত্ব নেওয়ার যোগ্য কয়জন হয়? দায়িত্বহীন আনন্দ সবাই করতে পারে। কিন্তু ঘাড়ের উপরে
দায়িত্ব এসে পড়লে...।'
Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 9.196271511866122 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.