জেমস ওয়াট বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন
বাষ্পীয় ইঞ্জিনের কথা উঠলে জেমস ওয়াটের কথাও ওঠে। কিন্তু তিনি বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কার করেননি বরং বলা ভালো তিনি উন্নততর করেছেন। বাষ্পীয় ইঞ্জিনের ইতিহাস দেখলেই আপনার কাছে ব্যাপারটি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
প্রথম শতাব্দীতে আলেকজান্দ্রিয়া ছিল গ্রিসের অংশ। হিরো নামের এক মানুষ থাকতেন সেখানে। তিনিই বাষ্পীয় ঘূর্ণন প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ আবিষ্কার করেন। টারবাইনের আবিষ্কর্তা বলা চলে তাঁকে। তিনি পানিভর্তি এক পাত্রের ওপরের অংশে একটি গোলক আটকে দেন। নিচে জ্বেলে দেন আগুন। ফলে কিছুক্ষণ পরে বাষ্পীয় চাপে গোলকটি ঘুরতে থাকে। তাঁর এ চিন্তা দিয়েই পৃথিবী চলেছে ১৬ শতক অবধি।
এরপর ১৭ শতকে যখন খনিতে কাজ বেড়ে যায়, তখন খনি থেকে পানি নিঃসরণ করা জরুরি হয়ে পড়ে। ১৬০৬ সালে জেরোনিমো দ্য আয়ানজ নামের এক স্প্যানিশ খনি প্রশাসক বাষ্পচালিত পানি নিঃসরণ যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। তিনি সেভিলের রুপার খনিতে এটি ব্যবহার করেছেন। জেরোনিমোকে এয়ারকন্ডিশনিং ব্যবস্থার উদ্ভাবকও ধরা হয়।
এরপর ১৬৯৮ সালে থমাস স্যাভেরি নামের এক ইংরেজ নতুন রকমের একটি পানির পাম্প আবিষ্কার করেন। তিনি এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞানী ডেনিস পাপিনের (প্রেশার কুকারের আবিষ্কারক) তত্ত্ব কাজে লাগান। ১৭১১ সালে থমাস নিউকামেন নামের আরেক ইংলিশম্যান স্যাভেরির ইঞ্জিনকে আরো উন্নত করেন। তবে এর দুর্বলতা ছিল—এতে শক্তি বেশি অপচয় হতো এবং ঠাণ্ডা রাখার জন্য প্রচুর পানি লাগত।
১৭৬৫ সাল। মঞ্চে এলেন জেমস ওয়াট। স্কটিশ এই মানুষটি গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে কারিগরি বিভাগে কাজ করতেন। তিনি নিউকামেনের যন্ত্রটি ঠিক করার দায়িত্ব পেলেন। তিনি একে বেশি গরম হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে একটি সিলিন্ডার যোগ করলেন। ফলে শক্তির অপচয়ও কমে গেল। ম্যাথিউ বল্টনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি এটি বাজারজাতকরণে লেগে গেলেন। প্যাটেন্ট নিলেন ১৭৭৬ সালে। পরে তিনি এতে গিয়ার সিস্টেম যোগ করেন। ১৮ শতকেই তাঁর এই যন্ত্র বিদেশেও পাড়ি জমায়।