News-মানবিকতা থাকা উচিত, মমতা
রোহিঙ্গা প্রশ্নে মানবিকতা বিসর্জন দেওয়া উচিত নয় বলেই মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি মনে করেন , যে কোনও গোষ্ঠীর কোনও কোনও মানুষ ভাল , কেউ বা ভাল নয়৷ কিন্ত্ত সাধারণ মানুষের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদীদের গুলিয়ে ফেললে চলবে না৷ সোমবারই কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামা পেশ করে জানিয়েছে যে , রোহিঙ্গা শরণার্থীরা দেশের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক৷ সোমবার বিকালে নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল৷
তখনই মমতা জানিয়ে দেন , কেন্দ্রের সঙ্গে তাঁর অবস্থানের কোনও মিল নেই৷ কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন , যে এলাকাগুলিতে রোহিঙ্গারা রয়েছেন , সেখানেও বিশেষ নজরদারি থাকছে৷ প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী বলেন , ‘আদালতে বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে৷ বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আমি কিছু বলি না৷ সেটা বলা ঠিকও নয়৷ ’ এর পরই অবশ্য সরাসরি রোহিঙ্গাদের নাম না -করে তিনি জানিয়ে দেন এই ব্যাপারে তিনি তাঁর আগের অবস্থানেই অনড় রয়েছেন৷ কারণ , শুক্রবারই ট্যুইট করে তিনি বলেছিলেন , ‘রোহিঙ্গাদের সাহায্য করার জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের যে আবেদন , তা আমরা সমর্থন করি৷ আমরা এটাও দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি যে , সব সাধারণ মানুষই সন্ত্রাসবাদী নয়৷ আমরা সত্যিই চিন্তিত৷ ’ তিনি এ দিন বলেছেন , ‘কেন্দ্রীয় সরকার রোহিঙ্গা শিশুদের প্রত্যর্পণের জন্য রীতিমতো তালিকাও বানাতে বলেছে৷ আমাদের শিশু সুরক্ষা কমিশন শিশুদের প্রত্যর্পণে নারাজ৷ মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ালেও দেশের আইনশৃঙ্খলায় তারা যাতে কোনও সমস্যা তৈরি করতে না -পারে , সে বিষয়েও নজর রাখছে বাংলাদেশ৷
সোমবার কলকাতায় ‘আজকের বাংলাদেশ ’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় এই মতই ব্যক্ত করেন বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ শাহরিয়ার আলম৷ তিনি বলেন , নাগরিকত্ব দিয়েই তাদের মায়ানমায়ারে ফিরিয়ে নেওয়াই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের পথ৷ তা করা দরকার কোফি আন্নান কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী৷
আলোচনাসভায় বাংলাদেশ সরকারের তরফে জানানো হয় , সেখানে এখন প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছেন , যাঁরা পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে৷ এঁদের মধ্যে মাত্র ৩৪ হাজার নথিভুক্ত৷
সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল , বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কি রোহিঙ্গা সমস্যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ? জবাবে বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী জানান , ‘এখনই এমন কোনও প্রভাব নেই৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট ভাবেই জানিয়েছেন , সরকার যদি ১৬ কোটি বাংলাদেশির খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে , কবে আরও ৮ লাখ উদ্বাস্ত্ত মানুষকেও খাওয়াতে পারবে৷ তবে , আন্তজার্তিক স্তরে এক স্থায়ী সমাধান দরকার৷ ’ শাহরিয়ার জানান , মায়ানমারে রোহিঙ্গারা পুলিশকে আক্রমণ করেছে৷ বাংলাদেশ সরকার কোনও ভাবেই তা সমর্থন করছে না৷ এই পরিস্থিতিতে কোনও জঙ্গি সংগঠনই যাতে এর ফায়দা তুলতে না -পারে , সে বিষয়েও নজরদারি রাখছে বাংলাদেশ৷ একইসঙ্গে তাদের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনগুলির যোগাযোগ রয়েছে , এমন কোনও তথ্যপ্রমাণও বাংলাদেশ সরকারের হাতে নেই৷