নতুন প্রবীণদের নিয়ে আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পর্ব ০৯
কমরেড পলিন! আপনাকে লাল সেলাম । গত কয়েক বছর ধরে আমরা একত্রে পার্টির পত্রিকা বিক্রি করছি। গণচাঁদা সংগ্রহ করছি। সভা-সমাবেশ, মিছিল-লংমার্চ করেছি। দলের মধ্যে নারী-পুরুষের সমান অধিকার রয়েছে। ফলে আপনি হাত বাড়িয়ে করমর্দন করতে সংকোচ বোধ করতেন না । আপনার হাতের স্পর্শে আমার মধ্যে শিহরণ জাগতো । হাতটা ছাড়তে ইচ্ছে করতো না। আপনার মুখের দিকে তাকিয়ে সারাদিনের পরিশ্রম- ক্লান্তি ভুলে যেতাম। আপনার সাজগোজ না থাকায় আরো বেশি আকর্ষণীয় লাগছে। পার্টির রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে একসাথে ঢাকা গিয়েছি। আপনাকে একান্তে কাছে পাবার মনোবাসনা দীর্ঘদিনের।
আপনার সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়াটা দলের নেতা-কর্মীরা পছন্দ করে না। দলের পাঠচক্রে জেলা নেতারা প্রেম এক ধরণের মানসিক দুর্বলতা বলে বর্ণনা করেন। এতে একজন মানুষের বিপ্লবী হয়ে ওঠা কঠিন বলে মন্তব্য করেন । আমি বুঝতে পারি বিপ্লবীরা যুগের সেরা মানুষ। বিপ্লবীদের বিপ্লব ছাড়া আর কোনো চিন্তা নাই। ঘর-সংসার জীবন-যৌবন সবকিছু বিপ্লবের জন্য উৎসর্গ করতে হয়। তবুও কেনো জানি আপনাকে নিয়ে সংসার করতে মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠে। আপনি হয়তো বলবেন, এটি আমার মধ্যবিত্তসুলভ দোদুল্যমানতা। আমি আপনাকে চাই আর বিপ্লবও চাই । ভালোবাসা আর বিপ্লব পরস্পর বিরোধী হতে পারে না। মানুষকে ভালোবাসি বলে বিপ্লব চাই। আপনাকে ভালোবাসি বলে সংসার চাই । উত্তরের অপেক্ষায়- ইতি হরিচরণ পাল । কমরেড পাল! আপনার পত্র পেয়ে কিছুটা অবাক হয়েছি। পত্র লিখে প্রেম নিবেদন ২০/২৫ বছর আগের একটি ধরণ। কলিযুগে কেউ প্রেমপত্র লেখে না । তার উপর কয়েক বছর ধরে আমরা দুজন একত্রে দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নেই।
বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস হারিয়ে মমিনুল এনজিওতে চাকরি নিল । টেনেটুনে বিএ পাস। লড়াই-সংগ্রাম করে মধ্যম পর্যায়ে উঠতেই বয়স চল্লিশের কোঠায় মাথায় বড় টাক । অনিশ্চিত চাকরি। বিয়ের বাজারে মমিনুল দিশেহারা । সহকর্মী মোমেনার ত্রিশ পেরিয়েছে। আগে একবার বিয়ে হয়েছিল, টেকেনি। মোটর সাইকেল চালাতে গিয়ে পায়ে আঘাত পেয়েছিল, তাই খুঁড়িয়ে হাঁটে। চেহারা-সুরত তেমন একটা না । মোমেনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস । কাজকর্ম ভাল বোঝে। কর্তৃপক্ষ ভাল জানে। দুপুরে এক সাথে খাবার খেতে গিয়ে মোমেনার সাথে মমিনুলের টুকটাক কথা হত। মোমেনা একদিন বিকেলে মমিনুলকে বিয়ের প্রস্তাব দিল। সারারাত মমিনুলের ঘুম হল না। পরদিন অফিসে গেল না। অতঃপর মমিনুল বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হল। বিয়ের এক বছর পূর্ণ হবার আগেই মেয়ের বাবা হলো । তিন মেয়ের পর ছেলের মুখ দেখে মোমেনার মনটা খুশিতে ভরে উঠলো। চার ছেলেমেয়ের পড়াশুনা, দেখাশুনা করতে মমিনুল-মোমেনা হিমশিম খাচ্ছিল। মমিনুলের চাকরি ছোট, বেতন কম তাই চাকরি ছেড়ে ঘর-সংসারে মন দিল। অনেকেই মমিনুলের নির্বুদ্ধিতার জন্য তীব্র সমালোচনা করল। মমিনুল গা করেনি। বড় দু’মেয়ের চাকরি ও বিয়ে হল। সামনের বৈশাখে মমিনুল ৬৪তে পা দেবে। ছোট মেয়ে আর ছেলের পড়াশুনা নিয়ে খুবই চিন্তিত । সংসারে ব্যয় বেড়েছে অনেক। স্ত্রীর কাছ থেকে বাজার খরচ যা পায় তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। বাজার খরচ থেকে টাকা বাঁচে না । নিজের হাতে টাকা থাকে না বলে মমিনুল হতাশায় ভোগে। বন্ধু-বান্ধবদের কাছে কাজ চেয়েছিল। কেউই আশার বাণী শোনাতে পারেনি। এই বয়সে কাজ কোথায়? মমিনুলের স্ত্রী ডায়েবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, বাত-ব্যথা, অ্যাজমায় ভুগছে দীর্ঘদিন। তার চিকিৎসার জন্য খরচ প্রচুর। মমিনুলের স্বাস্থ্যসমস্যা নেই। শুধু একটাই সমস্যা-ঘুমালে নাক ডাকে। এ নিয়ে মমিনুলের স্ত্রীর অভিযোগের অন্ত
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
Hi @fxsajol,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Come and visit Italy Community