কিছু গুরুত্বপূর্ন কথা জীবন বদলে দেওয়ার গল্পঃ পড়ুন আর ছড়িয়ে দিন।

in #motivation6 years ago

জীবন সুন্দরভাবে গড়তে এই লেখাটি আপনার সহায়ক হতে পারে।

২৭ বছর বয়সে যখন হন্যে হয়ে ব্যাংকে চাকরি খুঁজছেন, তখন আপনারই বয়েসি কেউ একজন সেই ব্যাংকের ম্যানেজার হয়ে বসে আছেন। আপনার ক্যারিয়ার যখন শুরুই হয়নি, তখন কেউ কেউ নিজের টাকায় কেনা দামি গাড়ি হাঁকিয়ে আপনার সামনে দিয়েই চলে যাচ্ছে। কর্পোরেটে যে সবসময় চেহারা দেখে প্রমোশন দেয়, তা নয়। দিন বদলাচ্ছে, কনসেপ্ট গুলো বদলে যাচ্ছে। শুধু বেতন পাওয়ার জন্য কাজ করে গেলে শুধু বেতনই পাবেন। কথা হল, কেন এমন হয় ? সবচাইতে ভালটি সবচাইতে ভালভাবে করে কীভাবে ? কছিু ব্যাপার এক্ষেত্রে কাজ করে ।
()

প্রথমেই আসে পরিশ্রমের ব্যাপারটা। যারা আপনার চাইতে এগিয়ে, তারা আপনার চাইতে বেশি পরিশ্রমী। এটা মেনে নিন। ঘুমানোর আনন্দ আর ভোর দেখার আনন্দ একসাথে পাওয়া যায় না।
শুধু পরিশ্রম করলেই সব হয় না। তা-ই যদি হত, তবে গাধা হত বনের রাজা। শুধু পরিশ্রম করা নয়, এর পুরষ্কার পাওয়াটাই বড় কথা । আপনি এক্সট্রা আওয়ার না খাটলে এক্সট্রা মাইল এগিয়ে থাকবেন কীভাবে ? সবার দিনই তো ২৪ ঘন্টায়। আমার বন্ধুকে দেখেছি, অন্যরা যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন সে রাত জেগে আউটসোর্সিং করে । ও রাত জাগার সুবিধা তো পাবেই ! আপনি বাড়তি কী করলেন, সেটাই ঠিক করে দেবে, আপনি বাড়তি কী পারেন। আপনি ভিন্নকিছু করতে না পারলে আপনি ভিন্ন কিছু পাবেন না। বিল গেটস রাতারাতি বিল গেটস হননি। শুধু ভার্সিটি ড্রপআউট হলেই স্টিভ জবস কিংবা জুকারবার্গ হওয়া যায় না। আউটলায়ার্স বইটি পড়ে দেখুন। বড় মানুষের বড় প্রস্তুতি থাকে। নজরুলের প্রবন্ধগুলো পড়লে বুঝতে পারবেন, উনি কতটা স্বশিক্ষিত ছিলেন। শুধু রুটির দোকানে চাকরিতেই নজরুল হয় না। কিংবা স্কুলকলেজে না গেলেই রবীন্দ্রনাথ হয়ে যাওয়া যাবে না। সবাই তো বই বাঁধায়ের দোকানে চাকরি করে মাইকেল ফ্যারাডে হতে পারে না, বেশিরভাগই তো সারাজীবন বই বাঁধাই করেই কাটিয়ে দেয়।

স্টুডেন্টলাইফে কে কী বলল, সেটা নিয়ে মাথা ঘামাবেন না । আমাদের ব্যাচে যে ছেলেটা প্রোগ্রামিং করতেই পারত না, সে এখন একটা সফটওয়্যার ফার্মের মালিক। যাকে নিয়ে কেউ কোনদিন স্বপ্ন দেখেনি, সে এখন হজার হাজার মানুষকে স্বপ্ন দেখতে শেখায়। ক্যারিয়ার নিয়ে যার তেমন কোন ভাবনা ছিল না, সে সবার আগে পিএইচডি করতে আমেরিকায় গেছে। সব পরীক্ষায় মহাউৎসাহে ফেল করা ছেলেটি এখন একজন সফল ব্যবসায়ী।
আপনি কী পারেন, কী পারেন না, এটা অন্যকাউকে ঠিক করে দিতে দেবেন না, এটা অন্যকাউকে ঠিক করে দিতে দিবেন না। পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স পাননি ? প্রাইভেটে পড়ছেন ? কিংবা ন্যাশনাল ভার্সিটিতে ? সবাই বলছে, আপনার লাইফটা শেষ ? আমি বলি আরে ! আপনার লাইফ তো এখনো শুরুই হয়নি। আপনি কতদূর যাবেন, এটা ঠিক করে দেয়ার অন্যরা কে ? লাইফটা কি ওদের নাকি ? যেখানেই পড়াশোনা করেন না কেন, আপনার লাইফটা আপনার এগিয়ে যাওয়ার উপরই নির্ভ র করে, শুধু ‘ওহ শিট ’ ‘ সরি বেবি ’ চ্যাটিংডেটিং দিয়ে জীবন চলবে না। আপনি যার উপর ডিপেনডেন্ট, তাকে বাদ দিয়ে নিজের অবস্থানটা কল্পনা করে দেখুন। যে গাড়িটা করে ভার্সিটিতে আসেন, ঘোরাঘুরি করেন, সেটি কি আপনার নিজের টাকায় কেনা ? ওটা নিয়ে ভাব দেখান কোন আক্কেলে ? একদিন আপনাকে পৃথিবীর পথে নামতে হবে। তখন আপনাকে যা যা করতে হবে, সেসব কাজ এখনই করা শুরু করুন। জীবনে বড় হতে হলে কিছু ভাল বই পড়তে হয়, কিছু ভাল জায়গায় ঘুরতে হয়, কিছু ভাল মনেুষের সাথে কথা বলতে হয়, কিছু ভাল কাজ করতে হয়। জীবনটা শুধু হাহাহিহি করে কাটিয়ে দেয়ার জণ্য নয়। একদিন যখন জীবনের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে, তখন দেখবেন, পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে, মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ছে। স্কিল ডেভেলাপমেন্টর জন্য সময় দিতে হয়। এসব একদিনে কিংবা রাতারাতি হয় না। “আপনার মত করে লিখতে আমাকে কী করতে হবে ? আমি আপনার মত রেজাল্ট করতে চাইঅ আমাকে কী করতে হবে ? “এটা আমি প্রয়ই শুনি। আমি বলি, “অসম্ভব পরিশ্রম করতে হবে। নো সর্টকাটস । সরি রিপ্লায় আসে কিন্তু পড়তে যে ভাল লাগেনা কী করা যায়? এর উত্তরটা একটু ভিন্নভাবে দিই। আপনি যখন স্কুলকলেজে পড়তেন বা পড়ছেন তখন সে সময় আপনার ফার্স্ট বন্ধুটি পড়ার টেবিলে মুখ থুবরে পড়ে থাকত, সে সময়ে আপনি গার্লস স্কুলের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন। এখন সময় এসেছে, ও ওখানে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে আর আপনি পড়ার টেবিলে বসে থাকবেন। জীবনটাকে যে সময়ে চাবুক মারতে হয়, সে সময়ে জীবনটাকে উপভোগ করলে, যে সময়ে উপভোগ করার কথা, সে সময়ে জীবনটাকে উপভোগ করতে পারবেন না, এটাই স্বাভাবিক। এটা মেনে নিন। মেনে নিতে না পারলে ঘুরে দাঁড়ান। এখনই সময় !

বড় হতে হলে মানুষের সাথে মিশতে হয়, চলতে হয়, ওদের কথা শুনতে হয়। এক্ষেত্রে ভার্সিটিতে পড়ার সময় বন্ধু নির্বাচনটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আপনার সাবকনসিয়াস মাইন্ড আপনাকে আপনার বন্ধুদের কাজ দ্বারা প্রভাবিত করে। আমরা নিজেদের অজ্ঞাতসারেই আমাদের চাইতে ইনফেরিয়র লোকজনের সাথে ওঠাবসা করি, কারণ তখন আমরা নিজেদের সুপিরিয়র ভাবতে পারি। এ ব্যাপারটা সুইসাইডাল। আশেপাশে কাউকেই বড় হতে না দেখলে বড় হওয়ার ইচ্ছে জাগে না। আরেকটা ভুল অনেকে করেন । সেটি হল, ধনীঘরের সন্তানদের সাথে মিশে নিজেকে ধনী ভাবতে শুরু করা। মানুষ তার বন্ধুদের দ্বারা প্রভাবিত হয়। উজার বনে তো শেয়ালই রাজা হয়।আপনি কী শেয়ালরাজা হতে চান, নাকি সিংহরাজা হতে চান, সেটি আগে ঠিক করুন।

বিনীত হতে জানাটা মস্ত বড় একটা আর্ট। যারা অনার্সে পড়ছেন, তাদের অনেকের মধ্যেই এটার অভাব রয়েছে। এখনো আপনার অহংকার করার মত কছিুই নেই, পৃথিবীর কাছে আপনি একজন নোবডি মাত্র। বিনয় ছাড়া শেখা যায় না। গুরুর কাছ থেকে শিখতে হয় গুরুর পায়ের কাছে বসে। আজকাল শিক্ষকরাও সম্মানিত হওয়ার চেষ্টা করেন না । স্টুডেন্টরাও সম্মান করতে ভুলে যাচ্ছে। আপনি মেনে নিন, আপনি ছোট । এটাই আপনাকে এগিয়ে রাখবে। বড় মানুষকে অসম্মান করার মধ্যে কোন গৌরব নেই। নিজের প্রয়োজনেই মানুষকে সম্মান করুন।
চেষ্টা মানুষকে তার সাধনার চেয়ে বড় আসন উপহার দেয়।

পোষ্ট সম্পর্কে কোন প্রকার মন্তব্য থাকলে জানাতে পারেন, ভালোকিছু করলে ভালোকিছুই হই।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65359.95
ETH 3492.90
USDT 1.00
SBD 2.51