একটি ভালোবাসার গল্প
হ্যালো বন্ধু রা আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি ভালোবাসার গল্প শেয়ার করব। তো চলুন শুরু করা যাক।
তখন আমি দশম শ্রেনিতে পড়ি। বাবা মা ও ছোট ভাই সহ ঢাকায় বাসা ভাড়া থাকতাম। আমার এক বন্ধু নাম ফারুক একদিন ও আমায় what's app এর একটি গ্রুপ এ এড করে। তো গ্রুপ এ সবাই কথা বলতাম।। দেখতাম একটি আইডি থেকে ফ্রেন্ডশিপ সম্পর্কিত ছবি দেয়।।
তো আমি গ্রুপ ঘাটাঘাটি করে দেখি ওই আইডিটার নাম Nilpori। তো আমি নাম্বার টা ফোনে সেভ করে ফেলি nil লিখে।। আমি ভেবে ছিলাম হয়ত ছেলে তাই পরদিন মেসেজ দিলাম what's app এ হাই ব্রো লিখে। উত্তর আসলো হেলো ভাবলাম ছেলে।। পরে কিছুক্ষন কথা বলার পর নাম জিজ্ঞাস করল আমি নাম বললাম এবং ওর টা জিজ্ঞাসা করলাম ও বলল "সাজমা আনিসা।(যদিও এটা ওর ছদ্য নাম পরে আসল নাম জানতে পারি) পরে সিউর হলাম ওইটা মেয়ে।।।
আমরা একই ক্লাস এ পরতাম। ও থাকতো ফেনি তে।। এভাবে আমাদের কথা হত প্রতিদিন। ধিরে ধিরে আমরা ভালো বন্ধু হয়ে যাই। কিছুদিন পর রোজা এসে গেল।। আমাদের কথা তখন ও চলত।।আস্তে আস্তে আমি ওর প্রতি কেমন জানি দুর্বল হয়ে পরি। রোজার মাঝে একদিন শুনি ওর জর আসছে। আমি ওরে রোজা রাখতে না করি কিন্তু ও কথা শুনেনি রোজা রেখে ছিল।। তাই আমি ওইদিন অনেকক্ষন গোসল করে নিজের ও জ্বর এনে ফেলি। আসলে বলতে গেলে তখন আমি ওরে অনেক টা ভালই বেসে ফেলি। কিন্তু ওরে বলতে পারতাম না ও খুব রাগি ছিল।। আমি ওরে বলতাম একটি মেয়েরে পছন্দ করি কিন্তু সে যে ও ই ছিল সেটা জানতো না। খুব বুঝাবার চেস্টা করতাম কিন্তু পারতাম না। ভয়ে থাকতাম যদি ভালোবাসি বলার পর ও রাগ করে আমার সাথে আর কথা না বলে।ও আমায় দেবদাস বলত আর বলতো পারবতিকে বলে দিতে।
এভাবেই চলতে থাকে রোজার দিন গুলো। খুব ভালোবাস্তাম মনে মনে।ইদের আগে আমি বাড়ি যাই ইদ করতে। তো চাঁদরাতে আমি ওরে বলেই ফেলি যে আমার পারবতি আর কেউ না ও ই হচ্ছে আমার পারবতি। ও আমারে ফেরাতে পারেনি বলে দেয় ও আমায় ভালোবেসে ফেলে।ওর নাম ছিল বৃষ্টি। তখন ও ওর সাথে আমার ফোনে কথা হয়নি। what's app এই শুধু কথা হতো। তারপর ইদ গেল। ঢাকায় চলে আসলাম। ঢাকায় এসে কয়েকদিন পর ওর সাথে ফোনে কথা বলি খুব সুন্দর আওয়াজ ছিল। আমাদের রিলেশন টা ছিল খুবই দুষ্টু মিষ্টি। ফোনে কথা বলার সুযোগ ওর বেশি ছিল না। তাই অনলাইনেই কথা হতো। দেখা করা তো দুরেই থাক। খুব ইচ্ছা করতো দেখা করি।। ওর হাত টা একটু ধরতে।। কিন্তু হয়ে উঠত না। আমি থাকতাম ঢাকায় আর ও ফেনিতে।
অনলাইনেই চলত আমাদের ভালোবাসাটা। ঝগড়া হতো ও রাগ করতো আমি ওর রাগ ভাঙ্গাতাম। সব ই ছিল অনলাইনে। কাছা কাছি আসার জন্য মন বেকুল হয়ে থাকতো। ওর আব্বু সৌদিআরব থাকতো। একদিন শুনি ওর আব্বু বাংলাদেশ এ আসবে। আমি ওরে বলি এয়ারপোর্ট এ আসতে।। তাইলে হয়তো দেখা হবে। কিন্তু শুনি ওর আব্বু আসতে আসতে রাত ৪ টা বাজবে বার হতে হতে ৫ টা এর মধ্যেই দেখা করতে হবে।। ও চলে আসে ওইদিন পরিবারের কয়েক জন সহ। আমি ৪ টা ৩০ এ ফজর এর নামাজ এর কথা বলে বাসা থেকে বার হয়ে সোজা এয়ারপোর্ট চলে যাই। খুজে পেতে এক্টু ঝামেলা হয় কারন মেসেজ দিয়ে দিয়ে খুজতে হচ্ছিল। শেষে আমি ফোন করে বসি। ও বলে পাবলিক টয়লেট এর অইখানে ওদের গারি পার্কিং করা ওইখানে আসতে। আমি সোজা এয়ারপোর্ট এর বাম পাশের পাব্লিক টয়লেট এর কাছে চলে যাই।। অনেক খুজি কিন্তু ওর কথা অনুজাই কিছুই মিল পাচ্ছিলাম না।। আমি যানতাম না যে এয়ারপোর্ট এ আরেকটা পাবলিক টয়লেট আছে।। একটা লোক রে জিজ্ঞাস করে জানতে পারি ডানপাশে আরেকটা পাবলিক টয়লেট আছে। মনে একটু শান্তি পাই। পরে অই পাবলিক টয়লেট এর অইখানে গিয়ে দেখি ওর কথার সাথে মিল আছে।। তারপর খুজে পাই আমার পাগলি টারে। আনন্দে কেদেই ফেলি কিন্তু বুঝতে দেইনি ওরে।। খুব অল্প সময় ছিল কারন ওর পরিবারের লোক ছিল। ওর জন্য টাইটানিক এর লকেট এর মত একটা লকেট কিনে ছিলাম সেটা নিজ হাতে পরাই দেই। আর ওর হাত টা এক্টুর জন্য ধরতে পারি। কিন্তু সময় কম থাকায় বেশিক্ষণ ধরে থাকতে পারিনি। ৫-১০ মিনিট এর মত ছিলাম ওর সাথে তারপর চলে আসতে হয়। কাঁদতে কাদতে বিদায় দেই ওরে। চলে আসি আমি।।। এভাইবেই একটি বার দেখা করে খুব অল্প সময় এর জন্য আমাদের কাছে আসা।।
জানি না ভালোলেগেছে কিনা।।
অসাধারন একটি ভালোবাসার গল্প