পুলি তৈরি রেসিপি
নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজকে আবারো নতুন একটা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে। আশা করছি সকলেরই খুব ভালো লাগবে।
শীতকাল চলে গেছে। বসন্ত কালে হালকা গরম পড়ে গেছে। আজকে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব শীতের পিঠে পুলি । শীতকালে পিঠে, পুলি বাঙ্গালীদের বিশেষ খাবার। শীতকাল মানেই পিঠে পুলি, পাটিসাপটা, পায়েস আর বিভিন্ন রকমের খাদ্যের নাম শুনলেই খেতে ইচ্ছে করে।অনেক রেসিপি শীতকালে তৈরি করা হয়েছিল সেগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করা হয়নি। আরও বিভিন্ন ধরনের রেসিপি আছে সেগুলো অন্যান্য পোস্টে শেয়ার করে নেব। শীতকালে পুলি খেতে খুবই ভালো লাগে । পৌষ পার্বণের দিন বিভিন্ন রকমের পিঠে পুলি তৈরি করে থাকি। তবে সারা শীতকাল ধরেই নানা রকমের শীতকালীন পিঠে পুলি তৈরি করে খাওয়া হয়। ছোট থেকেই দিদার হাতে বানানো পুলি খেয়ে বড় হয়েছি। এখন মাঝে মধ্যে শাশুড়ি মা বাড়িতে বানানোর চেষ্টা করেন।
ভিডিও লিংক |
---|
তাদের দেখে আমিও কিছুটা শিখেছি। কিন্তু নিজে কখনো বানানোর চেষ্টা সেভাবে করিনি, দিদা হয়তো সবকিছু তৈরি করে দিয়েছে আর পুলি গুলো আমরা নিজেরা হাতে দিদাকে বানাতে সাহায্য করতাম। আজকে সেই হাতে বানানো পুলি রেসিপি আপনাদের মাঝে শেয়ার করছি। অনেকে সুবিধার জন্য ছাঁচে তৈরি করে থাকে। কিন্তু আমার কাছে হাতে বানানো সহজ বলে মনে হয়।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | আতপ চালের গুঁড়ো | ৭৫০ গ্ৰাম |
২ | গরুর দুধ | ১ কেজি ৫০০ গ্ৰাম |
৩ | নতুন গুড়ের সন্দেশ | ২০০ গ্ৰাম |
৪ | চিনি | ২৫০ গ্ৰাম |
৫ | খেজুরের গুড় | ২৫০ গ্ৰাম |
৬ | তেজপাতা | ২ টো |
প্রথম ধাপ
প্রথমেই গ্যাস অন করে একটা কড়াই বসিয়ে দিয়েছি। কড়াইতে পরিমাণ মতো ঠান্ডা জল দিয়েছিলাম। জল গরম হয়ে ফুটে উঠলে কড়াই এর ফুটন্ত জলের মধ্যে পরিমাণ মতো আপত চালের গুঁড়ো দিয়ে নাড়াচাড়া করতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপ
এরপর গরম অবস্থাতেই চালের গুড়ো একটা পাত্রে ঢেলে নিতে হবে ।একটু ঠান্ডা হলেই সামান্য জল দিয়ে হাত দিয়ে ভালো করে চটকে ময়দা মাখার মত করে মেখে নিতে হবে।
তৃতীয় ধাপ
ভালো করে মাখা হয়ে গেলে খানিকক্ষণ ঢেকে রাখতে হবে ।এরপর পুলি তৈরি করার জন্য আমি এখানে নতুন গুড়ের সন্দেশ ব্যবহার করেছিলাম। আপনারা চাইলে নারকেলের পুর ব্যবহার করতে পারেন। পুলি বানানোর জন্য সমস্ত কিছু একসাথে রেডি করে নিয়েছিলাম।
চতুর্থ ধাপ
এরপর ছোট ছোট সাইজ করে গোল করে নিতে হবে।এরপর হাতের সাহায্যে ওই গোল আকৃতি গুলো ছোট্ট বাটির মতো করে নিয়ে সন্দেশের পুর দিয়ে মুখ বন্ধ করে দুই হাতে সাহায্যে পুলির সাইজ অনুযায়ী বানিয়ে নিতে হবে। সমস্ত বানানো হয়ে গেলে হালকা চালের গুঁড়ো ছিটিয়ে দিতে হবে। না হলে একটার গায়ে আরেক টা পুলি লেগে যেতে পারে।বানানোর পদ্ধতি দেখতে হলে ভিডিও লিংক দেওয়া আছে আপনারা দেখে নিতে পারেন।।
পঞ্চম ধাপ
এবারে গ্যাস অন করে পরিমাণ মতো গরুর দুধ গ্যাসে বসিয়ে দিয়েছিলাম ।দুধের মধ্যে তেজপাতা দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে। দুধ ভালো করে ফুটলে পরিমাণ মত চিনি দেওয়ার খানিকক্ষণ পর পরিমাণ মতো খেজুরের গুড় দিয়ে আরো ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে । খেজুরের গুড় দিলে পুলির স্বাদ খুব ভালো হয়।
ষষ্ঠ ধাপ
এরপর আরো খানিকক্ষণ দুধ আরো ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে ।যখন খুব ভালোভাবে ফুটে দুধ ঘন হয়ে আসবে। তখন বানিয়ে রাখা পুলি গুলো আস্তে আস্তে ফুটন্ত দুধের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে।
সপ্তম ধাপ
সমস্ত পুলি দুধের মধ্যে দেওয়ার পর খানিকক্ষণ ফুটিয়ে নিতে হবে।
তৈরি
এইভাবেই ফুটিয়ে নিলে নামিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে নরম তুল তুলে সুস্বাদু পুলি রেসিপি।
এইভাবেই খুব সহজেই আপনারা বাড়িতে পুলি তৈরি করতে পারেন। তবে শীতকালে খেতে বেশি ভালো লাগে। তবে এখন সারা বছর ধরে খাওয়া হয়। কিছু দিন আগে মেলাতে গিয়ে দেখলাম মেলাতে পিঠে পুলি বিক্রি হচ্ছে। শীতকালে পুলি বানিয়ে রাখলে দুই থেকে তিন দিন ধরে খাওয়া হয়। আমার তো প্রথম দিনের থেকে দ্বিতীয় দিন খেতে বেশি ভালো লাগে।অনেকে পুলি তৈরি করলে পুলি খুব শক্ত হয়। কিন্তু এইভাবে পুলি বানালে একদম নরম হবে। আমি আমার পরিমাণ মতো সমস্ত উপকরণ ব্যবহার করেছি।রেসিপির লিংক দেওয়া থাকলো।
আজ এইখানেই শেষ করছি। আবারো নতুন কোন রেসিপি নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
সত্যি কথা বলতে আপনার পোস্টের প্রথম ছবিটা দেখে আমি ভেবেছিলাম এটার রসমালাই কিন্তু যখন আপনার পোস্ট পড়া শুরু করলাম তখন বুঝতে পারলাম এটা পুলি পিঠা যেটা আপনারা একটু অন্যরকম ভাবে তৈরি করেছেন আবার আমাদের এখানে অন্যরকম ভাবে তৈরি করা হয়ে থাকে তবে আপনার পিঠে অনেক বেশি লোভনীয় দেখাচ্ছে অসংখ্য ধন্যবাদ দুধ পুলি পিঠা তৈরি করার পদ্ধতি আমাদের সাথে এত সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য ভালো থাকবেন।
বাঙালি বলে কথা আর প্রিয় খাবারের তালিকায় পিঠা-পুলি থাকবে না সেটা হতেই পারে না। পিঠার কথা মনে পড়লেই শৈশবে ফিরে যাই। যখন পৌষ মাসে পৌষসারাণি তে পিঠা তৈরির হৈচৈ পড়ে যেতো। প্রতি ঘরে পিঠার মিষ্টি সুঘ্রাণ।
অন্য ঘরের পিঠা যেন বেশি সুস্বাদু মনে হতো। পালা করে করে সকল ভাই-বোন মিলে পিঠার নিমন্ত্রণে যেতাম। ঐ দিন গুলো আর ফিরে আসবে না।
আপনার পুলি তৈরির রেসিপি সংক্রান্ত লেখাটা দূর্দান্ত ছিল। পরিদর্শন করে বুঝলাম আপনার রান্নার হাত বেশ পাকা।
পুলি পিঠা তৈরির রেসিপি দেখে অনেক ভালো লাগলো তবে এটা আমার কাছে একদম নতুন মনে হলো,, অবশ্যই আমি পিঠা তৈরি করতে পারি না তবে কম বেশি মায়ের পিঠা তৈরি করা দেখেছি,, এবং আপনার পোষ্টটি পড়ে যতটুকু বুঝতে পারলাম ,, আপনি একটু অন্যভাবে আমাদের তুলনায় রেসিপিটি তৈরি করেছেন,, যাহোক দেখে অনেক ভালো লাগলো পুলি পিঠা তৈরির নতুন রেসিপি,, এবং দেখে মনে হলো এটা খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছে,, আসলে শীতের সময় আমরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা খেতে পারি এটাই সবচেয়ে বড় কথা এবং শীতের সময় খেতে অনেক ভালো লাগে পিঠা।