কুমন্ত্রণা
পৃথিবীতে অনেক রকমের প্রজাতি থাকলেও মানুষ ই কুমন্ত্রণা শিকার হয়। কারণ মানুষ তার বুদ্ধি বিবেক ব্যবহার করতে পারে।যেহেতু মানুষের চিন্তা-ভাবনা করার ক্ষমতা রয়েছে তাই মানুষ বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রভাবিত হয়।একজন ব্যক্তি চাইলে গোছানো আলোচনার মাধ্যমে অন্য একজন মানুষের চিন্তা ভাবনা পরিবর্তন করে দিতে পারে। এভাবেই যুগের পর যুগ এই পৃথিবীতে কিছু শ্রেণীর মানুষ রয়েছে যারা ক্ষমতা দখল করার কারণে পৃথিবীর অন্যান্য মানুষদের নিজেদের চিন্তাভাবনার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।মানুষ চাইলেই তার জ্ঞান বিচার বুদ্ধি ব্যবহার করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারে। এ চিন্তা-ভাবনা গুলো নির্ভর করে তার আশেপাশের পরিবেশের উপর।
আপনার চারপাশ সামাজিক অবস্থা যতটা পরিশুদ্ধ ও পরিচ্ছন্ন হবে আপনার চিন্তাভাবনা ও মর্মসিকতা ততটা পরিশুদ্ধ ও সুন্দর হবে।আপনি যদি একটি অস্বচ্ছ সমাজে ও বিকৃত মন মানসিকতা সম্পন্ন জাতির মধ্যে বেড়ে ওঠেন তবে আপনার চিন্তাভাবনাও আক্রমনাত্মক ও বিকৃত হবে। ইতিহাস থেকে এটাই আমরা পাই একটি সুন্দর ও স্বচ্ছ জাতিকে ধ্বংস করতে চাইলে সে জাতির মধ্যে ভাঙ্গন যদি সৃষ্টি করা যায় তাহলে সে জাতিটা মুহূর্তের মধ্যেই ধ্বংসের দিকে চলে যায়।ইসলামের ইতিহাস থেকে শুরু করে পৃথিবীতে যতগুলো জাতিভেদ ঘটেছে সবগুলোর ঘটনা যদি পর্যালোচনা করা যায় তাহলে দেখা যাবে কোন না কোন আপনজন নিকট আত্মীয় অথবা খুবই বিশ্বস্ত কেউ ধোকা দেওয়ার মাধ্যমে সে সম্প্রদায়কে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গিয়েছে। নবাব সিরাজউদ্দৌলার ঘটনা আমাদের অজানা নয়।সিরাজউদ্দৌলার নিজের আপন জন তাকে নিজেদের সুবিধার স্বার্থে ইংরেজদের সাথে চুক্তি করে পলাশীর যুদ্ধে নবাবকে যুদ্ধের ময়দানে ধোকা দেয় এবং যুদ্ধের ময়দানে একা ফেলে রেখে চলে আসে।যার কারণে সিরাজউদ্দৌলার কাছে ইংরেজদেরকে পরাজিত করার মত যথেষ্ট পরিকল্পনা ও শক্তি সামর্থ্য থাকলেও পরাজিত হয় এবং নিহত হয়।
ইংরেজদের পরিকল্পনার কাছে পরাজিত হয়ে যায় সিরাজউদ্দৌলা ইংরেজরা তার কাছের মানুষজনকে কু মন্ত্রণা দেওয়ার মাধ্যমে সিরাজউদ্দৌলার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।যার ফলে বাংলার সর্বশেষ স্বাধীন নবাব মৃত্যুবরণ করে এবং বাংলায় প্রতিষ্ঠিত হয় ইংরেজ শাসন এর মাধ্যমে বাংলা তথা ভারতবর্ষ ইংরেজদের গোলামের রূপান্তরিত হয়ে যায়।এবং প্রায় ২০০ বছর ইংরেজরা ভারতবর্ষ শাসন করে। ইংরেজরা, সিরাজউদ্দৌলার সাথে যেমন পরিকল্পিত পরিকল্পনা করে ধোকা দিয়ে পরাজিত করেছিল ঠিক তেমনি মীরজাফরের সাথেও কিন্তু তারা ওয়াদা রক্ষা করেনি। এর মাধ্যমে বোঝা যায় যা কুমন্ত্রণা দেয় তারা কখনোই সহযোগী হতে পারে না।ইংরেজরা ক্ষমতা যাওয়ার পর ভারতবর্ষকে শাসন ও শোষণ করতে থাকে এবং এখানকার মানুষ জনের উপর নির্যাতন ও জুলুম করে। পরবর্তীতে ইংরেজদের হাত থেকে ভারত বর্ষকে রক্ষা করে নতুন ভাবে গঠন করার পেছনে ২০০ বছর পার হয়ে যায়। এভাবেই পৃথিবীতে যুগের পর যুগ কুমন্ত্রণা দানকারীর আবির্ভাব হবে।আমাদের জীবনে তারা আমাদের কাছের মানুষগুলোকে আমাদের কাছ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করবে।এবং যদি তারা সফল হয় তবে আমরা ধীরে ধীরে ভ্রাতৃত্ববোধ হারিয়ে ফেলবো।সুতরাং নিজেদেরকে এসব কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা করতে হবে এবং সৎ উপদেশ পরামর্শকে প্রাধান্য দিয়ে জীবন অতিক্রম করতে হবে।
[copyright free image source :pixabay]
(https://pixabay.com/vectors/demon-devil-hell-inferno-lucifer-161049/)
এই গ্রুপে পোস্ট করা নিষেধ সাময়িকভাবে।