"স্মৃতিতে ইকো পার্ক,আনন্দের একটা দিন"
(বহু মানুষের সমাগম,নারকেল গাছের সারিটা অপূর্ব লাগছিল)
প্রিয়,
পাঠকগণ,
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন।
আপনাদের দিনটাও বেশ ভালোই কেটেছে।
আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো একটু পুরোনো দিনের কথা।আসলে ঘরবন্দী জীবনে পুরোনো দিনের স্মৃতিরা ফিরে ফিরে আসে।যখন চাইলেই আমরা বাইরে বেরোতে পারতাম,তখন হয়তো ভাবিনি এমনও দিন আসবে,যখন মাসের পর মাস, বছরের পর বছর আমাদের ঘরবন্দী থাকতে হবে।
৩-৪ বছর আগে একবার ইকো পার্কে ঘুরতে গিয়েছিলাম শুভর (আমার husband) মামা - মামীর সাথে। ফোনের গ্যালারি ঘাটতে ঘাটতে চোখে পড়লো তখনকার কিছু ছবি, সাথে সাথে সেইদিনের স্মৃতিও।
(দুজনের দুষ্টুমি)
সেদিন আসলে আমার যাওয়ার একদমই ইচ্ছে ছিল না।প্রায় জোর করেই আমায় নিয়ে গিয়েছিল। মামার ছেলেটা কিছুতেই আমায় না নিয়ে যাবে না।সেদিন বারাসাতে আমার একটা কাজও ছিলো। সেই কাজের অজুহাতে আমি সেদিনের যাওয়াটা এড়িয়ে যেতে চাইছিলাম। মামা বললো তাড়াতাড়ি ফিরে আসবে,এবং আসার সময় আমায় বারাসাত নামিয়ে দেবে। তাই অগত্যা ইচ্ছের বিরুদ্ধে গেলাম।কিন্তু আজ মনে হয় হয়তো সেদিন গিয়ে ভালোই করেছি, তাই স্মৃতির পাতায় একটা দিন লেখা হয়ে আছে।
(পার্কে ঢোকার গেটে দাঁড়িয়ে আমি আর মামী)
যাইহোক,শুভর মামা, মামী, মামার ছেলে, আর আমি।এই চারজন গিয়েছিলাম সেদিন।মামা গাড়ি ঠিক করেছিল,১০ নাগাদ গাড়ি এলো,আমরাও তৈরী হয়ে বেরিয়ে পড়লাম।যেতে প্রায় ১.৩০ ঘণ্টা মতো সময় লাগে। পার্কের গেট খোলে ১১.৩০ টায়।সেই কারণেই আমরা ১০ টা নাগাদ বেরিয়ে পড়ি।
১১.৩০ একটু পরেই পৌঁছে গেলাম পার্কে। বিশাল এলাকা জুড়ে পার্কটি তৈরী করা হয়েছে, ঢোকার গেট ও অনেক গুলো, আর সেকারণেই পার্কে ঢোকার সময় আমাদের একটু সমস্যা হয়েছিল।যাইহোক অবশেষে মামা টিকিট কাটলো।সবাই মিলে ঢুকলাম।
হিসাব মতো আমরা পার্কের অর্ধেকটাও দেখতে পারিনি।আসলে হেঁটে হেঁটে কত ঘোরা সম্ভব। পা ব্যাথা হয়ে যাচ্ছিলো। টয় ট্রেন যদিও বা একটা ছিলো, তবে কিছু একটা সমস্যার কারণে সেটা বন্ধ ছিলো। এছাড়াও অন্য এক ধরনের গাড়ি ছিলো,সাইকেল ছিলো কিন্তু আমরা কোনোটাই নিই নি।কারণ গাড়িতে করে এক পাক ঘুরে এলে কোনোটাই ভালো ভাবে দেখা হত না।তাই যতটাই দেখেছি ভালো ভাবে দেখেছি।
পার্কটা অনেক সুন্দর করে সাজানো।চারিদিকে সবুজের ছোঁয়া।মাঝে তৈরী করেছে কৃত্রিম ঝর্না। সেখানে আবার সন্ধ্যার পর লাইট আর মিউজিক দিয়ে শো করা হয়। তবে সেটা দেখার সৌভাগ্য হয়নি আমাদের।এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফুল,পাতা বাহার গাছ, ক্যাকটাস সব দিয়ে সাজানো পার্কটি।ভেতরে প্রচুর রেস্টুরেন্ট রয়েছে।তাছাড়াও মাঝে মাঝে অনেক চা - কফির দোকানও রয়েছে।
(কৃত্রিম ঝর্না দেখার গেট)
(কৃত্রিম ঝর্না)
এছাড়া বাচ্চাদের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে,
সেখানে বিভিন্ন খেলার জিনিস,দোলনা, স্লিপ সব কিছু রয়েছে, আর রয়েছে বোটিং করার জায়গা।তবে আমরা যেদিন গিয়েছিলাম তার ৫-৬ দিন আগে একটা বাচ্চা সেখানে ডুবে মারা গিয়েছিল তাই তখন সেটা বন্ধ রাখা হয়েছিল।ইচ্ছে থাকলেও সায়ক (মামার ছেলে) বোটিং করতে পারেনি।বাকি বেশ ভালই মজা করেছিল।
যাইহোক, দুপুর ২.০০ নাগাদ আমরা বেরিয়ে পড়ি। পার্ক থেকে সোজা কে. এফ. সি. গিয়েছিলাম। সেটাও সায়কের বায়না ছিলো।ওখান থেকে খেয়ে আমরা বেরিয়ে পরি, ফেরার সময় মামারা আমাকে বারাসাত নামিয়ে দিয়ে বাড়ি চলে আসে। আমিও কাজ সেরে সন্ধ্যাবেলা বাড়ি ফিরি।
(সায়কের সাথে আমি)
আজকাল চাইলেও বেরোতে পারছি না।তার উপর কবে থেকে স্বাভাবিক ভাবে সব জায়গায় যেতে পারবো জানিনা।তাই যেন সব কিছু অসহ্য লাগছে।এখন সেই সব পুরোনো দিনের কথা ভেবে আর তখনকার তোলা ছবি দেখে দিনকাটছে। আর মনে মনে ভাবছি আবার কবে যাবো।তারপর অবশ্য আরেকবার আমার দিদিদের সাথে গিয়েছি।সে গল্প অন্যদিন করবো।
যাইহোক,যতই মনখারাপ হোক, দমবন্ধ হয়ে আসুক তবুও আমাদের বাইরে বেরোলে চলবে না। সমস্ত করোনা বিধি মেনেই চলতে হবে আমাদের।যতদিন না সবটা স্বাভাবিক হচ্ছে।তাই আপনারাও বাড়ির বাইরে বেরোলে musk পড়বেন এবং sanitizer ব্যবহার করবেন। সুস্থ থাকবেন,সাবধানে থাকবেন।
(আমি আর মামী, ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত)
Beautiful photography thank you for sharing @sampabiswas
Very Nice pictures.. we are eagerly waiting for everything to be normal.