SEC-S10W3 – In tribute to a father, a hero

20230625_181827_0000_061834.png
"Edited by canva"

Hello,

Everyone,

প্রথমেই আমি এই কমিউনিটির প্রত্যেককে অনেক ধন্যবাদ জানাই,এনগেজমেন্ট চ্যালেঞ্জের তৃতীয় সপ্তাহের বিষয়বস্তু হিসেবে এত সুন্দর একটি টপিক বেছে নেওয়ার জন্য। আজকের পোস্টে আমি আমার জীবনের হিরো, আমার রোল মডেল হিসেবে আমার বাবার কথা আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি।

শুধুমাত্র আমার কথা বললে ভুল হবে, আমার বিশ্বাস এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটি সন্তানের কাছেই তার বাবা তার হিরো। মেয়ে ‌হিসাবে একটা কথা আমি বিশ্বাস করি, প্রত্যেকটি মেয়ে সন্তান তার বাবার কাছে রাজকন্যা হয় এবং মেয়েদের বাবার প্রতি একটা অন্যরকম টান থাকে। আমি নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে সেটা অনুভব করেছি।

আমার বাবার সাথে আমার সম্পর্কটা একদম বন্ধুর মতন। ছোটবেলা থেকে আজও পর্যন্ত কখনো বাবা আমার সাথে রাগান্বিত ভাষায় কথা বলেছে বলে, আমার মনে পড়ে না।

আমি যদি পুরনো দিনের স্মৃতির কথা ভাবি, তাহলে সব সময় আমার আর বাবার খুশির মুহূর্ত গুলো আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তবে একটা কথা না বললেই নয়,‌কয়েক মাস আগে আমার বাবা এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল যে, আমার মনে ভয় ঢুকে গিয়েছিল, বোধহয় বাবাকে সারা জীবনের মতো হারিয়ে ফেলবো। কিন্তু ‌‌ঈশ্বরের অসীম কৃপায় তাকে আবার ‌ফিরে‌ পেয়েছি।

"আমার বাবার সম্পর্কে কিছু কথা"

IMG_20230625_155021.jpg
আমার দিদির বিয়ের দিন কন্যা দানের সময়

আমার বাবা একদমই নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের খুবই সাধারণ একজন মানুষ। যার কাছে জীবন বলতে সৎপথে, দিন-রাত পরিশ্রম করে, তার পরিবারকে ভালো রাখা। নিজের জীবনের কোন শখ-আহ্লাদের কথা কখনো তাকে বলতে শুনিনি।

*তার জীবনের মূল লক্ষ্য ছিল তার সন্তানদের জীবনের সমস্ত শখ আহ্লাদ পূরণ করা।‌‌ আমার বাবা তার চার বছর বয়সে পিতৃহারা হয়েছিল। তাই বাবার স্নেহ, ভালবাসা, কেমন হয় আমার বাবা সেটা কোনদিনই বুঝতে পারেননি।‌‌ আর বোধহয় সেই কারণেই তিনি তার সন্তানদেরকে সাধ্যের বাইরে গিয়েও ভালো রাখার চেষ্টা করে গেছেন আজীবন।"

সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে বাড়ি ফেরার পরেও কিভাবে সন্তানদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতে হয়, সেটা বোধহয় আমার বাবার কাছ থেকে শেখা উচিত। আমরা আমাদের জীবনের সেই সকল মানুষকে সুপার হিরো বলে থাকি, যাদেরকে আমরা চোখ বন্ধ করে ভরসা করি। আমরা ‌বিশ্বাস যে কোনো পরিস্থিতিতে তারা আমাদেরকে রক্ষা করবে।

সেক্ষেত্রে একটা মেয়ের জন্য তার বাবার থেকে বড় সুপার হিরো আর কেউ হতেই পারে না। কারণ এই পৃথিবীতে সন্তানেরা সব থেকে বেশি নিরাপদ থাকে নিজের বাবা-মায়ের ছত্রছায়ায়।

"ছোটবেলায় বাবার সাথে কাটানো একটি বিশেষ দিনের স্মৃতি "

IMG_20230625_155145.jpg
আমার দিদির মেয়ের অন্নপ্রাশনের দিন তোলা ছবি

বাবার সাথে কাটানো আনন্দের মুহূর্তের কথা বলতে গেলে বোধ হয় কথা ‌ বলা শেষ হবে না। কিন্তু একটি সুন্দর ঘটনা আমি অবশ্যই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাইবো।

আজকে যেহেতু অনেকটা বড় হয়েছি, তাই হয়তো বাবার পরিস্থিতি বাবা মুখে না বললেও বুঝতে পারি। কিন্তু আমি যেই সময়ের ঘটনা বলছি তখন আমি অনেক ছোটো। তাই বাবার অনেক সমস্যা হয়তো সেই সময় আমার পক্ষে বোঝা সম্ভব হয়নি।

আমাদের ওখানে অনেক বড় একটা মেলা হয়। যেখানে যাওয়ার বায়না ছোটবেলা থেকেই প্রতিবছর বাবা-মায়ের কাছে করতাম এবং বাবা সেই মেলাতে একদিনের জন্য হলেও আমাকে ঘুরতে নিয়ে যেতো।

আমি যে বছরের কথা বলছি সেই বছর আমাদের আর্থিক অবস্থা অনেকটাই খারাপ ছিল। কিন্তু আমি যেহেতু ছোটো, তাই আমার পক্ষে সেই সময় সেটা বোঝা সম্ভব হয়নি। মা অনেকবার করে বুঝিয়েছিলো, এমনকি আমার দিদিরাও। কিন্তু যেহেতু আমি ছোটো ছিলাম তাই আবদার হয়তো প্রয়োজনের থেকেও অনেক বেশি করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত বাবা একদিন বলল আমাকে নিয়ে মেলায় যাবে।

বাবার পকেটে তখন হয়তো খুব বেশি হলে ৫০ থেকে ৬০ টাকা ছিল। মেলায় যাওয়ার আগে মা বারবার আমাকে বলে দিয়েছিল,- "বাবা যা কিনে দেবে সেটাই নেবে, কোন কিছুর বায়না করবে না।" আমি তাতেই রাজি। মেলাতে ঘুরতে তো পারবো, এতেই আমার আনন্দ।

বাবার সঙ্গে সাইকেলে চেপে গল্প করতে করতে মেলার উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। হঠাৎ করে রাস্তার মধ্যে একজন বাবাকে দেখে দাঁড়াতে বলল। বাবা আমাকে সাইকেলের সামনে দাঁড় করিয়ে রেখে সেই কাকুর সাথে কি যেন কথা বলল সেটা আমি জানি না। এরপর বাবা আবার আমাকে নিয়ে মেলায় পথে রওনা দিল।

পরে মেলায় গিয়ে বাবা আমাকে জিজ্ঞেস করল আমি কি কিনতে চাই। কিন্তু যেমনটা মা আমাকে শিখিয়ে দিয়েছিল, আমি কোনো কিছু কিনতেই রাজি হইনি। কিন্তু বাবা আমাকে সেইবার অনেক জিনিস কিনে দিয়েছিল।

কিভাবে দিয়েছিল সে কথা সেই বয়সে আমার বোঝার সাধ্য ছিল না।এরপরে জিনিসগুলো নিয়ে আমি কিন্তু অনেক আনন্দে বাড়ি এসেছিলাম। কারণ অন্যান্য বছরের থেকে সেই বার বাবা আমাকে অনেক বেশি জিনিস কিনে দিয়েছিল।

বড় হওয়ার পরে যখন বুঝতে শিখলাম। তখন কোনো একবার মেলায় যাওয়ার সময় মা আমাকে গল্প করেছিল। ছোটবেলায় যেদিন বাবা আমাকে নিয়ে মেলায় আসছিল এবং সেদিন যে কাকুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল, বাবা ওই কাকুর কাছে অনেক বছরের কিছু টাকা পেতেন। কিন্তু কাকু কোন কারনে দিতে পারছিলেন না।

কিন্তু সেদিন মেলায় যাওয়ার পথে কাকু বাবাকে দাঁড় করিয়ে সেই পাওনা টাকা দিয়েছিল। বাবার কোথাও মনে হয়েছিল, যে টাকাটা পাওয়ার কথাই ছিল না, কিন্তু আমাকে নিয়ে মেলায় যাওয়ার পথে যখন তিনি টাকাটা পেলেন, তখন আমাকে খুশি করার জন্য তিনি আমার পছন্দের সবকিছু সেবার আমাকে কিনে দিয়েছিলেন।

কারণ বাবার মনে হয়েছিল,‌‌ ওই টাকাটা বোধহয় ঐদিন আমার ভাগ্যেই ছিল। তাই হয়তো বাবা সেই দিনই আমাকে নিয়ে মেলায়‌‌ গিয়েছিলো।

বিশ্বাস করুন সেদিন প্রথম মনে হল আমার বাবার হয়তো অনেক কিছু না থাকতে পারে, কিন্তু আমার বাবার একটা বড় মন আছে। সেই মনের সম্পূর্ণটা জুড়ে আমরা অর্থাৎ তার সন্তানের জায়গা।

সন্তানকে খুশি করার জন্য বাবা সেদিন এতোটুকুও কৃপণতা করেনি। আমার বাবা হয়তো আমাকে অনেক স্বাচ্ছন্দে বড় করতে পারেনি, কিন্তু মানুষের মতো মানুষ করতে পেরেছেন। হয়তো অনেক দামি স্কুলে পড়াতে পারেননি, কিন্তু মানবিকতার শিক্ষাটুকু দিতে পেরেছেন।

বাবা আমাদের জন্য অনেক করেছেন, এখন একটা বয়সের পরে আমাদের সকলের বাবার জন্য করার পালা। কিন্তু সত্যি কথা বলতে বাবা-মায়ের ঋণ কোনদিন কোন উপায়েই শোধ করা সম্ভব নয়। কিন্তু তাদের ভালো রাখার দায়িত্বটুকু অবশ্যই প্রত্যেক সন্তানের নেওয়া উচিত।

"বাবার প্রতি আমার অনুভূতি "

IMG_20230625_155254.jpg
দিদির ছেলের সাথে আমার বাবা

সত্যি কথা বলতে বাবাকে ছোটবেলা থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত কখনো কোনো অসুস্থতা ভুগতে দেখিনি। হয়তো নিজের কষ্ট হলেও কোনদিনও মুখে প্রকাশ করেনি। কিন্তু কয়েক মাস আগে বাবাকে যেভাবে মৃত্যুর সাথে লড়াই করতে দেখেছি, তাতে বুঝেছি এই মানুষটা না থাকলে বোধ হয় জীবনের নিরাপদ থাকার অনুভূতিটা শূন্য হয়ে যাবে।

হারিয়ে যাবে মাথার উপরের সেই ছাতা যা আমাকে উত্তপ্ত রোদ্দুর হোক বা অঝরে ঝরে পড়া বৃষ্টি, সবকিছু থেকে আগলে রাখবে। ঈশ্বরের অসীম কৃপা যে এই মুহূর্তে আমার বাবা ভালো আছে এবং তার কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন আমার বাবাকে এরকম ভাবে সুস্থ রাখেন।

উপসংহার

IMG_20230625_155559.jpg
জীবনে প্রথমবার যেদিন বাবাকে অনেক ডাকার পরেও হাসিমুখ দেখতে পাইনি-ঈশ্বর পৃথিবীর সকল বাবাকে সুস্থ রাখুন

আমি বিশ্বাস করি না বাবাকে বাবা মাকে ভালোবাসি কথাটি বলার জন্য আলাদা কোন দিনের প্রয়োজনীয়তা আছে। কিন্তু তবুও অনেকেই একটি বিশেষ দিনকে ফাদার্স ডে হিসেবে পালন করে থাকে। সেই কারণেই আমার তরফ থেকেও বাবাকে পিতৃ দিবসের অনেক শুভেচ্ছা জানাই।ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা।

লেখা শেষ করার আগে আমি আমার তিনজন বন্ধুকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাই। তারা হলেন @ciru2014 @sawera1 @wirngo .আশা করছি তারাও এগিয়ে এসে নিজের বাবার সম্পর্কে নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করবেন। সকলে ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।

Sort:  
 last year 

¡Holaaa amigo!😊

Cuando estamos en la etapa infante so muchísimas cosas las que ignoramos y, eso nos puede hacer ver como desagradecidos pero, no es así solo que, nos falta madurez y cuando finalmente llegamos a la etapa adulta vemos como todo cambia y valoramos todo lo que hacen por nosotros.

Sin duda, tu padre fue y seguirá siendo un gran ejemplo a seguir así que, este homenaje se lo ganó con mucho amor y entrega absoluta.

Un fuerte abrazo💚

Loading...
 last year 

Hello friend we always enjoy the affection and love of our parents, when we are children we do not value but when we grow up we are by their side guiding them and giving them good love.

Our parents always give us great values and lead us on the right path. A father is our best example, he teaches us values and transmits us confidence.

God gave your father a second life and now you can enjoy the unique love they give us.

Thank you for the invitation

I wish you lots of luck and blessings 💗

Thank you so much for your beautiful comments and wishes. 🙏.

শুধুমাত্র আমার বোললে গল্প হবে, আমার বিশ্বাস এই পৃথিবীতে প্রত্যেক সন্তানের কাছেই তার পিতা তার হিরো। মেয়ে ‌হিসাবে একটি কথা আমি বিশ্বাস করি, প্রত্যেক মেয়ে সন্তান তার পিতার কাছে রাজকন্যা হয় এবং মেয়েদের পিতার প্রতি একটি আদর্শ থাকে। আমি নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে সেটা অনুভব করেছি।

একদমই সত্যি কথা বলেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন। 🙏

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.16
JST 0.028
BTC 67340.80
ETH 2419.68
USDT 1.00
SBD 2.35