"সরস্বতী পূজা"
কলেজে পুজোর জোগাড় করছে বোন (শ্বেতা)-
মামী বাড়ির পুজো-
প্রিয়,
পাঠকগণ,
আশাকরি আপনারা সবাই ভালো আছেন।প্রথমেই আপনাদের সবাইকে জানাই সরস্বতী পূজার অনেক শুভেচ্ছা।আসলে বাঙালির কাছে সরস্বতী পুজো শুধু একটা পুজো নয়, একটা আবেগ ও বটে। যে কারণে এই পুজোকে কিন্তু বাঙালির valentine's day ও বলা হয়। এইদিনে অনেক ছেলেমেয়ে তার প্রিয়জনের পছন্দের রঙের শাড়ি পড়ে, তার সাথে টাইম কাটায়। স্কুল লাইফের প্রেমে বোধহয় এই পুজোর দিনই প্রথম নিজের পছন্দের মানুষকে ছেলেরা শাড়ি পড়ে দেখে।
সরস্বতী পুজো মানেই আমার মনে পড়ে ছোট্ট বেলার কথা, মনে পড়ে সারাবছর ধরে শাড়ি পড়ার প্রস্তুতির কথা, মায়ের কোন শাড়িটা পড়বো, তার ব্লাউজ টা নিজের মাপের করে কখন দিদি সেলাই করে দেবে, শাড়ির সাথে কোন মালাটা পড়লে ভালো লাগবে আরো কতো কি।
স্কুলের পুজোয় কতো কাজ, ম্যামদের সাথে সাথে বাজার করা, ঠাকুর কেনা, অন্য স্কুলে নিমন্ত্রণের চিঠি দিতে যাওয়া,এই সব কিছু করার মজাই আলাদা ছিলো। এর পেছনের আর ও একটা বড় কারণ এগুলো করলে নিয়মিত ক্লাস করতে হতো না। আর তখন এই সুযোগটা পাওয়ার অপেক্ষা করতো না এমন Student বোধহয় কমই ছিলো।
বোন আর ওর বন্ধুরা মিলে এঁকেছে (স্কুল লাইফে আমিও বহুবার আলপনা দিয়েছি ছবিটা দেখে সেইদিনের কথাই মনে পড়লো)-
পুজোর আগের দিন যেখানে পুজো হবে সেই জায়গা ধোয়া মোছা করা, আলপনা দেওয়া, ঠাকুরের মালা গাঁথা সব করে বাড়ি ফিরতাম, পরদিন বাড়িতে অঞ্জলি দিয়ে শাড়ি পড়েই স্কুলে চলে যেতাম। সবার সাথে ঘোরাঘুরি, আড্ডা, স্কুলে খিচুড়ি খাওয়া সব কিছু মিলিয়ে দিনটা দারুণ কাটত।
বাড়ির পুজোর সময় ঠাকুরের পাশে সব বই দিয়ে দিতাম, মা বলতো ওই দুদিন ঠাকুর পড়েন, তাই আমাদের পড়তে নেই। সে কি মজা, মনে মনে চাইতাম ঠাকুর আর ও কয়েকদিন পড়ুক আর আমাদের ছুটি থাকুক।
এরপর যত বড়ো হতে থাকলাম এই আনন্দ গুলোও হারিয়ে যেতে লাগলো। স্কুলের পড় কলেজে গিয়ে কোনদিন পুজোয় অংশগ্রহণ করিনি, কলেজের পুজোয় যেন সেই টান অনুভব করিনি কখোনো। তখন ওই বাড়ির পুজোয় থাকতাম।
সন্ধ্যার পর ও কাজ করে চলেছে ওরা-
আমার বিয়ের পর দুবার পুজো হয়েছে এই বাড়িতে, বাকি বছরগুলো আমি পাশের বাড়ি অঞ্জলি দিয়েছি, এবার সেটাও হয়নি, কারণ এবার আশেপাশে কারোর বাড়ি পূজো হয়নি, কোনো না কোনো সমস্যার কারণে পূজো করতে পারেনি তারা।
মনটা খারাপ ছিলো, আর ও খারাপ লাগলো বোনের ছবি গুলো দেখে, এখনো কতো সুন্দর ভাবে দিনগুলো কাটাচ্ছে, ঘুরছে, মজা করছে। বড় হওয়ার সাথে সাথে এই সব দিনগুলো কেমন জেনো স্মৃতি হয়ে রয়ে যায়।তবুও যারা ছোটো আছে তারা মজা করুক,নিজেদের জন্য স্মৃতি জমা করুক,আর আমাদেরকেও সেই পুরোনো দিনে ফিরিয়ে নিয়ে যাক, ওদের হাত ধরেই আমরাও সেই দিনগুলোর স্মৃতি রোমন্থন করি।
সেজেগুজে তৈরী আমার বোন(মামার মেয়ে)-
সবাই খুব ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।শুভরাত্রি।
Beautiful rangoli, she is really talented.👍