ইচ্ছেটা বড়ো কথা, বয়সটা বড়ো ব্যাপার নয়।
প্রিয়,
পাঠকগণ,
আশাকরি আপনারা সবাই ভালো আছেন।
আজ আমি আপনাদের সাথে আমার শ্বশুর মশাইয়ের গল্প শেয়ার করবো। উপরের title দেখে নিশ্চয় অবাক হয়েছেন। হ্যাঁ আমি আমার শ্বশুর মশাইয়ের কথাই বলছি।
বর্তমানে ওনার বয়েস ৬৯ বছর।আমাদের নিজেদের ওষুধের দোকান ছিল, যেটা বাপি একাই চালাতেন।চালাতেন এই কারণেই বলছি কারন লোকডাউন এর পর থেকে দোকান বন্ধ। যেহেতু বাপির অনেক বয়েস হয়েছে, তাই এই অবস্থায় তাঁকে বাইরে যেতে দেওয়া হয় না। তারপর উনি আবার সুগার আছে।
আজকে বলবো বাপির একটি শখের কথা। "বাঁশি" বাজাতে তিনি ভীষণ ভালোবাসেন। না বিয়ের পর থেকে আমি কোনোদিন দেখিনি, তবে আমাদের পাশের বাড়ির ছেলেটা বাঁশি শিখতো, প্রায় দিন রাতে ও বাঁশি বাজাত। দূর থেকে শুনে বেশ ভালোই লাগতো। সেই নিয়ে একদিন কথা বলতে বলতেই জানতে পারি বাপি নিজেও বাঁশি বাজাতে ভালোবাসতো।
বাংলাদেশে থাকাকালীন যখন কলেজে পড়ত তখন বাঁশি বাজাত। তার নিজের একটা পেতলের বাঁশি ছিলো। এরপর কাজ করতে শুরু করে, পরে এক এক করে বিয়ে, ফ্যামিলির দায়িত্ব, সন্তানদেরকে বড়ো করা সবকিছুর মাঝে নিজের সখটা চাঁপা পরে যায়। সকল মধ্যবিত্ত পরিবারের মতন সংসারের টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে আজ সে জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে প্রথম বার হয়তো বুঝতে পারলো বাঁশি বাজাতে সে আজও ভালোবাসে।
কথাটা শুনে মজা করেই আমরা বললাম-তুমি এখন বাজাতে পারবে? জানিনা কথাটা শুনে তার কি মনে হলো দুদিন বাদে পাশের বাড়ির ছেলেটার থেকে একটা বাঁশি চেয়ে নিয়ে আসলো। প্রথম যেদিন বাজলো আমরা ভীষন হেসেছি। আজ স্বীকার করি ভুল করেছি। তবে ওই প্রথম দিনই,এরপর আমি নিজেই বলেছি বাপি তুমি চেষ্টা করো। আমি তোমায় ইউটিউবে ভিডিও বের করে দেবো।
ইউটিউব দেখে দেখে কিছু কিছু নোট করে রেখেছে ডায়েরিতে -
ভাবতে পারবেন না এরপর থেকে প্রতিদিন ওই মানুষটা রাত ১১.৩০ দোকান থেকে ফিরে রাতের খাবার খেয়ে নিয়ম করে বাঁশি বাজাত। প্রথন প্রথম সুর হতো না ঠিকই,তবে চেষ্টা ছাড়েনি কোনোদিন। এরপর নিজেই বাঁশি বানিয়ে নিয়েছে,প্রতিদিনের চেষ্টায় আজ বাপি বেশ ভালো বাঁশি বাজায়।
সবথেকে ভালো বাজায়-"ও নদীরে একটা কথা শুধাই শুধু তোমারে......."এই গানটা। লকডাউন এর দিনগুলো বাপির বাঁশি বাজিয়ে ভালোই কেটেছে,অনেক সময় পেয়েছে। আগে দোকান থেকে ফিরে বেশী সময় পেতো না।
সবশেষে আমি একটাই কথা বলতে চাই,আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই সুপ্ত কিছু ভালোলাগা আছে, যদি একান্তে বসে ভাবী নিশ্চয় খুঁজে পাবো। আর চেস্টা করলে বাপীর মতোই জীবন শেষ হওয়ার আগে হয়ত সেই ভালোলাগা গুলো পূরণ হতে পারে।
বাপীর নিজের বানানো বাঁশির সম্ভার-
এটা শুভ কিনেছিল অটোমোবাইল পড়ার সময়, এখন বাপি ব্যবহার করে বাঁশি রাখার জন্যে-
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন। সাবধানে থাকবেন।আপনাদের দিনটা খুব ভালো কাটুক।
asole boyos kno bisoy nah .issah soktitai asol .jaihok tomar blog vison miss korcilam .tomake akhne peye amra onk valo bodh korse .valo theko .
Aponar vaiya bollo aponar naki ki jeno somossa hoye cilo tai naki ai 3 din post share korte paren ni. Jaihok aponake abr amader majhe peye ami khusi. Anyway valo likhesen.
একদম সঠিক যেকোনো কিছু ই যেকোনো বয়েসে শেখা যায় চাই শুধু উদ্যম আর প্রচেষ্টা। ভালো লাগলো দেখে হাল না ছাড়া একজন মানুষকে দেখে @sampabiswas