এমনিই লিখলাম, কোন কারণ নেই, অকারণও নেই, লকডাউনে মাথা খারাপ হয়ে গেছে আমার। যাখুশিতাই

in Helpage India3 years ago

আর সত্যি ভালো লাগছে না এবার। গত বছর নতুন নতুন ইংরেজি সিনেমাতে দেখা গ্লোবাল লকডাউন, ডিস্টান্স ফ্রম ভাইরাস ইত্যাদি টার্মগুলো শুনে বিরাট ভালো লাগছিল, লাইফ একদম ইন্রেজি সিনেমার মত ব্যাপার স্যাপার, শুধু ধুম ধারাক্কা ক্যালাকেলি নেই আর চুমু খাবারও কেউ নেই। বাকি সবই মোটামুটি সেম। ছাদে উঠলে রাস্তাঘাট ফাঁকা, রোজ টিভিতে দেখছি পটাপট লোক পটল তুলছে, মাঝে সুশান্ত সিং রাজপুতও চলে গেলেন। প্রথম দিকে সবই ভালো লাগে, তা সে নতুন প্রেম হোক বা আলু কুমড়োর তরকারি, কিন্তু ধীরে ধীরে সবই বিরক্ত আনে জীবনে। এখন হয়েছে সেই। সারাদিন দম বন্ধ করে ঘরের মধ্যে বসে আছি। রুম-ব্যাল্কনি-রুম-ছাদ - ব্যালকনি এই ফর্মুলা ধরে পাক্কা এক বছর ধরে জীবন কাটছে, রাস্তা ঘাট ভুলে যেতে বসেছি, খিটখিটে হয়ে গেছি, যখন তখন যাকে তাকে খ্যাক করে উঠছি, বিরক্তির শেষ পর্যায়। তার মধ্যেই আবার যে যা খুশি বলছে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস এলো, হোয়াইট ফাঙ্গাস এলো, আরো একটা পড়তে না পারা নামওয়ালা কে একটা এসেছে, গোল গোল চাকা চাকা দাগ করা একটা বিরাট ভাইরাস। সেটা নাকি লোকজন মারে না কিন্তু যৌন ক্ষমতা কমিয়ে দেই ! শুনেই তো আমার আত্মারাম খাঁচা ছেড়ে দু ফুট আকাশা উঠে গেছে। এমনিতেই জীবনে কিছু নেই, আমাজন নেটফ্লিক্সে কোন শো বাকি নেই দেখতে, হইচই আর টুকটাক আডাল্ট সাইট দেখে, আর কবে আমার হবে ভেবে দিন কাটছে , এর মধ্যেই এইসব হলে ব্যাস আর দেখতে হয় না, এ তো শালা মরে যাবার থেকেও ভয়ংকর ব্যাপার। কি লাভ এমন জীবন রেখে যেখানে "ইয়েই" হবে না !
সব মিলিয়ে লাইফ শ্যাষ। তার মধ্যেই এদিকে আরো এক জ্বালা, মা আজকাল রান্না মানে দুটো সবজি বোঝে, এক পটল আর দুই কুমড়ো। এই দুটো জিনিষ দেখলে এমনিতেই মাথায় খান্ডব দাহন হয়। প্রতিদিন নিত্য নতুন সব রান্না, কোনদিন কুমড়োর ঘ্যাঁট। কোণদিন পটলের ঝোল, কোনদিন দই ফই মাখিয়ে পটলের পটলত্ব তুলিয়ে দিয়ে কি রকম একটা নোংরা টাইপের জিনিষ বানাই, দেখলেই মাথায় ভুলভাল চিন্তা আসে খালি। কুমড়োর কথা তো বাদই দিলাম। পৃথিবী থেকে কিছু একটা জিনিষ ব্যান করার হলে সবার আগে পটল আর কুমড়ো এই দুটোকে ব্যান করা উচিৎ । শালার সবজি নামের কলঙ্ক। কোন কাজের না, কোন টেস্ট নেই খালি ডালে ঝোলে অম্বলে জুড়ে গিয়ে লোকের খিস্তি খাওয়া কাজ । ওদিকে কে একটা আমুলের নামে কেস ঠুকে দিয়েছে আমুল নাকি বাটার, চকলেট, দুধ এসব করবে না বলে, ভেগান ফুড খাও, দুধ খাওয়া বন্ধ করে দাও। আজব দাবী মানুষের। শুনে আমি থ। গরুর দুধ খাবে না, আমরা চকলেট খাবো না, রুটিতে মা ঘি মেখে দেবে না , তাহলে বেঁচে থেকে লাভ কি ভাই ? বলতে কি চাও তোমরা ? বাবার ইয়ে খাবো শালা ??
সব মিলিয়ে চরম ফ্রাস্ট্রেশন এসে গ্যাচে জীবনের প্রতি। গেরুয়া পড়ে বারানসী যাব ভাবলেও তার উপায় নেই, সারাদিন ফেসবুক হোয়াটসাপ ইউটিউব আমাজন নেটফ্লিক্স এইসব করে করে জীবনের প্রতি ঘেন্না এসে গেছে। ছাদ বাগানেও যেতে ভালো লাগে না আজকাল। জানালা দিয়ে যেটুকু রাস্তা ঘাট দেখা যায় সেখানে ভালো লাল্টু মারকা কোন ছেলেও দেখতে পায় না যে মন মাথা ঠান্ডা হবে। সব মিলিয়ে জগা খিচুড়ি মার্কা একটা জীবন হয়ে গেছে।
আপাতত এই লক ডাউন উঠলে আমি পাহাড় যাব। নাহলে শান্তি পাব না জীবনে।

এই ছবিটা এমনিই তুললাম, কাজ নেই তাই, মা কোথা থেকে জোগাড় করেছে জানি না। দেখে ভালো লাগলো তাই তুলেছি

image.png

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 58270.16
ETH 2600.36
USDT 1.00
SBD 2.39