বর্ষপূর্তি উদযাপন- একটি খুশির দিন

আসসালামুয়ালাইকুম,
কেমন আছেন সবাই? বেশকিছু দিন পর কমিউনিটিতে লেখাতে আসলাম। আসলে কন্টেস্ট পোস্ট গুলো বেশি করা হয় যার কারনে এখানে নিয়মিত লেখা হয়ে উঠেনা।তবে প্রতিদিন একবার করে কমিউনিটির পোস্ট গুলো দেখে যায়। আর ভোট দিয়ে যায়। কে আমার পোস্টে ভোট দিল কি দিল না এত কিছু দেখে কাউকে ভোট দেয় না। যার পোস্টেই সামনে আসে ভোট দিয়ে দি। যাই হোক।

আজ সকালে আমার চট্টগ্রাম যাবার কথা। আগামীকাল আমার একটা চাকরির ইন্টারভিউ রয়েছে। তাই একদিন আগে কক্সবাজার থেকে রওনা দিতে চেয়েছি। যথারীতি সকালে উঠে আমার আগের প্রজেক্টের হিসাব কর্মকর্তাকে কল দিয়ে দুপুরে খাবার রান্না করতে মানা করলাম। আমি দুপুরে অফিসের মেচে খায়। সে বলল একবারে খেয়ে যান।আপনি বাহির হতে হতে তো ১২ টা হয়ে যাবেই। তার কথায় রাজি হলাম। তারপর গোসল করতে গেলাম।

গোসল করে এসে অফিসের জন্য তৈরি হলাম। গতকাল আমার আগের প্রজেক্টের ডোনার কিছু শুটকি মাছ কেনার জন্য বলেছিল। তো সেগুলো কিনে রেখেছিলাম ওনি ঠিকানা না দেওয়াতে গতকালকে সেগুলো কুরিয়ার দিতে পারিনি। গতকাল রাতে ঠিকানাটা মোবাইলে এসএমএস করে। এখন সেই শুটকি মাছগুলো নিয়ে আগে চলে গেলাম ঝাউতলা সুন্দরবন কুরিয়ার অফিসে। কুরিয়ার অফিসে বুকিং দিলাম। তখনো সকালে নাস্তা করা হয়নি। পাশে এক দইচিড়া বিক্রি করে এমন একটি দোকান আছে। এটি বেশ জনপ্রিয় দোকান। সেখানে গিয়ে একবাটি দই চিড়া খেলাম। তারপরও অফিসের দিকে রওনা দিলাম। অফিসে যখন ঢুকি তখন প্রায় সাড়ে ১১ টা। এরই মধ্যে ডোনারের কল এসেছিল আমার আগের প্রজেক্টে যে ফাইনাল রিপোর্ট আমি তাদেরকে দিয়েছি সেটা তারা অনুমোদন দিয়েছে এবং সেটার পরিপ্রেক্ষিতে ১৫০০০ ডলারের একটি ইনভয়েস তাদেরকে সাবমিট করা লাগবে। তো অফিসে এসে সেটা করার কাজে লেগে গেলাম। ডোনার যে রিপোর্টটা এপ্রুভ করে পাঠিয়েছে সেটা প্রিন্ট নিয়ে আবার স্ক্যান করা লাগছে। স্ক্যান করার পর বিল তৈরি করে মেইল করে দিলাম।মোটামুটি এগুলো করতে করতে প্রায় দেড়টার মতো বাজে। প্ল্যান ছিল তখনই খেয়ে রওনা দিব। দোতলায় যখন খাবার টেবিলে বসলাম ওখানে আরো অন্যান্য সিনিয়রাও ছিল। সিনিয়রদের একজন হঠাৎ করে জানতে চাইলো কিরে আপনি এখানে কেন? আপনি তো চিটাগাং থাকার কথা ছিল আজকে। আমি বললাম হ্যাঁ আমি তো এখন যাব। তখন সে বলল এখন যখন একেবারে অনুষ্ঠানটা শেষ করে যান।

অনুষ্ঠান বলতে আজকে আমাদের এনজিওর প্রধান আরিফ ভাইয়ের জন্মদিন ছিল। সে উপলক্ষে রামুতে একটি প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়। সেখানে তিনটা থেকে প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার কথা। তা আমি চিন্তা করেছিলাম তিনটা থেকে প্রোগ্রাম শুরু হলে সেটা শেষ হতে সাতটা বেজে যাবে। তো সেজন্য আজকে দেওয়া হবে না। তাই আমি ওই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে চাইনি কিন্তু সিনিয়ন এটা নিয়ে যখন বারবার বলতেছে তখন আসলে নিজের কাছে একটু কেমন কেমন লাগতেছিল। পরে চিন্তা করলাম ঠিক আছে যাই তিনটায় প্রোগ্রাম শুরু হলে একঘন্টা থেকে চারটার দিকে চলে আসব। এই চিন্তা করে আমি তারপরে একাউন্টের এবং আরেকজন সিনিয়র কলিগ সহ তিনজন রওনা দিলাম। আমরা সেখানে তিনটা ৩০ মিনিটের সময় গিয়ে পৌঁছাই। তখন ওখানে কাজ চলছিল তো সবাই বসে আড্ডা দিতে দিতে প্রায় পাঁচটা। তখনো কিন্তু আমাদের অতিথীরা এসে পৌঁছায় নেই। তারা আসে পাঁচটা ৩০ এর সময়। তো তখন মূলত প্রোগ্রাম শুরু হয় এবং ৬ঃ৩০ এর মধ্যে শেষ করার কথা। আমি চিন্তা করছিলাম ৬:৩০ হলেও আমি একটা রিস্ক নিয়ে চলে যাব কিন্তু দেখা যায় না ৬:৩০ এ তারা শেষ করতে পারে নাই। এটা শেষ করতে করতে প্রায় সাড়ে সাতটা বেজে যায়। তখন চিন্তা করলাম এত রাতে রওনা দিলে অনেক রাত হয়ে যাবে। তো পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলাম যে আগামী কালকে সকালে নামাজের পর রওনা দিব।

মুলতা যে প্রোগ্রামটা ছিল সেখানে তিনটা প্রোগ্রামের আয়োজন হয় একসাথে। একটা ছিল প্রধান নির্বাহীর জন্মবার্ষিকী, আরেকটা ছিল ইপসা'র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী এবং আরেকটি ছিল আজকে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস। তিনটি দিবস প্রোগ্রামের মাধ্যমে একসাথে উদযাপন করা হয়। সেখানে দুইটা কে কাটা হয়। একটা হচ্ছে ইপসা'র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এবং আরেকটি হচ্ছে ইপসা'র প্রতিষ্ঠাতা প্রধান নির্বাহীর এর। পরের বিভিন্ন জন তাদের অনুভূতি শেয়ার করার মাধ্যমে প্রোগ্রামটা শেষ হয়। তো প্রোগ্রাম শেষে সবাই ফটো শাসন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তো এই ফাঁকে আমিও এবং আমার হিসাব কর্মকর্তা আমাদের প্রধান নির্বাহীর সাথে একটা ছবি তুলি। যদি ও ছবিটা ভালো আসেনি। তখন ইতিমধ্যেই অন্ধকার হয়ে গেছে। সন্ধ্যা চলে আসছে। অন্ধকারের ছবি খুব একটা ভালো আসে না। এভাবে মোটামুটি আজকের দিনটা পার হয়ে গেছে।

Thank you for Reading