The Diary game | 27th May -Parents day of my son

in Steem For Bangladeshlast year (edited)
"আমার সারাটা দিন মেঘলা আকাশ বৃষ্টি তোমাকে দিলাম "

শ্রীকান্ত আচার্যের এই গানটি শুনে মনে হল আমরা যারা স্টিমিটে কাজ করি আমাদের সারাদিন আমরা কখনোই বৃষ্টিকে দিতে পারব না। কারণ আমাদের ঘটনাবহুল দিনগুলো আমরা ডাইরি গেম হিসেবে লিখে ষ্টিমিট এ দিয়ে থাকি। তাই বৃষ্টিকে আমরা ফিরিয়েই দিব।


আমিঃ @hasina78
দেশঃ @bangladesh

70d1284a-5672-4c24-98a0-62d1f5826c11.jpg
image made by collage app

@steem4bangladesh এ আমাদের আপু ভাইয়েরা কি সুন্দর করে ডাইরি গেম দেন। আমারও প্রায় সময় ইচ্ছে হয় ডাইরি গেম লিখতে কিন্তু আমার রুটিন বাঁধা জীবনে ডাইরি গেম লিখার মত এক্সাইটিং ঘটনা কমই ঘটে। গত শনিবার ছিল ২৭ মে, আমার ছেলের ক্যাডেট কলেজের প্যারেন্টস ডে ছিল। আমাদের ইচ্ছে ছিল আমরা শুক্রবার দিন দুপুরে পাবনায় চলে যাব। সেখানে সার্কিট হাউসে আমাদের জন্য রুম বুকিং দেয়া ছিল। কিন্তু আমার হাজব্যান্ড স্টেশন লিভ করার পারমিশন না পাওয়ায় আমরা শনিবার দিন ভোর সাড়ে চারটায় পাবনার উদ্দেশ্যে রওনা হই। কারণ আমার ছেলের প্যারেন্টস ডে সকাল আটটা থেকে শুরু হয়।

আমরা ভোড় সাড়ে চারটায় রওনা হয়ে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে পাবনা ক্যাডেট কলেজে পৌঁছাই।

1f64764a-7214-4133-b911-847b47114e6f.jpg
ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা

আমাদের মত অনেক বাবা মায়েরা তাদের ছেলেদের সাথে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করছিল। কিন্তু আটটা বাজার আগে কাউকে কলেজ ক্যাম্পাসে বাচ্চাদের সাথে মিট করার পারমিশন নেই।

70a8bb2f-d94d-4e92-ab09-8a9675a2c4c0.jpg
বাচ্চাদের সাথে দেখা করার জন্য সবাই এগিয়ে যাচ্ছে

আমরা সবাই অনেকদিন পর আমাদের বাচ্চাদের দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে গিয়েছিলাম। সবাই সবার বাচ্চাকে জড়িয়ে ধরে আদর করছিল আমিও তার ব্যতিক্রম ছিলাম না। আমার ছেলে এদিন ডিউটি ক্যাডেট ছিল তাই তাকে ইউনিফর্ম পরে থাকতে হয়েছিল।

e903e934-affd-489f-9ed9-3da7c3967af1.jpg
আমার ছেলে সেইদিন ডিউটি ক্যাডেট ছিল

আমরা বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন খাবার নিয়ে গিয়েছিলাম। ছেলেকে পাশে বসিয়ে খাবার খাওয়াছিলাম আর জিজ্ঞেস করছিলাম কলেজের বিভিন্ন কথা। আমার ছেলে তাদের কলেজের কালচারাল ইভেন্টে বেস্ট পারফরমার্স হয়েছে সে খুব খুশি হয়ে আমাকে সে প্রোগ্রামের কথা বলছিল।

0ec0a69d-af7b-4d5e-86d9-4a4421485ffc.jpg
আমরা সবাই খুব খুশী এতোদিন পর পুরো পরিবার একসাথে

সাড়ে দশটার দিকে প্রিন্সিপালের সাথে আমাদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় সেখানে গার্ডিয়ানরা তাদের বাচ্চাদের ভালোর জন্য বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন।

1e137ddf-c982-4e9d-ad21-46927e9735c8.jpg
হল রুমে আমরা প্রিন্সিপাল স্যারের জন্য অপেক্ষা করছি

বৃষ্টির কারনে আমরা আমাদের ছেলের ক্লাসেও যেয়ে কিছুক্ষণ বসি। ওদের ক্যাডেট কলেজে, ওদের জন্য নতুন হাউজ তৈরি হচ্ছে। ওরা আশা করছে কোরবানীর ঈদের বন্ধের পরে ওরা ওদের নতুন হাউজে উঠে যাবে। আমরা ওদের নতুন হাউজটা ঘুরে দেখলাম।

bc6192a4-24e9-4e71-803b-e6bec017b51a.jpg
হাইজের দোতলার বারান্দায় ক্যাডেট হাসিব

এরই মধ্যে দুপুরের খাবার সময় হয়ে গেল আমরা ছেলেকে খাবার খাওয়ালাম। দুপুর ২ টায় প্যারেন্টস ডের টাইম শেষ। ছেলেকে রেখে ফিরে আসার পালা। আমার ছেলেটা এবার দশম শ্রেণীর ছাত্র তাই তাকে অনেকক্ষণ বুঝালাম যেন লেখাপড়ার দিকে একটু বেশি সময় দেয়, বেশি মনোযোগী হয়।

এবার ছেলের কাছ থেকে বিদায়ের পালা, খুব খারাপ লাগে ছেলেটাকে রেখে আসতে। আমার ছেলেটা মাশাল্লাহ অনেক ম্যাচিউর সে কখনোই বিদায় নেবার সময় কান্নাকাটি করেনা বা তার মনের কষ্টটা প্রকাশ করে না। চুপ করে মাথা নিচু করে চলে যায়। আমরা প্রতিবারই তার হাউজে ঢুকার আগ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকি, সে মাথা নিচু করে হেঁটে হেঁটে চলে যায় কখনোই পেছন দিকে তাকায় না। আপনার আমার ছেলেটার জন্য দোয়া করবেন।

আমরা আমার বান্ধবীর বাসায় দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে, নামাজ পড়ে আবার চারটার দিকে রওনা হই।আমার বান্ধবীর বাসার সামনে খুব সুন্দর বাঙ্গি হয়েছে।তার একটা ছবি তুলে নিলাম।

0f667339-e715-4ad8-bbe5-03de44f46b0b.jpg
সৌখিন বাঙ্গি ক্ষেত

আমার হাজব্যান্ড খুব ভালো ড্রাইভ করে। কিন্তু রাস্তায় দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য দুদিকের চালককেই সাবধানতার সাথে যানবাহন চালাতে হয়। হঠাৎ একটা বাইক আমাদের গাড়ির সামনে চলে আসে, আমার হাজব্যান্ড তাড়াতাড়ি করে গাড়ি বায়ে সরিয়ে নেয়ার ফলে মারাত্মক দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় উভয় পক্ষ। কিন্তু আমাদের গাড়ির গায়ে স্ক্র্যাচ পড়ে যায়। আমার হাজব্যান্ড বেশ মন খারাপ করে ফেলে । তখন আমি তাকে বোঝাই যে এর উসিলায় আল্লাহ হয়তো আমাদের বড় কোন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করলেন।

পথে আমরা হাটিকুমরুল নামক একটা স্থানে ব্রেক নেই। এখানে একটি বেশ পরিচিত রেস্টুরেন্ট আছে নাম "ফুড ভিলেজ", সেখানে আমরা একটু ফ্রেস হয়ে কফি পান করি।

a238e80a-dfa7-4cfd-9518-d378f8cc6f2b.jpg
ফুড ভিলেজে কফি পান করি

রাত আটটার দিকে আমরা বাসায় পৌছাই । বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে আমরা একটু আরলি ডিনার করে ফেলি। যেহেতু সারাদিন অনেক জার্নি হয়েছে তাই স্বাভাবিকভাবে আমরা বেশ টায়ার্ড ছিলাম । সে কারণে আমরা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পরি।

এভাবে আমার দিনটি শেষ হলো। ধন্যবাদ সবাইকে।
Sort:  
 last year 

আপু, আপনার ডাইরি গেমটা পুরোপুরি পড়লাম। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে ভালো লাগলো, আর যেহেতু এই পাবনা ক্যাডেট কলেজ টি আমার চেনা তাই ভালো লাগলো, ২০২১ সালে আমি পাবনায় যাই আর সেখানকার বন্ধুদের নিয়ে সেখানে ঘুরতে গিয়েছিলাম।

আল্লাহর কাছে অনেক শুকরিয়া যে বড় কোন এক্সিডেন্ট হয়নি। আর আপনারা হাটিকুমরুল দিয়ে যাতায়াত করেছেন, আর ফুড ভিলেজে ফ্রেশ হয়ে কফি খেয়েছেন। আসলে আমার এই জায়গাগুলোর চিরচেনা। কারন আমি সিরাজগঞ্জ রোডে প্রায় ২ বসর থেকেছি। তবে মনে হচ্ছে আপনাদের বাসা সিরাজগঞ্জ নাকি।

যাইহোক ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, আপনার ছেলের জন্য দোয়া রইলো যেন আপনাদের মনের আাশা পূরন করেন। আল্লাহ হাফেজ।

 last year 

ধন্যবাদ ভাই সময় করে আমার পোষ্ট টি পড়ার জন্য। আপনার সব পরিচিত জায়গা থেকে আমরা ঘুরে আসলাম। আমি ঘাটাইল থাকি ভাই। আমার ছেলেদের জন্য দোয়া করবেন।

 last year 

ফি আমানিল্লাহ

 last year 

খুব সুন্দর করে দিনটি কাটিয়েছেন আপু।সন্তানের সাফল্যেই মা বাবার সাফল্য।

 last year 

ধন্যবাদ আপু। দোয়া করবেন আল্লাহ্‌ যেন ছেলেটাকে সুস্থ রাখেন।

 last year 

আসসালামু আলাইকুম আপু, আপনার ডায়েরি গেইম লেখা সম্পূর্ণ পড়েছি। আল্লাহ আপনার ছেলেদের নেক হায়াত দান করুন। দোয়া করি। সব মা বাবার স্বপ্ন থাকে ছেলে মেয়ে ভালো স্কুল কলেজে লেখা পড়া করবে।আল্লাহ আপনাকে সেই চাওয়াটা পূরণ করেছে। যদিও ছেলেকে দূরে রেখে আসা খুব কষ্টের। এটা শুধু মা বাবারাই অনুভব করতে পারবে।দোয়া রইলো আপু আপনার পুরো পরিবারের জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ ভাই সময় নিয়ে আমার পোষ্ট টি পড়ার জন্য। সব সময় দোয়া করবেন আমাদের জন্য। আমার ছেলে টা যেন আল্লাহর নেক বান্দা হয়। আমিন।

Loading...
 last year 

আপনার পোস্ট অসাধারণ ছিলো।সারা দিন অনেক ব্যাস্থ সময় কেটেছে। আপনার ছেলের জন্য অনেক শুভকামনা রইলো। ভালো থাকবেন আর আমাদের অনেক বেশি সুন্দর পোস্ট উপহার দিবেন।

 last year 

ধন্যবাদ আমার পোষ্ট পড়ার জন্য। আপনিও ভাল থাকবেন। শুভকামনা রইল।

 last year 

আসসালামু আলাইকুম @hasina78 আপু। আপনার ডায়েরিটি পড়ে খুবই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে বিদায়ের মুহূর্তটি। আসলে ছোটকালে যে শিশুরা দায়িত্ব নিতে শিখে যায় তারা মানসিকভাবে বেশ শক্তিশালী হয়। আপনার ছেলেদের জন্য অনেক অনেক দোয়া আর আগামীর জন্য শুভকামনা...

 last year 

ধন্যবাদ আপু আমার পোষ্ট পড়ার জন্য। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 61137.27
ETH 2383.64
USDT 1.00
SBD 2.52