চিড়িয়াখানা ভ্রমণ // পরিবার নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা ভ্রমণ। (পর্ব -১)

in Steem For Bangladesh8 months ago

স্টিমিটের সহযোদ্ধারা,

আসসালামুআলাইকুম,

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে ভালই আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও আপনাদের দোয়ায় বেশ ভাল আছি। অনেকদিন পর প্রায় দীর্ঘ ৮ মাস পর আপনাদের মাঝে আবার ফিরে এলাম। আসলে পারিবারিক ও নিজের ব্যস্ততার কারণে ও আমার ব্যক্তিগত কিছু অসুবিধার কারণে দীর্ঘদিন আপনাদের মাঝে হাজির হতে পারিনি এজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আশা করি এখন থেকে আপনাদের মাঝে আবারো নিয়মিত থাকার চেষ্টা করব। মানুষের সমস্যার শেষ নেই। আমার অন্যান্য পোষ্টের মাধ্যমে আমি চেষ্টা করব আমি বিগত দিনে কি সমস্যায় ছিলাম বা কেন আপনাদের মাঝে উপস্থিত হতে পারিনি তা তুলে ধরার। আশা করি সেই পোস্টগুলোর মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন বিষয়গুলো।

1000030489.png

যাইহোক আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার পরিবারকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার বিভিন্ন ফটোগ্রাফি ও আমার অনুভূতি গুলো শেয়ার করব। যেহেতু এই ভ্রমণ অনেক দীর্ঘ তাই আমি চেষ্টা করব আপনাদের মাঝে পর্ব আকারে এটি শেয়ার করার জন্য। তো বন্ধুরা আজকে সেরকম কোন সমস্যা নিয়ে হাজির হয়নি। আজকে আমি আমার পরিবার নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যাওয়ার প্রথম পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি আমার ভ্রমণ পর্বগুলো আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

পরিবার নিয়ে গাজীপুর থাকি অনেকদিন ধরেই। যেহেতু গাজীপুর থেকে ঢাকা খুব কাছে তারপরেও পরিবার নিয়ে কখনো চিড়িয়াখানায় যাওয়া হয়নি। যদিও বাচ্চারা চিড়িয়াখানা যাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে থাকে এবং যখনই সুযোগ পায় তখনই আমাকে বলে ফেলে চিরাখানা থেকে ঘুরে আসার জন্য কিন্তু আমার সময় স্বল্পতার কারণে আসলে ব্যবসাটা বাণিজ্য করে সময় বের করা খুব টাপ হয়ে যায়। এই ধরেন চাকরি করলে যে কোন একটা দিন সুযোগ পাওয়া যায় ছুটি হিসাবে কিন্তু ব্যবসা করলে সে সুযোগটা পাওয়া যায় না। সময় করতে পারছিলাম না। এদিকে ছোট ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি মিরপুর, গত কোরবানির ঈদে আমাদেরকে দাওয়াত দিয়েছিল কিন্তু আমি বাড়ি যাওয়ার কারণে আর সেখানে পরিবার নিয়ে যাওয়া হয়নি। তো কিছুদিন আগে ছোট ভাইয়ের শাশুড়ি আমাদেরকে ফোন দিয়ে বলল তাদের বাসায় যাওয়ার জন্য। ঈদ উপলক্ষে যেহেতু যাওয়া হয়নি তাই সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে এবার যাব গিয়ে ঘুরে আসব। ছোট ভাই বিয়ে করেছে নতুন এর মধ্যে তেমন একটা যাওয়া হয়নি তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম সবাই মিলে গিয়ে ঘুরে আসবো।

আমাদের পরিবারটা অনেকটা বড় একটি পরিবার যৌথ ফ্যামিলি। সবাই মিলে যাব প্রায় ১৩ থেকে ১৪ জন সদস্য আমরা। সিদ্ধান্ত হলো শুক্রবারে আমাদের মিরপুর যাওয়ার ব্যাপারে। তাই শুক্রবার আমরা সকাল সকালই রেডি হয়ে মিরপুর যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে গেলাম। যাবো যখন একটু তাড়াতাড়ি করে যাই কারণ রাস্তাঘাটে জ্যাম থাকে তাই আমরা ভোরেই ফজরের নামাজের পর মিরপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হই। তারপরেও বের হতে হতে প্রায় ছয়টা সাড়ে ছয়টা বেজে যায়। এরপর আমরা এখান থেকে চলে যাই চৌরাস্তা। চৌরাস্তা থেকে বসুমতি করে আমরা চলে যাই মিরপুর পল্লবীতে, সেখানে নেমে দুইটা অটো নিয়ে আমার ছোট ভাইয়ের শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে যাই। তো ছোট ভাইয়ের শ্বশুরবাড়িতে আগেই বলা ছিল আমরা সকাল সকাল চলে যাব সেখানে গিয়ে সকালের নাস্তা করব। তারাও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে আমরা সেখানে গিয়ে সবাই হাতমুখ ধুয়ে নাস্তা করে নিলাম।

1000030474.jpg

যেহেতু মিরপুর গেলাম সে সাথে একটা সুযোগ আসলো আর ছোট ভাইয়ের শশুরের বাসার খুব কাছাকাছি মিরপুর চিড়িয়াখানা রয়েছে আমাদেরও সেরকম টার্গেট ছিল সেখানে গিয়ে মিরপুর চিড়িয়াখানাটা ঘুরে আসব। তো নাস্তা করার পর সবাইকে বলে দিলাম যে আমরা দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করে চিড়িয়াখানায় যাব, সবাই সেভাবে রেডি থাকবে, এই কথা শুনে বাচ্চারা তো অনেক খুশি। নাস্তা খেয়ে আমরা বেশ কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম এরপর যেহেতু শুক্রবার জুমার নামাজ পড়তে গেলাম। জুমার নামাজ পড়ে এসে খাওয়া-দাওয়া করলাম এবং এর খাওয়া-দাওয়া শেষে সবাই রেডি হয়ে নিল মিরপুর চিড়িয়াখানায় যাওয়ার জন্য। এরপর সবাই বের হয়ে দুইটা অটো নিয়ে মিরপুর চিড়াখানায় চলে আসলাম।

1000030475.jpg

এরপর আমি আর আমার ছোট ভাই মিলে সবাইকে এক সাইডে দাঁড় করিয়ে আমরা দুজনে গিয়ে টিকিট কেটে নিয়ে আসলাম। আসলে তখন টিকেটের ছবিটা তুলতে মনে ছিল না তাই আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পারিনি। তারপর এক এক করে আমরা চিড়িয়াখানা প্রবেশ করলাম। যেহেতু শুক্রবার ছিল অনেক ভিড় ছিল অনেক মানুষের আনাগোনা ছিল। যদিও নিরব নিস্তব্ধ থাকতো তাহলে খুব একটা ভালো লাগত না কিন্তু অনেক মানুষ হওয়াতে এতটা খারাপ লাগেনি।

1000030491.jpg

তারপর ঢুকতেই আমাদের প্রথমে চোখে পড়ল পুরো চিড়াখানার মানচিত্রটি, কোথায় কি রয়েছে আমরা খুব সহজে এই মানচিত্র দেখে বের করতে পারব। আপনারাও চাইলে প্রথমে গিয়ে এই মানচিত্র দেখে নিবেন এবং কোথায় কি আছে তা আগে থেকেই জেনে নিবেন তাহলে দেখতে সুবিধা হবে।

1000030476.jpg

এরপর আমরা সবাই মানচিত্র দেখে একদিক থেকে হাঁটা শুরু করলাম খুব সুন্দর একটা পরিবেশ দেখতে অনেক ভালো লাগছিল। অনেকদিন পর আসলাম ঘুরতে তাই আমাদের সবারই অনেক ভালো লাগছিল। আমার ছোট মেয়ে ও ছেলেকে তো ধরে রাখাই যাচ্ছে না এত মানুষের ভিড়ে যদি হারিয়ে যায় তারপরও চোখে চোখে রাখতে হলো, তারা এদিক থেকে ওদিকে ছোটাছুটি করতে লাগলো।

1000030477.jpg

1000030478.jpg

তারপর আরো সামনে যেতেই আমাদের চোখে পড়লো অনেকগুলো বানরের খাঁচা যেখানে অনেক প্রজাতির বানর রয়েছে। আসলে চিড়িয়াখানার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় কিন্তু বানর তাদের লাফালাফি খেলাধুলা এগুলা কিন্তু বাচ্চাদেরকে অনেক মুগ্ধ করে। সে সাথে বড়রাও অনেক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে মজা করে। যাই হোক আজ এই পর্বে বানরের খাঁচা পর্যন্তই সমাপ্ত করলাম। আশা করি খুব শীঘ্রই পরে পর্ব নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

লোকেশন

চলবে..................

Sort:  
Loading...

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 71219.01
ETH 3807.66
USDT 1.00
SBD 3.50