চট্টগ্রাম ভ্রমণ // আমার পরিবার নিয়ে ভ্রমণ গাজীপুর থেকে চট্টগ্রাম(পারকি বিচ)। পর্ব-৩
স্টিমিটের বন্ধুরা,
আসসালামুয়ালাইকুম।
আবারো আপনাদের মাঝে হাজির হয়ে গেলাম ভ্রমণের তৃতীয় পর্ব নিয়ে। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভাল আছি। তাহলে চলুন তৃতীয় পর্বের ভ্রমণ কাহিনীটি শুরু করা যাক।
দ্বিতীয় পর্বের লিংক, এরপর থেকে
বাচ্চারা যখন খুশিতে আনন্দে সাগরের পানিতে নেমে গেল তখন আমার স্বামী তাদেরকে চোখে চোখে রাখার জন্য সেও নিজে নেমে গেল পানিতে। বেশ কিছুক্ষণ বাচ্চারা গোসল করার পর তাদেরকে উঠে যাওয়ার জন্য বলা হলো, কিন্তু যেহেতু অনেকদিন পর তারা এরকম একটি সুযোগ পেয়েছে তাই কিছুতেই তাদেরকে উঠানো যাচ্ছে না। আমি বারবার আমার হাজব্যান্ড কে বলছিলাম যে তাদেরকে উঠিয়ে দেওয়ার জন্য।
কিন্তু আমার হাজব্যান্ড বাচ্চাদেরকে বলছে কিন্তু সেভাবে গুরুত্ব দিয়ে বলছে না, সেটা আমি দেখতে পাচ্ছি কারণ সেও তাদেরকে একটু সুযোগ দিচ্ছে আরো কিছুক্ষণ গোসল করার জন্য। এদিকে তো আমি অনেকটা বলতে পারেন চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছি, তাদেরকে ওঠার জন্য কিন্তু আমার স্বামী বলে আর একটু থাক আরো কিছুক্ষন তারা গোসল করুক। আমি বললাম যে না তাদের জ্বর ঠান্ডা লেগে যাবে তখন আমার স্বামী বলতেছে যে সাগরের পানিতে জ্বর ঠান্ডা হয় না ওরা আরো কিছুক্ষণ গোসল করুক তারপর উঠে যাবে।
এদিকে সময় যাচ্ছে আস্তে আস্তে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে আমরা ততক্ষণে পশ্চিম আকাশে সূর্যের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করছিলাম কখন সূর্যাস্ত দেখতে পাবো। এবার আমার স্বামী বাচ্চাদেরকে ধমক দিও আর উঠাতে পারছে না, এক পর্যায়ে সেও তাদের উপরে অনেকটা রেগে ক্ষেপে গেল তাদেরকে উঠতে বাধ্য করলো। যদিও বাচ্চারা অনেক আনন্দ ফুর্তি করেছে কিন্তু আমার একটা ভয় ছিল যদি তাদের কোন সমস্যা হয়ে যায় বা কোন বিপদ আপদ হয়ে যায়। যাক আল্লাহ তাআলার অশেষ মেহেরবানীতে তেমন কোন সমস্যা হয় নাই, বাচ্চারা সবাই গোসল করে উপরে উঠে গেল।
এরপর সবাই গায়ের ভেজা জামা কাপড় পরিবর্তন করে নিল। এদিকে আমরা বিকেলে কিছু ফল হালকা নাস্তা নিয়ে এসেছিলাম সবাই মিলে আমরা ওই ফলগুলো কেটে খেয়েছি, ফলগুলো ছিল আপেল পেয়ারা মাল্টা। ওই মুহূর্তে ফলগুলো পেয়ে সবাই অনেক খুশি হল কারণ সকলেরই অনেকটা খিদে লেগে গিয়েছিল। যাই হোক অপেক্ষা করতে করতে সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে আমরা আর কিছুক্ষণের মধ্যে সূর্যাস্ত দেখতে পাবো। ততক্ষণে সূর্য পুরোটা লাল হয়ে গিয়েছে তাকাতে খুব চমৎকার লাগছে সূর্যের দিকে। ধীরে ধীরে সূর্য ডুবতে শুরু করলো। সবার সূর্যের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রয়েছে আর কি সুন্দর দৃশ্য, সব সময় এই দৃশ্যগুলো দেখতে মন চায়। এরমধ্যে আমার মনে হল ডুবন্ত সূর্যটা ছেলের হাতের উপর রেখে একটা ছবি তুলি, তাই একটা ছবি তুলে নিলাম স্মৃতি হিসেবে রেখে দেওয়ার জন্য।
ছেলেও ছবিটা দেখে অনেক আনন্দিত। বলতে বলতে সূর্যটা ডুবেই গেল তখন মনে হচ্ছিল যেন কি একটা মিস করে ফেললাম, আসলে সব সময় এরকম দৃশ্যগুলা দেখা হয় না, তাই এত বেশি উচ্ছ্বাসিত ও আনন্দিত হয়েছিলাম। মূলত এই পারকি বিচে গিয়ে আমাদের সবচেয়ে বেশি আনন্দ ও উপভোগের বিষয় ছিল সাগরের পানিতে গোসল করা সেই সাথে সূর্যাস্ত দেখা। সব মিলিয়ে আমাদের ভ্রমণটা অনেক দারুন হয়েছে। আমি যা দেখলাম কক্সবাজার গিয়ে যে আনন্দ বা মজা পাওয়া যায় এখানেও ঠিক একই রকম ভাবেই আনন্দ মজা পাওয়া যায় তাই আপনারা আর কি বেঁচে যাবেন আমাদের মত সময় গুলোকে উপভোগ করবেন। আমরা আবার বাসা ফিরে আসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম যেহেতু সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে, তাই আর দেরি না করে আমরা ফেরার জন্য রওনা দিয়ে দিলাম।
ঠিক যেভাবে এসেছি সেভাবেই আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে। আমরা যখন ফিরে যাচ্ছিলাম তখন সিএনজি স্টেশনে গিয়ে দেখি এত মানুষ। আমরা বুঝতেই পারিনি কখন এত মানুষ এই পার্টি বিচে হয়ে গিয়েছে, যদিও এত পপুলার ছিল না বিচ টি। তখন বুঝতে পারলাম যে ঐদিন ছিল হিন্দু ধর্মাবালম্বী লোকেদের দশমী। তারা তাদের প্রতিমা গুলোকে সাগরের পানিতে ভাসিয়ে দেওয়ার জন্য দলে দলে অনেক মানুষ জড়ো হয়েছে।
এই বার বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য সিএনজি পাচ্ছিলাম না। এতগুলো মানুষ কিভাবে যে বাসায় যাব একটু চিন্তায় পড়ে গেলাম। যাই হোক কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর দুইটা সিএনজি আমার স্বামী অনেকটা দূরে গিয়ে আমাদের জন্য নিয়ে আসলো। সিএনজিগুলা দেখে আসলে সবাই একটু স্বস্তি ফিরে পেলাম। এরপর আমরা সবাই সিএনজি করে আমাদের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে বাসায় চলে আসলাম। এভাবেই চট্টগ্রামের পারকি বিচে ভ্রমণের তৃতীয় পর্বটি শেষ হলো। এরপরে আমরা আরও অন্য একটি জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলাম পরবর্তী পর্বে সেটা নিয়ে আলোচনা করবেন ইনশাআল্লাহ।
লোকেশন
চলবে...............
ধন্যবাদান্তে
@sanuu
গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ থেকে।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Twitter share link
We support quality posts, and good comments anywhere, with any tags.