গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খড়ের পুঁজ নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা

in STEEM FOR TRADITIONNlast year (edited)

আসসালামু আলাইকুম


কেমন আছেন আপনারা, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন, আলহামদুলিল্লাহ আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী খড়ের পুঁজ নিয়ে আলোচনা করতে এসেছি। তাহলে চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

ঐতিহ্যবাহী খড়ের পুঁজ।


IMG_20230917_140455-01.jpeg

হ্যালো কাছের মানুষজন। আমার নতুন পোস্টে আপনাকে স্বাগতম৷ আমাদের বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। আর এই দেশে ৭০ থেকে ৭৫% মানুষ ধান চাষ করে থাকেন। মূলত অতিরিক্ত ধান চাষ করার জন্যই আমাদের দেশকে কৃষি প্রধান দেশ বলা হয়। বাংলাদেশের মানুষ ধান চাষ করতে বেশি আগ্রহী। প্রতিটি জেলায় সব থেকে বেশি ধানের চাষ করা হয়। আর আমরা সেই ধান চাষ থেকেই খড় পেয়ে থাকি। ধানের খড় আমরা অনেক কাজে ব্যবহার করে থাকি। বিশেষ করে খড় আমরা গরুর খাবারের জন্য বেশি ব্যবহার করে থাকি। এছাড়াও ধানের খড় আমরা জ্বালানির কাজে ব্যবহার করি এবং কেউ কেউ খড় দিয়ে কুঁড়ে ঘর তৈরি করে থাকেন। আমরা যে খড় গুলো গরুকে খাওয়ানোর জন্য রেখে দেই। সেই খড় গুলো পুঁজ আকারে সংরক্ষণ করে থাকি। এবং এটি হলো ঐতিহ্যবাহী খড় সংরক্ষণ করার একটি পদ্ধতি।


IMG_20230917_140312-01.jpegIMG_20230917_140335-01.jpeg

IMG_20230917_140407-01.jpeg

আমি কিছু সংখ্যক জায়গায় দেখেছি। ধানের খড় গুলো কাড়িয়া আকারে ঘরের ভেতর সংরক্ষণ করে রাখে। ঘরের ভিতর যে খড় গুলো দেখতে পারতেছেন এগুলোকে আমরা কাড়িয়া বলে থাকি। মূলত জমি থেকে যেভাবে ধান গুলো নিয়ে আসা হয়। শুধু ধান গুলো মেরে নেওয়ার পর ঠিক ওই ভাবেই ঘরের মধ্যে কারিয়া গুলো সংরক্ষণ করে রাখে। আমি আরো এক জায়গায় দেখেছি কাড়িয়া দিয়ে একদম ঘরের মতো করে পুঁজ দিয়ে কারিয়া গুলো রেখে দিয়েছে। তবে ৯০% মানুষরা ঐতিহ্যবাহী খড়ের পুঁজ দিয়ে খড় গুলো সংরক্ষণ করে রাখেন।


IMG_20230917_140509-01.jpegIMG_20230917_143516-01.jpeg
আমি সেই প্রাচীন কাল থেকেই দেখে আসতেছি গ্রাম বাংলার লোকজন, এভাবে খড়ের পুঁজ দিয়ে খড় গুলো সংরক্ষণ করে থাকেন। এই খড়ের পুঁজ গুলো হলো আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। এভাবে খড় গুলো পুঁজ দিয়ে রাখার জন্য। ধান মেরে নেওয়ার পর কারিয়া গুলো আউলে নিতে হয়। এরপর গরু বা মহিষ দিয়ে সেগুলো ভেঙ্গে নিতে হয়। যেটাকে গ্রাম অঞ্চলের ভাষায় (মাড়া মাড়া) বলা হয়। গ্রাম অঞ্চলের প্রতিটি কৃষক এভাবে কারিয়া গুলো মাড়া মেরে খড়ের পুঁজ দিয়ে থাকেন। এভাবে খড়ের পুঁজ দিয়ে রাখলে খড় গুলো কখনো নষ্ট হয় না। এবং এক ধানের মৌসুম থেকে আরেক ধানের মৌসুম পর্যন্ত নিশ্চিন্তায় গরু সেই খড় গুলো খেতে পারে।


IMG_20230917_140441-01.jpeg

প্রতিটি গ্রাম অঞ্চলে আপনারা সারা বছর এরকম খড়ের পুঁজ দেখে থাকবেন। কারণ গরুর খাবারের সমস্যা না হওয়ার জন্য প্রতিটি কৃষক এভাবে খড়ের পুঁজ দিয়ে থাকেন। এখানে আরো একটি বিষয় রয়েছে। আপনারা লক্ষ্য করবেন প্রতিটি কৃষক নিজের বাড়িতে গরু ছাগল পালন পালন করে। আর সেই গরু ছাগলের জন্য কৃষকরা ধানের খড় গুলো সংরক্ষণ করে রাখেন। এবং খড গুলো যেন নষ্ট না হয়, তাই এখনো মানুষ সেই প্রাচীনকালের পদ্ধতিতে খড়ের পুঁজ দিয়ে রাখেন। আমি নিঃসন্দেহে বলতে পারি এটি ঐতিহ্যবাহী একটি পদ্ধতি যা এখনো মানুষ পালন করে আসতেছে। বন্ধুরা আমার ব্লগটি আজকে এখানে শেষ করলাম।


আমার ফোনের বিবরণ
বিষয়ঐতিহ্যবাহী খড়ের পুঁজ
ক্যামেরা মডেলrealme 9i
ফটোগ্রাফার@rubayat02
লোকেশনরংপুর বাংলাদেশ

প্রিয় বন্ধুরা এই ছিলো আমার আজকের ঐতিহ্যবাহী খড়ের পুঁজ নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা, আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। সবার প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা জানিয়ে এখানেই বিদায় নিলাম, দেখা হবে আবার কোনো নতুন বিষয় নিয়ে, সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।


FrDSZio5ZCzUamf35asauSgs1tnNGCc8exBrDii52qi3JqqaFB2GnW5yVNodCtswB8EedAbTMPKcxh8DGMNUdQWhdKqxc6HEzAbJHTjR23...YXDiJ1FhQMpcnzAZ1j5XwnEqTpNS9qvgZfTFzPvPYLS5hLMpKGysnXjXrfDNEPWom7c6NZLKkiYqXhmtfrqzFVcV2VwLKc5uz8S8HdSnbyd6MoqzNodFnqxPh8.png

-খোদা হাফেজ-

FrDSZio5ZCzUamf35asauSgs1tnNGCc8exBrDii52qi3JqqaFB2GnW5yVNodCtswB8EedAbTMPKcxh8DGMNUdQWhdKqxc6HEzAbJHTjR23...YXDiJ1FhQMpcnzAZ1j5XwnEqTpNS9qvgZfTFzPvPYLS5hLMpKGysnXjXrfDNEPWom7c6NZLKkiYqXhmtfrqzFVcV2VwLKc5uz8S8HdSnbyd6MoqzNodFnqxPh8.png


UF7UDccXmKiRkXceCavGEKH3TNDM65wJtxFfBvK53mUcMEN1RtxDtd2qctmxbj85zamfAyPuQoVu5pH2hQSYC82VLsES2d3cmZ8aKnsxxU...ZRqX57aCNfBEVr8xP4ZVQvXtGnN9RTYY3tTRTP3iJsec9qp2U7UVz8sdPRmeySEvfJ4wcrT5G4DKYMC3jwNKSbfqbxJiCzMFawmJqraZZFqesWqtUQ4fXishWN.png

IMG_20230513_190258.jpg

আমি রুবাইয়াত হাসান হৃদয়, সোনালী বাংলাদেশে আমার বসবাস, বাংলা আমার মাতৃভাষা, পেশায় আমি একজন ছাত্র এবং এর পাশাপাশি আমি Steem For Tradition কমিউনিটির নিয়মিত একজন সদস্য, Steem For Tradition কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে সত্যি আমি অনেক গর্বিত, কারণ আমি এখনে আমার জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং সৃজনশীলতা প্রকাশ করতে পারি, আমার আগ্রহ, আমি বাংলার ইতিয্য এখানে নতুন করে ফুটিয়ে তুলবো, এছাড়াও আমি ফটোগ্রাফি, অঙ্কণ, রেসিপি এবং DIY পোস্ট করতে অনেক ভালোবাসি, এবং এটা মন দিয়ে মানি যে মানুষ মানুষের জন্য।

UF7UDccXmKiRkXceCavGEKH3TNDM65wJtxFfBvK53mUcMEN1RtxDtd2qctmxbj85zamfAyPuQoVu5pH2hC82VLsES2d3cmZ8aKnsxxU...ZRqX57aCNfBEVr8xP4ZVQvXtGnN9RTYY3tTRTP3iJsec9qp2U7UVz8sdPRmeySEvfJ4wcrT5G4DKYMC3jwNKSbfqbxJiCzMFawmJqraZZFqesWqtUQ4fXishWN.png

you can also vote for @bangla.witness witnesses

IMG-20230513-WA0000.jpg

VOTE for @bangla.witness

Sort:  
 last year 

গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী খড়ের পালা নিয়ে দারুন পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাই। খড়ের পালা গ্রামঞ্চলে দেখা যায়।এই খড় গবাদিপশুর খাওয়ার জন্য বিশেষ উপযোগী। ইরি মৌসুমে ধান কাটার পর খড় রোদে শুকিয়ে পালা দিয়ে রাখা হয়।কোন কোন অঞ্চলে খড়ের পালা বলে থাকে। আবার কোন কোন অঞ্চলে খড়ের পুঁজ বলা হয়।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া

 last year 

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ যেখানে শুধু কৃষি জাতীয় জিনিস এ ভরপুর। আর আপনার দেখানো খড়ের পুঁজ আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। কারণ সেটা দিয়ে আমরা কোনো সময় আগুন ধরাতে কাজ করি। আবার কোনো সময় গরুর জন্য আমাদের উপযোগী। আর আপনি অনেক সুন্দর ভাবে সেটা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া

 last year 

খড় অনেক কাজে আসে এটা ঠিকই বলেছেন।যেসব কাজে আসে তা উল্লেখ করেছেন।অনেকেই ধানের খড় এমন ঘর করে রাখে।৯০% মানুষ খড়ের পুঁজ করে রাখেন ঠিক বলেছেন।আমাদের এদিকে কাড়ি বলে থাকে।আপনার পোস্টের উপস্থাপনা অনেক সুন্দর হয়েছে।আপনার ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ আপু

 last year 
DescriptionInformation
plagiarism-free
#steemexclusive
Ai Content - free

We expected you to be friendly and active in the Steem For Tradition Community. We appreciate your effort. Thank you for sharing your beautiful content with us ❤️.

 last year 

বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে ধান চাষ হয়। কৃষকেরা ধান চাষ করার পর ধান পেকে গেলে সে ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসে এবং সেই ধান মাড়াই করে গোলায় রেখে দেয়। এরপর যে খড়গুলো থাকে সেগুলো রোদে শুকিয়ে এভাবে রাখা হয়। আমরাও এগুলোকে আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় পুঁজ বলে থাকি।এই পুঁজ আমাদেরও রয়েছে। আমরা এগুলো রেখে দিয়েছি গরুর খাবার হিসেবে এবং মাঝে মাঝে চুলা জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করে থাকি। গ্রামে সবার বাড়িতে এমন পুঁজ দেখা যায় কারন গ্রামের সবার জমি রয়েছে সবাই জমি চাষ করে জমি চাষ না করলে গ্রামের মানুষের জীবন নির্বাহ করা অনেক কঠিন। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। খড়ের পুজ গুলোর ছবি বেশ চমৎকার তুলেছেন।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া

 last year 

ঐতিহ্যবাহী খড়ের পুঁজ নিয়ে খুবই সুন্দর উপস্থাপন করেছেন ভাই, আমাদের অঞ্চলে এটাকে পালা বলা হয়। সাধারণত জ্যৈষ্ঠ মাসে যখন ধানের সিজন থাকে তখন কৃষক ধান বাড়িতে কেটে আনে, তারপর বাড়িতে ধান মাড়াই এর পর যে ধান গাছ পাওয়া যায়। ওই ধান গাছ গুলো রৌদ্রে মেলে দিয়ে ধান গাছ থেকে খড় এ রুপান্তরিত করা হয়। তারপর যখন ধান গাছ গুলো একদম শুকিয়ে যায় তখন খড় রূপান্তরিত হয়। শুকিয়ে যাওয়ার পরেই খড়ের পালা দেওয়া হয়ে থাকে।খড় গুলো শুকনো থাকার কারণে অনেক দিন সংরক্ষণ করা হয়। এবং এই খড় দিয়ে সারা বছর গবাদি পশু পালন করা হয়ে থাকে। আপনি অনেক সুন্দর উপস্থাপন করেছেন। ফটোগ্রাফি সুন্দর হয়েছে, অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া

 last year 

গ্রামাঞ্চলে এখনো এই খরের পালা দেখা যায়। সাধারণত গাভী বা অন্যান্য যে পশুর রয়েছে তাদেরকে দীর্ঘদিন ধরে খাওয়ানোর জন্য গ্রামে সাধারণ মানুষজন এইভাবে খড় সংরক্ষণ করে থাকে। ফটোগ্রাফি গুলো ল বেশ ভালো হয়েছে আর লিখেছেন অনেক সুন্দর ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া

 last year 

ঐতিহ্যবাহী খড়ের পালা নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই। এগুলো গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। প্রতিটি গ্রামেই এই রকম খড়ের পালা দেখা যায়। ছোটবেলায় এই খড়ের পালাগুলোতে আমরা লুকোচুরি খেলতাম। ভালো ফটোগ্রাফি করেছেন।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া

 last year 

ঐতিহ্যবাহী খড়ের পুঁজ সম্পর্কে অনেক সুন্দর লিখেছেন আপনি। আসলে আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ। আমাদের দেশের ৭০% মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। এবং এই খড় আমাদের গবাদি পশুর সবচেয়ে কাছের একটি খাদ্য। কেননা সব সময় তো আর ঘাস এবং লতাপাতা
পশুদের সম্ভব না তাই এই খড় খাওয়ানো হয়ে থাকে। এবং যে কৃষি কাজের সাথে তার বাসায় এরকম একটি করে ঘরের পুজ থাকা বাধ্যতামূলক। এবং আপনারা যদি একটু রিচার্জ করেন তাহলে দেখতে পারবেন সবার বাসায় এরকম একটি করে খড়ের পুজ রয়েছে কারণ আমরা সবাই পশু পালন করতে অনেক বেশি আগ্রহী। ধন্যবাদ আপনাকে এরকম সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সকলের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ আপনাকে

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.19
JST 0.033
BTC 89479.36
ETH 3038.26
USDT 1.00
SBD 2.80