শৈশবের স্মৃতিময় ঐতিহ্যবাহী খেলার জিনিস বাটুল
সবাইকে আদাব
আমি বিপ্লব সরকার
তারিখঃ১৬-০৯-২০২৩ ইং
প্রিয় বন্ধুরা আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আমি আজকে একটি বিশেষ ঐতিহ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
|
---|
আমরা ছোটবেলায় বিভিন্ন ধরনের খেলা খেলতাম। এগুলো খেলার মধ্যে বাটুল মার্বেল লাটিম ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। আমরা আগে ছোটবেলায় এমন বাটুল তৈরি করে খেলতাম। বাটুল তৈরি করার জন্য প্রথমে আমরা গাছের ডাল কেটে নিতাম। গাছের ডাল যদি ভি আকৃতির হয় তাহলে সেটি দিয়ে বাটুল তৈরি করা যেত। আমরা এরকম প্রতিদিন গাছের মধ্যে ডাল খুঁজে বেড়াতাম যে ডালটি ভালো সে ডালটি কেটে নিয়ে বাটুল তৈরির জন্য রেখে দিতাম।
এরপর বাটুল তৈরির জন্য রাবার কিনে নিয়ে আসতাম। এই রাবার গুলো বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এগুলো সাইকেলের ভালভ হিসেবে কাজ করে। সাইকেলের টিউ এ হাওয়া ধরে রাখার জন্য এগুলো ব্যবহার করা হয়। আমরা সেগুলো কিনে নিয়ে এসে বাটুলে লাগিয়ে ব্যবহার করি এবং এগুলো টানলে অনেক বাড়ে এবং ছেড়ে দিলে আবার গুটিয়ে যায়। এজন্য এগুলো ব্যবহার করা হয় আমরা বাটুল মূলত পাখি মারার কাজে ব্যবহার করতাম। এখানে আরেকটি জিনিস ব্যবহার করা হতো সেটি হচ্ছে একটি চামড়ার ছোট টুকরা। এই টুকরা ফুটো করে আমরা রাবার লাগিয়ে নিতাম এই ছোট চামড়ার মধ্যে যেকোনো ছোট মাটির মার্বেল অথবা যে কোন শক্ত কিছু দিয়ে ধরে টানলে সেগুলো অনেক দূরে ছুটে চলে যায়। এভাবে পাখি শিকার করা বেশ ভালো হতো।
আমরা আগে সবাই মিলে এরকম বাটুল হাতে নিয়ে পাখি শিকার করার জন্য বেরিয়ে যেতাম। তখন আমরা দলবদ্ধভাবে কাজগুলো করতাম বেশ মজা লাগতো। যদিও পাখি শিকার করা ভালো কাজ নয় তবে তখনকার দিনে অনেক পাখি ছিল। আমরা পাখি শিকার করে মাঝে মাঝে পিকনিক খেতাম। এছাড়াও আমরা বাটুল ব্যবহার করে গাছে আম বা যে কোন ফল পাড়ার কাজে ব্যবহার করতাম।
আম পারার জন্য বাটুল সেই ভাবে কাজ করতো আমরা দূর থেকে আম টার্গেট করে মারতাম এবং সে আম পড়ে গেলে সেটি কুড়িয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতাম। এভাবে আমরা বেশ মানুষের গাছের আম পেরেছি। বাটুল দিয়ে এমন কাজ করা আর কাউকে দেখা যায় না কারণ এখনকার ছেলে মেয়েরা মোবাইলে ব্যস্ত থাকে। মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের খেলা খেলে থাকে তারা এখন বাড়ি থেকে কম বের হয় এবং এই ধরনের খেলা গুলো সম্পর্কে তাদের ধারণা অনেক কম। আমাদের সময় এসব খেলা গুলো বেশি প্রচলিত ছিল তবে এখন এগুলো আর নেই এগুলো হারিয়ে যেতে চলেছে। আমরা আগে বাটুলের গুলি তৈরি করতাম মাটি দিয়ে। মাটি গোল গোল করে তৈরি করে সেগুলো রোদে শুকিয়ে মাটির গুলি তৈরি করতাম।
সেই গুলি দিয়ে বাটুলের গুলি হিসেবে ব্যবহার করতাম এবং পাখি শিকার করতাম এবং মানুষের গাছের আমরা যে কোন ফল বাটুল দিয়ে পেড়ে খেতাম। সেই শৈশবের দিনগুলোর কথা এখনো মনে পড়ে। সেগুলো মনে পড়লে বেশ ভালো লাগে আমরা সে সময় অনেক মজা করে বেড়াতাম। আমরা খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছি । সে সময় আমরা এসব খেলায় আগে ব্যস্ত ছিলাম বলে আমাদের আগের ছেলে মেয়েদের মধ্যে খারাপ কোন কিছু ছিল না। এখনকার ছেলে মেয়েরা বাড়িতে বসে থেকে মোবাইলে অনেক কিছু জেনে থাকে এবং জুয়া থেকে শুরু করে নানান ধরেন নেশায় জড়িয়ে গেছে। এখন তারা প্রায় ধ্বংসের মুখে চলে গেছে।
বন্ধুরা এই ছিল আমার আজকের আলোচনার বিষয়। আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।
তথ্য | বিস্তারিত |
---|---|
বিষয় | ঐতিহ্য |
ক্যামেরা | স্যামসাং গ্যালাক্সি এ ৫২ |
সম্পাদন করা | হ্যাঁ |
অবস্থান | পার্বতীপুর,দিনাজপুর ,বাংলাদেশ |
ফটোগ্রাফার | @biplobsarker |
ভাই বাটুল এর কথাটা মনে করে দিলেন
সেই ছোট্ট বেলায় এই বাটুল বানানোর জন্য হাজারটা কাজ করতাম। গাছের ডাল কাটা আবার টাকা জোগার করে বাটুল এর রাবার কেনা সেটা বাঁধতে না পারলে বড় ভাইদের কাছে বাঁধা। সব মিলিয়ে অনেক সুন্দর সময় ছিল। কিন্তু এখন সেই সময়গুলো মনে পড়লে মনটা খারাপ হয়ে যায় ভাই। পুরনো দিনগুলো ফিরে পেলে অনেক সুন্দর হইতো। তবে আপনি অনেক সুন্দর ভাবে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ ভাই
https://twitter.com/SarkerBipl19781/status/1703001770652533173?t=IzuIG3OF73Vrr3IkKGKV-g&s=19
বাটুল সম্পর্কে অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া। আসলে আপনি ঠিক বলেছেন আমরা ছোটবেলায় নানান ধরনের খেলার সাথে জড়িত ছিলাম তার মধ্যে বাটুল একটি। এই বাটুল দিয়ে আমরা ছোট ছোট পাখি থেকে শুরু করে বড় বড় পাখি ও মারতাল। এবং এর ব্যবহার অনেক সহজ ছিল না কারণ বাটুল মারতে সোজাসুজি লাইন লাগতো এক কথায় যাকে বলে রেম। এগুলো রেম করে মারা লাগে এর জন্য প্র্যাকটিচ ও প্রয়োজন হয়। এক কথায় অনেক কঠিন একটি কাজ। এবং এগুলো গাছের ডাল দিয়ে বানানো হয় এবং ভিতরে অংশটির রাবারের হয়ে থাকে সেটি আমরা টেনে মেরে থাকি। ধন্যবাদ আপনাকে এরকম সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সকলের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য
শৈশবের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই খেলার মাধ্যমে। যখন ছোট ছিলাম ছুটির দিনে সব বন্ধুরা মিলে হাতে বাঁটুল নিয়ে চলে যেতাম পাখি মারার উদ্দেশ্যে। সারাদিন টোটো করে ঘুরে বেড়াতাম কিন্তু একটা পাখি কেউ মারতে পারতাম না। আর ভাটা থেকে কাদা চুরি করে আনতাম বাটুলের গুলি বানানোর জন্য। আবার সেই গুলি বানিয়ে রোদে শুকাতাম আর চুলায় পরিয়ে গুলি বানাতাম। আর এই বানানো গুলি গুলো এতটাই শক্ত হতো যদি কারো মাথায় লাগতো তাহলে সেখানে টাও হয়ে থাকতো। ধন্যবাদ আপনাকে অতীতের স্মৃতি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য সুন্দর পোস্টের মাধ্যমে।
শৈশবের স্মৃতি বাটুল নিয়ে দারুণ উপস্থাপন করছেন ভাই, একসময় বাটুল নিয়ে পাখির পিছনে ছুটতাম, পাখি শিকার করার জন্য, আপনার পোস্ট দেখে সেই স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। সাড়াদিন বাটুল নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম, গ্রামের সকল গাছগুলো দেখতাম কোথাও পাখির বাসা আছে কিনা। বা পাখি বসে আছে কিনা, দেখলেই পাখির পিছনে ছিটতাম, অনেক ঘুরেছি এই বাটুল নিয়ে, ছোট ছোট গামার গাছের গোটা দিয়ে বাটুল মারতাম। আপনি অনেক সুন্দর লিখছেন ভাই। ফটোগ্রাফি দারুণ হয়েছে, অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই
আমাদের এলাকায় এই যন্ত্রটিকে বাটুল বলে এবং এই বাটুল দিয়ে আমি অনেক পাখি মেরেছি। আমার হাতের মাপ অনেক ভালো ছিলো ভাই।আমি বাটুলের গুলি হিসেবে কাছের মার্বেল এবং মাটি দিয়ে বানানো কুটির ব্যবহার করতাম। তবে অনেক সময় মাটির গুলি না থাকলে আমি আখির গুলোকে ব্যবহার করতাম এবং এই আখির দিয়ে তেমন একটা ভালো আন্দাজ পাওয়া যেত না।
ধন্যবাদ ভাই
নব্বই দশকের ছেলেমেয়েদের শৈশব কেটেছে বিভিন্ন ধরনের খেলা খেলে।বাটুল দিয়ে আমিও অনেক খেলেছি।আপনি বাটুল যেভাবে তৈরি করতে হয় তা অনেক সুন্দর করে বিস্তারিত লিখেছেন।আমি কখনো নিজে তৈরি করিনি কেউ না কেউ তৈরি করে দিতো।আমি কখনো পাখিদের শিকার করিনি তাদের আঘাত লাগবে এ কথা ভেবে।এমনিতেই বিভিন্ন জায়গায় টার্গেট করে ছুড়ে মারতাম।গাছেও ফলকে টার্গেট করে ছুড়ে মারতাম।ঠিকই বলেছেন সেই শৈশবের দিনগুলোর কথা এখনো মনে পরে।আমাদের শৈশব কেটেছে খেলাধুলায় আর এখনকার ছেলেমেয়েরা মোবাইল ব্যবহার করে বিভিন্ন নেশায় জড়িত হয়ে পড়ছে।আপনি অনেক সুন্দর করে বাটুল নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন।আপনার ছবি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
বাটুল নিয়ে অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া। এই বাটুল দিয়ে ছোট বেলায় অনেক খেলেছি। ছোট বেলায় আমাদের টার্গেট ছিল ছোট ছোট পাখি গুলোকে বাটুল দিয়ে শিকার করা। কিন্তু কোনো ভাবেই আমি বাটুল দিয়ে কোন পাখির গায়ে লাগাতে পারিনি। আমাদের শৈশবে এরকম অনেক খেলাধুলা ছিল। যা বর্তমান প্রজন্মে দেখাই যায় না। বাটুল তৈরির পদ্ধতিটি আপনি অনেক সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই
অসাধারণ একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। ছোটবেলায় বাটুল দিয়ে আমরাও খেলেছি। বাড়িতেই এ বাটুল আমার বাবা আমাদেরকে বানিয়ে দিতেন। আমরা পুকুরের পাড় থেকে মাটি সংগ্রহ করে সেগুলো দিয়ে গুলি বানিয়ে শুকিয়ে রাখতাম। এবং শুকানো সেই গুলি বাটুল এর সাহায্যে ছুড়তাম। এখনো অনেকেই কাক তাড়ানোর জন্য বাটুল ব্যবহার করেন।আপনিও শৈশবের পুরনো খেলনা নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপু
বাটুল দেখে ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেল। আমি ছোটবেলায় এই বাটুল নিয়ে সারাদিন ঘুরতাম আর নতুন নতুন বাটুল বানাতাম।গাছের ডাল আর চামরা ও রাবারের সমন্বয়ে বানানো হয় বাটুল। বাটুল দিয়ে পাখি মারা যায়।শৈশবের স্মৃতিতে গাঁথা বাটুল নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন ভাই।
ধন্যবাদ ভাই