THE DIARY GAME: 07/08/2020 আজকের দিনটি যেমন কাটলো
আস্সালামুআলাইকুম কমিউনিটি
সবাই কেমন আছেন? আশাকরি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহাম্দুলিল্লাহ ভালো আছি। গত কয়েক দিন অনেক ব্যস্ত থাকায় আমি যথা রীতিতে আমার ডাইরী গেম শেয়ার করতে পারি নি। সে জন্য আন্তরিক দুঃখিত। আজকে আমি আমার গত ৭ তারিখের দিনটা শেয়ার করতে যাচ্ছি। কারণ সেই দিনটা আমার অনেক আনন্দে কেটেছে। যাই হোক চলুন বর্ণণা করা যাক কেমন কাটল সেদিন।
ভোর ৪:৩০ মিনিটে জেগে উঠলাম মোয়াজ্জিনের আযান এর কন্ঠ শুনে। অনেক দিন হলো ফজরের নামায আদায় করা হয়নি কোনো এক ব্যস্ততা বা অলসতার কারনে। ব্যস্ততা বললে ভুল হবে। বেশির ভাগই অলসতার কারণেই ভোরে ওঠাও হয়নি নামায ও আদায় করা হয়নি। কিন্তু আজকে যেহেতু ঠিক আজানের সময় জেগেছি তাই আর অলসতা না করে তারাতারি উঠে দাত ব্রাশ করে ওজু করে নিলাম। আজ শুক্রবার। মুসলিম জাতি হিসেবে আজকের দিনটা গত ৬ দিনের চেয়ে উত্তম। ওজু সেরে পাশের ঘরে মা কে ডাক দিলাম। মা ওঠার পর আমি মসজিদে গেলাম। সময় তখন ৪:৫০ মিনিট। নাসায শেষ করে একটু কোরআন তেলাওয়াত করে মসজিদ থেকে বের হলাম এক ভাইয়ের সাথে। বন্যাকালীন সময়ে চারিদিকে অনেক পানির কারণে কোথাও যাওয়া হলো না। তাই পাশেই নদীর ধারে বসলাম দুজনে। সকালের পরিবেশটা্ খুব শীতল । এমন শীতল পরিবেশে কার না ভালোবাসে নদীর ধারে বসে থাকা। ঘন্টা খানেক্ এভাবেই কাটিয়ে দিলাম। ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখলাম প্রায় ৭:০৩ বাজে। সূর্য মামা সেই কখন উদিত হয়ে কিরণ দিচ্ছে টেরই পাই নি। প্রকৃতি তো তার আপন সময়েই প্রবাহিত হতে থাকে। সেটা চাইলেই তো আর আটকে রাখা সম্ভব নয়। যাই হোক ৮টার দিকে বাড়ি গেলাম। তখন মা বলল বাজারে যেতে হবে। ঈদের পর এটাই আমার প্রথম বাজার। ঈদ চলে গেছে প্রায় আজ ৫ দিন হলো। যেহেতু ঈদে গরু জবেহ করা হয়েছে। তাই মাংস দিয়ে এই কয়েক দিন চলে যাওয়া বাজারের খুব একটা প্রয়োজন হয় নি। আজকে বাজার না করলে একদমই চলবে না এমন কথা শুনে হাতে ব্যাগ নিয়ে বের হলাম বাজারের উদ্দ্যেশ্যে।
বাজেরর মেনু ছিলো-
১। নদীর মাছ।
২। কাছামরিচ।
৩।পিয়াজ।
৩।আলু।
৪।পটল।
৫। শাক।
বাজার শেষে বাড়িতে এলাম তখন প্রায় ৯;৪০ বাজে। আমাদের বাড়ি থেকে বাজার অনেকটা দুরে বিধায় বাজারে যেতে আসতেই প্রায় ঘন্টা খানেক এর মতো লেগে যায়। বাড়িতে এসে সকালের খাবার খেয়ে নিলাম। তখন প্রায় ১০টা গরিয়ে গেছে। এই আমার একটা বদ অভ্যাস। যেদিন বাজারে যাই সেদিন সকালের খাবারটা একটু দেরি করেই হয়। আজকে শুক্রবার হওয়ায় সকালটা খুব তারাতারিই কেটে গেল। আসলে যেদিন বাজার করতে হয় সেদিন সকালটা এত দ্রুত কেটে যায় যে বলা বাহুল্য । আজকে জুমার দিন হিসেবে দুপুরের আযান ১২:৩০-এ । আযান হওয়ার পর গোসল করে নামাজের জন্য প্রস্তুত হলাম। তারপর ১টার দিকে নামাজে গেলাম। শুক্রবারে একটা রীতি হলো আর যাই হোক না কেন সারা সপ্তাহ নামায না আদায় করলেও আজকের এই বিশেষ দিনে সবাই দুপুরের নামায আদায় করে ঠিকই। অন্যদিকে একটা ব্যপার হলো জুমার নামায শেষে সিন্নি অথবা তবারক দেওয়া হয় বলে গ্রামের সকল ছোট ছোট বাচ্চারা সহ বড়রাও এটির আশা করে থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আজকে তবারক দেয় নি। তারপর নামায শেষ করে বাড়িতে এসে খাওয়া দাওয়া করলাম। আগের দিন থেকেই পরিকল্পনা ছিলো জুমার নামায শেষ করে কোথাও ঘুড়েতে যাওয়া। সেই নিয়মেই বড় ভাই ফোন করে জানালো যে ঘুড়তে যাওয়ার কি অবস্থা। ৩টার দিকে তৈরী হয়ে থাকতে বলল। আমি যথারীতিতে উত্তর দিলাম ঠিক আছে আমি তৈরী হয়ে থাকবো। আমাদের ঘুড়তে যাওয়ায় আরেকজন সদস্য ছিলো। তার নাম সেলিম রেজা। সে আমার খুব ভালো বন্ধু। তাকে ফোন করে একই কথাটা বললাম। এবং ওপাশ থেকে সম্মতি সূচক উত্তর পেয়ে ফোন কেটে দিলাম। ৩টার দিকে যথারীতিতে বের হলাম ৩জন মিলে। সাথে আছে বাইক। বাইকে করে ঘোরার মজাই অন্যরকম।
প্রথমেই রওনা দিলাম জামতৈল স্টেশনে। উদ্দ্যেশ্য ছিলো হালিম খাওয়া। সেখানকার হালিম অনেক বিখ্যাত। তাই সেখানে গিয়ে হালিম খেলাম। প্রতি প্লেট ৫০টাকা। হালিম খাওয়া শেষ করে আবার রওনা হলাম শলপ এর উদ্দ্যেশ্যে। শলপ্ বিখ্যাত ঘোলে। যেহেতু গরমের সময় তাই ঘোল খেলে অনেক ভালো লাগবে। অবশ্য বাইকের উপরে থাকলে গরম কি সেটা বোঝা অসম্ভম।
তারপর সেখানে ঘোল খেয়ে আবার রওনা হলাম। এবর গন্তব্য হলো ছোনতলা ব্রীজ। সেখানে গিয়ে পৌছলাম বিকেল ৬টার দিকে। সময় যেন খুব তারাতারি অতিবাহিত হচ্ছিল। কখন ৬টা বেজে গেছে বুঝতেই পাই নি। সেখানে গিয়ে দেখলাম অনেক মানুয়ের সমাগম। নদীর উপর দিয়ে ব্রীজ আর নীচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রীজের উপর অনেক মানুষ বসে থেকে সুন্দর সময়টা উপভোগ করছে। নদীতে নৌকা নিয়েও অনেকে সময় কাটাচ্ছে। কিন্তু একটা জিনিস্ খুব ভালো করে খেয়াল করলাম সেটি হলো সবাই ফোনের ক্যামেরা বের করে সেই সুন্দর জায়গাটা ক্যামেরা বন্ধি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। কিন্তু কেউই সেই সময়টাকে বা সেই প্রাকৃতিক সৌর্ন্দযটি উপভোগ করছে না। কিন্তু আমি তাদের মতো ছবি তোলায় ব্যস্ত হতে পারলাম না। বরং সেটি খুব ভালোভাবে উপভোগ করলাম। সূর্যাস্ত দেখলাম।
একটা জিনিস হলো আপনি যখন কোনো সাগর পারে অথবা নদীর পারে সূর্যাস্ত দেখবেন। তখন মনে হবে ওপারেই যেন সূর্যাস্ত তার আপন মায়ায় অস্ত যাচ্ছে। তারপর কিছু খাওয়া দাওয়ার পর ৭টার দিকে বাড়িরর দিকে রওনা হলাম। রাত প্রায় ৯টার দিকে বাড়িতে পৌছালাম। বিকেল জার্নি করার জন্য শরীরটা অনেক ক্লান্ত লাগছিল। তাই দেরি না করে তারাতারি ঘুমিয়ে পড়ি।
Great post, carry on brother.