Steem Bangladesh Contest - Book Review // Devdas
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আমার প্রিয় কবিদের মধ্যে একজন। উনার রচিত উপন্যাস পড়তে খুবই ভালো লাগে।তাই আজকে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত কালজয়ী উপন্যাস "দেবদাস" এর রিভিউ নিয়ে।
দেবদাস বই রিভিউ
'দেবদাস' একটি কথাসাহিত্য উপন্যাস যা মূলত শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত বাংলায় এবং শ্রীজতা গুহর ইংরেজী অনুবাদ। এটি 1917 সালে প্রকাশিত হয়েছিল।উপন্যাসটি নিয়ে শরৎচন্দ্রের দ্বিধা ছিল বলে দীর্ঘ ১৭ বছর প্রকাশ করা থেকে বিরত ছিলেন। উপন্যাসটি তিনি রচনা করেছিলেন মাতাল হয়ে এবং বন্ধু প্রমথনাথ ভট্টাচার্যকে ১৯১৩-তে লেখা এক চিঠিতে শরৎচন্দ্র লিখেছেন, 'ওই বইটা একেবারে মাতাল হইয়া বোতল খাইয়া লেখা'।
কাহিনী সংক্ষেপ :
এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র হলো দেবদাস,যে খুব ধনী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার শৈশব কেটেছে প্রতিবেশীর মেয়ে পারুর সাথে খেলতে। পারুর পরিবার ছিল ব্যবসায়ী এবং তার এবং দেবদাসের মধ্যে বিবাহের সম্ভাবনা কম। পারুর মা একদিন প্রস্তাব নিয়ে দেবদাসের মায়ের কাছে যান, কিন্তু কথায় কথায় তা প্রত্যাখ্যান করেন। তারপরে পারুকে অন্য গ্রামের এক ধনী ব্যক্তির সাথে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়,যার আগের স্ত্রী মারা গেছেন। কিন্তু পারু তার দেব-দাকে ছাড়া জীবন কল্পনা করতে পারে না, এবং এক রাতে তাকে তার সাথে বিবাহের জন্য জিজ্ঞাসা করতে তার কাছে আসে। দেবদাস পরিবারের সম্মান এর কথা ভেবে পারুকে প্রত্যাখ্যান করে। তারপরে পারুর সেই ব্যাক্তিটির সাথে বিবাহ সম্পন্ন হয়।
তখন দেবদাস বুঝতে পারে যে সে সত্যিকার অর্থে যা চেয়েছিল তা ছিল পারু, তবে এটি সম্পর্কে কিছু করতে খুব দেরী হয়েছিল। তার পর সে মদ্যপান করা শুরু করে দেয়, এবং তার ব্যথা এবং দুঃখকে অ্যালকোহলে ডুবিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। দেবদাস একবার কলকাতায় একটি
পতিতালয়ে চন্দ্রমুখী নামের এক পতিতার সাথে সাক্ষাত করেন। চন্দ্রমুখী দেবদাসের অভিনব আচরণ দেখে খুব অবাক হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে তাঁর প্রেমে পড়ে যায়।
কিন্তু দেবদাস এর প্রেম তার কপালে জোটেনি কেনো না দেবদাস ছিল পারুর প্রেমে মগ্ন।
যত দিন যাচ্ছিলো দেবদাস এর মদ্যপান ততই বেড়ে যায়।যার কারণে তার ক্যানসার হয় এবং একদিন পারুর বাড়ির গেটের সামনেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
চরিত্র কথন :
উপন্যাসটির সকল চরিত্রগুলো যেন জীবন্ত।আপনি যখন বইটি পড়তে বসবেন চরিত্র গুলো আপনাকে যেন টেনে রাখবে। দেবদাস চরিত্রটি আপনাকে ভালোবাসতে বাধ্য করবে। যদিও বা সে খুব জেদি এবং মদ্যপান করে তবুও চরিত্র টির প্রতি আপনার ভালোবাসা জন্মাবে।পারু চরিত্রটির মধ্যে খুঁজে পাবেন চিরাচরিত এক মেয়েকে যে কিনা তার ভালোবাসার প্রতি খুবই যত্নশীল।অন্যের সাথে বিয়ে হলেও দেবদাস এর প্রতি তার ভালোবাসার কোনো কমতি ছিল না। এছাড়াও এই উপন্যাসের অন্যতম একটি চরিত্র হলো চন্দ্রমুখী।একজন মেয়ের ভালোবাসা কতটা পবিত্র হতে পারে এই চন্দ্রমুখী চরিত্রটি তার প্রমাণ।
আমার অন্যতম প্রিয় একটি উপন্যাস হলো এই দেবদাস উপন্যাসটি। তাই সবাইকেই বলবো উপন্যাস টি পড়ার জন্য কেনো না উপন্যাস টি পড়ে আপনি অনেক কিছু উপলব্ধি করতে পারবেন।
আশা করি সকলেই আমার রিভিউ টি পছন্দ করবেন।