Contest: Write a Short Story Taken From Life ||Friends Edition|| I am sharing with you my best friends story.
আসসালামু আলাইকুম
আজকে আমি যে গল্প শেয়ার করবো তা পুরোটাই বাস্তব সত্য এবং আমার নিজের। সবাইকে পড়ার অনুরোধ রইলো। তো শুরু করা যাক,
Source
ভার্সিটির চতুর্থ ক্লাস, স্যার ক্লাসে ঢুকার পাক্কা বিশ মিনিট পর একটা ছেলে ক্লাসে ঢুকলো।সব ছেলে-মেয়ের চোখ ছিল সেই ছেলের দিকে।পরিচয় পর্ব ক্লাসে এই ছেলেকে কেউ দেখে নি আর শেষ তিনটা ক্লাসেও এই ছেলেকে কেউ দেখেনি।তাই সবার চোখে প্রশ্ন ছিল," কে এই ছেলে"!স্যার কম কথার মানুষ তাই ছেলেটিকে কোনো প্রশ্ন না করে বসতে বললো।ছেলেটি এসে আমার পাশেই বসে পড়লো। আর হাপাতে-হাপাতে বললো,"একটু পানি হবে?খুব পিপাসা লেগেছে।" আমি কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললাম,"নাহ"। ক্লাস শেষে কৌতুহল বশত জিজ্ঞেস করলাম ,"শেষ তিনটা ক্লাসে আসোনি কেনো?"ছেলেটি আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলল,"ভাই তোমার মোবাইল নম্বরটা আমাকে দিতে পারবা?"আমি সাথে সাথে আমার নাম্বারটি তাকে দিলাম।
তারপরের দিন থেকে শুরু করে বেশ কিছু দিন ছেলেটি ক্লাসে আসে নি। হঠাৎ একদিন বিকেলে ছেলেটি কল করে খুব অনুরোধ করেছিল যাতে পরের দিন ছেলেটির সাথে একটু দেখা করি,আমাকে নাকি কিছু কথা বলার আছে।আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।কিন্তু ছেলেটির অনুরোধ ফিরাতে না পেরে আমি রাজি হয়ে যাই দেখা করতে।
পরের দিন ছিল শুক্রবার। বিকেলে ছেলেটির সাথে দেখা করতে যাই। আর দেখা করে ছেলেটির ব্যাপারে অনেক কিছু জানতে পারলাম। সত্যি বলতে সেইদিনই তার নাম জানতে পারি, তার নাম জনি। জনির বাবা নেই,কয়েক বছর আগে রোড এক্সিডেন্টে মারা গেছেন।মা আর একটা ছোট বোন গ্রামের বাড়িতে থাকেন।ঢাকায় মামার বাসায় থেকে লেখা-পড়া করতে এসেছে।কিন্তু মামা অল্প টাকা বেতনের একটা চাকরী করে কোন রকমে সংসার চালায়।আর ওই দিকে গ্রামে জনির মা আর ছোট বোন।এইসব বিবেচনা করেই জনি একটা ছোট-খাটো চাকরীতে ঢুকেছে । যা কিছু টাকা পায় তা ছোট বোন আর মায়ের জন্য পাঠিয়ে নিজে কোনো মত চলে।সংসারের পুরো দায়িত্ব এখন জনির উপর। এইটুকু বয়সে যেই ছেলে ভার্সিটি আসবে, ক্লাস করবে, ঘুড়বে-ফিরবে সেই বয়সে সে কঠিন বাস্তবতার সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হচ্ছে।
আস্তে আস্তে জনির প্রতি আমার অগাধ ভরসা জন্ম নেয়।জনির সাথে সেই দিন কথা বলে মনে হলো। মনের মতো এক বন্ধু। সেই থেকে শুরু হয় আমাদের বন্ধুত্ব। যেকোন বিপদে ও পাশে থেকেছে। সত্যি বলতে জনি অনেক ভদ্র। নেই বাজে কোন নেশা, নেই কোন ন্যাকা প্রেমের কাহিনী। বাস্তবতার সাথে লড়াই করতে করতে আবেগ নামক শব্দটি তাকে ছুতে পারেনি। একটি ভালো ছেলে বলতে আমারা যেমন ছেলেকে বুঝি আমার বন্ধুটিও ঠিক তেমনই।
করোনার জান্য ভারসিটি বন্ধ। ঈদের আগেই আমি আমার গ্রামে চলে আসছি, জনির সাথে মাঝে মাঝেই ফেসবুকে কথা হতো। তিন দিন আগে জনি আমাকে ফোনে কল দেয়। সে অসুস্থ, কিডনিতে কি জানি হয়েছে।আমাকে দোয়া করতে বলল আর বলল ঢাকা এসেই যাতে দেখা করি।আমি চাই খুব তাড়াতাড়ি ও -সুস্থ হয়ে যাক।ওর মত বন্ধু পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। আপনাদের কাছেও অনুরোধ আমার বন্ধুর জন্য সবাই দোয়া করবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ