📖 Book Review 📚 দ্য ঈগল হ্যাজ ল্যান্ডেড 📖
বইয়ের নাম | দ্য ঈগল হ্যাজ ল্যান্ডেড |
---|---|
লেখক | জ্যাক হিগিন্স |
রুপান্তর | ইমতিয়াজ আজাদ |
প্রকাশনী | আদী প্রকাশন |
প্রকাশকাল | বইমেলা ২০১৮ |
মূল্য | ৪৪০ টাকা |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | ৩৮৪ |
হিটলারের একটা উক্তি আছে "শক্তি প্রতিরোধে নয় আক্রমনেই প্রকাশিত হয়"
ঈগল হ্যাজ ল্যান্ডেড
এই গল্পটা সেইসব মানুষদের গল্প যারা ছিলেন চরম সাহসী, দুর্ধর্ষ। ত্যাগ স্বীকার করেছেন দেশের জন্য। নিষ্ঠুর কিন্তু ভালবাসায় পূর্ন মন, আর সেই ভালবাসা ছিলো দেশের জন্য।
এই বইটিকে বলা হয় জ্যাক হিগিন্সের অন্যতম সেরা কাজ। সত্যি আর কল্পনার সংমিশ্রনে অন্যতম একটা লেখা লিখেছেন লেখক। ৩৮৪ পৃষ্ঠার বেশ বড়সড় একটা বই কিন্তু একটা বারের জন্য কোথাও বিরক্তির সুযোগ নেই। বরং প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তীব্র আগ্রহ হবে আসলে কি হয়েছিলো এটা জানার জন্য।
বইটি সম্পর্কে কিছু তথ্য
জার্মান কমান্ডোর হার না মানা মনোভাব, তাদের ত্যাগ, নায়কোচিত আচরণ মুগ্ধ করার মতন। ঈগল যেমন কোন সুযোগ না দিয়ে শিকার কে তুলে নেয় তেমনি এই সৈনিকরা ছিলেন। এইজন্যই নাম ছিলো ঈগল।
বইটা লিয়াম ডেভলিন সিরিজের বই। কিন্তু লিয়াম ডেভলিন আর সবকিছুকে ছাপিয়ে যিনি উঠে এসেছেন তিনি হলে কার্ট স্টাইনার। তার অটল ব্যক্তিত্ব, পাহাড় সমান সাহস, অসম বীরত্ব, দুর্দমনীয় মনোভাব বইয়ের আরেক আকর্ষণ। একটা কথা মনে গেঁথে আছে- "আমি এসব আমার জন্য করছিনা, করছি আমার দেশের জন্য। আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব আমাকে পালন করতেই হবে"। মৃত্যু সামনেই আছে তবুও হার না মেনে নেওয়া মানুষটাই কার্ট স্টাইনার।
আরেকজন এর কথা বলতেই হবে অন্তত আমার খুব পছন্দ হয়েছে। মলি প্রায়র। শেষ মূহুর্তে মেয়েটার দৃঢ়তা মন ছুয়ে গেছে। মলিরও অবদান কম নয়।
সারসংক্ষেপ
নিজের বন্ধু মুসোলিনি কে উদ্ধার করার এই অসম্ভব মিশনের পরে হিটলারের মাথায় একটা উদ্ভট চিন্তা মাথায় চাপলো। এইবার তার চাই ইংল্যান্ড এর প্রধানমন্ত্রী উইন্সটন চার্চিল কে!!!! এরকম পাগলাটে পরিকল্পনার কোন মানেই হয়না!! কিন্তু ইংল্যান্ডে থাকা এক এজেন্টের একটা তথ্য ব্যাপার টা নিয়ে ভাবার একটা সুযোগ করে দিলো। প্রধানমন্ত্রী নাকি স্টাডলি কন্সটেবল এ উইকেন্ড টা কাটাবেন। এইবার শুরু হলো পরিকল্পনা। জার্মান কমান্ডো যা করতে যাচ্ছে সেটা শুধুমাত্র অসম্ভবই নয় অকল্পনীয়ও বটে। কিন্তু ফুয়েরারের এই অকল্পনীয় চাওয়া পূরন করতে ইংল্যান্ড এর নরফোকে অবতরণ করলো একদল জার্মান কমান্ডো। তাদের নেতৃত্বে আছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল কার্ট স্টাইনার। ঈগল কি পারবে চার্চিল কে তুলে নিয়ে আসতে? পাল্টে দিতে পারবে মহাযুদ্ধের গতিপথ? নাকি ব্যর্থ হবে তাদের মিশন?
এখান থেকে না জেনে বইটা পড়লেই জানা যাবে
😉আর বইয়ের শেষের যে টুইস্ট!!! চিন্তাও করিনি এমন কিছু হবে। ব্যাপার টা এমন যে এটা কি ছিলো!!! অবশ্য টুইস্ট হলে এমনই হওয়া উচিৎ যেটা ভাবাও যায়না। আর এখানে সেটাই আছে। যদিও জানতাম শেষে কি হবে, খুব মন খারাপ হয়েছে তাতে কিন্তু তবুও বই ছেড়ে উঠতে পারিনি।
বইটি নিয়ে আমার মতামত
আমার একটা আক্ষেপ আছে। ইংলিশ বই তেমন পড়াই হয়না কারন মারাত্মক স্লো হয়। কিন্তু এখন খুব খারাপ লাগেনা। কারন আমাদের চমৎকার অনুবাদক আছেন। খুব যত্ন দিয়ে, মন দিয়ে কাজ করলে যেমন চমৎকার হয় কাজটা ঠিক তেমন হয়েছে অনুবাদ টা। জ্যাগ হিগিন্স নিজেই খুশি হয়ে যেতেন এত সুন্দর অনুবাদ দেখলে এবং অবশ্যই বলতেন আমি বাংলা ভাষায় লিখলে এমনই হতো। এমন ঝলমলে, মিষ্টি!!! অনুবাদ দেখে জ্যাক হিগিন্স যখন বলতেন তো আমার বলতে আপত্তি কোথায়? 😁
অনুবাদক আরেকটা জিনিস খুব ভালো করেছেন বইয়ের শেষে নির্ঘণ্ট দিয়ে। বইতে জার্মান শব্দ থাকায় বুঝতে অসুবিধা হতো কিন্তু সেগুলি বুঝিয়ে দেওয়ায় পড়তে আরও ভাল লেগেছে।
উপসংহার
ক্ষমতার দম্ভ, অহংকার, নিষ্ঠুরতা, অত্যাচার, নির্ভয়, সমুদ্র সমান সাহস, অচিন্তনীয় অভিযান আর উরাধুরা অনুবাদ সবকিছু মিলিয়েই দ্য ঈগল হ্যাজ ল্যান্ডেড ♥️।
বইটা পড়ে আপনার অনুভূতি কি? আপনি কি সবাইকে recommend করেন বইটি পড়ার জন্য।
Ha boita pore amr valo lagse... book lover der aita pora uchit