🌹আসসালামুয়ালাইকুম সকলকে,🌹

🌷This is @ripon999 from🇧🇩Bangladesh🇧🇩

↪️শুরু করবএকটি উক্তি দিয়ে:

"একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়ে আমি ভাবি ।একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙ্গালীদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়।এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা,অক্ষয় ভালবাসা , যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি ও অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।" - শেখ মুজিবুর রহমান

Steem-Bangladesh কতৃক বই রিভিউ কন্টেস্টে আমার আজকের বই "অসমাপ্ত আত্মজীবনী"।

🏵️সারসংক্ষেপ🏵️

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬-১৯৬৯ সালে জেলবন্দি জীবন কাটানোর সময় বইটি লেখেন।স্মৃতিচারণমূলক আত্মজীবনী ১৯৩৮ সাল থেকে শুরু করে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত ও তৎপরবর্তী সময়কালের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে রচিত।

[sceenshot]

সম্পাদক	শামসুজ্জামান
লেখক	শেখ মুজিবুর রহমান
প্রচ্ছদ শিল্পী	সমর মজুমদার
দেশ	বাংলাদেশ
ভাষা	বাংলা
বিষয়	রাজনীতি„ইতিহাস
ধরন	আত্মজীবনী মূলক
প্রকাশক	ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড
পৃষ্ঠা সংখ্যা	৩০০ (আত্মজীবনী ২৮৮)
প্রকাশনার তারিখ	১৮ জুন ২০১২

🔘পাঠকের সুবিধার্থে আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট হিসেবে বইটির শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যেসব ঘটনা বর্ণনা করা হয়:

• লেখক এর গ্রামের বাড়ি শৈশব,স্কুল ও কলেজের শিক্ষা জীবন।
• জন্মবৃত্তান্ত
• বংশ পরিচয় ও
• শৈশব কালের কিছু ঘটনা।

আত্মজীবনী অংশ লেখক কারাজীবন ,পিতা-মাতা , সন্তান-সন্ততি এবং সর্বোপরি সর্বংসহা সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেসা কথা বলা হয়েছে ,যিনি তার রাজনৈতিক জীবনের সর্ব সহায়ক শক্তি হিসেবে সকল সময়ে অবিচল পাশে ছিলেন।-এসবই খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

[sceenshot]

📚পাশাপাশি যেসব ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে :

• সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড
• দুর্ভিক্ষ
• বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা
• দেশভাগ
• কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম লীগের ছাত্রলীগ এবং মুসলিম ছাত্রলীগ রাজনীতি
• দেশবিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি পূর্ব বাংলার রাজনীতি
• কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন,ভাষা আন্দোলন
• ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা
• যুক্তফ্রন্ট গঠন, নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন
• আদমজীর ডাঙ্গা
• পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তারিত বিবরণ

এভাবে সব মিলিয়ে লেখক এর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বিস্তৃত বর্ণনা রয়েছে একইসাথে লেখকের চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তানের ভ্রমণের বর্ণনা বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে।

[sceenshot]

📚অসমাপ্ত আত্মজীবনী📚

👉যারা গল্প-উপন্যাস ছাড়া অন্য কোন বই তেমন পড়েন না তারা গণ্ডির বাইরে হলেও অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি একবার পড়তে পারেন।জ্ঞানপিপাসা মেটানোর জন্য খুবই চমৎকার একটি বই।

👉বইটির প্রথম অংশে ভূমিকার লেখনি দেখতে পাবেন যা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার লেখা।বঙ্গবন্ধু যখন জেলে তখনই তিনি তার আত্মজীবনী লিখতে শুরু করেন।শেখ হাসিনা যখন ভূমিকা লিখেন তখন তিনি ও কারা কারা ছিলেন।

👉২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা চারটি খাতা আকস্মিকভাবে তার কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয়।পাতাগুলি অতি পুরনো জীর্ণপ্রায় এবং এবং লেখা প্রায়শ অস্পষ্ট।খাতাগুলো পরে বোঝা যায় বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী।যা তিনি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অভ্যন্তরীণ অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি।

👉প্রথম কিছু পৃষ্ঠা বোরিং লাগলেও আস্তে আস্তে বইটির মধ্যে আটকে যাবেন তখন সব সময় যেন মনে করবেন বঙ্গবন্ধুর সাথে রাজনীতি দেখছেন।বইটি না পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন না যে রাজনীতিতে এত ত্যাগ স্বীকার করতে হয়।আমারও ধারণা ছিল রাজনৈতিক টাকা দিয়ে হয় কিন্তু এই বইটি পড়ে বুঝেছি মানুষের ভালোবাসা কাকে বলে।

👉বইটিতে বঙ্গবন্ধুর ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত লেখা রয়েছে।যত শেষের দিকে যাচ্ছে তত মনে হচ্ছে বইটি যেহেতু অসমাপ্ত সেহেতু বইটি শেষ হবে না।বইটির অনেক স্থানে আমার চোখে পানি এসেছে।দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য পরিবারকে ছেড়ে থাকা কতটা কষ্টের তা আপনারা বইটি না পড়লে বুঝতে পারবেন না।

👉ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান এর নির্যাতন-নিপীড়ন মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে নিরলসভাবে কাজ করে আসছেন।প্রতিদিন এই দেশে ক্ষুধার্ত মানুষের খাদ্যের জন্য কোনো না কোনো প্রতিবাদ সংগ্রামে লিপ্ত ছিলেন।

[sceenshot]

অসমাপ্ত আত্মজীবনী, দুর্ভিক্ষ ও বর্তমান করোনা পরিস্থিতি :

👉১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের যে চিত্র বঙ্গবন্ধু তাঁর আত্মজীবনীতে তুলে ধরেছেন তা বর্তমান করোনাভাইরাস এর মত দুঃসময়ের প্রতিচ্ছবি।১৯৪৩ সালে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ আরম্ভ হয়েছে।লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে। লাখ লাখ মানুষ গ্রাম থেকে ছুটে যাচ্ছে শহরের দিকে।খাবার নাই কাপড় নাই । ইংরেজ বাজেয়াপ্ত করেছে সকল নৌকা যুদ্ধের জন্য।ব্যবসায়ীরা টাকা মনের চাল চল্লিশ পঞ্চাশ টাকা বিক্রি করেছে।

👉মা মরে পড়ে আছে সেই ছোট্ট বাচ্চা মায়ের দুধ চেটে খাচ্ছে।কুকুর ও মানুষ ডাস্টবিন থেকে কিছু খাবারের জন্য কাড়াকাড়ি করছে।পেটের জন্য নিজের ছেলেমেয়েদের বিক্রি করতে হয়েছে কিন্তু কেউ কিনতে রাজি হয়নি।বাড়ির দুয়ারে এসে চিত্কার করে মা বাঁচাও কিছু খেতে দাও।এই দুর্ভিক্ষের না খেয়ে থাকা মানুষের খারাপ অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর যে হৃদয় যন্ত্রণায় হাহাকার কততা অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে প্রকাশ পায়।

👉যাতে করে মানুষ অনাহারে না থাকে অনাহারে ধুকে ধুকে না মরে সেজন্য বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স করেন নেতাদের কাছ থেকে সাহায্য পেতে।বঙ্গবন্ধু মানুষেরে অনাহার দেখে তার বাবার ধানের গোলার কোন এটা দেন।সেই কোন দিয়ে পড়া ধান রাস্তায় রাস্তায় মানুষকে দেন তিনি।
[sceenshot]

📗রাজনৈতিক নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য :📗

• উনি ফুটবল খেলতেন
• ছোট থেকে রাজনীতির ব্যাপারে আগ্রহ ছিল
• কোথাও অন্যায় দেখলে তার প্রতিবাদ করতেন
• খুব ছোট বয়সে তার বিয়ে হয়
• তোষামোদি করতে মোটেও পছন্দ করতেন না পছন্দ করতেন আপোষ করতে

📙অসমাপ্ত আত্মজীবনী উক্তি সমূহ📙

"একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়ে আমি ভাবি।একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙ্গালীদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়।এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা,অক্ষয় ভালোবাসা,যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি ও অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে"। - শেখ মুজিবুর রহমান।

২০০ পৃষ্ঠায় বলেন :

"মানুষকে ব্যবহার, ভালোবাসা ও প্রীতি দিয়ে জয় করা যায়,অত্যাচার ,জুলুম ও ঘৃনা দিয়ে জয় করা যায় না।

৮৭ পৃষ্ঠায় বলেন :

"যে ছেলেমেয়েরা তাদের বাবা মায়ের স্নেহ থেকে বঞ্চিত তাদের মতো হতভাগা দুনিয়াতে আর কেউ নেই।আর যারা বাবা মায়ের স্নেহ আশীর্বাদ পায় তাদের মত সৌভাগ্যবান কয়জন?"

[sceenshot]

💯রেটিং💯

বইটির বিভিন্ন সাইডে বিভিন্ন রেটিং যেমন: ৪.৫/৪.৬/৪.৮।কিন্তু আমি পার্সোনালি বইটিকে ৪.৯ দিব ৫ এর মধ্যে।

By @ripon999

♥ধন্যবাদ সকলকে♥