|| Steem Bangladesh Contest - Movie review || সিংহ || 29-05-2021
Hello Friends
This is @rimon03 from Bangladesh
সবার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমি আজকে #steem-bangladesh কর্তৃক আয়োজিত মুভি রিভিউ কম্পিটিশনে পার্টিসিপেট করতে যাচ্ছি,
আমার মুভির নামঃ সিংহ
মুভিটির মুল কাহিনী হলো 5 বছরের শিশু 25 বছর পর তার নিজের মায়ের কোলে কিভাবে ফিরে আসে এটি হলো মুভির আসল গল্প। আর এটি ভারতের একটি সত্যি ঘটনা।
1986 সাল দক্ষিণ ভারতের ক্ষান্ড শহরের একটি নির্জন পাহাড়ি গ্রামে বসবাস করে একটি ছোট দরিদ্র পরিবার। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে টেনের বগিতে বগিতে স্টেশনে স্টেশনে এটা ওটা কুরিয়ে এবং চুরি করে তা আবার বিক্রি করে দুই আনা কামিয়ে খাবার জোগাড় করে চারু এবং তার ভাই গুড্ডু। চারু এবং গুড্ডু একটি হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে তারা দুজন ছাড়া আরও পরিবারের আছে মা এবং এক বোন। চারুর বয়স ছিল পাঁচ বছর। পরিবারের অভাবের কারণে চারুর মা কাজ করতো অন্যের বাড়িতে।
একদিন কাজের সময় চারুর মা চারুকে রেখে যায় তার বোনের কাছে। রেখে যাওয়ার পর বড় ভাই কাজের জন্য বাহির হলে চারু বায়না ধরে তার ভাইয়ের সাথে সেও যাবে। কিন্তু গুড্ডু চারুকে নিয়ে যেতে চাইছিল না। অবশেষে বাধ্য হয়ে চারুকে নিয়ে যেতে হয়।
কর্ম স্থানে যাওয়ার জন্য তারা দুজনে ট্রেনে উঠে এবং টেনে চারু তার ভাইয়ের কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরে। গন্তব্যে আসার পর চরুকে অনেক ডাকাডাকি করা হয়ে চারু উঠতে চায় না বাধ্য হয়ে চারুর ভাই তাকে স্টেশনে রেখে কাজে যায়।
মাঝ রাতে চারুর ঘুম ভেঙে যায়। উঠে দেখে স্টেশনে কোনো লোক সংখ্যা নেই। চারু তার ভাইকে খুঁজে না পাওয়ায় প্লাটফর্মে রাখা এক টেনে উঠে খুঁজতে থাকে। কিন্তু চারু ক্লান্ত হওয়ায় প্লাটফর্মের এক সিটের শুয়ে পড়ে। পরের দিন সে সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে ট্রেনটি আর থেমে নেই চলোমান অবস্থায় রয়েছে। চারু চিৎকার করে চিৎকার কেউ শুনতে না পারায় রাত পেরিয়ে দিনের বেলায় টেনটি থামে কলকাতা শহরে। সঙ্গে সঙ্গে নেমে পরে চারু।
অনেক জনসংখ্যা দেখে চারু ভয় পেয়ে যায় এবং টিকিট কাউন্টারের সামনে গেলে কলকাতার লোকজন বাংলায় কথা বলতেছিল বলে চারু কিছু বুঝতে পারছিলনা। কিন্তু ছোট্ট চারু বুঝতে পারেনি যে সে বাড়ি থেকে প্রায় 16 কিলোমিটার দূরে এই কলকাতা শহরে এসেছে। বাড়ি যাওয়া তার জন্য অসম্ভব ছিল।
তারপর থেকে চারু কলকাতার হাওয়র ব্রিজের পাশে এক রাস্তায় বসবাস করতে শুরু করে চারু। এভাবেই দুই এক মাস কেটে যায় চারুর। একদিন চারু নর্দমার পাশে বসে থাকার সময় তার বিপরীত পাশে এক দোকান থেকে একটি লোক তাকে দেখে ফেলে এবং তার সাথে কৌতূহলের সাথে কথা বলে। কিন্তু লোকটি বুঝতে পারে যে চারু বাংলা বোঝেনা।
তারপর সঙ্গে সঙ্গে লোকটি চারুকে থানায় নিয়ে আসে। থানায় পুলিশ কিছু প্রশ্ন করে চারুকে কিন্তু উত্তর দিতে না পারায় চারুকে অনাথ আশ্রমের রেখে দেয়। তিন মাস পর সেই অনাথ আশ্রমে একজন চুটনামে নারী আসে চারুর সঙ্গে দেখা করতে। এবং তিনি জানান যে অস্ট্রেলিয়ার এক পরিবার চারুকে দত্তক নিতে আগ্রহী। তারপর চারুকে অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার আগে মিসেস চুট চারুকে ইংরেজি শেখার জন্য ট্রেনিংয়ে পাঠান।
অবশেষে এক বছর পর চারুকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হয় সাল তখন 1987. চারুকে পেয়ে "চু এবং জন" নিজেদের অনেক সৌভাগ্যবান মনে করেন। চারু এরকম পালক বাবা-মা পেয়ে ভালো পরিবারে সুন্দর ভাবে বেড়ে ওঠে। এভাবে আরো 20 বছর কেটে যায়। চারু এখন প্রাপ্তবয়স্ক তরুণ।
পড়ালেখার জন্য তাকে অস্ট্রেলিয়ার মেলবর্নে বসবাস করতে হয়। সে হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করতেছে। পড়াশোনা শেষে কাজের সুবাদে চারু লুসি নামের এক আমেরিকান মেয়ের সাথে প্রেমে আবদ্ধ হয়ে যায়। মেলবর্ লুসির সাথে চারুর জীবন ভালোভাবেই কাটতে ছিল। হঠাৎ একদিন ভারতীয় বন্ধুদের বাসায় এসে অনেক প্রকার খাবারের পাশাপাশি জিলেপি দেখে চারুর ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যায়।
মনে পরে যায় ছোট বেলায় তার ভাই গুড্ডু তাকে জিলেপি খাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে তার চোখে পানি এসে যায়। এবং তার বন্ধদেরকে সে সব খুলে বলে। তার এক বন্ধু বলে গুগলে সব খুজে পাওয়া সম্ভব। কিন্তু ভারত দেশটি অনেক বড় হওয়ায় অনেক কষ্টে মনে হয়েছিল।
তারপর যখন চারু তার বাড়ি খোজার জন্য বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠে তখন লুসির সাথে তার সম্পকটা একটু দূরত্বের হয়ে যায়। তার পর যখন তার পালক মা অসুস্থ হয়ে যায় তখন চারু তার মাকে দেখতে আসে। সেদিনে চারু বুঝতে পারে চু এবং জন ইচ্ছে করে সন্তান নেননি। কারণ চু চারুকে বলেছিল যে পৃথিবীতে এমনিতেই অনেক মানুষ হয়েছে তাই আর কোনো সন্তান আমার প্রয়োজন নেই। যারা অনিয়মিত পরিবেশে বসবাস করতেছে তাদেরকে একটি সুন্দর পরিবেশে গড়ে দিতে চেয়েছি। চারু তার পালক মায়ের এরকম সৎ ব্যবহার দেখে তার বাড়ি খোঁজা বন্ধ করে দিয়েছে।
হঠাৎ একদিন চারু গুগলে ভারতের মেপটি দেখার সময় গনেসথলি জায়গাটি দেখে তার ছোট বেলার কথা মনে পরে যায়। এবং সঙ্গে সঙ্গে সে ভারতের গনেসথলি এলাকায় চলে আসে। সেখানে এসে চারু একজন ইংরেজি জানা লোককে তার হারিয়ে যাওয়ার সমস্ত কথা বলে।এবং তার ছোট বেলার ছবি তেনাকে দেখালে এবং বলে আমি আমার মাকে খুজতে এসেছি, তিনি চারুর বাড়ি দেখিয়ে দেন।
তার পর চারু তার নিজের মাকে 25 বছর দেখে বুকে জড়িয়ে ধরে খুশিতে কানা শুরু করে। আমি আজকে যে মুভিটি রিভিউ করলাম সেটি ভারত বর্সে সত্যি কারের একটি ঘটনা। আশাকরি আমার পোস্টি আপনাদের সকলকেই ভালো লাগবে।