Contest | Travel Review || Details of Cox’s Bazar trip || Participant by @msi-shishir
আসসালামু আলাইকুম!!
পৃথিবীর এই ক্লান্তি লগ্নে আশা করছি সবাই ভালো আছেন।৷ সবাইকে আজ আমাদের কক্সবাজার ভ্রমণের গল্প শোনাব। আশা করছি সবার ভালো লাগবে।
ধন্যবাদ @Steem-Bangladesh কে, আমাকে গল্প বলার সুযোগ করে দেওয়া জন্য।
যদি বলি সমুদ্রের গর্জন.....
তখন আপনার চোখের কোণে ভেসে উঠবে কোনো না কোনো সমুদ্র সৈকত। আর এই গর্জন আর সমুদ্রর জলরাশি নিয়ে বঙ্গোপসাগর কেন্দ্রিক অনেক গুলো সমুদ্র সৈকত আছে বাংলাদেশের দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে। তার মধ্যে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত অন্যতম। বাংলাদেশে যে সকল প্রকৃতির সৌন্দর্যের প্রতিচ্ছবি রয়েছে, তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ এই সমুদ্র সৈকত। কৃত্রিমতা বির্বজিত আমাদের এই সৈকত যেন প্রকৃতির কোলে সৌন্দর্যের রাণী।
কক্সবাজারে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক বালুময় সমুদ্র সৈকত যা দেখার জন্য অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটক প্রতিনিয়ত ভিড় জমাচ্ছেন, তাই আমরাও আর অপেক্ষা করতে পারলাম না, ঢাকা শহর থেকে ৪১৫ কিলোমিটার দূরত্বের এই পর্যটন এলাকায় আমরাও ঘুরে আসলাম পরম আনন্দ-চিত্তে।
Location: Inani Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
গত ১২ নভেম্বর টু ১৭ নভেম্বর ২০২০ আমরা কক্সবাজারে একটা চমৎকার ট্যুর উপভোগ করে এলাম। এখানে সেই ভ্রমণের কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি আপনাদের সাথে।
আমি এবং আমার জীবনসঙ্গিনী দু'জনেই পেশায় চাকুরীজীবি। যেহেতু আমরা দু'জনেই চাকুরীজীবি তাই সময় সল্পতার কারনে দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সৌভাগ্য হয় নি,তাই দু'জনেই ঠিক করলাম দূরে কোথাও ঘুরতে যাই, দু'জনেই স্থির করলাম সেন্টমার্টিন দ্বীপে ঘুরতে যাবো, যেই কথা সেই কাজ, দু'জনেই অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নিলাম।
প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করলাম, ছুটি ম্যানেজ হয়ে গেলো তাই, কক্সবাজার টু সেন্টমার্টিন এর জাহাজ এর টিকিট কাটলাম, সেন্টমার্টিন দ্বীপে হোটেল বুকিং দিলাম, কিন্তু অপ্রত্যাশিত কারনে আমাদের সেন্টমার্টিন ট্যুর ক্যানসেল করতে হয়, আমাদের নতুন করে পরিকল্পনা করতে হয়, তাই এবার দু'জনেই সিদ্ধান্ত নেই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ঘুরে আসার, নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার যাওয়ার সকল আয়োজন সম্পন্ন করি।
ভ্রমণে যাওয়ার পূর্বে আমরা টুকটাক কিছু কেনাকাটা করে নিলাম এবং প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করলাম এরপর সব কিছু গুছিয়ে নিলাম। যেহেতু ২ জনই চাকুরীজীবি তাই সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে রাতের খাবার খেয়ে নিলাম, দুজনে রাত ৯ টায় শাহাজাহান পুর রেলওয়ে কলোনি থেকে রিকশা নিয়ে চলে আসলাম আরামবাগ বাস কাউন্টারে। টুবা লাইনের এসি বাসের টিকেট কাটা ছিলো আমাদের । ১১ টায় আরামবাগ মেইন কাউন্টার থেকে টুবা লাইনের এসি বাস ছাড়ল। বাস কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে সেই যে রওনা হলাে - পথ যেন ফুরায় না। কুমিল্লায় হােটেলে বাস থামল। খাওয়া-দাওয়া করলাম। বাস আবার ছাড়ল। চট্টগ্রাম পৌছাতে পৌছাতে ভাের হয়ে গেল। এসি বাসে প্রায় সব মহিলা ও বাচ্চা-কাচ্চা বমি শুরু করে দিল। আমার ওয়াইফ এর আগে বাসে করে এতো লং জার্নি করেন নি, সে মূলত ট্রেনে চলতে কমফোর্ট ফিল করে। তার জন্য লং জার্নি অনেক টা ক্লান্তিকর হয়ে উঠেছে, এবং সে অনেকটা উইক হয়ে পড়ে। তবে যাই হোক যেহেতু এটা আমাদের প্রথম লং জার্নি সেই জন্য আমরা পুরো সময় টা ভীষণ উপভোগ করি। অবশেষে সকল ক্লান্তির অবসান ঘটিয়ে আমরা পৌছালাম কক্সবাজার। বাস থেকে নামার পর ভীষণ ভালো লাগছিলো আমাদের। ক্লান্তির কিছুটা অবসান হলো। রিক্সায় করে পরিচিত একটা হােটেলের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম যা সুগন্ধা বিচের নিকটবর্তী।
Location : Chakoria Highway, Cox's Bazar,Bangladesh.
আমরা ঢাকা থেকে হোটেল হানিমুন এর সাথে যোগাযোগ করে যাই, যেহেতু আমি আগেও ওই হোটেলে ছিলাম আর আমাদের পরিচিত ও ছিলো।তাদের কথার উপর ভিত্তি করে আমরা বুকিং না দিয়েই চলে আসি, যেহেতু তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে রুম থাকবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমরা যখন হোটেলে পৌছাই তখন রুম খালি থাকে না। সো তখন আমাদের জন্য বিষয় টা মোটেও সুখের ছিলো না, পরবর্তীতে আমরা কক্সবাজারের স্থানীয় একজনের সাহায্যে একটা হোটেলে রুম পেয়ে যাই, যা আমাদের প্রত্যাশিত অনুযায়ী ছিলো। আমরা যে হোটেলে উঠি তার নাম ছিল Hotel Shams Plaza। এটি হােটেল মােটেল জোন কক্সবাজার এলাকার সুগন্ধা বিচের নিকটবর্তী।
হােটেল রুম ছিলো রেগুলার কাপল বেড। তাদের নিয়ম অনুযায়ী দুই দিনের ভাড়া অগ্রিম পরিশোধ করতে হয়েছিলো। একটা জিনিস খুব ভাল লেগেছিল হােটেল কাউন্টার এ আসা মাত্র ওরা আমাদের দুজনকেই ওয়েলকাম করলো যা আমাদের খুব ভাল লেগেছিল। আর ঐ হােটেলের সিস্টেম হলাে পরের দিন সকাল থেকে থাকলে প্রত্যেক দিন তা কনফার্ম করতে হবে।
হােটেলের কাউন্টারে সব প্রসিডিউর সমাপ্ত করার পর পৌছে গেলাম-৩০৭ নং রুমে। রুমে পৌছালাম সকাল ১০ না ১১ টায় যেন। ফ্রেস হওয়ায় গত রাতের বাস জার্নির কিছুটা ক্লান্তির অবসান ঘটলো।
আমরা আমাদের এই ভ্রমণে ৪/৫ দিন কাটাবো এই প্ল্যানে যেহেতু এসেছি তাই আমরা আগে থেকে পূর্ব-পরিকল্পনা করে নেই কিভাবে আমাদের সময় গুলোকে এনজয় করা যায় আর সব গুলো জায়গায় উপভোগ করা যায়। এবং সেই অনুযায়ী আমরা আমাদের ভ্রমণ সম্পন্ন করে থাকি।
আমরা আমাদের সকালের নাস্তা শেষ করে রুমে ফিরে এলাম এবং সমুদ্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম এবং তখনই সমুদ্র দেখার জন্য চলে গেলাম সুগন্ধা সি বিচ। আমাদের হোটেল এর পাশে সমুদ্র সৈকত তাই আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই সমুদ্রে পৌছে যাই। সুগন্ধা বিচ যেটা সব গুলো বিচের থেকে অন্যতম। হােটেল থেকে বের হয়েই কিছু দুর যেতেই ছিল বার্মিজ মার্কেট। বার্মিজ মার্কেট এক বিশাল পন্য সামগ্রীর মার্কেট যা বার্মা থেকে আনা হয়। এখানে দেখলাম বিভিন্ন ধরনের আচার, বিভিন্ন ধরনের টুপি (Cap) যা ছিল বিভিন্ন আকার ও রঙের। এই সব কিছুতে একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম আমরা।
Location : Sugondha Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
যেহেতু সমুদ্র সৈকতে আমরা বের হয়েছি দুপুরের দিকে তার জন্য আমরা অনেক রোদ অনুভব করলাম, আমরা তাকাতে পারছিলাম না। প্রচন্ড রােদ থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য সানগ্লাস পরে নিলাম। ছবিও তুললাম তখন দেখি কিছু ছেলে ক্যামেরা নিয়ে এরা ছবিতুলে দেয়। ছবি প্রতি এরা নেয় ৫ টাকা। ছবি গুলো সাথে সাথে দিয়ে দেয় করে ডাটা ক্যাবলের মাধ্যমে। যা সত্যি সুবিধাজনক আমাদের জন্য। দুজনেই দুজনের ছবি তুললাম। এরপরি এক ছেলে এল ছবি তুলে দিতে দুজনের একসাথে। বলল, আমার ডিজিটাল ক্যামেরায় আপনাদের কয়েকটি ছবি তুলে দিই। যেহেতু ১ম দিন তাই আমরা রাজি হইনি। তবে এদের রিকুয়েষ্ট এর ধরন সত্যি অসাধারণ। যেহেতু আমরা আরো কয়েক দিন থাকবো তখন ছবি তুলবো, এখন আপাতত নিজেরাই নিজেদের মত করে ছবি তুলছি। আমরা যেহেতু সমুদ্র ভ্রমণে এসেছি তাই আগে থেকে মোবাইল প্রটেকশন নিয়ে এসেছি যাতে মোবাইল পানিতে ভিজলেও কোন সমস্যা না হয়।
Location : Sugondha Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
আমরা দু'জন সমুদ্রে অনেক টা সময় নিয়ে এনজয় করলাম। মজার বিষয় হলো আমার পার্টনার সাঁতার জানেন না আর তার উপর এটা ছিলো তার ১ম সমুদ্র ভ্রমণ আর তাই সে সমুদ্র দেখে যতটা না আনন্দিত, সমুদ্রের নীল জলরাশিতে ঝাপিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে সে ঠিক ততটাই ভীত-সন্ত্রস্ত। আমি তাকে যতই অভয় দিচ্ছি না কেন সে কনফিডেন্স পাচ্ছিলো না। অবশেষে বহু- কষ্টে তাকে বুঝাতে পারলাম। তবে তার শর্ত অনুযায়ী বেশি পানিতে যাওয়া যাবে না। তার সব শর্ত মেনে নিয়ে তাকে নিয়ে ঝাপিয়ে পড়লাম পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে। সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ আর তার নীল জলরাশির মাঝে আমাদের উচ্ছ্বাস যেন কয়েক গুণ বাড়িয়ে তুলেছে। তাকে অনেক দূর নিয়ে গেলাম সমুদ্রের গহীনে। তার প্রায় গলা সমান পানিতে। শেখালাম সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে তাল মেলানোর কৌশল। বউ আমার যথেষ্ট এনজয় করেছে। অপ্রত্যাশিত ভাবে সে সমুদ্রের ঢেউয়ে একবার পড়ে যায়, আর যেহেতু সাঁতার জানেন না তাই কিঞ্চিৎ পানি খেয়ে নিলেন যদিও সেই জেদ সে আমার উপর ঝেড়েছে।
Location : Sugondha Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
মজার বেপার হলো সবাই বিচের মূল পয়েন্টে ভীড় জমাচ্ছে যা আমাদের একদম ই পছন্দ হয়নি তাই আমরা মূল পয়েন্টে থেকে অনেক টা দূরে গিয়ে সমুদ্রের নীল জলরাশিতে নিজেদের সমুদ্র উল্লাসে হারিয়ে গিয়েছিলাম।
Location : Sugondha Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
সমুদ্র থেকে ফিরে এলাম, হােটেলে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়লাম দুপুরের খাবারের উদ্দেশ্যে। আমাদের হোটেলের পাশেই সারি সারি অনেক রেস্টুরেন্ট ছিলো যা সিবিচের কাছেই, একটি হােটেলে খেয়ে নিলাম কোরাল মাছ, শুটকি মাছ, লাল চালের ভাত এগুলি খুবই সুস্বাদু ছিল। এখনও মনে হয় মুখে লেগে আছে। এরপর কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতে ঘুরাঘুরি করলাম, সূর্য অস্তের অসাধারণ দৃশ্য উপভোগ করলাম দু'জনেই, অনেক ছবি তুললাম। সন্ধ্যার পর সমুদ্র সৈকতের তীরে ধরে সমুদ্রের হিম শীতল হাওয়ায় হাটতে হাটতে পৌছে গেলাম অনেক টা দূর এর পর দু'জনই নাস্তা করার জন্য একটা রেস্টুরেন্ট খুঁজে পেলাম যা সত্যি সুন্দর ছিলো। দু'জনেই রুপচাঁদা মাছের বারবিকিউ খাই যার স্বাদ আমাদের এখনো মুখে লেগে আছে যদিও সাথে আরো অন্য খাবার ছিলো। চা খেয়ে আবার হোটেলের উদ্দেশ্যে সমুদ্র সৈকতের তীরে ধরে ফিরে আসা।
Location: Sand Crab Beach Restaurant, Cox’s Bazar, Bangladesh.
রুপচাঁদা মাছের বারবিকিউ
Location : Hotel Shams Plaza, Cox’s Bazar, Bangladesh.
পরিকল্পনা অনুযায়ী পরের দিন আমরা হিমছড়ি ও ইনানী সি-বিচ দেখার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। কলাতলি থেকে হিমছড়ি দক্ষিণ দিকে প্রায় ২০ কি.মি দূরত্ব। অটোরিকশা রিজার্ভ নিয়ে রওনা দিলাম সকাল ৯ টায় হিমছড়ির উদ্দেশ্য। যেহেতু অটোরিকশা যার ২ পাশ খোলা, তাই কক্সবাজারের নয়না-ভিরাম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে আমাদের পথ এগিয়ে চলছে।
হিমছড়ি যাওয়ার পথে পড়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর রাস্তা গুলোর একটি রাস্তা যার নাম মেরিন ড্রাইভ রোড। যার বিশেষত্ব হলো রাস্তাটি সমুদ্রের তীর ঘেঁষে সোজা চলে গিয়েছে ইনানীর দিকে যার এক প্রান্তে উত্তাল সমুদ্র আর অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে নয়না-ভিরাম পাহাড়ের সারি। যা পর্যটকদের কাছে ভালো লাগার বিশেষ আকর্ষণ। আমরা সেই পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছি। আর উপভোগ করছি পৃথিবীর সুন্দর দৃশ্য গুলো। যার প্রতিটি মুহূর্ত আমাদের কাছে সত্যি উপভোগ্য।
Location : Marine Drive Road, Cox’s Bazar, Bangladesh.
অটোরিকশা ড্রাইভারকে আগেই বলেছি যাওয়ার পথে আমাদের ভালো লাগলে আমরা নামবো, সেই অনুযায়ী অনেক টা পথ আসার পর দেখতে পেলাম একটি ঝর্না। জায়গা টা দেখে আমাদের খুব ভালো লেগেছে। নামলাম, অনেক গুলো ছবি তুললাম। একজন ফটোগ্রাফার এসে জিগ্যেস করলেন ছবি তুলবো কি না, যেহেতু জায়গা টা অসাধারণ আর ফটোগ্রাফার কে দেখে ভালো মনে হলো,তাই রাজি হয়ে গেলাম। পাশেই সমুদ্র সৈকত যার এক পাশে বিশাল ঝাউগাছ এর সারি অন্য পাশে নীল সমুদ্র। এক কথায় অসাধারণ দৃশ্য। ফটোগ্রাফার আমাদের অনেক গুলো অসাধারণ ছবি তুলে দিলেন যা আমাদের পুরো ট্যুরের বেস্ট পিকচার।
Location : Marine Drive Road Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
এমন মনোরম দৃশ্য ভেদ করে আমরা চলতে শুরু করলাম হিমছড়ি ঝর্নার উদ্দেশ্যে। কিছুটা সময় পেরোনোর পর আমরা এসে উপস্থিত হই আরেক নয়না-ভিরাম সৌন্দর্যের স্থান হিমছড়ি। হিমছড়ি মূলত বিখ্যাত তার সু-উচ্চ পাহাড় আর প্রাকৃতিক ঝর্নার জন্য। টিকিট কেটে আমরা ভেতরে প্রবেশ করলাম। যেহেতু আমরা পাহাড় এবং ঝর্না দু'টাই দেখবো তাই আগে পাহাড়ে উঠার প্ল্যান করি। হিমছড়ি পাহাড়ে উঠার জন্য রয়েছে সিঁড়ির ব্যবস্থা, যেহেতু এটির উচ্চতা অনেক তাই অনেক গুলো সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে হয় যা কিছুটা কষ্টসাধ্য এবং রোমাঞ্চকর। সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলাম সেখানে থেকে নীল সমুদ্রের অপরুপ সৌন্দর্য দেখা যায়। পশ্চিম দিকে আর পূর্ব দিকে বন আর বন, গাছ গাছালি ভরা। যা সত্যি অসাধারণ দৃশ্য। এখানে আমরা অনেক গুলো স্মৃতি বন্দী করলাম এবং অনেক টা সময় কাটালাম। পাহাড়ের উপর থেকে সমুদ্রের নীল জলরাশি দেখতে অসাধারণ।
Location : Himchhori Waterfall and Hill Track, Cox’s Bazar, Bangladesh.
অনেকটা সময় কাটিয়ে পাহাড় থেকে নেমে আসলাম দু'জন। ঝর্না দেখতে গিয়ে দু'জনেই হতাশ হই। যদিও এটি প্রাকৃতিক ঝর্না বাট প্রকৃতির কোন লেস মাত্র এখানে উপস্থিত নেই। স্থানের তুলনায় অনেক মানুষ যা ঝর্নার সৌন্দর্য কে সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস করে দিয়েছে। ঝর্না দেখে হতাশ হয়ে আমরা বেরিয়ে আসলাম।
Location : Himchhori Waterfall and Hill Track, Cox’s Bazar, Bangladesh.
আমাদের পথচলা আবারও শুরু হলো ইনানী সি-বিচের উদ্দেশ্যে। ইনানী যাওয়ার পথে রাস্তার ধারে সমুদ্র, পাহাড়, ঝাউবন, পানের বাগান, সুপারি বাগান, বিভিন্ন ধরনের হ্যাচারি, বেইলি সেতু সহ আরো নানান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাদের ভ্রমণ টাকে অসাধারণ করে তুলেছে। এই সব দৃশ্য দেখতে দেখতে আমরা পৌছে গেলাম আমাদের কাংখিত লক্ষ্যে ইনানী সি-বিচে।
Location : Himchhori Waterfall and Hill Track, Cox’s Bazar, Bangladesh.
ইনানী বিচের বিশেষত্ব হলো এটি সামুদ্রিক প্রবাল পূর্ণ সৈকত। এখানে আপনি দেখতে পাবেন নান রকমের সামুদ্রিক প্রবাল। বিশাল সমুদ্র সৈকত, জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য। আমরা এখানে অনেক টা সময় কাটালাম, ঘুরাঘুরি করলাম, অনেক ছবি তুললাম। যেহেতু আমরা দুপুরের তপ্ত রোদের মধ্যে গিয়েছি তাই ইচ্ছে থাকা সত্বেও ফিরে আসতে বাধ্য হলাম, আসার পথে রুপচাঁদা মাছ ভাজা নিয়ে আসলাম। এই ভাবে আমরা আমাদের হিমছড়ি এবং ইনানী ভ্রমণ শেষ করে ফিরে আসলাম আমাদের হোটেলে।
Location :Inani Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
যথারীতি লাঞ্চ শেষে ২ জন একটু রেস্ট নিয়ে আবার বের হলাম সমুদ্রের সূর্য অস্ত উপভোগ এর জন্য। সমুদ্রের সূর্য অস্ত যাওয়ার মুহূর্ত অসাধারণ। আমরা সমুদ্রের সূর্য অস্ত যাওয়া দেখে, সমুদ্র সৈকতে হেটে হেটে বার্মিজ মার্কেট গেলাম কিছু কেনাকাটার উদ্দেশ্যে। কক্সবাজার শহরে রিকশায় ঘুরাঘুরি করলাম। আমরা বাহিরে অনেক টা সময় ঘুরাঘুরি করলাম, মাছের বারবিকিউ খেলাম, আমার বউ কাকড়া ভাজা খেতে ভীষণ পছন্দ করে, সে কাকড়া ভাজা খেলো, সব কিছুই আমরা খুব এনজয় করেছি, আমাদের প্রতিটি মুহূর্ত অসাধারণ কেটেছে।অবশেষে আমরা হোটেলে ফিরে আসি।
Location :Inani Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
Location : Sugondha Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
আজ আমাদের সমুদ্র ভ্রমণের ৩য় দিন। আজ আমরা খুব ভোরে সমুদ্রে ভোর দেখার উদ্দেশ্যে বের হই। এতোটা ভোরে বের হলাম যে চারদিকে নিস্তব্ধতা বিরাজমান। কিছুটা ভীত-সন্ত্রস্ততার মাঝে দু'জন এগিয়ে গেলাম সমুদ্র সৈকতে।
Location : Sugondha Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
পুব আকাশে রক্তিম আভা। সৈকতের কিনারে ঠায় দাঁড়িয়ে গগনমূখী ঝাউবন। সমুদ্র তীরে ভোরের নীরব-নিস্তব্ধতা। নোনাজলে ভাটার টানে বিক্ষুব্ধ সমুদ্রটা যেন একেবারেই শান্তশিষ্ট। এরই মাঝে সমুদ্রের জলে স্বর্ণালী ঝিলিক ছড়িয়ে এক নতুন সূর্যের আগমন। কক্সবাজারের সুদীর্ঘ সমুদ্র সৈকত ফিরে পায় প্রাণ। সমুদ্রের হিমেল হাওয়ায় আমাদের প্রাণও উচ্ছ্বসিত। আমরাও সমুদ্রের নোনাজলে পা ভিজিয়ে সৈকতে পদচিহ্ন এঁকে এগিয়ে গেলাম অনেক টা পথ। সমুদ্র সৈকতে ভোর দেখার মূহুর্ত টা সত্যি অসাধারণ।
Location : Sugondha Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
কক্সবাজার ভ্রমণে বেড়ানোর প্রধান জায়গা সমুদ্র সৈকত। বালুকাবেলায় কিটকট চেয়ারে গা এলিয়ে বসে সমুদ্রের বড় বড় ঢেউ দেখে হারিয়ে যেতে পারেন অজানা কোনো ভূবনে।
Location : Sugondha Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
সমুদ্র সৈকতে অনেক টা সময় কাটিয়ে ফিরে আসলাম হোটেলে। রেস্ট নিয়ে আবার ফিরে যাই সমুদ্র সৈকতে, সমুদ্রের নোনা জলে নিজেদের সোপর্দ করাই মূল উদ্দেশ্যে। অনেক টা সময় সমুদ্র সৈকতে সাঁতার কাটলাম, বালু নিয়ে খেলা করলাম,যা অনেক মজার ছিলো। বালু খুঁড়ে তার মাঝে দু'জনের পা রেখে তা বালু দিয়ে ঢেকে দেওয়া। আমার প্রিয়ার পা বালিতে আটকে দেওয়া সহ আরো অনেক দুষ্টুমি, এ যেন ছোট বেলায় হারিয়ে যাওয়া। সৈকতের বুকে নিজেদের ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে দেওয়া। ঝিনুক কুড়ানো, লাল কাকড়া খুঁজে বেড়ানো, ছোট মাছের ঝাক নিয়ে মজা সহ কত কি। সৈকতের বালুর নিচ থেকে ছোট ছোট ঝিনুক খুঁজে বের করলাম, যা অনেক ইন্টারেস্টিং বিষয় ছিলো। আমারা আমাদের পুরোটা সময় অনেক এনজয় করি, যা আমাদের গোল্ডেন মেমোরি হয়ে টিকে থাকবে।
Location : Sugondha Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
সমুদ্র সৈকত থেকে সোজা ফিরে আসলাম হোটেলে, ফ্রেশ হয়ে বের হলাম লাঞ্চ এবং রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড এর উদ্দেশ্যে। যেহেতু এটা কক্সবাজার শহরের ঝাউতলায় অবস্থিত আর আমাদের হোটেল থেকে কিছুটা দূরত্বে অবস্থিত তাই আমাদের যেতে হবে, রিকশা বা সিএনজি করে, সেই অনুযায়ী আমরা পৌছে গেলাম রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ডে যা কক্সবাজারে নতুন সংযোজন। খুবই ভাল আয়োজন ,পানির নিচের পরিবেশ পাওয়া যায় এই ফিস ওয়ার্ল্ডে। সাগর ও মিঠা পানির বর্ণিল রাজত্ব এ রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড (Radiant Fish World) যা বাংলাদেশের প্রথম মেরিন ফিশ অ্যাকুরিয়াম (Marine Fish Aquarium)। ঝলমলে শতাধিক ছোট-বড় অ্যাকুরিয়াম নিয়ে নান্দনিক শিল্পকর্ম ও বৈদ্যুতিক আলোয় সুড়ঙ্গের মতো সাজানো, নানা জাতের মাছ। এ যেন সাগরতলের এক আশ্চর্য জগত। এ যেন সাগর তলের বর্ণিল রাজত্ব। চারদিকে নানা প্রজাতি মাছের রাজ্য, যেন সাগর তলদেশের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি।
Location : Radiant Fish World, Cox’s Bazar, Bangladesh.
এ্যাকুরিয়ামে গেলে দেখা যাবে উপরে মাছ, ডানে মাছ, বামে মাছ। অর্ধশতাধিক প্রজাতির মাছের ভিতর দিয়ে পথ চলতে হবে। তবে হঠাৎ সামনে এসে হাজির হতে পারে হাঙ্গর মাছ অথবা মানুষ খেকো পিরানহা মাছ ধারালো দাঁত খুলে হা করে ছুটে আসতে পারে। গায়ে লেগে যেতে পারে কুচিয়া, কচ্ছপ, কাঁকড়া, আউসসহ সাগরের তলদেশের নানা কিট পতঙ্গ।এর মাঝে সাগরের তলদেশের গাছ পালা, লতা, পাতা, গুল্ম, ফুল গায়ে পরশ লাগিয়ে দেবে। সাগরের পাহাড়, গুহা, তলদেশ উঁচু নিচু আর এলোমেলো সাগর পথ পাড়ি দিতে প্রায় দুই ঘন্টা সময় ব্যয় করতে হবে।
Location : Radiant Fish World, Cox’s Bazar, Bangladesh.
আমরা দু'জন প্রায় প্রতিটি অ্যাকুরিয়াম দেখলাম, অনেক ছবি তুললাম, অনেক অজানা কে সামনে থেকে দেখার সুযোগ পেলাম। যা আমাদের কাছে ভালোই লেগেছে। তবে প্রবেশ ফি টা তুলনামূলক বেশি যা আরো কম হলে হয়তো আরো অনেক ভালো হতো।
Location : Radiant Fish World, Cox’s Bazar, Bangladesh.
রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড থেকে বের হয়ে আমরা ফিরে আসলাম বার্মিজ মার্কেটে, সেখান থেকে কিছু কেনাকাটা করে আমরা সমুদ্র সৈকতে সূর্য অস্ত দেখার জন্য অপেক্ষা করলাম। উপভোগ করলাম সূর্য অস্তের অসাধারণ দৃশ্য। সমুদ্র সৈকতের তীর ধরে হাটি-হাটি পা-পা করে ফিরে আসলাম আমাদের হোটেলে।
Location : Sugondha Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
আজ আমাদের কক্সবাজার ভ্রমণের শেষ দিন। যদিও আমরা এই কয়েক দিন সমুদ্রে এতো এসেছি যে সমুদ্র আমাদের প্রায় মুখস্থ হয়ে গেছে। সত্যি বলতে সমুদ্রের অদ্ভুত এক আর্কষন আছে, মানুষকে হাজার মাইল দূর থেকেও হাতছানি দেয়। অন্যদেশের সমুদ্র কেমন তা দেখিনি তবে কক্সবাজারকে দেখেছি একবার নয় বহুবার। যতবারই যাই অদ্ভুত এক ভালোলাগা নিয়ে ফিরে আসি। আর বারবার ফিরে যেতে ইচ্ছে হয়। বারবার ফিরে যাই।
Location : Sugondha Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
আজ আমাদের বিশেষ কোন প্ল্যান নেই। যেহেতু এই কয়দিন আমরা অনেক ঘুরাঘুরি করেছি। তাই পরিকল্পনা বিহীন ঘুরাঘুরি করছি আজ। ভোর বেলা সমুদ্র সৈকতে গেলাম সূর্য উদয় উপভোগ করার জন্য। সমুদ্রের হিমেল হাওয়া গা জুড়িয়ে ফিরে এলাম। দুপুরে বের হলাম আবার সমুদ্রের উদ্দেশ্যে।
Location : Sugondha Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
সমুদ্র সৈকতে এসে ঠিক করলাম ঘোড়ায় চড়বো। টগবগিয়ে ঘোড়া চালাবো সমুদ্র সৈকতে। আমি রাজি থাকলেও আমার প্রিয়তমা ভীষণ ভীত। সে চড়তে চাচ্ছে না তবে ঘোড়ার পিঠে বসে ছবি তুলতে ভীষণ আগ্রহী যদিও সে ভয় পাচ্ছে। সেই অনুযায়ী আমরা একটা ঘোড়ার সাওয়ার কে ঠিক করলাম। কথা হয় আমরা কিছু ছবি তুলবো ব্যস। প্রথমে আমার প্রিয়তমাকে ঘোড়ার পিঠে চড়ালাম। সে ভীষণ ভয় পাচ্ছে। বহু ভাবে বুঝিয়ে তাকে শান্ত করলাম কিছু টা পথ চড়ালাম। যখন একা ছেড়ে দেই সে ভীষণ ভয় পায় আর রেগে গিয়ে আমাকে ভীষণ বকা দেয়। এবং ঘোড়া থেকে নেমে আমাকে জড়িয়ে ধরে। এতোটা ভয় পাবে আমি বুঝতে পারিনি। তাকে শান্ত করে এবার আমি উঠে পড়লাম ঘোড়ার পিঠে। কিছুটা পথ ঘোড়া দৌড়ালাম। অনেক গুলো ছবি তুললাম, ভিডিও করলাম। ঘোড়া নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা টা ভালোই ছিলো বাট দুঃখজনক হলো ঘোড়ার মালিক ঘোড়া চড়ার জন্য আমাদের কাছে অনেক বেশি টাকা দাবি করেন এবং আমাদের থেকে বেশি টাকা নিয়ে নেন যা আমাদের হতাশ করে।
Location : Sugondha Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
যেহেতু আজ আমাদের আর কোন প্ল্যান নেই। আর আমাদের শহরে ফিরবার বাস ছাড়বে রাত ৯ টায় তাই আমরা ঠিক করি সমুদ্রে অনেক টা সময় কাটাবো। সেই অনুযায়ী আমরা সমুদ্র সৈকতে অনেক ঘুরাঘুরি করি। এই কয়দিন আমরা অনেক বার এসেছি সমুদ্র সৈকতে, অনেক ঝাপাঝাপি করালাম সমুদ্র জলে। তাই অন্যদিনের তুলনায় আজ আমাদের আগ্রহ কিছুটা কম থাকলেও আমরা সমুদ্র উল্লাস করছি। উল্লাসকে আরো বাড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে আমি একটা টিউব ভাড়া করলাম। সেই টিউবে আমার প্রিয়তমাকে ভাসিয়ে নিয়ে সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে তাল মিলিয়ে আস্তে আস্তে এগিয়ে গেলাম সমুদ্র গহীনে।
Location : Sugondha Sea Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh.
সমুদ্র সৈকতের নোনাজলে আমরা অনেক টা সময় কাটিয়ে ফিরে এলাম আমাদের হোটেলে। লাঞ্চ শেষে দু'জন রেস্ট নিলাম। সন্ধ্যায় দু'জন বের হলাম আমাদের যান্ত্রিক নগরীতে ফিরে আসার বাসের টিকিট কনফার্ম করার জন্য, যদিও আমাদের টিকিট আগেই কনফার্ম করা ছিলো, বাসের ত্রুটির জন্য আমাদের অন্য বাসে করে আসতে হচ্ছে। দু'জনে বাসের টিকিট কনফার্ম করে ফিরে গেলাম বার্মিজ মার্কেটে। ফিরে আসার পূর্বে কিছু কেনাকাটার উদ্দেশ্যে।
Location : Hotel Shams Plaza, Cox’s Bazar, Bangladesh.
অবশেষে আমরা ফিরে আসলাম হোটেলে। ফিরে আসার পূর্বে রাতের খাবার খেয়ে নিলাম দু'জন। আমাদের সব কিছু গুছিয়ে নিলাম। অবশেষে হোটেলের সব প্রসিডিওর সম্পন্ন করে আমাদের ভ্রমণের ইতি টেনে ফিরে আসলাম বাস কাউন্টারে। রাত ১০ টায় আমরা আমাদের কাংখিত বাসে চড়ে রওনা হলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। পরের দিন সকাল প্রায় ৭ টায়া আমার আমাদের প্রিয় শহরে পৌছে গেলাম। আর এরি মধ্যে আমরা আমাদের অসাধারণ একটা ভ্রমণ সম্পন্ন করলাম। যা আমাদের গোল্ডেন মেমোরি হিসেবে সারাজীবন থেকে যাবে। আমরা আমাদের ভ্রমণের পুরোটা সময় ভীষণ ভাবে উপভোগ করলাম।
কথায় আছে, "পদচিহ্ন ভুলে যাও আর স্মৃতিগুলো নিয়ে নাও"। যা বাস্তব সত্য, ভ্রমণ আপনার স্মৃতিকে বহু গুন বাড়িয়ে দিবে। অনুভব করাবে পৃথিবীর অপরুপ সুন্দর দৃশ্য গুলো কে। ভ্রমণ প্রথমে আপনাকে নির্বাক করে দেবে তারপর আপনাকে গল্প বলতে বাধ্য করবে। সত্যি বলতে, ভ্রমণ শেষে নিজ বাড়িতে ফেরার আগ পর্যন্ত কেউই অনুভব করতে পারে না ভ্রমণ কত সুন্দর ছিল। ঠিক তেমনি আমরা আমাদের ভ্রমণকে অনুভব করেছি অসাধারণ ভাবে। প্রতিটি মুহূর্ত আমরা ভীষণ ভাবে উপভোগ করেছি। যা আমাদের ভালোবাসার অমূল্য স্মৃতি।
সতর্কতা : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত যেহেতু বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকত আর সবচেয়ে বড় ট্যুরিজম এরিয়া তাই এখানে নানাধরণের মানুষের আনাগোনা তাই সব সময় সতর্কতার সাথে চলা ফেরা করতে হবে। কোন কিছু করার আগে অবশ্য ভালো ভাবে সেই বিষয় জেনে নিতে হবে। তা না হলে আপনি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
খাবার : কক্সবাজার যেহেতু ট্যুরিজম এরিয়া আর সামুদ্রিক এরিয়া তাই এখানকার খাবারে রয়েছে বিশেষ নান্দনিকতা। কক্সবাজারে থাকার জন্য বিভিন্ন বাজেটের হোটেল রয়েছে। তার সাথে রেস্তোরাঁও রয়েছে। তবে আলাদাভাবে অবস্থিত কিছু রেস্তোরাঁ তার খাবারের ধরণ এবং মানের কারণে হয়েছে জনপ্রিয়। কক্সবাজার ঘুরে দেখার পাশাপাশি এসব রেস্তোরাঁতে রসনাবিলাস দিতে পারে অসাধারণ কিছু ভালো লাগার অভিজ্ঞতা।
ভ্রমণ কস্ট : কক্সবাজার ভ্রমণের জন্য খরচ সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করবে। বলা হয়ে থাকে কক্সবাজার হচ্ছে টাকা ওড়ানোর জায়গা, যার অলিতে-গলিতে টাকা ওড়ে। আপনি যেমনটা চাইবেন তেমনিভাবে এখানে খরচ করার সুযোগ আছে। সো এই বিষয় বিশেষ মতামত নেই।
সবাই ভালো থাকবেন!!
সাবধানে থাকবেন!!
সুস্থ থাকবেন!!
শুভকামনা রইলো সবার জন্য!!
Connect me on:
Link | Link |
সত্যিই চমৎকার একটি ভ্রমণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। ধারবাহিকভাবে কখন কোথায় গিয়েছেন তার বর্ননা দিয়েছেন, ভ্রমন সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছেন এবং অসংখ্য সুন্দর ছবি শেয়ার করেছেন, পোস্টটি সুন্দর হয়েছে।
সাবধান করার জন্য ধন্যবাদ।♥
কথা ঠিক। কিন্তু কক্সবাজার ভ্রমণ করতে আপনার কেমন খরচ হয়েছে এবং হোটেলগুলোর ভাড়া এবং সার্ভিস কেমন ছিল সেগুলো শেয়ার করলে ভালো হত, এতে করে আমরা ধারণা পেতাম কক্সবাজারে ভ্রমণের যাবতীয় খরচ সম্পর্কে এবং সেখানে গিয়ে কি ধরনের হোটেলে থাকা উচিত সেটা জানতে পারতাম।
থ্যাঙ্কিউ সো মাস ভাইয়া, আপনার কমপ্লিমেন্ট এর জন্য।
আমি সব ডিটেইলস দিতে পারতাম ভাই। বাট আমরা আমাদের ১ম লং ট্যুরে গিয়েছিলাম। তাই আমরা আমাদের মতো করে খরচ করেছি। যা আসলে উল্লেখ করতে আগ্রহী না ভাই।
হোটেলের সার্ভিস খুবি ভালো ছিলো। যথেষ্ট সিকিউর, এনভায়রনমেন্ট যথেষ্ট ভালো। আর তাদের কস্টও যথেষ্ট রিজেনাবল। ওভারঅল আমাদের ভালো লেগেছে।
ওকে, ধন্যবাদ।
ওয়েলকাম ভাইয়া।।
https://twitter.com/msi_shishir/status/1387061504529166339?s=19