Steem Bangladesh Contest - Book review লাল-নীল দীপাবলি হুমায়ুন আজাদ
★ আসসালামু আলাইকুম।কেমন আছেন আপনারা সকলে ? আশা করছি আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই খুব ভালো আছেন, সুস্থ আছেন।আমি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান স্টিম বাংলাদেশের একজম সদস্য।
আজকের স্টিম-বাংলাদেশ কমিউনিটির কনটেস্ট এর জন্য সিলেক্ট করা টপিক হলো," বুক রিভিউ "।
★ আজ আমি এ কনটেস্টে অংশগ্রহণ করছি এবং আমার রিভিউ করা বইয়ের নাম হলো,
📖📖 " লাল-নীল দীপাবলি"📖📖
"লাল-নীল দীপাবলির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য"
বিষয়সমূহ | তথ্যাবলী |
---|---|
লেখক | হুমায়ুন আজাদ |
মূল শিরোনাম | লাল নীল দীপাবলি বা বাঙলা সাহিত্যের জীবনী |
দেশ | পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) |
ভাষা | বাংলা |
বিষয় | বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস |
ধরন | কিশোরসাহিত্য |
প্রকাশক | বাংলা একাডেমি (১৯৭৬), আগামী প্রকাশনী (১৯৯৬) |
প্রকাশিত | ১৯৭৬, ১৯৯৬, ২০০৯ |
মিডিয়া ধরন | ছাপা (হার্ডকভার, পেপারব্যাক) |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ১৪৪ (দ্বিতীয় সংস্করণ) |
আমরা যে বাংলাদেশে থাকি আমরা কি জানি বাংলা শব্দটির মানে কি? বাংলা সাহিত্যের মানেটাই এই বইয়ের প্রথম দেওয়া আছে । কিভাবে বাংলা শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে তা আপনি এই বইটি পড়ার মাধ্যমে অতি সহজেই জানতে পারবেন। এই বইটিতে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস টা এত সুন্দর ভাবে দেওয়া আছে যা আমি অন্য কোন বইয়ের মধ্যে খুঁজে পাইনি।
কবি হুমায়ুন আজাদ সেই সকল কাহিনীগুলোই ছন্দের মাধ্যমে অতি সহজ ভাবে এই বইটিতে প্রকাশ করেছেন। আপনারা যদি বইটি পড়েন তাহলে বাংলা ভাষা সম্পর্কে একটি সুবিশাল ধারণা লাভ করতে পারবেন। বইটির আরো একটি সবথেকে ভালো গুণ হচ্ছে বইটি শিরোনাম পর্যায়ক্রমে দেয়া হয়েছে এবং এই শিরোনাম গুলো এত সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে যার মাধ্যমে আপনি খুবই সহজে বাংলা ভাষা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
লাল নীল দীপাবলিতে মোট ২৬ টি প্রবন্ধ রয়েছে
ক্রম | শিরোনাম |
---|---|
১ | লাল নীল দীপাবলি |
২ | বাঙালি বাঙলা বাঙলাদেশ |
৩ | বাঙলা সাহিত্যের তিন যুগ |
৪ | প্রথম প্রদীপ: চর্যাপদ |
৫ | অন্ধকারে দেড়শ বছর |
৬ | প্রদীপ জ্বললো আবার: মঙ্গলকাব্য |
৭ | চণ্ডীমঙ্গলের সোনালি গল্প |
৮ | মনসামঙ্গলের নীল দুঃখ |
৯ | কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তী |
১০ | রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র |
১১ | উজ্জ্বলতম আলো: বৈষ্ণব পদাবলি |
১২ | বিদ্যাপতি |
১৩ | চৈতন্য ও বৈষ্ণবজীবনী |
১৪ | দেবতার মতো দুজন এবং কয়েকজন অনুবাদক |
১৫ | ভিন্ন প্রদীপ: মুসলমান কবিরা |
১৬ | আলাওল |
১৭ | লোকসাহিত্য: বুকের বাঁশরি |
১৮ | দ্বিতীয় অন্ধকার |
১৯ | অভিনব আলোর ঝলক |
২০ | গদ্য: নতুন সম্রাট |
২১ | গদ্যের জনক ও প্রধান পুরুষেরা |
২২ | কবিতা : অন্তর হ'তে অহরি বচন |
২৩ | উপন্যাস : মানুষের মহাকাব্য |
২৪ | নাটক : জীবনের দ্বন্দ্ব |
২৫ | রবীন্দ্রনাথ : প্রতিদিনের সূর্য |
২৬ | বিশশতকের আলো : আধুনিকতা |
- বাংলা ভাষাটি জন্ম থেকেই বিদ্রোহী ছিল। এর ভিতরে ছিল আগুন কিন্তু কেন এই আগুন?
সমাজে যারা উচ্চ শ্রেণীর মানুষ ছিলেন তারা ওই সময় সংস্কৃতি চর্চা করত যার কারণে বাংলা ভাষাকে অনেক কঠোর পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। তখন যারা সাধারন মানুষ ছিল তারা মুখে মুখে বাংলা ভাষার তখন যারা সাধারন মানুষ ছিল তারা মুখে মুখে বাংলা ভাষার চর্চা করত। বাংলা সাহিত্য টির তিনটি যুগের ভিত্তিতে আমরা পেয়েছি।
১. প্রাচীন যুগ
২. মধ্যযুগ
৩. আধুনিক যুগ
প্রাচীন যুগে একটি গ্রন্থ রচনা করা হয় গ্রন্থটির নাম চর্যাপদ। আপনি যদি এই বইটি ভালোভাবে পড়েন তাহলে চর্যাপদ সম্পর্কে খুবই সুন্দর ধারণা লাভ করতে পারবেন। মধ্যযুগের 2 টি গ্রন্থ রচিত হয় সেই দুটির নাম হচ্ছে মঙ্গলকাব্য এবং বৈষ্ণব পদাবলী। মঙ্গলকাব্য গুলো দেবতাদের কাছ থেকে মঙ্গল চাওয়ার কাজের জন্য রচনা করা হয়েছিল। এরপরে আধুনিক যুগের সূচনা হয় এবং সেই সময়ে বিভিন্ন ধরনের গদ্য রচনা হতে থাকে এই বইটির মাধ্যমে আমরা সেই বিষয়গুলো খুব সুন্দর ভাবে জানতে পারি। গদ্য রচনার ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি বড় ভূমিকা পালন করে রাজা রামমোহন রায় এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। কেন অন্য কবিরা এই দুইজনের থেকে বেশি ভালো ভূমিকা পালন করেনি তা আপনারা এই বইটি পড়ার মাধ্যমে বুঝতে পারবেন।
- এরপরে কবিতা উপন্যাস নাটক ইত্যাদি সম্পর্কে এই বইয়ে সুন্দর ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস ছিল আলালের ঘরের দুলাল। এরপরে ওই বইয়ের রয়েছে নাটকের সম্পর্কে আলোচনা সেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন ধরনের নাটক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে এই বইয়ের মাধ্যমে প্রতিদিনের সূর্য নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। পরবর্তীতে এই বইটি শেষের দিকে আধুনিকত্ব দিয়ে বইটি শেষ করা হয়েছে এটাকে বলা হয়েছে বিশ শতকের আলো।
★ তাই আমি বলতে পারি আপনারা যদি বাংলা ভাষা সম্পর্কে একটি বিস্তারিত ধারণা লাভ করতে চান তাহলে অবশ্যই এই বইটি আপনাদের পড়া প্রয়োজন।