Movie review || Interesteller || Best science fiction movie || 27 March 2021
ইন্টারেস্টেলার মুভি রিভিউ
সায়েন্স ফিকশন এর যতগুলো মুভি রয়েছে তার মধ্যে
সায়েন্স ফিকশন এর যতগুলো মুভি রয়েছে তার মধ্যে Interesteller মুভিটি খুবই জনপ্রিয়। বিজ্ঞানমনস্ক যারা তাদের কাছে বরাবরই সায়েন্স ফিকশন মুভিগুলো অন্যরকম হয়ে থাকে। আমি এই ধরণের মুভি খুব পছন্দ করি। Interstellar আমার খুবই পছন্দের একটি মুভি। কয়েকবার দেখে ফেলেছি। তাই আজকে মুভিটির রিভিউ আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
Movie name | Interstellar |
---|---|
Directed by | Christopher Nolan |
Release date | October 26, 2014 |
মুভিটির ধরণ:
ইন্টারস্টেলার মুভিটি সায়েন্স ফিকশন ক্যাটাগটির একটি মুভি । ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত মুভিটি ২০১৪ সালে রিলিজ পেয়েছিল। এতে অভিনয় করেছেন ম্যাথিউ ম্যাককনৌঘে, অ্যান হ্যাথওয়ে, জেসিকা চেষ্টাইন, বিল ইরউইন, এলেন বারস্টিন, জন লিথগো, মাইকেল কেইন এবং ম্যাট ড্যামন। মানবজাতির জন্য একটি নতুন বাসস্থানের সন্ধানে শনির নিকটে একটি ওয়ার্মহোল ভ্রমণ করেন।
পটভূমি:
মুভির শুরুতে দেখানো হয় তখন কার অবস্থা খুবই শোচনীয়। তখন সবাই কৃষিকাজই করতো। চারিদিকে ধূলিঝড় দেখা যেত, সব গম নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। পাতাপচা রোগ হয়েছিলো, সব পুড়িয়ে ফেলতে হয়েছে। আসলে, চারিদিকে ছিলো শুধু ধুলা। তারা সবসময়ই প্লেটগুলো উল্টো করে রাখত। এগুলো বর্ণনা করতে দেখা যায় একজন বৃদ্ধ মহিলাকে। এরই মাঝে কুপার একটি স্বপ্ন দেখে ফেলেন। বাবা ওই দুর্ঘটনার দুঃস্বপ্ন দেখছিলে? কুপার বলল, "মার্ফ। ঘুমাতে যাও।" মার্ফ ভূতের কথা বলল তখন কুপার বলল ভূত বলতে কিছু নেই।
সকালে নাস্তার টেবিলে কথা হচ্ছিলম কুপার বলল, " টম, ৪টায় গুদামঘরে পড়তে বসবো। "আগাছা প্রতিরোধ ব্যবস্থা ১০১" এর মধ্যে মার্থা একটি নষ্ট ল্যান্ডার নিয়ে এসে কুপারকে বলল বাবা এটা ঠিক করতে পারবে। টম এটা দেখে মজা করল, "কে করেছে? তোমার সেই ভূত?" মার্ফ বলল ফেলে দিয়েছে শেলফ থেকে। বইপত্রও ফেলে দেয়। কিন্তু মার্ফের কথা কেউ বিশ্বাস করে না। মার্ফকে বোঝানো হল, জিনিসটা বিজ্ঞানভিত্তিক না। কিন্তু মার্ফ মানতে চায় না। মার্ফের বিশ্বাস কেউ একজন সংকেত দিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করছে। সে তা বুঝার জন্য খুব চেষ্টা করে যাচ্ছিল।
এদিকে স্কুলে অভিভাবক-শিক্ষক সভা ডেকেছে, তারা গাড়িতে করে যাবার সময় হটাৎ একটি চাকা নষ্ট হয়ে যায়। তখনি টম, মার্ফকে ক্ষেপায় মার্ফের সূত্র বলে। কুপার মার্ফকে মন খাপার করতে নিষেধ করে। কারণ যা ঘটার তা তো ঘটবেই সেটা ভালো হোক আর খাপার হোক। এরই মধ্যে তারা একটি ভারতীয় এয়ারফোর্সের ড্রোন দেখতে পায়। এগুলোর সৌরকোষ খুবই শক্তিশালী হয়। তারা ধাওয়া করে ড্রোনটি ধরার জন্য। ফসলের ক্ষেত দিয়ে গাড়ি চালিয়ে গিয়ে তারা সেটি ধরতে সক্ষমও হয়। দশ বছর ধরে উড়েছিল এই ড্রোন। স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের সাথে কথা বলল কুপার। তারা টমকে ভালো কৃষক বানানোর পরামর্শ দেয় । কারণ টমের রেজাল্ট অনেক খাপার ছিল। কিন্তু মার্ফের প্রশংসা করে। এরপর কুপার শিক্ষকদের সাথে বাক বিতর্ক করে চলে আসে। এদিকে বাসায় ফিরে তারা আবার সেল্ফ এর বইগুলোকে পড়ে থাকতে দেখে। মার্ফ মোর্স কোড মনে করে নোট করেছিল। কিন্তু কুপার বলল মোর্স কোড সে জানে। এগুলো মোর্ফ কোড না। এটা মোর্স কোড না, বাইনারি কোড। মোটা দাগ হলো এক, চিকন দাগ শূন্য। পরে তারা কোডগুলো একত্রিত করে স্থানাংক বের করে। তারপর কুপার গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যায়। মার্ফকে সাথে নিতে চায় না। কিন্তু মার্ফ বুদ্ধি করে আগেই গাড়িতে চড়ে বসে থাকে। তারপর তারা সেই স্থানাংকে পৌছায়। এরপর ডক্টর ব্র্যান্ড এর সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে গোপন স্থানের খোজ তারা কীভাবে পেল ডক্টর ব্র্যান্ড এর মাথায় আসে না। আসলে তারা নাসার কাছে গিয়েছিল। নাসার হয়ে প্লেন চালাত কুপার। নাসার কাজকর্ম গোপনে চলছিল। কেউ তা জানত না। তারা একটি মিশন এর প্লান করে। তাদের পাইলট দরকার, আর এরকম মিশনের জন্যই কুপার প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তারা কুপারকে রাজি করে ফেলে।
বাসায় ফিরে মার্ফের মন অনেক খারাপ। সে তার বাবাকে যেতে দিতে রাজি নয়। ওয়ার্মহোল এর সন্ধানে যাবার জন্য সবাই প্রস্তুত। ১২টা, প্রথম প্রোব (অনুসন্ধানী যন্ত্র) পাঠানো হয়েছে এর ভেতরে। ১২টা সম্ভাব্য সৌরজগত ও ৩ টি গ্রহতে প্রাণের সম্ভাবনা রয়েছে। তারা অন্য বাসস্খান খুজে পেতে রওনা হলো। দুটো প্লান রয়েছে, এটাই প্ল্যান এ, বড় বাহন এবং প্ল্যান বি - জনসংখ্যার বোমা। ৫,০০০ এর বেশি নিষিক্ত ডিম্বাণু! ওজন মাত্র ৯০০ কেজির মত! ৩০ বছরের মধ্যেই, শত শত মানুষের কলোনি তৈরি করার প্লান করা হয়। রমিলি, এমিলিয়া, কুপার ওয়ার্মহোলকে অতিক্রম করল। কয়েক দশক! সময় কেটে গেল কিন্তু তারা সফলতা পেল না। তার মেয়ে বড় হয়ে গেল। কিন্তু কুপারের বয়স বাড়েনি। তারা ডঃ ম্যান এর দেখা পায়, সে তাদের নতুন স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে। রমিলি মারা যায়। ডঃ ম্যান, কুপারের কথা শুনে না সেখানেও একটি দূর্ঘটনা ঘটে। এরপর গ্রাভিটির টানে এগিয়ে যেতে থাকবো দিগন্তের দিকে এমিলিয়া ও কুপার। কুপার পঞ্চম মাত্রার কোথাও পৌছে যায়। সে তাদের বাড়ির বইয়ের তাকের পিছনে থাকে। কিন্তু যোগাযোগ করতে পারে না। কারণ মার্ফ ৩য় মাত্রায়। তাই সে বাইনারি কোড পাঠানোর চেষ্টা করে। কুপারকে আটকানোর সংকেত দেয় । কিন্তু যতক্ষণে মার্ফ সংকেত বুঝে ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে যায়। মহাকর্ষ, জিনিসটা মাত্রা বা সময় অতিক্রম করতে পারে। সব তরঙ্গদৈর্ঘ্যেই পাঠানো হচ্ছে, কিন্তু কিছুই বের হচ্ছে না। শেষমেষ কুপার সবাইকে বাঁচাতে সক্ষম হয়। পরে মার্ফের সাথে কুপারের দেখা হয়। মার্ফ তখন অনেক বয়স্ক। কিন্তু কুপারের বয়স ১২৪ এবং সেই যুবকই রয়েছে। কারণ টাইম ট্রাভেল করলে বয়স কম বাড়ে।
পরিচালক ক্রিস্টোফার নলানের সম্পর্কে কিছু তথ্য:
হলিউডের মুভি দেখেন অথচ পরিচালক ক্রিস্টোফার নলানের নাম শুনে নাই এরকম মানুষ খুজে পাওয়া যাবে না । মেমেন্ত , ব্যাট ম্যান সিরিজ, ইন সেপ শন, এর মত সেরা সেরা মুভির পরিচালক এই নলান ।
কল্পনার মাত্রাকে উনি যে কোথায় নিয়ে গেছেন, সেটাই কল্পনার বাইরে । চমৎকার একটি মুভি ইন্টরেস্টেলার।
খাদ্য সংকটের কারনে ইঙ্গিনিয়ার কুপার চাষাবাদ করা শুরু করে, পরিবারে তার একটি মেয়ে ও ছেলে। স্ত্রী আগেই মারা গেছেন। পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে , ধুলিকনায় চারদিক দূষিত হচ্ছে , এমন সময় দরকার অন্যকোনো বাস যোগ্য স্থান । অবশেষে নতুন মিশন শুরু হয়।
মুভিটির চরিত্রগুলো নিয়ে কিছু কথা
জোসেফ কুপার:
ম্যাথিউ ম্যাককনৌঘ মুভিটির প্রধান চরিত্র কুপার এ অভিনয় করেন। মুভিতে তিনি একজন নাসার একজন প্রাক্তন পাইলট । নাসা বন্ধ হয়ে যাবার পরে একজন কৃষক হয়ে জীবনযাপন করছিলেন। কিন্তু নাসার কাজকর্ম তখন গোপনে পরিচালিত হত। অবশেষে একদিন তিনি আবার নাসার সন্ধান পান এবং নতুন বসবাসের উপযোগী খোজার জন্য মিশনে যান। মিশন থেকে ফিরে তার ১০ বছরের মেয়েকে দেখেন তার চেয়ে অনেক বড় হয়ে গেছে।
মারফি কুপার
জেসিকা চ্যাসটেন মারফি কুপার হিসাবে অভিনয় করেন, কুপারের ছোট মেয়ে। ছোটবেলা থেকেই খুবই বুদ্ধিমতি ছিল। যিনি অবশেষে নাসার প্ল্যান এ এ বিজ্ঞানী হয়েছিলেন ।
টম কুপার
কেসি আফলেক কুপারের বড় ছেলে টম কুপার হিসাবে অভিনয় করেন। তাকে নিয়ে শিক্ষকদের অনেক ক্ষোভ ছিল। সে পড়াশোনায় ভালো ছিল না। শেষ পর্যন্ত সে কৃষক হয়েছিল
প্রফেসর ব্র্যান্ড
মাইকেল কেইন প্রফেসর ব্র্যান্ড হিসেবে অভিনয় করেন, নাসার উচ্চ পদস্থ বিজ্ঞানী, পরিকল্পনা এ-এর আদর্শিক, কুপারের প্রাক্তন পরামর্শদাতা এবং অমেলিয়ার জনক হিসাবে।
রোমিলি
ডেভিড গিয়াসি রোমিলি, নাসার আরেকজন উচ্চপদস্থ সদস্য এবং এ্যান্ডুরেন্স ক্র সদস্য হিসাবে অভিনয় করেন। কুপারে অভিযানে সঙ্গী হয়েছিলেন তিনি।
মুভিটি সম্পর্কে আমার মতামত
এই মুভিটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে গেলে এত কম লেখায় বর্ণনা করা সহজ নয় এত কিছু ঘটেছে এই ২ ঘন্টা ৪৯ মিনিটে। এক মুহূর্তের জন্যও মনে হয় নি মুভিটি এত বিশাল দৈর্ঘ্যের। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যেন নিঃশ্বাস ফেলার উপক্রম নেই। ক্রিস্টোফার নোলান এর আরও একটি চমৎকার সৃষ্টি এটি। এডিটিং এ লি স্মিথ এর আর কি বা করার ছিল? তবে বিজ্ঞানের কিছু জিনিস ওয়ার্মহোল, ব্ল্যাক-হোল, টাইম ডিলে এগুলো সম্পর্কে ধারণা না থাকলে মুভির কিছুই বুঝা সম্ভব না । তাই আমি এগুলো সম্পর্কে যতটা পেরেছি ধারনি দিয়েছি ভালো করে পড়ে বসে পড়ুন মুভিটি দেখতে।
মুভিটিতে তখন হয়ত পৃথিবী কেন বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছিল সেটির আরও বিস্তারিত চিত্র দেখা সম্ভব হত। মানুষ হয়ত এই মুভিটি থেকে পৃথিবী রক্ষায় আরও সচেতন হতে পারত। যদিও এটি কেবলমাত্র একটি মুভি কিন্তু এরকম হতে আর হয়ত দেরি নেই । তাই আমাদের এখন থেকেই সচেতন হতে হবে। পরিবেশ দূষণ বর্তমানে একটি অনেক বড় সমস্য়া। এটি সমাধানের জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কে জানে তা না হলে হয়ত একদিন সত্যি সত্যিই মুভির মত পৃথিবী বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে উঠবে তখন নতুন বসবাসের জন্য অন্য পৃথিবীর সন্ধান করতে হবে।
ধন্যবাদ
@masumrbd
CC:-
@steemcurator01
@steemcurator02
@stephenkendal