Steem Bangladesh Contest - Book Review.(কবর নাটক ) মুনীর চৌধুরী ।09/06/2021

in Steem Bangladesh3 years ago

কবর নাটক Pdf.jpg

আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভাল আছেন। আল্লাহর রহমতে আমি অনেক ভাল আছি।

আজ আমি @steem-bangladesh কর্তৃক আয়োজিত বই রিভিউ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন হতে যাচ্ছি। আজকে আমি যে বইটি রিভিউ করবো তার নাম হচ্ছে" কবর নাটক"।

নাটকের কিছু তথ্য:

বইয়ের নাম: কবর ।
লেখক : মুনীর চৌধুরী।
ধরন : নাটক।
প্রকাশকাল : 1966
পাবলিশার : আহমদ পাবলিশিং
মূল্য : 90

আবু নয়ীম মুনীর চৌধুরী ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ,নাট্যকার ,সাহিত্য সমালোচক ,ভাষাজ্ঞানী
,বুদ্ধিজীবী। ভাষা আন্দোলন এর প্রথম নাটক মুনীর চৌধুরী রচিত কবর ভাষা আন্দোলনের সাথে জড়িত থাকার জন্য 1952 সালে জেলে আটক ছিলেন মুনির চৌধুরী রনেশ দাশগুপ্ত সাংবাদিক সহো অনেকে ।
এই রনেশ দাশ গুপ্তের অনুরোধে এই নাটকটি লেখেন মুনীর চৌধুরী । এর পর 1953 সালের 17 জানুয়ারী কালজয়ী নাটকটী লিখে শেষ করেন তিনি।
ভাষা আন্দোলন এ শহীদ হন আনেক বুদ্ধিজীবী কিন্তু পাকিস্তান সরকার সব লাশ গুম করে দেয় ।তার মধ্যে অল্পো কয়েক জনের নাম আমরা জানি।

               নাটকের সারাংশ :

নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র তিনটি । এই তিন জনের কথোপকথন এ নাটকটী পায় অনন্য মর্যাদা।নাটকের কেন্দ্রিয় তিনটি চরিত্র হলো নেতা,ইসন্সপেক্টর হাফিজ ,মুর্দি ফকির।

নেতা চরিত্রটি হলো আগাগোড়া একজন অসৎ চরিত্রের মানুষ ।যিনি ক্ষমতার লোভে অন্ধ।তারকাছে ভাষা আন্দোলনকারীরা হলো অবাধ্য এজন্য এই অবাধ্যতার জন্যই গুলিকলরা হয়েছে তাদের ঊপর ।মূলত এই সব নেতাদের জন্যই পাকিস্তানীদের হাতে নির্যাতিত হয়েছি আমরা ।
ইন্সপেক্টর হাফিজ হলো একজন চাটুকার পুলিশ কর্মকর্তা।যিনি নেতার সাথে ঘোরে আর চামচামি করতো ।এই দুজনে মিলে ভাষা শহীদের লাশ গুম করার পরিকল্পনা করে রাত পোহাবার আগেই।এজন্য তারা আলাদা আলাদা কবর না করে এক কবোরে সব লাশ কবর দিয়েছিলে। আর পুরোনাটকির অন্যতম চরিত্র মুর্দা ফকির ।যিনি এই এক কবোরে ভাষা শহীদদের দাফন নিয়ে প্রতিবাদ করেন আর তাকে নিয়ে হিম শিম খায় নেতা ওও হাফিজ।মুর্দা ফকির এর মতে ভাষা শহীদদের মৃত্যু হয়নি ,তারা কবরে থাকবেনা উঠে আসবে তারা থাকবেনা কবোরে ।সত্যইতো ভাষা শহীদদের মৃত্যু হয়নি ইতিহাস এর পাতায় অমর হয়েআছে এখন ও।যতোদিন বাংলাদেশ থাকবে ততোদিন থাকবে তাদের অস্তিত্ব।

" কবর " নাটকটির কাহিনী রাতের মাত্র কয়েক ঘন্টার। মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত। মুর্দা ফকির কবরের বাসিন্দা। সে মৃত মানুষের সাথে অহরহ কথা বলে। ভাষা শহীদদের প্রতিমূর্তি কল্পনা করে তাদের মুখে সংলাপ যোগ তাদের তিনি পরিচয় দেন। মুর্দা ফকির সব মৃতদের উঠে আসতে আহ্বান করেন। বলেন-"তোরা কোথায় গেলি? সব ঘুমিয়ে নাকি? উঠে আয়। তাড়াতাড়ি উঠে আয়। সব মিছিল করে উঠে আয়। গুলি, গুলি হবে। ফুর্তি করে উঠে আয়। কবর খালি করে উঠে আয়।"

"কবর" নাটকে নাট্যকার যা ব্যক্ত করেছেন। আমরা ৭১রের মুক্তিযুদ্ধে তা কিন্তু ফলস্বরূপ পেয়ে গেছি। নাট্যকার চেয়েছেন, মারা যাওয়া শহীদ গুলো আবার উঠে আসুক এবার তো আর তাদের মৃত্যুর ভয় নেই। আমরা তার বাস্তবতা পেয়েছি। কেন না স্বাধীনতার জন্য যারা সংগ্রাম করেছে, ভাষা আন্দোলনের শহীদের একবারের মৃত্যুতে তারা মৃত্যু ভয় ভুলে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছে। যেভাবে রাষ্ট্রভাষা বাংলা কে কেড়ে এনেছে, তেমনি ভাবে স্বাধীন দেশের পতাকাও তারা শোষণকারীদের থেকে কেড়ে এনেছে। এটাই নাটকের বাস্তব সার্থকতা।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক গল্প-কবিতা-নাটক রচিত হয়েছে। কিন্তু মুনীর চৌধুরীর "কবর" নাটক ভাষা অবলম্বন করে রচিত হয়েই পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নাটক রচনায় উৎসাহ দেয়। আমাদের বাঙালির জাতীয় জীবনে একুশ যেমন অনস্বীকার্য এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের কেন্দ্রে বিরাজ করে, তেমনি একে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা কবর নাটকও পরবর্তী শিল্পকর্মে অবদান রেখেছে।

নাটকটিতে বিভিন্ন ভাষা শহীদকে ছায়ামুর্তি হিসেবে ঊপস্থ্যাপন করা হয় ।এই ছায়ামুর্তি রূপে তাদের জীবনযাপন ও তাদের উপর হওয়া অত্যাচার এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন লেখক।কবর এমন একটা নাটক যেটা বারবার পড়তে ইচ্ছা করবে । তবুও মন ভরবে না।ঐ সময় দারিয়ে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর দিকে আঙ্গুল তুলে এমন একটি প্রতিবাদী নাটক লেখা সত্যই সাহসিকতার নিদর্শন ।তাই কবর নাটকটি পূর্ব বাংলার প্রথম প্রতিবাদী নাটক।

আশা করি আমার বই রিভিউ আপনাদের ভালো লাগবে। লেখায় কোন ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন"।

THANK YOU ALL..

Beneficiaries :
@steem-bangladesh account -8%
@bd-charity account-2%

Sort:  
Loading...

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 57307.38
ETH 2434.94
USDT 1.00
SBD 2.32