Steem bangladesh contest ll 📚 book review 📖 "পুতুল নাচের ইতিকথা" ll by @hayat221 ll 09-06-2021

hayat221 (63)Verified+Delegation [250sp]in Steem Bangladesh • 3 years ago

𝐇𝐞𝐥𝐥𝐨

𝒎𝒚 𝒅𝒆𝒂𝒓 𝒇𝒓𝒊𝒆𝒏𝒅𝒔

𝕋𝕙𝕚𝕤 𝕚𝕤 @𝕙𝕒𝕪𝕒𝕥221 𝕗𝕣𝕠𝕞 𝕚𝕟 𝚋𝚊𝚗𝚐𝚕𝚊𝚍𝚎𝚜𝚑

আসসালামু-আলাইকুম বন্ধুরা, আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি। আজকে @steem-bangladesh কর্তৃক আয়োজিত "book review 📚" কনটেস্টে এ আমি অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি।

আমি আজকে একটি বই রিভিউ করতে যাচ্ছি। বইটির নাম হচ্ছে "পুতুল নাচের ইতিকথা"। পুতুল নাচের ইতিকথা- বাংলা সাহিত্যের অমূল্য রত্ন।

লেখক :পরিচিতি

তিনি ভারতবর্ষের একজন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম লেখক।

জন্ম: ১৯ মে ১৯০৮
পেশা: ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার
মৃত্যু: ৩ ডিসেম্বর ১৯৫৬
সিনেমা: পদ্মা নদীর মাঝি

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুতুল নাচের ইতিকথা বাংলা সাহিত্যের এক‌ অমূল্য রত্ন। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা এই উপন্যাসটি বাংলা ১৩৪১ সালের পৌষ থেকে ১৩৪২ এর অগ্রাহায়ন পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় "ভারতবর্ষে" পত্রিকায়। পরবর্তীতে ১৯৩৬ সালে বই আকারে প্রকাশিত হয়। বইটি পড়ার পর থেকে অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য হাত নিশপশ করেছিল, তাই হাতে কলম নিয়ে বসে পরলাম।

download (13).jpeg
Source

নদীর মতো নিজের খুশিতে গড়া পথে কি মানুষের জীবনের স্রোত কি বইতে পারে। মানুষের হাতে কাটা খালে তার গতি, এক অজানা শক্তির অনিবার্য ইঙ্গিত। মাধ্যাকর্ষণের এর মত যা চিরন্তন ও অপরিবর্তনীয়।

উপন্যাস: " পুতুল নাচের ইতিকথা "

লেখকঃ মানিক বন্দোপাধ্যায়

প্রথম প্রকাশঃ ১৯৩৬

download (12).jpeg
Source

কাহিনী সংক্ষেপ ।

"খালের ধারে প্রকান্ড বট গাছের গুড়িতে ঠেস দিয়া হারু ঘোষ দাঁড়াইয়া ছিল। আকাশের দেবতা সেইখানে তাহার দিকে চাহিয়া কটাক্ষ করলেন। হারুর মাথায় কাঁচাপাকা চুলতার বসন্তের দাগভরা রুহ্ম চামড়া ঝলসিয়া পুড়িয়া গেল। সে কিন্তু কিছুই টের পেল না"।

উপন্যাসের শুরুতেই মৃত্যু এমন জাঁক জমক পূর্ণ বর্ণনা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই লেখাটি পাঠকমনে বিশেষ জায়গা দিয়েছে। উপন্যাসের পটভূমি গাওদিয়া গ্রাম। গাওদিয়া গ্রামের ছেলে শশী, উপন্যাসের প্রোটাগনিস্ট। গ্রামের ছেলে হয়েও শহরে লেখাপড়া করে ডাক্তার হয়েছে সে। সে নিজ গাঁয়েই প্র্যাকটিস শুরু করেছে। তার গাঁয়ের জীবন, সেখানকার মানুষের সাথে সম্পর্ক, জীবনের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি-এসব ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে পুতুল নাচের ইতিকথা। শশীর মন দ্বিমুখী। সে নিজেই জানে না গায়ে ডাক্তারি করবে না শহরে চলে যাবে। সে মনে মনে কল্পনা করে চলে যায় কলকাতায় ডাক্তারি করতে। আবার নিজস্ব জগতে ফিরে আসে মতিকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে। কিন্তু সে মতি কে ভালবাসে, বলতে পারেনা ইগোর কারণে। আবার দূরে ও থাকতে পারে না।

কিন্তু হঠাৎ করেই শশীর কলেজজীবনের বন্ধু কুমুদ যখন মতিকে দখল করে নেয়, বিয়ে করে দূরে কোথাও চলে যায়,তখন শশীর একটি আশ্রয় ছিন্ন হয়ে যায়। মতিকে পাওয়ার জন্য সে এতটাই উতলা হয়েছিল যে সে ভাবে, সে নিজেই মতিকে বিয়ে করবে। এই কথা যখন সে কুসুমকে জানায়, কুসুম তো হেসে উড়িয়ে দেয়। কুসুম এক রহস্যময়ী মানব।মতিকে হারানোর ভয় কিছুটা প্রশমিত হয় শশীর মাঝে। শশী নিজেও জানেনা সে কুসুমকে ভালবাসে কিনা। সেটা খোলাসা হয় যখন কুসুম গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে চায়। সে কুসুমকে তাল-পুকুরে ডেকে যখন মনের কথা খুলে বলে তখন কুসুম ও তাকে প্রত্যাখান করে। বলেঃ

"কেন যাব?....আপনি বুঝি ভেবেছিলেন যেদিন আপনার সুবিধে হবে ডাকবেন, আমি অমনি সুড়সুড় করে আপনার সঙ্গে চলে যাব। কেউ তা যায়"?

এখন শশীর গ্রামে থাকার কোন কারনই নেই, কুসুম ও নেই মতি ও নেই। সে তার বাবা কেউ পছন্দ করেনা। তাই চায় গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে,কিন্তু সেই যে নিয়তি! তাকে আটকে রাখে। যাদব একটি হাসপাতাল তৈরির খরচ দিয়ে যায় মৃত্যুর আগে যা পুরোটাই শশী ডাক্তারের নামে। এই বাঁধন-এই দায়িত্ব ছেড়ে সে কোথায় যাবে। এ যেন এক পরিহাস! শেষ পর্যন্ত যাদবই শশীর জীবনে পুতুলনাচের নিয়ন্ত্রক হিসেবে আবর্তিত হয়। জীবনরুপী এই পুতুলনাচকে বরণ করে নিতে হয় শশীকে। পুতুলের সুতো ছেঁড়া তার আর হল না।

উপন্যাসটির শেষে শশীর এই পরিণতি দেখে পাঠকের মনে প্রশ্ন জাগবে নিজের জীবন নিয়েও-জগতসংসারে আমরা সবাই যে এক পুতুলনাচের চক্করে বাঁধা পড়েছি। এই থেকে কোন কি মুক্তির উপায় নেই?

কেন পড়বো পুতুল নাচের ইতিকথা:

বাংলা সাহিত্যের এই রত্নটির মাধ্যমে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বেঁচে থাকবেন চিরদিন। এটি পড়লে বুঝা যাবে জীবনের টানাপোড়েন একদম মূল থেকে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখাটি গ্রাম্য জীবন পুরোপুরি ফুটে উঠেছে যা প্রত্যেক বাঙালির জীবন সংগ্রামের সারসংক্ষেপ।

মতামত

আমি বইটি পড়ে বুঝলাম, শশী হচ্ছে পুরো উপন্যাসের চরিত্র। সে হচ্ছে এখন সরলতার মানুষ। সে গ্রামের ছেলে, শহরে পড়াশোনা করেও শহরে না গিয়ে গ্রামেই চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। লেখক গ্রামের দৃশ্য গুলি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন উপন্যাসের মাধ্যমে। যার প্রধান চরিত্রে রয়েছে শশী।