কিচ্ছুটি বুঝিনি @gentleman74

আশা করি সবাই ভাল আছেন।

আমি তখন ক্লাস 5 এ। আমাদের স্কুল ছিল গোপালগঞ্জ নামে একটি শহুরে গ্রাম শ্রেণীর জেলার প্রথম বেসরকারী স্কুল। অনির্বাণ স্কুল। গল্পে ফিরি।
আমাদের স্কুলে ছেলে এবং মেয়েরা আলাদা বেঞ্চে বসত। রজত শুভ্র ছিল আমাদের রোল ১ এবং দিশা বিশ্বাস ছিল রোল ২।
আমাদের বেঞ্চে ৬জন বসত।আমার ডানে মানসবালা,বামে দিপু বিশ্বাস। রোল ৩৪,৩৬,৩৭ ক্লাস 4 এ ও আমরা এই ৩জন একই বেঞ্চে ছিলাম। তাই বন্ধুত্বটা দীর্ঘ। বোঝাপড়াটা ঠিকঠাক। স্বভাবে কিছুটা ব্যাক বেঞ্চারস হলে ও আমরা মাঝারি মানে ছাত্রের ট্যাগে বেশ হাসিখুশি।
সে যা হোক,অক্টোবরের কোন এক সকালে ক্লাস টিচার **রঞ্জন স্যার **এসে রোল না ডেকে বলে উঠলেন- "আজকে সবাই present. তোমাদের সাথে সব মিলিয়ে আর ১ মাস দেখা হবে। তোমরা ক্লাস 6 এ উঠে যাবা । ছেলেরা boys school আর মেয়েরা girls school এ পড়বা। কিন্তু তোমাদের একজন ছেলে কে পড়তে হবে girls school এ। তাই এখনই তোমাদের সত্যটা জানা দরকার"

আমি মানস আর দিপু বলাবলি শুরু করেছি যে এই ছেলে রজত ব্যাতিত আর কেউ না। অতি উতসাহে দিপুর পায়ে একটা চড় দিলাম।

রঞ্জন স্যারের আমাদের দিকে একটা সংকোচ এবং রাগ মিশ্রিত চোখ রাঙাণি দিলেন। "ছেলে বা মেয়ে একই। তোমরা সবাই এক - সহপাঠী। তোমরা মেয়েরা ওকে সহজে আমন্ত্রণ জানাবে"

একত্রে কতগুলো মেয়ে বলে উঠল- " জ্বি, স্যার"

"আর ছেলেরা এটা নিয়ে হাসা-হাসি করবে না"

একটা ক্ষণকালিন নিরবতা ভেঙে স্যার বললেন- " যার নাম বলব সে উঠে গিয়ে মেয়েদের অই বেঞ্চটাতে বসবে।"

আমরা নিচ্ছিত রজত জেনে হাসা হাসি করছি। রজতের হাটা, কথা বলার style। সবমিলিয়ে half ladies ছিল রজতের চেনা নাম। এ ও ব্যাতিত আর কেউ না।

রঞ্জন স্যার এবার বললেন- "দিপু, তুমি অই বেঞ্চটাতে গিয়ে বস।"

স্যারের এই শব্দগুলো আমার কানে আসতে আসতে অনেক সময় লেগে গেল। কিন্তু দিপুর সাথে আমার চোখাচোখি হল না। দীর্ঘ দুই বছরের বেঞ্চমেট। কিচ্ছুটি বুঝিনি।

চলবে......

ধন্যবাদ সবাইকে...
আসুন গল্প যারা পড়ি বা শুনি তারা একে অপরকে follow করি।