Steem Bangladesh contest || 👨🏫 My favorite teacher 👨🏫
♨️ আসসালামুআলাইকুম♨️
আমি আজকে আমার একজন খুব প্রিয় শিক্ষক আলম স্যার উনাকে নিয়ে কথা বলবো। চলুন শুরু করা যাক।
❣️প্রিয় আলম স্যার❣️
আলম স্যারের পরিচিতি 👨🏫
ছবিটি আলম স্যারের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
আমি যখন মেকানিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করি তখন আমাদের বিভাগে বার জন শিক্ষক ছিলেন, তার মধ্যে আলম স্যার অন্যতম।
আলম স্যার মেকানিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং এ বিএসি করেছেন। আমাদের মেকানিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ ক্লাশ উনার দায়িত্বে। মিষ্টভাষী খুব চমৎকার হৃদয়ের মানুষ ছিলেন আলম স্যার ❣️
তার মুখে হাসি সবসময়ই বিদ্যমান। স্যার বাড়ি দিনাজপুরের পার্বতীপুরে।
কেন আলম স্যার আমার পছন্দের মানুষ 👨🏫❓
একজন ভালো শিক্ষকের প্রধানত কয়েকটি গুণাগুণ থাকে যেমন:- পড়ানোর ধরন, সুন্দর ব্যাবহার এবং সহযোগীতার মনোভাব। আলম স্যারের মধ্যে সবগুলো গুনাগুণ বিদ্যমান ছিল।
আমরা সবার ক্লাশে ফাঁকি দিলেও আলম স্যারের ক্লাশে কখনও ফাঁকি দিতামনা। ফাঁকি দেবার কোন সুযোগ নেই যখন স্যার কথা বলতেন তখন আমরা মন্ত্রমুদ্ধ হয়ে শুনতাম। আর উনি সবসময়ই আমাদের চোখে চোখ রেখে কথা বলতেন। তাই যদি কেউ খুব বেশি অমনযোগী হতো তার একটা মজার শাস্তি ছিল, সেটা হলো আলম স্যারের মতো করে দশ মিনিট সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে হবে। এবার যে বেচারা এই শাস্তির আওতায় পরবে তার বারোটা বাজছে 😆😆
এবার সামনে দাঁড়িয়ে হাটু কাঁপা কাপি শুরু হয়ে গেল।
ক্লাশের এটা ছিল সবচেয়ে মজার বিনোদন।
যে একবার সামনে হাজির হয়েছে সে আর কোনদিন এই মজার শাস্তি ভুলবেনা। "সাপও মরলো লাঠিও ভাংলোনা।" 😆😆😆😆
আর একটা বিষয় উনার ক্লাশে আমরা অনেক বেশি বাস্তব জ্ঞান অর্জন করতাম, যা আমাদের এখান বাস্তব জীবনে খুব বেশি উপকার হচ্ছে। আমার এই জন্য স্যারের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ।
স্যারের প্রতি সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার আরও একটা কারন রয়েছে সেটা হলো আমার ক্লাশে একটি গরিব কিন্তু মেধাবী ছাত্র ছিল। স্যার তাকে খুব পছন্দ করতেন কারন সে খুব মেধাবী ছাত্র ছিল।
একবার তার এমন একটা সমস্যা হলো যে সে কোন ভাবেই তার বেতন এবং সেমিষ্টারের ফি দিতে পারছিলো না। ছেলেটি স্যারকে বিষয়টি জানালো যে তার আর পড়াশোনা হবে না কারণ তার পরিবার তার খরচ বহন করতে পারছে না।
তখন স্যার ক্লাশে আসলেন আর আমাদের সাথে কথা বললেন, "তোমাদের একজন বন্ধু, যার আর্থিক সংকটের কারণে পড়াশোনা বন্ধ হতে বসেছে। তোমরা তাকে কিভাবে সহযোগীতা করতে পারো?"
সবাই একজন একজন করে দাঁড়িয়ে মতামত দিলাম।
স্যার সবার কথা শুনলেন এবং তার মূল্যবান মতামত দিলেন।
সেটা হলো:-
- কলেজের গরিব ছাত্রদের জন্য একটা তহবিল আছে স্যার অধ্যক্ষ স্যারকে বলে সেখান থেকে সহযোগিতা চাইবেন।
- আমাদের মতামত অনুযায়ী আমরা আমাদের ক্লাশ ও অন্যান্য ক্লাশের সাথে কথা বলে আলাদা আরও একটা তহবিল গঠন করবো, সেখান থেকে তাঁর জন্য সহযোগিতা আসবে।
- আলম স্যার আজ থেকে তার পড়াশোনা করার জন্য যত বই লাগবে তা তিনি নিজে কিনে দেবেন।
এভাবে শুধুমাত্র ক্লাশে কথা বলার মাধ্যমে একটি বড় সমস্যার সমাধান করলেন। আমরা অভিভূত আর ছেলেটির চোখ অশ্রুশিক্ত, সে স্যারকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করলো। স্যার তাকে বুকে জড়িয়ে নিলেন।
আর আমরা আনন্দে ক্লাসের ভেতরে হাততালি।
এটি আমার জীবনের একটি স্মরণীয় ঘটনা।
আজ সেই ছেলে একজন সুদক্ষ ইন্জিনিয়ার।
এগুলো আসলেই কখনো ভোলার নয়।
পরিশেষ 👨🏫 :-
আমাদের আলম স্যার ভীষণ মিশুক এবং সবার কাছে খুব প্রিয় মানুষ। এমন কোন ছাত্র নেই যে স্যারকে পছন্দ করেনা। স্যার একজন ছাত্রের ভবিষ্যত গড়ার কারিগর। উনি এখনও শিক্ষকতা করেছেন। আমরা তার জন্য দোয়া করি উনি যেন সুস্থ থাকুন আর মানুষের উপকারে নিজেকে উজাড় করে দিতে পারেন।