আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমত এ ভালো আছি। প্রথমে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই @STEEM-BANGLADESH কে এতো সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য।
আজকে আমি আমার প্রিয় শিক্ষক সম্পর্কে বলতে যাচ্ছি। যার সম্পর্কে হাজার বললেও খুবই কম বলা হবে। তাহলে শুরু করা যাক-

me and my teacher

একজন জুয়েল স্যার

আজ আপনাদের বলব অন্য রকম একটি গল্প। আজকের গল্পটি একজন মানুষকে নিয়ে। মানুষটি আমার স্কুলের গণিত শিক্ষক। পেশায় একজন শিক্ষক হলেও ছোট-বড় সকলের কাছে তিনি আরও অনেক নামে পরিচিত। কারণ, তিনি একজন জুয়েল স্যার।

তখন স্কুলের লেখাপড়া কেবল ভাল করে শুরু করেছি। মোটামুটি ভাল ফলাফল করে অষ্টম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণীতে উঠেছি। তখন প্রতিবেশীরা ‘দোকান খুলে দেয়ার’ কথা আর না বললেও ‘কোন মতে চালিয়ে নিতে পারবে’ – এমন মন্তব্য করত। আবার অষ্টম শ্রেণীতে বৃত্তি না পাওয়ায় হেয় করে অনেক কথা বলছিল অনেকেই। অসুস্থ বলে যাকে বলে যাচ্ছে তাকে দিয়ে কিছু হবে না, আবার তাকেই হেয় করে যাচ্ছে ভাল না করার জন্য। কত অদ্ভুত সমাজ। চারিদিকে শুধুই নেতিবাচকতা।

নবম শ্রেণীর শুরুর দিকে জুয়েল স্যার একদিন আমাকে কাছে ডেকে বললেন, “তুই চেষ্টা কর। তুই অনেক ভাল করবি।” কথাগুলো খুব সামান্য হলেও তখন এত নেতিবাচকতার মাঝে এই কথাগুলো আমার কাছে ছিল অমূল্য। জুয়েল স্যারের সাথে ভাল করে আমার পরিচয় হয় অষ্টম শ্রেণীতে, যখন স্যারের সাথে গজনীতে পিকনিকে যাই। স্যারের বন্ধুসুলভ আচরণের কারণে স্যারের প্রতি জন্ম নেয় পরম শ্রদ্ধা, ভয় নয়। সেই শ্রদ্ধার স্থান থেকে যখন স্যার কথাগুলো বললেন, কথাগুলো আমাকে অনেক প্রভাবিত করল। আমার আত্মবিশ্বাস বহুগুণে বেড়ে গেল। পড়াশোনায় সময় দিতে শুরু করলাম আরও অনেক বেশি। সেই সাথে সমাজের কথাগুলোকে অগ্রাহ্য করতে শিখলাম।

সে বছর উচ্চতর গণিতে আমি সর্বোচ্চ ৯৮ নম্বর পাই। জুয়েল স্যার কাছে ডেকে বললেন, “তুই আসলে ১০০ পেয়েছিস। তোর রোল একটু পেছনে, তাই ১০০ দিলে কথা হবে। মন খারাপ করিস না।” এর পর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ক্রমাগত কেবল ভালই করে গেছি। শুধু গণিতে নয়, সব বিষয়েই। আমার আজকের এ পর্যায় আসায় স্যারের অবদান কাগজস্থ করার ক্ষমতা আমার নেই।