Steem Bangladesh Contest - Book Review || Sareng Bou: A Nice Book For Read || 📖📚📔
আসসালামু আলাইকুম
প্রিয় বন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
A book is a gift you can open again and again. (Jonathan swift)
লেখক পরিচিতিঃ
যে লেখকের বই নিয়ে রিভিউ করব তার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুল ধরছি। লেখক শহিদুল্লাহ কায়সার ১৬ই ফেব্রুয়ারি ১৯২৭ সালে ফেনি জেলায় জন্মগ্রহন করেন। তিনি মূলত একজন সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। তার পুরো নাম আবু নাইম মোঃ শহিদুল্লাহ। তাকে পাকিস্তানি হায়েনারা ১৪ই ডিসেম্বর হত্যা করে । তিনি ছিলেন এই দেশের একজন বুদ্ধিজীবি। তিনি তার অসামান্য উপন্যাস সারেং বৌ জেলে বসেই রচনা করেছিলেন যে উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যে অসামান্য স্থান দখল করে আছে। আজ এই প্রতিভাবান লেখকের এই উপন্যাসটি নিয়েই আলোচনা করবো।
পটভূমিঃ
সমুদ্রের খুব কাছাকাছি কয়াল নদীর তীরে খুব সাজানো গ্মুদ্রীজটি গ্রাম। এই সুন্দর ও নির্মল গ্রামটির নাম বামঞ্ছড়ি গ্রাম। এই গ্রামের বেষির ভাগ লোক দরিদ্র হাল চাষ আর মাছ ধরে ধরে তাদের জীবন চলে অতি কষ্টে। এই গ্রামের এক ব্যাক্তি হলেন কদম আলী সারেং যে কিনা বারো বছর বয়সী নবিতন নামে এক মেয়েকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে এসেছে । দেখতে খুবই সুন্দরি নবিতন আর সাধারন সারেং কদম আলীর সংসার খুব ভালোই ছিল অল্প কিছুদিনের ভিতরেই তাদের ঘর আলো করে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
যারা জাহাজে কাজ করেন তাদের সাধারণত নাবিক বলে ডাকা হয়। দেশ থেকে দেশে তারা বানিজ্য করে ফেরেন। সমুদ্রই হয়ে ঊঠে তাদের কাছে জীবন জীবিকার উৎস। কদম আলী এমনই একজন ব্যাক্তি। এই কদম আলী এবং তার স্ত্রীর জীবনের নানা বিষয় নিয়ে এই উপন্যাস শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে যায়।
প্রেক্ষাপটঃ
সারেং বৌ উপ্ন্যাস্টির অন্যতম প্রধান চরিত্র কদম আলী সারেং যে কিনা গ্রামের অন্য সব সাধারন মানুষের মতই আর নবিতন হলেন খুব সাধারন কিন্তু রুপবতী এক নারী। কদম আলী যখন সাগরে ভেসে বেড়ান তখন তার শুধু বৌ এবং কন্যার কথা মনে পড়ে আবার যখন স্থলে আসে তখন সাগরের নীল জলরাশী তাকে ডাকে।
টাকার জন্য , বেচে থাকার জন্য নবিতন চাল ভেঙ্গেছেন কখনো ঝিয়ের কাজ করেছেন। এই উপন্যাসে লেখক দেখিয়েছেন কিভাবে বেচে থাকার জন্য মানুষ তার জীবনের ব্যাবহার করছেন। নাবিকদের কস্টের জীবন এবং তাদের জীবনের বিভিন্ন দিক লেখক তার কল্মে খুব সুন্দর ফুটিয়ে তুলেছেন। বছরের পর বছর তারা ভেসে বেড়ান সাগরে তাদের এই ভেসে থাকার জীবনে আছে অনেক হাসি কান্না আর প্রিয়জনকে কাছে না পাবার তৃষ্ণা।
বইটি পড়ে আমার মতামতঃ
শহিদুল্লাহ কায়সার লেখক হিসেবে গ্রামের সাধারন মানুষের সবগুলি চরিত্র খুব অসাধারণ ভাবে তুলে এনেছেন পাঠকদের সামনে। তিনি একজন পতি নিরুদ্দেশ মহিলার জীবনের কস্ট গুলি তুলে এনেছেন অসাম্ন্য দক্ষতায়। যে নারী খাবারের জন্য কস্ট পেয়েছে লোকের কথা শুনেছে। অনেক কিছুর লোভ ত্যাগ করেছে নিজেকে রেখেছে এক বিশ্বাসী স্ত্রীর তালিকায়। যার ইস্পাত কঠিন মনোবলের কারনে সে হয়ে ঊঠেছে একজন আদর্শ স্ত্রী একজন আদর্শ মা।
লুন্দর শেখ নামের একজন খারাপ ব্যাক্তি তাকে অনেক ভাবে বিরক্ত করে আসছিল তাকে ভোগ করার জন্য অনেক কৌশল করেছিল কিন্তু সে কোন ভাবেই সুবিধা করতে পারছিল না । একদিন বাগে পেয়ে ধান ক্ষেতে তাকে জ্যোর করে দরে নিয়ে যায় । ইজ্জত হারানোর খুব কাছ থেকে সে অনেক কস্ট করে ফিরে আসে। একজন একা নারীর পক্ষে তা ছিল অসম্ভব । সে কাজটি করেছেন নবিতন নামের বিপ্লবী মেয়েটি।
এই উপন্যাসটি একটি সামাজিক উপন্যাস। লেখক এই উপন্যাসে তুলে এনেছেন সমাজের বিভিন্ন দিক। একটি সমাজে সচরাচর জা ঘটে থাকে তারই একটি সুন্দর বর্ণনা লেখক এই উপন্যাসে তুলে এনেছেন। লেখক এই উপন্যাসে জাদের সমালোচনা করেছেন তাদের কারনে এই উপন্যাস অনেক সুন্দরও হয়েছে এদিক থেকে আমার এটিকে ইতিবাচক মনে হয়েছে। নদীর তীরবর্তী গ্রাম হিসেবে প্লবন আসার কথা কিন্তু সেই প্লাবনে নবিতন আর তার স্বামী বাদে সবাই মারা যাবেন এতা মার কাছে নাটকীয় মনে হয়েছে। আসলে আমার কাছে মনে হয়েছে লেখক এই গল্পে যাদের চরিত্র তুলে এনেছিলেন তাদের সবাই মারা গিয়েছিল প্লাবনে শুধু এই দুইজন ছাড়া।
আমার কাছে শহিদুল্লাহ কায়সারের সারেং বৌ উপন্যাসটিকে একটি সারথক উপন্যাস মনে হয়েছে। তিনি তার উপ্ন্যাসের প্রতিটি চরিত্র খুব সুন্দর আর বাস্তব ধর্মী করে তুলে এনেছেন। এই উপন্যাসটি পড়ে একজন পাঠক বুজতে পারবেন একজন নাবিকের জীবনের বিভিন্ন দিক। কিভাবে তারা সমুদ্রে দিন কাটায় আর কিভাবে তারা প্রিজঙ্কে ফেলে বছরের পর বছর সাগরে ভেসে থাকে। জল আর স্থল তাদের জীবনে দুই রকম ভাবে প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে নবিতন এই উপন্যাসটির অন্যতম চরিত্র তার জীবনের বেচে থাকার সংগ্রাম। জিবনের কঠিন পরিস্থিতি বিভিন্ন রকম বিপদ থেকে নিজেকে বাচিয়ে রেখে গেছেন অবিরত। এই উপন্যাসের প্রতিটি পাতায় রয়েছে গ্রামীন সমাজ ব্যাবস্থার বাস্তব প্রতিচ্ছবি।
আমার কাছে উপন্যাসটি পড়ে খুবই ভালো লেগেছে। আমরা অনেকেই সাধারনত রোমান্টিক কিনবা এ্যাডভেঞ্চার টাইপের গল্প বা উপন্যাস পড়ে অভ্যস্ত। আমার কাছে মনে হয় তারা যদি এই সামাজিক উপন্যাস পড়েন তাদের কাছে খুবই ভালো লাগবে।
উপন্যাসের নাম | সারেং বৌ |
---|---|
লেখক | শহিদুল্লাহ কায়সার |
প্রথম প্রকাশ | ১৯৬২সাল |
প্রকাশক | নওরোজ সাহিত্য ভাণ্ডার |
পুরস্কার | আদমজী সাহিত্য পুরস্কার |
পেজ সংখ্যা | ১৪৯ |
Very beautiful post. Well usage of markdown. The book review is also good. Keep posting.
Thanks brother for appreciating me.
Khub sundor likhecen vae
null
এই পোস্টের জন্য কপি রাইট ফ্রি ইমেজ পাওয়া জায়নি।
আচ্ছা সমেস্যা নাই।। না পাওয়া গেলে অন্য হিসাব।
সুন্দর লিখেছেন।
অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই ❤️