Steem Bangladesh Contest - Travel || পাহাড়পুর ভ্রমণ || by @alamin000 || 30% beneficiaries goes to hive -138339 || club5050
হ্যালো
আমার প্রিয় বন্ধুরা
আমি @alamin000 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে
আশা করি এই রমজানে আল্লাহর রহমতে সবাই অনেক ভালোই আছেন। তেনার রহমতের স্পর্শে এবং আপনাদের দোয়ায় আমিও অনেক ভালোই আছি। Steem Bangladesh কর্তৃক আয়োজিত Travel contest এ অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি।কিছুদিন আগে আমি আমার বন্ধুদের সাথে পাহাড়পুর ভ্রমণে গিয়েছিলাম। তো চলুন একনজরে দেখে আসি আমার ভ্রমণ নিয়ে নানান তথ্য।
পাহাড়পুর যাওয়ার সূচনা
বন্ধুদের আগ্রহে একদিন সবাই যেতে আগ্রহী হলাম পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে।সেখানে যাওয়ার জন্য প্রয়জনীয় সবকিছু আগের দিনেই সংগ্রহ করে গাড়ি ঠিকঠাক করে রাখলাম।পরের দিন খুব ভোরে উঠে সবাই ৮ টার মধ্যে যথাসময়ে আমাদের নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থিত হলাম।গাড়ি রওনা করলো। যাওয়ার পথে আমাদের সকলের আনন্দের শেষে নেই।কেউ বা গান গাইছে, কেউ না জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্য উপভোগ করছে,কেউ বা নানান গল্পে মেতে উঠেছে।এভাবেই কোনো একসময় আমরা পৌঁছে গেলাম আমাদের গন্তব্য স্থলে। সেখানে গিয়েই দেখি হাজার হাজার মানুষের ভীড়। দেখে খুব ভালোই লাগলো। গাড়ি থেকে নেমেই আমাদের সবার হাতে নাস্তার একটা করে প্যাকেট দেওয়া হয়। সেগুলা খেয়ে নিয়েই আমাদের সেই দিনের ঘুরাঘুরি শুরু হয়।
ঘুরাঘুরি
প্রথমেই আমরা যাই উক্ত প্রাচীন মন্দিরটিতে।সেটা অনেক উচু হওয়ায় উক্ত স্থানে ওঠার জন্য কাঠের তৈরি এক সিড়ি তৈরি করা হয়েছে।জানা যায় পূর্বে উপরে উঠার সিড়ি ছিলো। দীর্ঘ সময়ের ব্যাবধানে সেগুলা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।সেই সিড়ি দিয়ে উঠলাম। উঠেই আমি অবাক হয়ে গেলাম।এতো বছর আগেও মানুষ এতো সুন্দর কাজকর্ম কিভাবে করেছিলো। বিষয়টি সত্যি খুব অবাক করার। যেটি বর্তমান যুগেও তৈরি করতে অনেক ব্যায়বহুল হয়ে যাবে।মন্দিরের চত্বরে চতুর্দিকে একটি করে উপাসনালয় ছিলো এবং সেগুলা খুবই সুন্দর আকৃতিতে তৈরি। মন্দিরের চারপাশে পুরো প্রচীরজুড়ে ছিলো নানান আকৃতির মুর্তি। সেখানে আমরা সব বন্ধুরাই অনেকগুলো ছবি তুললাম এবং সেখান থেকে নেমেই কিছুদুর সামনেই মন্দিরের সীমানা। সীমানার সৌন্দর্য দেখে রীতিমতো আমি আরো অবাক।অনেকগুলো ঘরের মাধ্যমে প্রাচীরটি তৈরি করা হয়েছিলো। আমার ধারনা যে সেগুলাতে তারাই থাকতেন যারা দূর দুরন্ত থেকে মন্দিরে পুজোর জন্য আসতেন এবং যারা মন্দিরের কাজে নিয়োজিত ছিলেন।সেখানেও আমরা অনেক ছবি তুললাম।
গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন দর্শন
এরপর আসলাম মন্দিরের বর্তমান সরকারি রক্ষণশীল কমিটির এরিয়ায়।সেখানে মানুষের তৈরি নানান শিল্পকর্মগুলো ও ছিল খুব নন্দনীয়। সেখানে গিয়ে কিছু ছবি তুলে আমরা সবাই যোগাযোগের মাধ্যমে এক হলাম।এক হয়েই আমরা খাওয়া-দাওয়া শেষ করে নিলাম।বলে রাখা ভালো আমরা রান্না করে নিয়ে গিয়েছিলাম। তারপর আমরা কিছুক্ষন বিশ্রাম নিলাম।এরপর চলে গেলাম সেখানকার যাদুঘরে।দূর্ভাগ্য সেখানে ছবি তোলা নিষিদ্ধ ছিলো। সেখানে যেসব দেখলাম -বেলে পাথরের চামুণ্ডা মূর্তি, দুবলহাটির মহাকীর্তির তৈলচিত্র, হরগৌরীর ক্ষতিগ্রস্ত মূর্তি, কৃষ্ণপাথরের লক্ষ্যিনারায়নের ভগ্নমূর্তি, বেলে পাথরের বিষ্ণুমূর্তি, নন্দিমূর্তি, কৃৃষ্ণপথরের বিষ্ণুমূর্তি, সূর্যমুর্তি, লাল পাথরের দন্ডায়মান শীতলামুর্তি,কৃষ্ণপাথরের দন্ডায়মান গনেশ।,কৃষ্ণপথরে বিষ্ণুর খণ্ডাংশ ইত্যাদি ধরনের মূর্তি।
পাহাড়পুরে কেনো যাবো
পাহারপুর বৌদ্ধ বিহার বা সোমপুর মহাবিহার ছিলো পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেবের তৈরি। তিনি অষ্টম শতকের শেষে এবং নবম শতকের শুরুতে এই বিহার তৈরি করেন।এটি পৃথিবীর সবথেকে বড় বৌদ্ধ মন্দির ছিলো। এটি ৩০০ বছর ধরে বৌদ্ধদের ধর্মচর্চাকেন্দ্র ছিল। বিভিন্ন দেশের মানুষ এইখানে ধর্মজ্ঞান অর্জন করার জন্য এসেছিলেন। মাটিতে লৌহজাত পদার্থের উপস্থিতি থাকার কারনে এখানকার মাটি লালচে হয়ে থাকে।কোনো একসময় স্থানীয় লোকেরা একে গোপাল চীতার পাহাড় বলে আখ্যা দিয়েছিলো। তখন থেকে এর নাম হয়েছে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার। তবে এর আসল নাম সোমপুর মহাবিহার। ১০ম শতাব্দীর শেষের দিকে মহীপাল (৯৯৫-১০৪৩) এটিকে পুনরায় গঠন করে পরিচালনা করে। এরপর ১১ শ শতাব্দীতে রামপাল এটিকে পরিচালনা করে।এভাবেই তারা বংশ পরম্পরায় এই বৌদ্ধ বিহারটিকে চালু রাখেন।এরপর ধারনা করআ হয়,ইখতিয়ারউদ্দিন বিন বখতিয়ার মোহাম্মদ খলজীর মূর্তিবিরোধী মনোভাবের ফলে ১৩০০ শতাব্দিতে এই মন্দিরটি সম্পুর্নরুপে ধ্বংস হয়ে যায়।আর এতো পুরোনো নিদর্শন দেখার জন্য আমাদের সকলেরি উচিত জীবনে একবার হলেও পাহাড়পুর ভ্রমণ করার।
বিদায় বেলা
সারাদিন সুন্দরভাবে সেখানকার সব যায়গাতেই আমরা যাই। এরপর সেখানে ভ্রমনের একটা করে স্মৃতি সবাই কিনে নেই।তারপর সবাইকে ফোন করে একত্রিত করি।অবশেষে আমরা আবার এক হয়ে পুনরায় বাড়ির দিকে রওনা শুরু করি।আর এভাবেই একটা সুন্দর ভ্রমণ শেষ করি।কিন্তু মনের মধ্যে রেখে দেই অনেকিছু।যেগুলা ভবিষ্যতে আমার অনেক কাজে দিবে।
আমার দুইজন ভিনদেশী বন্ধু @ana07 এবং @yeri52 কে এই contest এ পোস্ট করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। please post in this contest!
Thank you for sharing such an interesting content with us. Stay active – write posts, comment, interact with others and enjoy .
JOIN WITH US ON DISCORD SERVER: