নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা

in Steem For Traditionlast year
স্টিম ফর ট্রেডিশন

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুগণ।কেমন আছেন আপনারা? আশা করি সকলেই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি। আজ আমি শিল্পের কারিগর বাবুই পাখির বাসা নিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি ইনশাআল্লাহ। আশা করি সবার ভাল লাগবে।

IMG_20230727_133614.jpg
IMG_20230727_133543.jpg

সব প্রাণীরই একটি মৌলিক চাহিদা রয়েছে। সেটা পশু হোক,পাখি হোক বা কীটপতঙ্গ। খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি সবারই আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় রয়েছে, সেটি হল বাসস্থান।বাসস্থান সবার জন্যই প্রয়োজনীয়।কারণ এটা প্রতিটি জীবকে নিরাপত্তা দেয়।বিভিন্ন আসন্ন বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করে।আশ্রয় সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।আর প্রতিটি প্রাণীই তার নিরাপত্তার জন্য নির্দিষ্ট আশ্রয় খুঁজে নেয়।যেমন:আমরা মানুষ জাতীরা ঘরে থাকে,পাখি তার নিজের তৈরী বাসায় থাকে,হিংস্র পশুরা গুহায় বসবাস করে,কীটপতঙ্গরা তাদের তৈরী ছোট্ট বাসায় বা পাতার ফাঁকে লুকিয়ে থাকে ইত্যাদি। তবে বাবুই পাখিদের বাসা তৈরীর প্রক্রিয়াটি ভিন্ন। আজ আমি সেটাই তুলে ধরতে যাচ্ছি।

IMG_20230725_141331.jpg

বাবুই পাখিকে আমরা সবাই চিনি।বাবুই পাখি চেনেন না এমন বাংলাদেশী মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। এই পাখিগুলো খুবই ছোট্ট আকৃতির হয়ে থাকে। এদের গায়ের রং বাদামী বর্ণের। এরা খুব তাড়াতাড়ি উড়ে যেতে পারে। এরা দানাজাতীয় খাদ্যশস্য বা পোকামাকড় খেয়ে জীবনধারণ করে। মাঝে মাঝে এদের বালুতে গোসল করতে দেখা যায়।এদের বেশ পরিশ্রমী পাখি বলা হয়। এদের পরিশ্রমকে স্বীকৃতি দিতে কবিরা লিখে ফেলেছেন কবিতা।কারণ এদের বাসা অন্যান্য পাখির বাসার থেকে আলাদা।বাবুই পাখির বাসাগুলো সাধারণত লম্বা আকৃতির হয়ে থাকে। এগুলো সাধারণত তালের গাছের পাতা,নারিকেল গাছের পাতা অথবা সুপারি গাছের পাতার সাথে ঝুলে থাকে।

IMG_20230725_141333.jpg


IMG_20230725_143627.jpg

আর তাদের এই বাসাগুলো নারইকেল,তাল বা সুপারি গাছের পাতা দিয়েই তৈরী করে। তারা প্রথমে তাদের বাসার জন্য একটি উপযুক্ত জায়গা নির্ধারণ করে। এরপর গাছের পাতাগুলো তাদের ঠোঁট দিয়ে চিকন করে লম্বাভাবে ছিড়ে আনে।তারপর এগুলো পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে বাসা তৈরী করে। তাদের এই বাসাগুলো প্রথমে সবুজ রঙের হয়ে থাকে। কারণ পাতাগুলো তখন সজীব থাকে।পরবর্তীতে এগুলো শুকিয়ে বাদামী বর্ণের হয়ে যায়।যেগুলো অনেক পোক্তভাবে গাছের পাতার সাথে ঝুলে থাকে।এগুলো তাদের ঝড়বৃষ্টি থেকে রক্ষা করে।

IMG_20230725_141102.jpg

আমি যেই বাসাগুলোর ছবি তুলেছি বা ছবিতে আপনি যেই বাসাগুলো তুলে ধরেছেন সেগুলো আমার জানামতে পুরুষ বাবুই এর বাসা।কারণ এদের বাসার নিচের অংশ ফাকা।কেননা এদের ডিম পাড়তে হয় না। স্ত্রী বাবুই এর বাসা একটু আলাদারকম হয়ে থাকে।সেগুলো একটু বেশি লম্বাটে হয়ে থাকে। এই বাসাগুলোর মাঝখানে ফাঁক থাকে। বাসার নিচের কিছু অংশ পাইপের মতো করে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে।অনেক সময় প্রচণ্ড ঝড় বৃষ্টি হলে এদের বাসাগুলো ছিঁড়ে পাড়ে যায়।তাতে অনেক সময় ডিম ও নবজাত বাচ্চাও দেখতে পাওয়া যায়। তখন আমর খুব কষ্ট লাগে।আসলে বাবুই পাখিদের দেখে আমাদের কিছু শেখার আছে। এরাও কিন্তু চাইলে অন্যান্য পাখিদের মতো ঝোপে-খোপে থাকতে পারত।কিন্তু এরা নিজেরাই অনেক কষ্ট করে নিজেদের বাসা বানিয়ে থাকে।আসলে নিজেদের তৈরী জিনিসে একটা আলাদা রকম শান্তি কাজ করে। যা অন্যের জিনিসে পাওয়া যায় না। তাইতো ছড়ায় বাবুই পাখি চড়ুইকে বলেছিল-"নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা"।

ডিভাইজ সংক্রান্ত তথ্যঃ
ডিভাইসরেডমি ১০ সি
ক্যামরা৫০ মেগাপিক্সেল
ফটোগ্রাফার@tamannafariah
লোকেশনভবের বাজার,পার্বতীপুর

4i88GgaV8qiFU89taP2MgKXzwntUGAvkoQiKU7VxyD37q94i8e38qvF9HBknYTWLbKs3wg1cbtfZvU44CUYbBqLEEX6YDgQznQURMvBExn7FCAPjAUKLwJ1kpe.png

পোস্টটি পড়ার জন্য সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ
Sort:  
 last year 

বাবুই পাখিরা সুপারি গাছের পাতা, নারিকেল পাতা দিয়ে বাসা বানিয়ে থাকে। তারা অনেক শক্ত করে বাসা তৈরি করে। তাদের বাসাগুলো দেখতে অসাধারণ হয়।

 last year 

ধন্যবাদ

 last year 

জি আপু ঠিক বলেছেন সকল প্রাণীরই মৌলিক চাহিদা রয়েছে, বাসস্থানের দিক দিয়ে বাবুই পাখি অনেক পরিশ্রমী একটি পাখি । যতই কষ্ট হোক না কেনো নিজে বাসা তৈরি করে থাকতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, ছোটবেলায় বাবুই পাখি নামে কবিতা পড়তাম, বাবুই পাখিকে ডাকিয়া বলিয়াছে চড়ুাই ,কুড়ে ঘরে থেকে ঘরে শিল্পের বড়াই। আমি থাকি মহা সুখে অট্টালিকার পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ বৃষ্টির ঝরে। বাবুই পাখি বলে কষ্ট পাই তবু থাকি নিজেরও বাসায়। নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা। নিজের তৈরি বাসায় থাকাটা অনেক আনন্দের। অসংখ্য ধন্যবাদ আবার সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া।

 last year 

বাবুই পাখির বাসা দেখতে খুবই সুন্দর, আর সুন্দর হওয়ার কারণ হলো তারা অনেক পরিশ্রম করে এমন সুন্দর বাসা তৈরি করে থাকে, তবে আপু আপনার পোস্ট থেকে আমি একটা জিনিস শিখতে পারলাম, সেটি হলো পুরুষ বাবুই পাখির বাসা এবং স্ত্রী বাবুই পাখির বাসা, এর আগে এটা আমার জানা ছিলো না, আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপু।

 last year 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

ছোটবেলায় পড়ে আসা বাবুই পাখির সে কবিতাটি মনে পড়ে গেল আপু। এ পাখিরা অনেক পরিশ্রম করে তাদের নিজ বাসস্থান তৈরি করে। তাইতো তারা অন্যান্য পাখিদের কাছে গর্ব করে বলতে পারে"নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা"। ভিন্ন রকম একটা পোস্ট দেখে অনেক ভালো লাগলো আপু। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর করে গুছিয়ে একটা ভিন্ন রকম পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ।

 last year 

বাবুই পাখিরা অত্যন্ত যত্ন সহকারে তাদের ঘর গুলো নির্মাণ করে থাকে। তারা এমন ভাবে নির্মাণ করে কোন প্রকার পানি বাসায় ঢুকে নষ্ট হয় না।

 last year 

ধন্যবাদ।

 last year 

সকল প্রকার প্রানীর অন্য বাসস্থান বাধ্যতামূলক। বাবুই পাখি যত কষ্ট করে বাসা বানায় আনার মনে হয় এতো কষ্ট করে কোনো পাখি বানায় না। আমাদের বাসার নারিকেল গাছ থেকে পাতা নিয়ে গিয়ে বাসা বানিয়ে থাকে বাবুই পাখি পাখি। একটি বাসা বানাতে ৩-৪ মাস সময় লাগে আমি হিসাব করে দেখেছি। তাদের বাসা দুই রকমের হয়ে থাকে।

 last year 

ধন্যবাদ।

 last year 

বাবুই পাখিরে ডাকি বলছে চড়াই,
কুঁড়েঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই।
আপনার টাইটেলটি পড়ে এই কবিতাটির কথা আমার মনে হয়ে গেল। বাবুই পাখি হলো শিল্পী পাখি। বাবুই পাখির মত নিখুঁত বাসা তৈরি করতে পারে না কোন পাখিই। তাল গাছের উপরে বাবুই পাখির বাসা গুলোর সুন্দর ছবি তুলেছেন আপনি। ধন্যবাদ আপনাকে

 last year 

ধন্যবাদ আপু।

 last year 

ছোটবেলায় নারিকেল গাছে এরকম বাবুই পাখির বাসা অনেক দেখেছিলাম।বর্তমানে আমাদের এলাকায় এরকম আর এখন দেখা যায় না।আপনার পোস্টটি পড়ে ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেল।কোন ক্লাসে পড়েছিলাম কবিতাটি সঠিক মনে নেই। চমৎকার ফটোগ্রাফি করেছেন শুভকামনা রইল

 last year 

ধন্যবাদ।

 last year 

নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা

টাইটেলটি বেশ ভাল লেগেছে আমার কাছে। তালগাছে বাবুই পাখির বাসা দেখা যায়। তবে নারিকেল ও তালগাছে বাসা বাঁধতে ভালবাসে এই বাবুই পাখি। আমাদের গ্রামে একটি তালগাছে বেশ কয়েকটি বাবুই পাখির বাসা আছে।

 last year 

ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 58607.22
ETH 2616.94
USDT 1.00
SBD 2.43