উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী খাবার "শিদল"
স্টিম ফর ট্রেডিশন |
---|
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুগণ।আশা করি সকলেই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি। আজ আমি উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্য "শিদল" নিয়ে লিখতে যাচ্ছি ইনশাআল্লাহ। আশা করছি সবার ভাল লাগবে।
প্রত্যেক এলাকারই কিছু ঐতিহ্যবাহী খাবার আছে। একেক এলাকা একেক খাবারের জন্য বিখ্যাত। খাবারগুলো দিয়ে এলাকাগুলোও অন্যান্য এলাকায় পরিচিতি লাভ করে।যেমন পুরান ঢাকার কাচ্চি বিরিয়ানি,টাঙ্গাইলের চমচম,নাটোরের কাঁচাগোল্লা,বগুড়ার দই ইত্যাদি।প্রত্যেক এলাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো এলাকাবাসীর কাছে গৌরবময় হয়ে থাকে।উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী খাবার রয়েছে। তার মধ্যে শিদল অন্যতম।এটি মূলত একটি শুকনো একটি পিন্ড যা কচু দিয়ে তৈরী করা হয়। রান্নার সময় একে ভালভাবে পুড়িয়ে তারপর ভিজিয়ে রাখতে হয়। এটি দেখতে গোলাকার আকৃতির।এর রং ধূসর অথবা কালচে।শুকালে এটি থেকে সুন্দর একটি গন্ধ বের হয় এবং এ গন্ধ সবসময়ই থাকে।শিদল রান্না করে বা ভর্তা করে খাওয়া হয়। বছরের পর বছর ধরে আমাদের মা দাদীরা শিদল তৈরী করে আসছেন। আমাদের উত্তরবঙ্গের মানুষের আবেগ হল শিদল।
প্রতিবছর সবাই প্রায় ২০-৫০ টি শিদল অবশ্যই তৈরী করেন।কেউ আবার তারও বেশি শিদল তৈরী করেন।এই খাবারটির বিশেষত্ব হচ্ছে এটি বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না। আর এটি দীর্ঘদিন ভাল থাকে।
শিদল তৈরীর মূল উপাদান হল কচু।এজন্য প্রথমে ডাঙার ছোট কচু কেটে আনা হয়।পানির কচু কিন্তু দেওয়া যাবে না। এতে শিদল টক হয়।কচু দুই ধরনের। সবুজ কচু আর কালো কচু।এই দুই ধরনের কচু সুন্দর করে বেছে ছোট ছোট করে কেটে নেওয়া হয়। এরপর এগুলো ভাল করে ধুয়ে নেওয়া হয়। তারপর এগুলোকে রোদে হালকা শুকিয়ে নেওয়ার হয়।এরপর এগুলোকে হামানদিস্তায় থেঁতলে নেওয়া হয়। তারপর এগুলোতে শুটকি গুড়ো,গরম মসলা গুড়ো এসব উপাদান দিয়ে পঁচতে দেওয়া হয় একদিনের জন্য। এর উপরিভাগ কচুপাতা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।এরপর একদিন পর কচুগুলো ভালভাবে পঁচে গেলে সেগুলো আবার বের করে এনে শিলপাটায় মিহি করে বেটে নেওয়া হয়।বেটে নেওয়া হয়ে গেলে এগুলো হাত দিয়ে গোলাকার শেইপ তৈরী করা হয়। এর উপর কাঁচা রসুনবাটা, সরিষার তেল ও হলুদ দিয়ে রোদে দিতে হয়। রোদে কমপক্ষে ১০ দিন শুকাতে হয়।এজন্য মাঝে মধ্যে উল্টে দিতে হয়।উত্তরাঞ্চলে চৈত্র মাসে শিদল তৈরী করার ধুম পড়ে চারদিকে।এসময় শিদল তৈরীর প্রতিযোগীতা চলে চারিদিকে। এমন এক পর্যায় চলে আসে যে আশেপাশে আর কচু খুঁজে পাওয়া যায় না।
ভালভাবে সংরক্ষণ করলে শিদল বহুদিন ভাল থাকে।শিদল তৈরী করার পর অনেকে হাঁড়ির ভিতর ছাই রেখে তার ভিতরে শিদল রাখেন।অনেকেই আবার বালুর ভিতরে রাখেন।কেউ আবার মাঝখানে ফুটো করে রশি দিয়ে মালার মতো করে বেঁধে রাখেন।এখন শিদল ডাবল পলিথিনের ভিতর রেখে ভালভাবে বেঁধে ফ্রিজে রাখেন।অনেকেই আবার প্লাস্টিকের কৌটায়ও রাখেন।তবে মাঝে মাঝে এগুলো বের করে রোদে দিতে হয়। তাহলে ভাল থাকে।এভাবে শিদল সংরক্ষণ করলে সারাবছর ভাল থাকে।
ডিভাইস | রেডমি ১০ সি |
---|---|
ক্যামরা | ৫০ মেগাপিক্সেল |
ফটোগ্রাফার | @tamannafariah |
লোকেশন | ভবের বাজার,পার্বতীপুর |
সিদল উত্তরাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার। এই উত্তরাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি গ্রামের মানুষই সিদল তৈরি করে এবং খায়। আমার আম্মুও সিদল বানায় এবং বোয়াল মাছ দিয়ে সিদল রান্না করে। সিদল নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন আপু।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
টুইটার লিংক
https://twitter.com/Tamanna21464/status/1687799514596519936?t=U4aDwtqUCJdwg66G4DHpfQ&s=19
বাড়িতে এক সময় দাদি বানাতো কিন্তু এখন আর এই শিদল বাড়িতে বানানো হয় না।তবে মাছ দিয়ে এই শিদল খেতে অনেক মজা লাগে। বিশেষ করে বোয়াল মাছ দিয়ে খেতে এই মাছ খেতে অনেক মজা লাগে।ধন্যবাদ অনেক সুন্দর একটা পোস্ট করার জন্য।
ধন্যবাদ।
উত্তরাঞ্চলের জনপ্রিয় খাবার শিদল নিয়ে খুব সুন্দর উপস্থাপন করেছেন আপু। উত্তরাঞ্চলে থাকার সুবাদে শিদল এর কথা অনেক শুনেছি কিন্তু কখনো খাওয়া হয়নি। আর সঠিক কথা বলেছেন এটি আসলেই বাজারে কি কিনতে পাওয়া যায় না। আপনি শিদল নিয়ে অনেক সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন। আপনার মাধ্যমে শিদল সম্পর্কে অনেক তথ্য পেলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
ধন্যবাদ।
শিদল আমাদের জনপ্রিয় একটি খাবার।শিদল তৈরির মূল উপাদান হচ্ছে কচু।উত্তর অঞ্চলের মানুষ প্রতি বছরে কচু কেটে শিদল তৈরি করে।শিদল রান্না করলে সেই তরকারি আমাকে খুব ভালো লাগে।শিদলের গন্ধটাও বেশ সুন্দর। আপনি সুন্দর আলোচনা করছেন কি ভাবে শিদল তৈরি করা হয় এবং তার মূল উপাদান।আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
ধন্যবাদ।
সিদল আমার খুব পছন্দের একটি খাবার। বেশি পরিমাণ মাছ দিয়ে সিদল রান্না অনেক মজাদার একটি খাবার। উত্তরবঙ্গের মানুষেরা বছরে একটি নির্দিষ্ট সময় সিদল বানিয়ে সংরক্ষণ করে রাখে। খুব সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন আপু ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপু।
শিদল আমি কোনদিন খাইনি এবং আজকেই এই নামটা প্রথম শুনলাম। আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমেই উত্তরবঙ্গের একটি বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে জানলাম। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে।
উপরের কথাটিও একদম ঠিক বলেছেন আপনি।
উত্তরাঞ্চল ছাড়া এই খাবারের সাথে বেশিরভাগ জায়গার মানুষই পরিচিত না।আমি যেহেতু উত্তরাঞ্চলে বড় হয়েছি তাই এই শিদল বেশ কয়েকবার খেয়েছি। আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। তৈরির প্রক্রিয়াটি খুব ভালোভাবে তুলে ধরেছেন। শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ আপনাকে।
শিদল নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন আপনি।শিদল আমার পছন্দের একটি খাবার। তবে রান্না করা শিদলের থেকে শিদলের ভর্তা আমার বেশি পছন্দের।আমার দাদি ও প্রতিবছর শিদল বানিয়ে থাকে।আপনি ঠিক বলেছেন আপু শিদল শুধু বাড়িতেই বানানো হয় এটি বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না। ধন্যবাদ আপু শিদল নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন আপু, এই খাবারটি কখনো বাজারে পাওয়া যায় না, এটি নিজেকে তৈরি করে খেতে হয় এবং আত্মীয় স্বজনদের বাসা থেকে এনে খেতে হয়, শিদল নিয়ে অনেক সুন্দর লিখেছেন, আপনার বিস্তারিত আলোচনা পরে খুবই ভালো লাগলো, আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপু।
ধন্যবাদ।