গ্রামাঞ্চলে বাড়ির বাহিরে বাঁশের তৈরী গরুর ফাড়
স্টিম ফর ট্রেডিশন |
---|
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুগণ।আশা করি সকলেই ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি। আজ আমি বাঁশের তৈরী গরুর ফাড় নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। আশা করি সবার ভাল লাগবে।
কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের প্রতিটি বাড়িতে জমি চাষাবাদের পাশাপাশি পুকুরে মৎস্য চাষ,বসতবাড়িতে হাঁস,মুরগি,গরু,ছাগল,মহিষ,ভেড়া এসব পালন করা হয়। শহরাঞ্চলে মূলত গৃহপালিত পশু পালন করা হয় না কারণ তাদের বাড়িতে গৃহপালিত পশু পালন করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা থাকে না।তাই তারা এসব পশু পালন করেন না। তবে গ্রামাঞ্চলের পরিবেশ সম্পূর্ণ আলাদা।গ্রামে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে গৃহপালিত পশু পাখি পালন করা হয়।গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে একটি করে হলেও গরু,ছাগল অবশ্যই থাকবে।আগে গরুর থেকে মহিষ পালনের প্রবণতা বেশি ছিল।তখন প্রতিটি বাড়িতে মহিষ ছিল।এই মহিষগুলোকে জমি চাষাবাদের কাজেও ব্যবহার করা হত।তবে এখন আর মহিষ চোখেই পড়ে না।আজ থেকে ৭/৮ বছর আগে আমার এক চাচা দুটো মহিষ কিনেছিলেন প্রতিপালন করার জন্য। প্রায় ১ বছরের মতো দেখাশোনা করার পর তিনি কোনও এক কারণে সেগুলো বিক্রি করে দেন।তারপর থেকে আর কোনও দিনও মহিষ চোখে পড়ে নি।
গরু-মহিষকে মূলত বাড়িতে বেঁধে রাখা হয় বা মাঠে খাবার খাওয়ার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। বাড়িতে যে জায়গায় গরু-মহিষ থাকে তাকে গোয়ালঘর বলা হয়।তবে গরুকে সারাদিন গোয়ালঘরে বেঁধে রাখা হয় না।দিনের বেলা গরুদের বাড়ির বাইরে বেঁধে রাখা হয়। আর রাতের বেলা সন্ধ্যার পর থেকে বাড়ির গোয়ালঘরে রাখা হয়।গরু-মহিষের প্রধান খাদ্য হল খড়।খড় হল ধানের শুকনো গাছ।এগুলো সাধারণত পালা দিয়ে সংরক্ষণ করে রাখা হয়। এই খড় সারাবছর গরুকে খাওয়ানো হয়।গরু-মহিষকে খড় খাওয়ানোর জন্য একটি বিশেষ বেষ্টনী ব্যবহার করা হয়।এই বিশেষ বেষ্টনীকে ফাড় বা টাক বলা হয়।
এই ফাড় বা টাক সাধারণত বাঁশ দিয়ে তৈরী করা হয়। ফাড় বা টাক দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি হল লম্বা আকৃতির ফাড় আর একটি হল গোল ফাড়।লম্বা আকৃতির ফাড়গুলো বাড়ির গোয়ালঘরে তৈরী করা হয়।কারণ বাড়ির গোয়ালঘরে জায়গা বেশি থাকে।তাই লম্বা আকৃতির ফাড়ে গরু-মহিষদের পাশাপাশি বেঁধে রাখা হয়।এতে করে গরুর দুগ্ধ দোহন ও পানি খাওয়াতে সুবিধা হয়।আর গোলাকৃতির ফাড় বাড়ির বাইরে তৈরী করা হয়। সেখানে গরু-মহিষকে গোল করে বেঁধে রাখা হয়।
আগে গ্রামাঞ্চলে বাঁশ দিয়ে ফাড় তৈরী করা হত।এখন গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে ইটের ফাড় দেখা যায়। বাঁশের ফাড়গুলো অস্থায়ী হওয়ার কারণে এখন সবাই ইট দিয়ে দীর্ঘস্থায়ী ফাড় তৈরী করা হচ্ছে। বাঁশের ফাড় মূলত বাঁশের বাতা দিয়ে তৈরী করতে হয়।এজন্য প্রায় ১ ইঞ্চি প্রস্থবিশিষ্ট লম্বা বাতা তৈরী করা হয়। তারপর বেশ কয়েকটি লাঠি তৈরী করা হয়। তারপর সেগুলো গোল করে মাটিতে গেড়ে দেওয়া হয়। এরপর লম্বা বাতাগুলো একটির পর এদিক ওদিক ঢুকিয়ে দিয়ে গেঁথে নেওয়া হয়। এভাবে ২ ফুট উচ্চতায় গেঁথে নেওয়া হয়। এরপর এর উপরের অংশ মাঝে মাঝে বেঁধে দেওয়া হয় যাতে বাতার গাঁথুনি খুলে না যায়। এভাবে লম্বা ফাড়ও তৈরী করা হয়। শুধু বাতার গাঁথুনি লম্বা করে দেওয়া হয়। মাঝে মাঝে গরু বেঁধে রাখার জন্য শক্ত ও মোটা বাঁশ গেঁড়ে দেওয়া হয়।
এখন গ্রামাঞ্চলে এই ধরনের বাঁশের ফাড় খুবই কম দেখা যায়।কারণ এখন সবাই ইটের ফাড় তৈরী করে রাখে।কারণ এটি দীর্ঘ বছর স্থায়ী থাকে। কিন্তু একটি বাঁশের ফাড় ৫ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে। এটি আমাদের দেশের একটি ঐতিহ্য। যেটি আমরা প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছি। তাই আমাদের সবার উচিৎ এ ঐতিহ্য গুলো বুকে ধারণ করে রাখা।
ডিভাইস | রেডমি ১০ সি |
---|---|
ক্যামরা | ৫০ মেগাপিক্সেল |
ফটোগ্রাফার | @tamannafariah |
লোকেশন | ভবের বাজার,পার্বতীপুর |
আমাদের এলাকায় গরু কে খড় খাইতে দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত বাঁশের তৈরি জিনিসটিকে হাউসও বলা হয়। গ্রামের বাড়িতে যারা গরু পালন করে তারা সবাই এই জিনিসটি সম্পর্কে জানে । অনেক সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন আপু। ফটোগ্রাফি গুলো সুন্দর হয়েছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ।
https://twitter.com/Tamanna21464/status/1692868717087228060?t=K4T6CcWfgyjaReHCFkUH0g&s=19
গ্রামীণ অঞ্চলে বাশের বিভিন্ন রকম জিনিস দেখা যায়। এর ভেতর অন্যতম হলো বাঁশের তৈরি ফাড়। এই ফাড় গুলোতে সাধারণত গরু বাধা হয় এবং গরুকে খড় দেওয়া হয় খাওয়ার জন্য।দারুন ফটোগ্রাফি করেছেন খুব সুন্দর লিখেছেন আপনি ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
গ্রাম অঞ্চলে যাদের গরু বা মহিষ আছে তাদের প্রতিটি ঘরে বাঁশের ফাড় রয়েছে।গরুকে বা মহিষকে বেঁধে রেখে ফাড়ে খড় দেয়া হয়।আপনি অনেক সুন্দর করে বিস্তারিত উপস্থাপন করেছেন বাঁশের ফাড় নিয়ে।ফটোগ্রাফি সুন্দর হয়েছে ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের প্রতিটি বাড়িতে হাঁস মুরগী গরু মহিষ,লালন পালন করা হয়। গরুকে খড় খাওয়ানোর জন্য বাঁশের তৈরি ফাড় ব্যবহার করা হয়। আপনি অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন আপু। ফটোগ্রাফি দারুণ হয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু এতো সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
গ্রামাঞ্চলে যারাই গরু মহিষ এসব গৃহপালিত পশু পালে তাদের প্রত্যেকের বাড়িতেই এরকম ফাড় রয়েছে। কারণ গৃহপালিত পশুদের খাবার দেওয়ার পর খাবার যেন নষ্ট না হয়, এজন্য এরকম ফাড় ব্যবহার করা হয়। আপনাদের এদিকে যেটা কেউ ফাড় বলে আমাদের এদিকে আঞ্চলিক ভাষায় সেটাকে গরুর গোড়া বলে। খুব সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
গ্রাম অঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতে এরকম গরুর ফার রয়েছে। কারন আমাদের বাংলাদেশ হল কৃষিপ্রধান দেশ তাই সবাই ধান চাষ বেশি করে থাকেন। এবং ধানের যে খোড় রয়েছে সেগুলো গরুর খাবার হিসেবে ব্যবহার করেন। তাই প্রতিটি বাড়িতে গরু থাকে এবং গরুর জন্য এই বাঁশের তৈরি ফার ব্যবহার করা হয়। বাঁশের ফার সম্পর্কে অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে।
গরুর খাবার রাখার জন্য তৈরি ফাড় আমাদের বাসায় রয়েছে। এমন ফাড় গুলো সাধারণত বাড়ির বাহিরেই করা হয়ে থাকে। গরুর দেহের উপরে নির্ভর করে বানানো হয় বাঁশের তৈরি ফাড়। এই ফাড় গুলো ভালো গরুকে খড় দেওয়ার জন্য ভালো মানের হয়ে থাকে। বড় বাঁশের খুটি দিয়ে বানালে অনেক দিন ধরে টিকে থাকে। সুন্দর লিখেছেন আপু।
ধন্যবাদ।
গ্রামাঞ্চলে এ ধরনের গরুর ফাড় বেশি দেখা যায়। তবে ইদানীং মানুষ উন্নত জাতের গরু পালন করায় ধীরে ধীরে এই ফাড়গুলো কমিয়ে আসতেছে। কারণ বড় ও উন্নত জাতের গরুগুলোকে তেমন একটা বাইরে বের করা যায় না। সারাদিন গোয়াল ঘরে রাখতে হয়। অনেক সুন্দর একটা পোস্ট করেছেন আপু অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে।