ডিজেল চালিত শ্যালোমেশিন যা সেচের একমাত্র অবলম্বন
স্টিম ফর ট্রেডিশন |
---|
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুগণ।আশা করি সকলেই ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি। আজ আমি ঐতিহ্যবাহী শ্যালোমেশিন নিয়ে আপনাদের সবার সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি ইনশাআল্লাহ। আশা করি সবার ভাল লাগবে।
শ্যালোমেশিন হল জমিতে পানি সেচ দেওয়ার জন্য ইঞ্জিনচালিত একটি মেশিন।আগে যখন বিদ্যুৎ ছিল না তখন এই শ্যালোমেশিন দিয়ে জমিতে পানি সেচ দেওয়া হত।এটা দিয়ে মূলত অগভীর পানি সেচ দেওয়া হয়।অর্থাৎ এটা পানির উপরের স্তরের পানি উত্তলন করে।এটি হলো মূলত ডিজেল তেল দ্বারা চালিত একটি মেশিন।ইরি মৌসুমে জমিতে মূলত শ্যালোমেশিন বা গভীর নলকূপ বিদ্যুৎ চালিত মোটর দিয়ে সেচ দেওয়া হয়।এই মেশিনটির মূলত তিনটি অংশ থাকে।প্রথম অংশটি হল এর ইঞ্জিন। এই অংশে রয়েছে একটি পানি রাখার অংশ।এই অংশটিকে ওয়াটার ট্যাংকও বলা হয়।তার পাশে রয়েছে তেল রাখার ট্যাংক এবং রয়েছে একটি ধোঁয়া বের হওয়ার জন্য একটি অংশ।এই ইঞ্জিনে রয়েছে একটি চাকা যেটির বারংবার ঘূর্ণনের ফলে পানি উত্তলিত হয়।
দ্বিতীয় অংশে রয়েছে পানি বের হওয়ার পাইপ।এই পাইপ দিয়ে পানি বের হয়।তবে মেশিন চালু করার আগে পাইপের মুখ ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ঢাকনা ও পাইপের মুখ কাদা দিয়ে লাগিয়ে দেওয়া হয়। তাই যখন মেশিন চালু করার পর পাইপ দিয়ে পানি বের হতে শুরু করে তখন আপনা আপনি পানির চাপে ঢাকনা খুলে যায়।আমরা ছোটবেলায় এ ব্যাপারটি দেখে খুবই মজা পেতাম।
তৃতীয় অংশটি হল পানি উঠানোর জন্য একটি নলকূপ ও মাটির নিচের বোরিং।এই নলকূপটি বরিং এর সাথে সংযুক্ত থাকে।মেশিন যখন পুরোপুরিভাবে সেটআপ করা হয় তখন বোরিং এ পানি দিয়ে বারংবার নলকুপ চাপতে হয়।তখন নলকূপ কিছু পানি ঢেলে দিতে হয়। এভাবে কিছুক্ষণ চাপার পর দেখা যায় যে এক সময় পানি উঠে আসে। তখন হ্যান্ডেল দিয়ে মেশিন স্টার্ট করতে হয়। ভালোভাবে পানি উঠে এলে খুব তাড়াতাড়ি মেশিন দিয়ে পানি বের হয়। এ সময় পানি বের হওয়ার পাইপের গাঁয়ে কাঁদা মাখিয়ে দেওয়া হয়। এতে করে কোন জায়গায় যদি কোন লিকেজ থাকে তা বন্ধ হয়ে যায় এবং বাতাস বের হয়ে যায় না।
আগে আমাদের বাড়িতে একটি শ্যালো মেশিন ছিল। তখন আমরা প্রাইজ স্যালো মেশিন চালু করা দেখতাম। সেই অভিজ্ঞতাটি এখন কাজে লাগছে।
৯০ দশকের আগ থেকেই আমাদের দেশের শ্যালো মেশিন এর প্রচলন শুরু হয়। আমাদের দেশে আগে সব জায়গায় বিদ্যুৎ ছিল না বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে। তখন শ্যালমেশিনই ছিল পানি উত্তোলনের একমাত্র অবলম্বন।শ্যালো মেশিনের ভটভট শব্দ চারিদিকেই ছড়িয়ে পড়তো। তাই অনেক দূর থেকেই শেলোমেশিনের শব্দ শোনা যেত। পরবর্তীতে যখন বাংলাদেশ সরকার শতভাগ বিদ্যুৎ বাস্তবায়িত করে তখন থেকেই শ্যালোমেশিনের ব্যবহার কমে গিয়েছে। এ জায়গা দখল করে নিয়েছে বিদ্যুৎ চালিত মোটর। কারণ এগুলোতে অল্প সময়ে অনেক জমিতে পানি সেচ দেওয়া যায়।আর শ্যালো মেশিনে পানি উত্তোলন করা অনেক কঠিন একটি কাজ। তাই এখন মানুষ বিদ্যুৎ চালিত মোটর এর দিকেই বেশি ঝুঁকে পড়ছে।
এমন মৌসুমে জমিতে কোন শেষ দিতে হয় না। কারণ সে সময় বর্ষার পানিতেই চারদিক থৈথৈ থাকে। কিন্তু এবছর কোন বৃষ্টি না হওয়ার কারণে কৃষকদের জমি আলাদাভাবে সেচ দিতে হচ্ছে।আর আমাদের দেশে লোডশেডিং এর হার অনেকাংশেই বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে বিদ্যুৎ চালিত মোটর দিয়ে বেশিক্ষণ জমিতে পানি সেচ দেওয়া যাচ্ছে না।এজন্য আবার কৃষকেরা শ্যালোমেশিনের ব্যবহার শুরু করেছেন।আমরা ফিরে পেলাম আমাদের সোনালী অতীতকে।যেটা আমাকে আমার ছোটবেলার স্মৃতি মনে করিয়ে দিল। কারণ ছোটবেলায় আমরা শ্যালো মেশিনের পানিতে গোসল করতাম।শ্যালো মেশিনের পানিতে খেলা করতাম।বাঁশ পাতার নৌকা বানিয়ে পানি ড্রেনে ছেড়ে দিতাম।এখন এই বিষয়গুলো আমার খুবই মনে পড়ে।
ডিভাইস | রেডমি ১০ সি |
---|---|
ক্যামরা | ৫০ মেগাপিক্সেল |
ফটোগ্রাফার | @tamannafariah |
লোকেশন | ভবের বাজার,পার্বতীপুর |
ডিজেল চালিত শ্যালোমেশিন একসময় সেচের একমাত্র অবলম্বন ছিল।কিন্তু এখন মানুষ শ্যালো মেশিনের থেকে ইলেক্ট্রিক মটারেই বেশি ব্যবহার করে থাকে। ধন্যবাদ আপু ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ।
টুইটার লিংক
https://twitter.com/Tamanna21464/status/1683373280219262976?t=BqrRspIN9WAKdTFGlqXTrA&s=19
ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন আমাদের গ্রামগঞ্জের ঐতিহ্য, বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ, এদেশে মানুষের প্রধান কাজ হলো কৃষিকাজ। জমিতে পানি সেচ দেওয়ার জন্য এই শ্যালো মেশিন ব্যবহার করা হয়। আমাদের একটি শ্যালো মেশিন ছিল, চকের মাঝখানে একটি স্থাপন করা হয়েছিল। আমি মাঝে মাঝে ডিজেল তেল নিয়ে যেতাম। সুন্দর উপস্থাপন করেছেন আপু। ফটোগ্রাফি দারুন হয়েছে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ।
ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন আমাদের ঐতিহ্য বহন করে। শ্যালো মেশিন কৃষকদের অপরিসীম ভূমিকা পালন করে থাকে। শ্যালো মেশিন ইলেকট্রিক কারেন্ট চালিত মোটর এর চেয়ে অনেক সুবিধার। কারেন্ট চলে গেলে ইলেকট্রিক মটরের কোন কাজ নেই অপরদিকে ডিজেল চালিত হেল মেশিন ননস্টপ চলতে থাকবে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
ধন্যবাদ।
কৃষিকাজের জন্য নির্ভরশীল হাজারো কৃষক পানি সেচের জন্য ডিজেল চালিত এই শ্যালো মেশিন ব্যবহার করে। এটি পানি সেচের একটি পুরাতন পদ্ধতি। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে গুছিয়ে এই মেশিন ব্যবহার করে পানি সেচের পদ্ধতিটি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন ।ধন্যবাদ আপু আপনাকে।
ধন্যবাদ।
অনেকদিন পর এই ডিজেল চালিত স্যালো মেশিনটি দেখলাম। বর্তমানে এখন সব বিদ্যুৎ চালিত, মোটর দিয়ে পানি উৎপাদন করা হয়ে থাকে। এজন্য কৃষি জমিতে পানি দেওয়ার সময় বিদ্যুতের ঘাটতি পড়ে যায় অনেক। ধন্যবাদ আপনাকে এই পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ।
ডিজেল চালিত শ্যালোমেশিন ঐতিহ্য বহন করে। অনেক পুরনো ডিজেল চালিত শ্যালোমেশিন সব জায়গায় দেখতে পাওয়া যায়। তবে কিছু কিছু জায়গায় এখনো বিদ্যুৎ না থাকায় ডিজেল চালিত শ্যালোমেশিন আছে প্রচুর পরিমানে। ডিজেল চালিত শ্যালোমেশিন নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন আপু।
ধন্যবাদ।
শ্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে পানি দিতে আমি অনেক দেখেছি।শ্যালো মেশিন নিয়ে অসাধারণ একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি। এই মেশিন সম্পর্কে আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ধারণা পাবে। চমৎকার ফটোগ্রাফি করেছেন।শুভকামনা রইল
ধন্যবাদ।
ঠিক বলছেন আপু।আগের দিনে শ্যালো মেশিন ব্যবহার হতো।তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় এগুলো হারিয়ে যাচ্ছে।আপনি সুন্দর একটা বিষয় আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন।সেটা হলো পাইপের মুখে কিছু ঢেকে।পানি উত্তলন করার সময় আপনা আপনি খুলে যায়।এই বিষয় টা আমাকেও খুব ভালো লাগে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ।
প্রায় ৯০ দশক থেকে শ্যালো মেশিন ব্যবহার করে আমাদের কৃষি কাজকে সহজ করার জন্য পানি উত্তোলন করা হয়। শ্যালো মেশিন আসায় আমাদের কৃষির অনেক উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে শ্যালো মেশিনের থেকেও আরো উন্নত সেচ ব্যবস্থা রয়েছে আমাদের দেশে। শ্যালো মেশিনে গোসল করার কথা আমার খুব মনে পড়ে। অনেক সুন্দর লিখেছেন আপু।
ধন্যবাদ।