গ্রামবাংলায় ব্যবহৃত ধান ভাঙ্গার মেশিন
স্টিম ফর ট্রেডিশন |
---|
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুগণ। কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলেই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভাল আছি। আজ আমি গ্রামবাংলায় ব্যবহৃত ধান ভাঙ্গার মেশিন নিয়ে আপনাদের মাঝে লিখতে যাচ্ছি ইনশাআল্লাহ। আশা করি সবার ভাল লাগবে।
খাদ্য আমাদের মৌলিক চাহিদা। আমাদের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে খাদ্য। কারণ খাবার ছাড়া আমরা বাঁচতে পারব না। এটা আমাদের জন্য একটা অপরিহার্য উপাদান। আমরা বাঁচার জন্য খাদ্য গ্রহণ করে থাকি। আমাদের বাঙ্গালীদের প্রধান খাদ্য হল ভাত। বলা হয়ে থাকে,মাছে ভাতে বাঙালি।তবে মাছ থাক আর না থাক,ভাত কিন্তু থাকতেই হবে। আর এই ভাত খেতে হলে আমাদের অনেক কষ্ট করতে হয়। সর্বপ্রথম আমাদের চাষাবাদ করতে হবে। এরপর চাষাবাদ থেকে প্রাপ্ত ধান সিদ্ধ করে শুকিয়ে নিয়ে তারপর ভাঙ্গাতে হয়। তারপর আসে আমাদের কাঙ্খিত চাল। আর সেই চাল থেকেই ভাত আসে।ধান থেকে চাল তৈরির প্রক্রিয়াটি অনেক দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়া। আর এজন্য আমাদের অনেক কাঠখড় পোহাতে হয়।কারণ এ প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণই আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে। আবহাওয়া ভালো থাকলে সবকিছুই ঠিকঠাক থাকে। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকলে ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
প্রাচীনকালের মানুষ ফলমূল বা কাঁচা মাছ মাংস খেয়ে বেঁচে থাকতেন। এভাবে বহুকাল চলার পর রান্নার পদ্ধতি চালু হয়। পাশাপাশি মানুষ চাষাবাদ করতেও শিখে যায়। তখন থেকেই চাষকৃত ফসল সিদ্ধ করে খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়। তবে ধান থেকে চাল বের করতে হলে সেটি ভাঙ্গাতে হয়। জীবনের প্রয়োজনে মানুষ ধীরে ধীরে নানা ধরনের যন্ত্রপাতি আবিষ্কার করতে শুরু করে। এতে কাজও সহজ হয় এবং শ্রম ও কম লাগে। এই সুবিধা নিয়েই মানুষ যন্ত্রপাতির ব্যবহার শুরু করেন। যেমন পূর্বে ঢেঁকিতে ধান ভাঙ্গানো হতো। আর এই কাজটি ছিল খুবই শ্রমসাধ্য ও কষ্টকর। আর এতে সময়ও প্রচুর লাগত।তবুও দীর্ঘদিন মানুষ ঢেঁকি চালিয়েই ধান ভাঙ্গানোর কাজ করতেন। এরপর বিংশ শতাব্দীতে শিল্প বিপ্লবের সময় আবিষ্কার হয় ধান ভাঙ্গানোর মেশিন।
আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় আমরা এই মেশিনকে ধান কুটার মেশিন বলি।আর মিলগুলোকে বলি ধান কুটার মিল। আমি বহুবার নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ধান ভাঙ্গানো দেখেছি। এই মেশিনটি মূলত বিদ্যুৎ চালিত একটি মেশিন। এই মেশিনটিতে একটি বিদ্যুৎ চালিত মোটর থাকে। মোটর এর সাহায্যে এর ভেতরের ইঞ্জিন চলে। মোটরটি ইঞ্জিনের সাথে একটি চ্যাপ্টা ফিতা দিয়ে সংযুক্ত থাকে। এর বারবার ঘূর্ণনের ফলেই ধান থেকে খোসা আলাদা হয়ে যায়। এজন্য প্রথমেই বৈদ্যুতিক সুইচ অন করতে হয়। এরপর ইঞ্জিন চালু হয়ে গেলে হলারের মধ্যে শুকনো ধান ঢেলে দেওয়া হয়। হলারের ভিতরে ছোট ছোট চিত্র যুক্ত কয়েকটি লোহার পাত বসানো থাকে। এগুলোর সাথে ধানের ঘর্ষণ হয় এবং চাপ পেয়ে খোসা আলাদা হয়ে যায়। তারপর চাল বাহির হওয়ার রাস্তা দিয়ে ধান ও ধানের খোসা একসাথে বের হয়ে যায়।
মিলের একপাশে চাল পরিষ্কার করার জন্য একটি মেশিন থাকে। এই মেশিনে ধানের খোসা ও চাল আলাদা হয়ে যায়। ধানের খোসা দুই ধরনের হয়ে থাকে। গুড়া ও তুষ। এই মেশিনে বিদ্যুৎ চালিত একটি ফ্যান থাকে। যার বাতাসের ফলে ধান থেকে প্রাপ্ত চাল পরিষ্কার হয়ে যায়। পাশাপাশি গুড়া ও তুষ আলাদা হয়ে যায়।ধানের খোসার নরম ও ছোট অংশগুলোকে গুড়া বলে। এগুলো মূলত গৃহপালিত পশুকে খাওয়ানো হয়। আর খসখসে খোসাগুলোকে তুষ বলে। এগুলো জ্বালানির কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।এই ছিল আমার ধান ভাঙ্গানোর মেশিন ও এর কার্যকারিতা নিয়ে আমার আলোচনা। আশা করি আপনাদের সবার ভাল লাগবে।
ডিভাইস | রেডমি ১০ সি |
---|---|
ক্যামরা | ৫০ মেগাপিক্সেল |
ফটোগ্রাফার | @tamannafariah |
লোকেশন | ভবের বাজার,পার্বতীপুর |
ধান ভাঙ্গার মেশিন নিয়ে আপনি সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন।আমাদের গ্রামেও এই মেশিনকে ধান কুটার মেশিন বলা হয়।একটা সময় ছিল যখন মানুষ ধান ভাঙতো ঢেঁকিতে।কিন্তু এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষ ধান ভাঙ্গার মেশিনে খুব অল্প সময়ে অনেক ধান ভেঙ্গে থাকে।ধন্যবাদ আপু ধান ভাঙ্গার মেশিন নিয়ে সুন্দর পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ।
ধান ভাঙার জন্য এই মেশিনের ব্যবহার অনেক আগে থেকেই হয়ে আসছে। আমি ছোটবেলায় আমার বাবার সাথে মাঝে মাঝেই ধান ভাঙ্গার যাওয়ার সময় সাইকেলের পিছে পিছে দৌড় দিতাম। তখন থেকেই মেশিনটি সম্পর্কে জানা। মেশিনের শব্দটি আমি খুব ভয় পেতাম। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি অনেকবার ধান ভাঙার জিন্য ব্যবহৃত এই যায়গাটিকে আমরা মেল বলি। আমি বহুবার ধান থেকে চাল বাহির করার জন্য মেলে গিয়েছিলাম। এখানে গেলেই ঢেকির কথা মনে পড়ে কি পরিমানে কষ্ট করত আগের লোকেরা। মেলে মূলত ফিতা আর মটরের সাহায্যে ঘূর্ণন গতিকে কাজে লাগিয়েই ধান থেকে চাল বানানো হয়৷ সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন আপনি।
ধন্যবাদ আপনাকে।
ঢেঁকি যুগের পর আধুনিকতার ছোঁয়া আসে, তখন এই মিল স্থাপন করা হয়। ইঞ্জিন চালিত মেশিনের সাহায্যে ধান ভাঙ্গানো হয়। যেটাকে আমরা মিল বলে থাকি। মিলে ধান ভাঙ্গালে চাল সুন্দর হয় এবং কুড়া পাওয়া যায়। কুড়া জ্বালানি হিসেবে এবং গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এবং কি হাঁস মুরগির খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আমি অসংখ্যবার মিলে ধান ভাঙ্গিয়েছি। আপনি অনেক সুন্দর উপস্থাপন করেছেন আপু। ফটোগ্রাফি দারুণ হয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু
ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক সুন্দর একটি দৃশ্য আমাদের মাঝে ফুটিয়ে তুলেছেন আপু আসলেই আমরা গ্রাম অঞ্চলে এই ধান ভাঙ্গা মেশিনে ধান ভেঙ্গে থাকি। এবং প্রত্যেকটি ফটো অনেক সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।
ধন্যবাদ।
গ্রামবাংলায় ব্যবহৃত ধান ভাঙ্গার মেশিনকে আমরা মিল বলে থাকি। এই ধান ভাঙ্গার মেশিনের সাহায্যে সহজে অল্প সময়ে ধান ভাঙ্গা যায়। আগেকার সময়ে ধান ভাঙ্গতো ঢেঁকি মাধ্যমে । গ্রামবাংলার ব্যবহৃত ধান ভাঙ্গার মেশিন নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
https://twitter.com/Tamanna21464/status/1688595884630794240?s=19
বর্তমানে আধুনিক যুগে ধান ভাংঙ্গার জন্য মেশিন ব্যবহার করা হয়। আগেকার দিনে ধান ভাংঙার জন্য ঢেঁকি ব্যবহার করা হতো। অনেক কষ্ট ও পরিশ্রম করে ধান ভাঙ্গতো। এখন আর তেমন কষ্ট করতে হয় না।
ধন্যবাদ।
ধান ভাঙ্গার মেশিন প্রত্যেকটি গ্রামেই রয়েছে। আগে ডিজেল চালিত মেশিন দিয়ে এগুলো চালানো হতো।এখন বেশিরভাগ জায়গায় ইলেকট্রিক মটর ব্যবহার করে।এই ধান ভাঙ্গা মেশিন আসার ফলে মানুষের কষ্ট অনেক কমে গিয়েছে। ধান ভাঙ্গার মেশিন নিয়ে চমৎকার লিখেছেন।শুভকামনা রইল আপনার জন্য
ধন্যবাদ ভাইয়া।