গ্রাম অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী গমের ডাটি দিয়ে নকশা করা হাতপাখার ব্যবহার।
রবিবার ,
তারিখ -০৬ আগষ্ট ২০২৩
আসসালামু আলাইকুম,
প্রিয় ভাই ও বোনেরা, সকলে কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিতে আপনারা সবাই ভালোই আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার রহমতে ভালোই আছি। স্টিম ফর ট্রাডিশন কমিউনিটিতে আজ গমের ডাটি দিয়ে তৈরি পাখা নিয়ে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করি সকলের ভালো লাগবে।
গরমের সময় কৃত্রিম বাতাসের একমাত্র মাধ্যম হলো এই হাতপাখা। প্রাচীমকাল থেকেই হাতপাখার ব্যবহার হয়ে আসছে। আগেরকার দিনে এখনকার মতো সবজায়গায় বিদ্যুৎ ছিল না। সেসময় গ্রীষ্মকালের গরম থেকে রক্ষার মাধ্যম ছিল হাতপাখা।আর এ বছর যে পরিমাণ লোডশেডিং হচ্ছে এবং যে প্রচন্ড গরম তাতে তো হাতপাখাই একমাত্র ভরসা। হাতপাখার বাতাস অনেক ঠান্ডা। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের হাতপাখা বানানো হয়। বাঁশ ও কাপড় দিয়ে তৈরি হাতপাখা, বেতের হাতপাখা,সুতার হাতপাখা, তালপাতার পাখা ও গমের ডাটির তৈরি হাতপাখা। আমি আজ গমের ডাটির হাতপাখা নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি।
আপনারা ছবিতে যে হাতপাখাটি দেখত পাচ্ছেন এটি গমের ডাটির তৈরি হাতপাখা। এই হাতপাখাটি আমি আমার নানির বাসায় দেখতে পাই। মামিকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারি এই পাখাটি আমার মামির মা তৈরি করছেন।আমার মামির বাবার বাসা বিন্যাকুড়ি বাজারের পাশেই।আমাদের বাসা থেকে বিন্যাকুড়ি বাজার ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার।ঐদিকে ধান,কাঁচা সবজির পাশাপাশি গম ও চাষ করা হয়।জমি থেকে গম বাসায় এনে মাড়াই করার পর এর গাছের ভিতররের অংশটি দিয়ে অনেকেই হাতপাখা বানিয়ে থাকেন। এই ভিতরের অংশটিকে আমাদের এইদিকে ডাটি বলে থাকে। অনেক বছর থেকেই ওনাদের এলাকায় গমের ডাটির হাতপাখা ব্যবহার হয়ে আসছে। আমার মামি বলেন ওনার মা নাকি প্রতি বছরেই ৫-৬ টি গমের ডাটি দিয়ে হাতপাখা বানান।
এই হাতপাখাটি বানানোর জন্য তারা গমের ডাটির ও পছন্দ মতো বিভিন্ন কালারের রঙ্গিন সুতো ব্যবহার করে থাকেন।বাঁশের গোল চাকতিটির ভিতরে একটি পর আরেকটি ডাটি বসিয়ে সুই ও সুতা দিয়ে বিভিন্নরকম নকশা ফুটিয়ে তোলেন ঐ এলাকার রমণীরা।ঐ এলাকায় খুঁজলে এখনো প্রতিটি বাড়িতে এই রকম হাতপাখা খুজে পাওয়া যাবে। এই হাতপাখার বাতাস অনেক ঠান্ডা এবং এই হাতপাখা গুলো হালকা হওয়ায় যে কেউ এই হাতপাখাটি দিয়ে সহজেই বাতাস করতে পারে।এই হাতপাখা গুলো অনেক টেকসই হয়। তবে এই হাতপাখাটি দেখতে সুন্দর হলেও অন্যান্য হাতপাখার তুলনায় এই হাতপাখাটি বানাতে একটু বেশি শ্রম ও সময় দিতে হয়।
গমের ডাটির তৈরি হাতপাখাটি ঐ এলাকায় একসময় ব্যাপক হারে প্রচলিত ছিল।কিন্তু বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন সবজায়গায় বিদ্যুৎ থাকায় এখন আর এই হাতপাখার তেমন ব্যবহার হয় না।
আমার লেখা পোস্ট পড়ার জন্য সকলকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। সকলে সুস্থ ও ভালো থাকবেন।
মোবাইল | Tecno 9t spark |
---|---|
ক্যামেরা | ৩৮ মেগাপিক্সেল |
পোস্টের ধরণ | চুড়ি ও হিজাব পিনের ফটোগ্রাফি। |
লোকেশন | চিরিরবন্দর, গুড়িয়া পাড়া। |
ধন্যবাদ,
@siza
বাহ্ আপু।পাখাটি দেখতে অনেক সুন্দর। এমন পাখা আমি প্রথম দেখলাম। এমনও যে পাখা হয় তা আমার জানা ছিল না। পাখাটি ব্যক্তিগতভাবে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনি ঠিকই বলেছেন যে এই পাখাটি তৈরী করতে অনেক শ্রম দিতে হয়। কারণ এতে বিভিন্ন ধরনের নকশা করা হয়েছে। আপনি অনেক সুন্দর কিছু ছবি শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপু
এরকম ঐতিহ্যবাহী জিনিসগুলো দেখলে অনেক ভালো লাগে। পাখাটি দেখতে সত্যিই অনেক সুন্দর। বিশেষ করে গমের ডাটি দিয়ে এরকম সুন্দর পাখা তৈরি করা যায় এটা ধারণার বাইরে ছিলো । এই পাখার নকশা যে কোন মানুষকে মুগ্ধ করবে। অসাধারণ একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
হাত চালিত পাখা ঐতিহ্য বহন করে। তবে গমের ডাটি দিয়ে নকশা করা পাখা এই প্রথম দেখলাম।এর আগে কখনো দেখি নাই। গমের ডাটি দিয়ে নকশা অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে এই পাখাটি। গমের ডাটি দিয়ে নকশা করা পাখা নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন।
ধন্যবাদ ভাইয়া
https://twitter.com/siza37854890783/status/1688177536138985473?t=2pXylCwopbIf8AuZWabbpA&s=19
গমের ডাটি ব্যবহার করে পাখা বানানো যায় এই ধারণাটি আমাদের এলাকায় কারোরই নেই। কারণ আমি কখনোই এরকম পাখা আমাদের এলাকার কারো বাড়িতে ব্যবহার করতে দেখিনি। আপনার পোস্টের মাধ্যমে প্রথম দেখা হল আপু। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। পাখাটি দেখতে আসলেই অনেক সুন্দর। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে ও ধন্যবাদ আপু।
গমের ডালি দিয়ে হাতপাখা দেখে ভালো লাগলো, এসব ঐতিহ্যবাহী হাতপাখা দেখাই যায় না। আমার দাদী এরকম হাতপাখা বানাতে পারতো, সেই স্মৃতি মনে পরে গেলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। হাতপাখা নিয়ে এতো সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া
গমের ডাটি দিয়ে হাত পাখার নকশা,আসলে দেখতে খুব সুন্দর লাগতেছে।আমাদের গ্রাম অঞ্চলে বাঁশের তৈরি আর তালের পাতার পাখা ব্যবহার করে।গমের ডাটি দিয়ে হাত পাখা তৈরি করা এটা খুব ধৈর্যের কাজ।বর্তমান গরমের সময় সবাই হাত পাখা ব্যবহার করে।আপনি সুন্দর একটা বিষয় আমাদের মাঝে তুলে ধরছেন এবং তার সাথে সুন্দর আলোচনা করছেন।আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনাকে ও ধন্যবাদ ভাইয়া।
বাহ আপনি খুব দারুণ একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন আমাদের মাঝে। গমের ডাটা দিয়ে যে পাখা তৈরি করা যায় সেটি আমার জানা ছিল না। কি সুন্দর একটি পাখা হয়েছে দেখেই ভালো লাগছে। ধন্যবাদ আপনাকে এই পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
এমন ঐতিহ্য একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আপনার পোস্ট দেখে গম চাষাবাদ করার কথা মনে পড়ে গেলো। আমি এর আগে বাঁশের হাতপাখা বানাতে দেখেছি কিন্তু গমের ডাটার হাতপাখা কখনো দেখিনি। আপনার পোস্টের মধ্যে জানতে পারলাম আপু। অনেক ধন্যবাদ এমন একটি পোস্ট করার জন্য।
আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।