গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি সরা বা কাসা এখন প্রায় বিলুপ্ত।
শনিবার ,
তারিখ -১২ আগষ্ট ২০২৩
আসসালামু আলাইকুম,
প্রিয় ভাই ও বোনেরা, সকলে কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিতে আপনারা সবাই ভালোই আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার রহমতে ভালোই আছি। স্টিম ফর ট্রাডিশন কমিউনিটিতে আজ মাটির তৈরি সরা নিয়ে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করি সকলের ভালো লাগবে।
আমাদের দেশের সবচেয়ে পুরনো বা প্রাচীনতম শিল্প হলো মাটির তৈরি শিল্প।এই মাটির তৈরি শিল্পকেই বলা হয় মৃৎশিল্প।আমদের দেশের কুমারেরা প্রাচীনকাল থেকেই মাটি দিয়ে আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক জিনিস তৈরি করে আসছে।যেমন-মাটির বাসন-কোসন,হাড়ি-পাতিল,মাটির বাটনা,সরা,মটকা,কলস ইত্যাদি। নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবহৃত জিনিসপত্র ছাড়াও এরা মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলনা,হাতি,পুতুল,ফুলের টব ইত্যাদি শখের নানান জিনিসপত্র তারা তৈরি করে আসছে। মাটির তৈরি এসব খেলনা গ্রামীণ মেলাতেই বেশি দেখা যায়। আমি আজ আপনাদের সাথে মাটির তৈরি সরা নিয়ে আলোচনা করব।
পাতিলের উপরে যে ঢাকনা ব্যবহার করা হয় তাকেই সরা বলে থাকে।আমাদের গ্রামে এই সরাকে কাসা বলা হয়।এই সরা বা কাসা তৈরির মূল উপাদান হলো মাটি।তবে সবধরনের মাটি দিয়ে সরা তৈরি করা যায় না।এর জন্য দরকার পরিষ্কার এঁটেল মাটি। এঁটেল মাটি আঠালো তাই এটি দিয়ে খুব সহজেই মাটির জিনিস বানানো যায়। কুমারেরা সরা তৈরি করার জন্য প্রথমে এঁটেল মাটি পানি দিয়ে ভিজিয়ে গোল গোল মন্ড তৈরি করে।এরপর তারা মাটির মন্ডগুলো চাকায় ঘুরিয়ে সরার আকৃতি দেয়।এই সরাগুলো কড়া রোদে শুকানো হয়।ভালোভাবে শুকনো হয়ে গেলে এটা তারা আগুনে পোড়ায়।এরপর তারা এর উপরে রং করে।অনেকে আবার সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এর উপরে বিভিন্ন ধরনের নকশা ফুটিয়ে তোলে।
আমাদের দেশে মাটির তৈরি দুই ধরনের সরা দেখা যায়।একটি হলো গোল যেটি পাতিলের ঢাকনা হিসেবে এবং আরেকটি হলো উপরিভাগ উঁচু ও মধ্যেখানে ধরার জন্য একটি হাতল থাকে। এই হাতলটি থাকায় সরাটি ব্যবহার করতে অনেক সুবিধা হয়।এটি সাধারণত কড়াইয়ের ঢাকনা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
মাটির তৈরি সরা সাধারণত গ্রামেই ব্যবহৃত হয় বেশি।শহরে এর ব্যবহার তেমন একটা দেখা যায় না।ছোট বেলায় দাদিকে দেখতাম মাটির হাড়িতে রান্না করতে।আর রান্নার সময় তিনি হাড়িতে এই সরাগুলো ব্যবহার করতেন।তবে আমাদের বাসায় এখনো একটি হাড়ি ও সরা রয়েছে।আমাদের বাসায় যদি আলুর ডাল রান্না করা হয় তাহলে এই হাড়িতেই রান্না করেন।কারন হাড়িতে রান্না করা ডাল ছাড়া দাদি খেতে চান না।তবে আমি আবারর খেতে পারি না কেমন জানি একটা গন্ধ লাগে।আপনারা প্রথমে যে সরাটি দেখতে পাচ্ছেন এটি আমাদের বাসার।আর হাতলসহ যে সরাটি দেখতে পাচ্ছেন ঐটা আমার পাশের বাসার বড়আম্মুর রান্নাঘর থেকে তোলা।আমি আজ সকালে ওদের বাসায় বেড়াতে গিয়ে এই সরাটি দেখতে পাই এবং কিছু ফটোগ্রাফি করি। একসময় এই সরা গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে আর দেখাই যায়না। এখন মানুষ মাটির সরার পরিবর্তে বিভিন্ন ধরনের স্টিল কিংবা সিলভারের ঢাকনা ব্যবহার করছে।
আমার লেখা পোস্ট পড়ার জন্য সকলকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। সকলে সুস্থ ও ভালো থাকবেন।
মোবাইল | Tecno 9t spark |
---|---|
ক্যামেরা | ৩৮ মেগাপিক্সেল |
পোস্টের ধরণ | মাটির তৈরি সরা। |
লোকেশন | চিরিরবন্দর, গুড়িয়া পাড়া। |
ধন্যবাদ,
@siza
এখনো গ্রামে অনেক মানুষ এ ধরনের মাটির তৈরি কাসা ব্যবহার করে। দাদি নানি দেখতাম রান্না করতো এমন কাসাতে।আগের বেশিরভাগ মানুষ এসব ব্যবহার করতো।আপনার পোস্টের
উপস্থাপন সুন্দর হয়েছে সাথে ফটোগ্রাফি সুন্দর হয়েছে, ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে ও ধন্যবাদ আপু
আগে দেখতাম দাদি মাটির হাড়িতে ভাত রান্না করতো। কিন্তু এখন আর এই মাটির হাঁড়ি তেমন দেখা যায় না।বর্তমানে এখন মাটির হাঁড়ির পরিবর্তে অন্যান্য হাড়ি ও রাইসকুকার ব্যবহার করা হয়।সুন্দর লিখেছেন ধন্যবাদ আপনাকে
ধন্যবাদ আপু
আগের যুগের মানুষ মাটির পাতিলে রান্না করতো। সেই রান্না খেতে অনেক সুস্বাদু লাগতো। মাটির সরা আমাদের বাড়িতে এখনো ব্যবহার হয়। কুমারেরা মাটির তৈরি নানা রকম আসবাবপত্র করে। আপনি অনেক সুন্দর উপস্থাপন করছেন আপু, তবে আপনার পোস্ট এর মাধ্যমে মাটির পাতিল দেখতে পেলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু এতো সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যটি করার জন্য।
সরা বা কাসা নিয়ে আপনি অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপু। প্রাচীন যুগ থেকে এসব জিনিস ব্যবহার করা হইতেছে, কিন্তু এখন আর এসব মাটির জিনিসপত্র দেখায় যায় না। একবারে খুব কম দেখা যায় হঠাৎ চোখে পরে। মাটির তৈরি জিনিস কিভাবে তৈরি করে এ নিয়েও আপনি অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন। সব মিলিয়ে অনেক সুন্দর ছিল পোস্টি, শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া
https://twitter.com/siza37854890783/status/1690363596801531904?t=W4510S4oJi8rXiaw7SQ-Tg&s=19
মাটির তৈরি সরা আমাদের বাড়িতেও ব্যবহার করা হয় আপু। আমরাও এই সরা টিকে কাসা বলি। মাটির তৈরি পুরনো জিনিসটি নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন আপু। ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু
আগে দেখতাম দাদি মাটির হাড়িতে ভাত রান্না করতো। কিন্তু এখন আর এই মাটির হাঁড়ি তেমন দেখা যায় না।বর্তমানে এখন মাটির হাঁড়ির পরিবর্তে অন্যান্য হাড়ি ও রাইসকুকার ব্যবহার করা হয়।সুন্দর লিখেছেন ধন্যবাদ আপনাকে
আপনাকে ও ধন্যবাদ ভাইয়া।
পাতিলের উপর যে ঢাকনা ব্যবহার করা হয় তা আপনাদের এলাকায় সরা বলা হলেও আমাদের এলাকায় সেটিকে পেয়ালা বলা হয়। অনেক আগে মানুষ এই মাটির পেয়ালা ব্যবহার করলেও এখন আবার গ্রামের অধিকাংশ মানুষ সিলভারের তৈরি ঢাকনা ব্যবহার করে রান্নার কাজ করে। ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
ধন্যবাদ আপু